![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইয়াছির মিশুক এছাড়া পরিচয় দেয়ার মতো উল্লেখ যোগ্য কিছু নেই আমার। লেখালেখির অভিজ্ঞতা বলতে পরিক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর লেখার অভিজ্ঞতাটাই উল্লেখ যোগ্য। ভালোলাগে মানুষের হাসিমুখ দেখতে। মলিন, রুক্ষ, বেদনাময় পৃথিবীতে একটু হাসির উপলক্ষ তৈরি করার জন্য লেখার চেষ্টা করি। সফলতা নিয়ে কোন ভাবনা আসেনা তাই লেখতে দ্বিধা করিনা।
ডারউইন এর বিবর্তনবাদ আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু তার বিবর্তনবাদে প্রাণীকুলের বিবর্তনের পাশাপাশি যদি মানুষের ভাষার বিবর্তনও অন্তর্ভুক্ত থাকতো তাহলে আমি তা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতাম।
মানুষের ভাষার বিবর্তন এখন ব্যাপক ভাবে পরিলক্ষিত। এই যেমন "ও মাই গড " শব্দটি বিবর্তিত হয়ে আজ "ও এম জি " হয়ে গেছে, প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে গেছে গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড।
অনেকে এটাকে ভাষার পরিবর্তন বল্লেও আমি বলি বিবর্তন। পরিবর্তন এমন ভাবে হয় যা সহজে সকলের চোখে পরে। যেমন - শরতের পরিষ্কার আকাশ হঠাৎ মেঘলা হয়ে গেলে তা কারো নজর এড়ায় না, এটা আকাশের পরিবর্তন কিংবা বসন্তে যখন কোকিল ডাকে, নতুন পাতা নতুন ফুলে গাছ ভোরে উঠে সেটাও সবার চোখে পরে সহজেই, এটা প্রকৃতির পরিবর্তন। অন্যদিকে বিবর্তন ঘটে দৃষ্টির অগোচরে ধিরে ধিরে। যেমন - বানর লেজ খসিয়ে কখনযে মানুষ হয়েছে তা কেউ বলতে পারেনা, আবার পাখির দিকে তাকালে বুঝাই যায়না যে পাখির পুর্ব পূরুষেরা মাছ ছিল।
যাইহোক, এখানে আমার আলোচ্চ বিষয় হচ্ছে ভাষার বিবর্তন।
ভাষার বিবর্তনের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে গুরত্তপূর্ণ মনেহয় "ঘুষ " শব্দটিকে। কয়েক বছরে আগেও আমাদের চারিপাশে ঘুষের ছড়াছড়ি ছিল। পত্রিকা খুললেই দেখতাম শুধু ঘুষ আর ঘুষ। কিন্তু এখন "ঘুষ " শব্দটি আর বেশি চোখে পরে না। তারমানে কি এদেশে হতে ঘুষ বিলুপ্ত হয়ে গেছে?
আরে না, ঘুষ বিলুপ্ত হয় নাই। ভাষার বিবর্তনের শ্রতে পরে "ঘুষ " শব্দটি বিবর্তিত হয়ে "বখশিশ " এ পরিনত হয়েছে।
এখন আর কেউ ঘুষ নেয় না সবাই বখশিশ নেয়।
ছেলে মেয়ে কে ভালো স্কুলে ভর্তি করতে চাও?
স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে বখশিশ দাও।
চাকরিতে প্রমশন চাও?
বস কে বখশিশ দাও।
মাদকের ব্যবসা, ছিনতাই ইত্যাদি করতে চাও?
থানার দারোগা কে বখশিশ দাও।
রাজস্ব ফাকি দিয়ে ব্যবসা করতে চাও?
রাজস্ব কর্মকর্তা কে বখশিশ দাও।
কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে চাও?
বাজার মনিটরিং কমিটি কে বখশিশ দাও।
টেন্ডার পেতে চাও?
মন্ত্রি মহদয় কে বখশিশ দাও।
কোন অফিস থেকে আটকে পরা ফাইল ছাড়াতে চাও?
উপর মহলে বখশিশ দাও।
লাইসেন্স বিহীন বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হতে চাও?
ট্রফিক পুলিশ কে বখশিশ দাও।
ইত্যাদি, ইত্যাদি কাজ করতে চাও?
উপযুক্ত স্থানে বখশিশ দাও।
আগে মানুষ কোন কারণে বা কন কর্মের জন্য কারও উপর সন্তুষ্ট হলে খুশি হয়ে তাকে কিছু বখশিশ দিত। আর এখন জোরপূর্বক মানুষের কাছ থেকে বখশিশ আদায় করা হয়। এখন আর কেউ ঘুষ খায় না, সবাই বখশিশ নেয়।
বিবর্তনের ফলে "ঘুষ " শব্দটি যেমন "বখশিশ " এ পরিণত হয়ছে মনেহচ্ছে তেমনি ভাবে কিছুদিনের মধ্যে "ঘুষখোর " হয়েযাবে "বখশিশ খোর।"
সেদিন এক ভয়ানক স্বপ্ন দেখেছিলাম। স্বপ্নে দেখলাম প্রকৃতির সবকিছুই বখশিশ ছাড়া কোন কাজ করছে না।
অক্সিজেনের অভাবে যখন প্রচন্ড শ্বাস কষ্টে ভুগছি তখন গাছ আমাকে ডেকে বলছে "অক্সিজেন চাই? তো বখশিশ দাও। "
গাভীর দুধ দোয়াইতে গেলে গাভী অট্টহাসি দিয়ে বলছে
"দুধ চাই? তো বখশিশ দাও।"
পুকুরে মাছ ধরতে গেলে পুকুর বলছে "মাছ চাই? তো বখশিশ দাও।"
মেঘ গুলো ঠোঁট বাকাঁ করে বলছে "বৃষ্টি চাই? তো বখশিশ দাও।"
ফুল বলছে "গন্ধ চাই? তো বখশিশ দাও।"
এমনকি মুরগি এসে আমার কানে কানে বলছে
"ডিম চাই? তো বখশিশ দাও।"
চারিদিকে শুধু একটাই কথা - বখশিশ দাও, বখশিশ দাও।
যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে কানে আঙ্গুল চেপে পালিয়ে বাচার জন্য যখন দৌড়ে এসে ঘরে ঢুকতে যাব তখন ঘর বলছে "ভিতরে ঢুকতে চাও? তো বখশিশ দাও।"
ভাগ্য ভালো ছিলো বলে তখনি ঘুম ভেঙে গেলো নাহলে কি অবস্থা হতো তা ভাবতেই পারছি না।
ভাবুনতো, জগৎটা এমন হলে কেমন হতো!
আমাদের সৌভাগ্য মানুষ যতটা অমানুষ হয়েছে অমানুষও ততটা অমানুষ হতে পারেনি।
২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:২৯
ইয়াছির মিশুক বলেছেন: ঘুষ এর অপর একটি রূপ পেলাম হাহা
৩| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৫৮
জাগরিত নিদ্রা বলেছেন: ডনেশন শব্দটাও কিন্তু ব্যাবহার হয়
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৪
চানাচুর বলেছেন: হাহাহা! আমি অবশ্য একজনের মুখে "টাকা মারা" অথবা "ঘুষ" অথবা "বখশিশ" যেটাই বলেন না কেন সেটাকে "কমিশন" বলতে শুনেছি