![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইয়াছির মিশুক এছাড়া পরিচয় দেয়ার মতো উল্লেখ যোগ্য কিছু নেই আমার। লেখালেখির অভিজ্ঞতা বলতে পরিক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর লেখার অভিজ্ঞতাটাই উল্লেখ যোগ্য। ভালোলাগে মানুষের হাসিমুখ দেখতে। মলিন, রুক্ষ, বেদনাময় পৃথিবীতে একটু হাসির উপলক্ষ তৈরি করার জন্য লেখার চেষ্টা করি। সফলতা নিয়ে কোন ভাবনা আসেনা তাই লেখতে দ্বিধা করিনা।
রাজকন্যা, মধ্য রাতে ফেসবুকে তোমার পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে আপলোড করা ছবি দেখে আমারও প্রবল ইচ্ছা হলো পান খেয়ে ঠোঁট লাল কারি।
কিন্তু মাঝরাতে পান কোথায় পাই?
অতপর চাঁদনী রাতে মোবাইল হাতে বেরিয়ে পরলাম, যদি কোন চা-পানের দোকান খোলা পাওয়া যায়।
একটা পান, একটা পান যদি হাতে পাই তাহলে নবাব সিরাজউদ্দৌলার মত নবাবি ভঙ্গিতে পান চিবিয়ে ঠোঁট লাল করে সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে রাজকন্যাকে ট্যাগ করব। (যদিও নবাব সিরাজউদ্দৌলা পান খেতেন কিনা সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত না।)
কিছুদূর যাওয়ার পরেই ঘটলো বিপত্তি, এক দল কুকুর ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে আসল আমার দিকে। আমিও দিলাম উল্টো দিকে দৌড়। সে কি দৌড়? একদম পাগলের মত দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলাম "পাগল কি এতো জোড়ে দৌড়াতে পারে? "
যেই গতিতে দৌড়াচ্ছিলাম অলিম্পিকে সেই গতিতে দৌড়ালে উসাইন বোল্ড এর রেকর্ড ভেঙে অনায়াসেই স্বর্ণ পদক জয় করা যেতো।
খোদা প্রদত্ত সুসাস্থ্য নিয়ে বেশিক্ষণ দৌড়াতে পারলাম না, হাপাতে হাপাতে থেমে গেলাম। ততক্ষণে কুকুর গুলোও থেমে গেছে।
একটা কৌতুক শুনে ছিলাম - অনেক লম্বা পথও ছোট মনেহয় যখন সাথে কোন সুন্দরী থাকে অথবা পিছনে কুকুর থাকে।
আমার ক্ষেত্রে ঘটল দ্বীতিয় টা। এতো অল্প সময়ে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছি বুজতে পেরে নিযেকে বীরপূরুষ মনে হলো, নিজেই নিজের পিঠ চাপড়ে বাহবা দেলাম।
কথায় আছে -
কপাল যদি ভালো হয়
লেবু গাছেও কমলা হয়।
আজ মনে হচ্ছে আমার কপালটাও ভালো, একেবারে রাজ কপাল! কুকুরের তাড়া খেয়ে এসে পরেছি হাসেম চাচার বাড়ির সামনে। চাচা চাচী আবার প্রচুর পরিমাণে পান খান, বলা যায় পানের পোকা। কিন্তু এই মাঝ রাতে চাচা চাচী কে ডেকে তুলি কিভাবে? হার মানলে চলবে না, একটা উপায় বের করতেই হবে।
হাসেম চাচার একমাত্র ছেলে সুমন এখন সউদিআরব থাকে। সে মাঝে মঝে আমার মোবাইলে স্কাইপে ভিডিও কল করে চাচা চাচীর সাথে কথা বলে।
সুমনকে ফোন করে বললাম "স্কাইপ ওপেন কর, চাচী তোকে দেখবে। "
ও বলল "এতো রাতে! কোন সমস্যা নাকি? "
বললাম "আরে, কোন সমস্যা না, মায়ের মন তো, কখন যে সন্তান কে দেখতে মন চায় তার আবার রাত দিন আছে নাকি?"
তারপর গিয়ে চাচীকে ডেকে তুললাম "ও চাচী তারাতারি উঠেন, সুমন আপনার সাথে কথা বলবে। "
চাচীরও সেই একই প্রশ্ন "এতো রাতে! কোন সমস্যা নাকি? "
আমিও একি ভাবে বললাম বললাম "আরে চাচী, কোন সমস্যা না,সন্তানের মন তো, কখন যে মা কে দেখতে মন চায় তার আবার রাত দিন আছে নাকি? "
তাদের কথা বলা কি আর শেষ হয়? দির্ঘ্য ৪২ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড কথা বলার পর ফোনটা রাখলেন। তারপর চাচীকে বললাম একটা পান দেন খেতে খেতে বাড়ি যাই।
চাচী পরম যত্নে চুন সুপারি দিয়ে একটা পান বানিয়ে আমার হাতে দিলেন, আমি যেন মঙ্গল গ্রহ হাতে পেলাম।
পানটা মুখে নিয়ে ঘোড়ার মত লাফাতে লাফাতে বাড়ি ফিরে আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখি ঠোঁট দুটো ভালোই লাল হয়েছে।
সাথে সাথে সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে রাজকন্যাকে ট্যাগ করলাম।
তখনি রাজকন্যা কমেন্ট করল -
"মহারাজের আবার ঠোঁটে লিপস্টিক দেয়ার সখ হলো কেন? মহারাজ কি নিজেকে সালমান খান মনেকরেন? "
কমেন্ট পড়ে আমিতো বাকহত!
©somewhere in net ltd.