![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ইয়াছির মিশুক এছাড়া পরিচয় দেয়ার মতো উল্লেখ যোগ্য কিছু নেই আমার। লেখালেখির অভিজ্ঞতা বলতে পরিক্ষার খাতায় প্রশ্নের উত্তর লেখার অভিজ্ঞতাটাই উল্লেখ যোগ্য। ভালোলাগে মানুষের হাসিমুখ দেখতে। মলিন, রুক্ষ, বেদনাময় পৃথিবীতে একটু হাসির উপলক্ষ তৈরি করার জন্য লেখার চেষ্টা করি। সফলতা নিয়ে কোন ভাবনা আসেনা তাই লেখতে দ্বিধা করিনা।
তমালএর ছোট মামা
...
তমালএর ছোটো মামা এসেছে, খবরটা শুনেই মনটা আনন্দে লাফিয়ে উঠলো।
তমালএর ছোট মামা হচ্ছে মজার ভান্ডার। তার সাথে কিছুক্ষণ থাকলে, তার কথাবার্তা কাজকর্ম দেখলে বিনোদনের জোয়ারে ভেসে যেতে হয়। কখনো কখনো হাসতে হাসতে পেট ব্যথা শুরু হয়ে যায়।
ছোট মামার বয়স প্রায় চল্লিশের কাছাকাছি।
চেহারাটা কালো হলেও খুব একটা খারাপ লাগে না। মুখে সারাক্ষণ হাসির ফোয়ারা ঝরে। তার সবচেয়ে মজার দিকটা হচ্ছে তিনি উপস্থিত বিষয় গুলো নিয়ে মজার মজার কৌতুক বলে নিজেও হাসেন আমাদেরও হাসান।
বয়স প্রায় চল্লিশ হলেও এখনো তিনি ব্যাচেলর, অর্থাৎ অবিবাহিত । আর্থিক অবস্থাও বেশ ভালো। চট্টগ্রামে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এর ব্যবসা। কোনো দিকেই ঘাটতি নেই। তবুও কেন যে বিয়ে করেন নি তা সবার অজানা।
একবার আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম "মামা, আপনি বিয়ে করেননা কেন? "
মামা বলেছিলেন "আমার কপালে বিয়ে নাই রে।"
-"কিভাবে বুঝলেন? "
-"অনেক বার অনেক ভাবে বিয়ে করতে মাঠে নেমেছি। প্রত্যেক বারই কোনো না কনো কারনে শেষ পর্জন্ত শেষ করতে পারি নি। বৌএর মুখ দেখার পরিবর্তে বার বার ব্যর্থতার মুখ দেখেছি । কূল কিনারা না পেয়ে অবশেষে এক দরবেশ বাবার কাছে গেলাম। গিয়ে বল্লাম- বাবা, আমার হাত দেখে বলে দেন তো আমি বিয়ে করতে পারবো কিনা।
দরবেশ বাবা বললেন - হাত দেখতে হবে না, তোর যেই চেহারা মুখ দেখেই বলে দিলাম তুই বিয়ে করতে পারবি না। তারপর থেকে বিয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছি। "
তার কথা শুনে সবাই হাহা, হোহো, হিহি করে হেসে উঠলো।
আমি বললাম "মামা, আপনি তো অনেক বার অনেক জায়গায় পাত্রী দেখতে গেছেন, তাইনা? "
- "তা তো গেছিই, পাত্রী দেখতে দেখতে আমি একপ্রকার পাত্রী বিশেষজ্ঞ হয়ে গেছি। এখন আর পাত্রী দেখার দরকার হয় না, নাম ঠিকানা শুনলেই বলে দিতে পারি পাত্রী কেমন হবে। "
-" পাত্রী দেখতে গিয়ে কখনো মজার ঘটনা ঘটেনি? "
-" ঘটেনি আবার? তোদেরকে একটা ঘটনা বলি শোন-
প্রকৃত সুন্দরী তো এখন জাদুঘরে গিয়ে খুজতে হয়। এযুগের সুন্দরী হচ্ছে দুই প্রকার, মেকাপ সুন্দরী আর ফটোশপ সুন্দরী। আমি একবার পাত্রী দেখতে গিয়ে একের ভিতর দুই পেয়েছিলাম।
পাত্রী দেখতে যাওয়ার পর যথারীতি পাত্রীকে আমাদের সামনে আনা হলো। মেয়েটিকে এতো পরিমাণ মেকাপ করানো হয়েছিল যে তাকে দেখতে পুতুলের মত লাগছিলো।
তাই দেখে আমার এক চাচা মেয়েব বাবা কে বলল-
বাহ, আপনার মেয়ে তো খুব সুন্দর!
