![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার পর থেকে শিলাকে প্রাইভেট পড়াচ্ছে নিরো । মেয়েটি ক্লাশ ফোরে পড়ে । নিরোদের বিল্ডিংএই থাকে ওরা । উপর তলায় ।
একটি মেয়েকে নতুন দেখা যাচ্ছে শিলাদের বাসায় । বেড়াতে এসেছে বোঝা যাচ্ছে । মেয়েটি কে শিলাও বলেনা নিরোও জানতে চায়না ।
সেদিন পড়ন্ত দুপুরে বিছানায় শুয়ে রেষ্ট নিচ্ছিল নিরো । শিলা এলো । নিরো জিজ্ঞেস করল,’ কি ব্যাপার শিলা ?’
‘আমার ছোট খালা বলেছে গল্পের বই দিতে ।‘ মেয়েটি তাহলে ওর খালা । তাক থেকে বই বের করে দিল নিরো । বংকিমের কৃষ্ণকান্তের উইল । কিছুক্ষণ পর শিলা ফিরে এল ।‘ ভাইয়া এটা খালার পড়া ।‘ বলল শিলা । নিরো বইটা নিয়ে রেখে দিল । একটা ঈদ সংখ্যা বিচিত্রা খুঁজে বের করে দিল । একটু পর আবার এলো শিলা । বলল,‘ ভাইয়া বইএর ভেতর খালার একটা কাগজ ভুলে চলে এসেছে । নিরো শোয়া থেকে উঠে বসল । কিসের কাগজ ? তাকের কাছে গিয়ে বইটা হাতে নিয়ে দেখল । তাইতো ভেতরে একটা ভাঁজ করা কাগজ । কিসের কাগজ জানতে ইচ্ছে করল তার । শিলাকে বলল,’ শোন শিলা, আমি খুঁজে দেখব । পেলে সন্ধায় পড়াতে যাবার সময় নিয়ে যাব ।‘ শিলা চলে যেতেই ও কাগজটার ভাঁজ খুলল । একটা নাম সম্বোধনবিহীন চিঠি । রুদ্ধশ্বাসে ওটা পড়ে ফেলল নিরো ।
‘ একটা ছেলের প্রেমে পড়েছি । প্রথম দেখায় প্রেম । বেড়াতে গেলে দূর্ঘটনায় কারো প্রানহানী হয় , আমার হয়েছে হৃদয়হানী । দোয়া করিস ।‘ দুনম্বরী খাতার একটা পুরো পাতায় শুধু এটুকুই লেখা । শিলা আবার এল । জিজ্ঞেস করল,’ ভাইয়া পেয়েছেন ?’
‘হ্যাঁ পেয়েছি , তোমার খালা এত অস্থির হল কেন ?’
শিলা কিছু না বলে সামান্য হেসে কাগজটা নিল ।‘ কি নাম তোমার খালার ? কি করে ও ?’ নিরো জানতে চাইল ।
‘শৈলী । ঢাকার কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছে । আপনার সাথেই ।‘
মেয়েটি পোশাক আশাকে বেশ স্মার্ট । দেখতে তেমন সুন্দর না । গায়ের রঙও কালোর দিকেই । নিরোর তেমন আগ্রহ জন্মাল না ।
দুদিন পর বিচিত্রাটা দিয়ে গেল শিলা । ও চলে যেতে নিরো পাতা উল্টাল । হ্যাঁ ঠিকই ভাঁজ করা কাগজ ।
‘ তোকে বলেছিলাম না ছেলেটার কথা ? ওর সাথে রোজ দেখা হয় । কিন্তু কথা বলার সাহস পাচ্ছিনা । কি করি বলতো ?’ ব্যাপারটা এবার বুঝল নিরো । আসলে মেয়েটি ওকে গাঁথতে চাচ্ছে । নিরো চিন্তিত হল । সে কি টোপ গিলবে ? শিলা এল । ধ্যাত্তোর ! সেই একই কথা,’ ভাইয়া, খালার ---‘
‘ ভুলে চিঠি চলে এসেছে, এইতো ? বল গিয়ে চিঠি এলেও দেয়া যাবেনা ।‘ শিলা চলে গেল । নিরো মহা বিরক্ত হল । কি আজব মেয়েরে বাবা ! বিকেলে ছাদে গেল নিরো । প্যারাপেট ওয়াল ঘেঁসে দাঁড়াল । কিছুক্ষণ পর পেছনে খস খস শব্দে ফিরে তাকাল । শৈলী এসে দাঁড়িয়েছে । ওর দিকে চেয়ে বলল,’ আমার চিঠিটা দয়া করে দিন ।‘
‘কিসের চিঠি ?’
‘ ম্যাগাজিনের ভেতরে ছিল ।‘
‘ আপনি বইয়ের ভেতর চিঠি পাঠান কেন ?’
‘ ইচ্ছে করে পাঠাইনি । ভুলে চলে গেছে ।‘
‘ বার বার একই ভুল হয় ?’
মেয়েটি চুপ থাকল । নিরো পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলল,’ শিলাকে পাঠাবেন । দিয়ে দেব ।‘
কয়েকদিন পর বইএর ভেতরে আরেকটা চিঠি এল । ওতে লেখা ‘ বুঝলাম , মনের চেয়ে চেহারার মূল্যই বেশি । আমি দেখতে সুন্দর নইতো ! আসলে বামুন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়ান ঠিক হয়নি ।’ এবার চিঠি ফেরত নিতে শিলা এল না । অনেকদিন কেটে গেল ।
সেদিন ওদের কলোনীতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । যে যা পারে কবিতা গান চলছে । হারমোনিয়াম বাজানোর লোক আর তবলচি শহর থেকে এসেছে । হঠাৎ ঘোষনা শোনা গেল –প্রিয় দর্শক শ্রোতা , এখন গান শোনাবেন অতিথি শিল্পী শৈলী । বলে কি ! নিরো অবাক হয়ে স্টেজের দিকে তাকাল । শৈলী হারমোনিয়ামের কাছে গিয়ে তবলচিকে কি যেন বলল । গান শুরু হল । ‘ হয়ত কিছুই নাহি পাব তবুও তোমায় আমি দূর হতে ভালবেসে যাব----‘ সুরের মূর্চ্ছনায় বিহ্বল পুরো হল রুম । দর্শকশ্রোতা মন্ত্র মুগ্ধ । দারুন গায়তো শৈলী ! দর্শকের অনুরোধ ধ্বনিত হল-ওয়ান মোর । এবার গাইল- জীবনে যদি দীপ জ্বালাতে নাহি পার সমাধি পরে মোর জ্বেলে দিও—‘
শৈলীর মেসেজ এবার স্পর্শ করল নিরোকে । বুকে ভালবাসার চিনচিনে যন্ত্রনা শুরু হল । অঝোর বারিধারায় সিক্ত হল হৃদয়ের শুষ্ক মৃত্তিকা ।
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৬
নিষ্কর্মা বলেছেন: পুরাই তাপস পালের সিনেমার গল্প।
গুড, ভেরি গুড।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৬
ওয়াসেত সাহিন বলেছেন: ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন ।
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৫
রাসেল ভাই বলেছেন: চলুক..............
১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭
ওয়াসেত সাহিন বলেছেন: ধন্যবাদ । চালানোর ইচ্ছে রইল ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০৪
বয়ানবাজ বলেছেন: একটা কাজে যাচ্ছি। এসে অবশ্যই পড়বো।