মেয়ের বাবা বলল-
এ আর এমন কি সুন্দর দেখলেন? ছবি দেখলে বুজতে পারবেন আমার মেয়ে কত সুন্দর!
আধুনিক বাপের অত্যাধুনিক কন্যা।
মেয়েটি মেকাপ করে হয়েছে সুন্দরী আর ফটোশপে হয়েছে বিশ্বসুন্দরী। একের ভেতর দুই। "
মামার কথা শুনে তো আমরা হাসতে হাসতে মেঝেতে গড়াগড়ি খেলাম ।
গতবার মামা যখন এসেছিলো তখনও অনেক মজা হয়েছিল।
একদিন বিকেল বেলা আমি আর তমাল ছোট মামার সাথে হাটতে বের হলাম। বাসা থেকে বেরুতেই আমাদের পাড়ার এক চাচার সাথে দেখা হলো। চাচার সাথে একটি ফুটফুটে মিষ্টি দেখতে বাচ্চা ছিল। বাচ্চাটি চাচার হাত ধরে হাটছে। আমি বাচ্চাটি কে একটু আদর করে জিজ্ঞেস করলাম "বাবু তোমর নাম কি? "
বাচ্চাটি বলল "আমার নাম সাকিব।"
এমন সময় মামা বললেন "একটা মজার ঘটনা মনে পরে গেলো। "
আমি বললাম " কি ঘটনা মামা? "
- "একবার আমার এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গেয়েছিলেম। বন্ধুর একটি ছেলে ছিল ছয় বছর বয়স। আমি ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করেছিলাম - বাবু তোমার নাম কি?
ছেলেটি বলে - আঙ্কেল, আপনি জেনেশুনে আমার সাথে দুষ্টুমি করছেন কেন?
আমি তো বোকা হয়ে গেলাম, বুঝতেই পারলাম না আমি কি দুষ্টামি করেছি!
আসলে ছেলেটির নাম ছিল বাবু আর আমিও জিজ্ঞেস করেছিলাম বাবু তোমার নাম কি। "
একথা বলে মামা হোহো করে হাসতে শুরু করলো আমরাও হাসলাম।
কিছুক্ষণ হাটার পর তমাল বললো "মামা চলেন কফিশপে গিয়ে এক কাপ কফি খেয়ে নেই।
মামা বললেন "কফি খেতে আবার কফিশপে যেতে হয় নাকি? এই চায়ের দোকান গুলোতেই তো কফি পাওয়া যায়। "
- "তাই বলে রাস্তার পাশের দোকানে বসে কফি খাব? "
-" তো কি হয়েছে? কফি তো কফিই। তাছাড়া ওইসব কফিশপে আমার তৃপ্তি হয় না। "
- "কি বলেন মামা? কফিশপে তৃপ্তি হয়না! "
- "একটা ঘটনা বলি শোন। "
-" জি মামা বলেন। "
-" একবার এক কফিশপে গেলাম কফি খেতে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কফি চলে এলো। কফির কাপ হাতে নিতেই দেখি কফিতে ইয়া বড় একটা মাছি ভাসছে।
ওয়েটার কে ডেকে বললাম- দেখো কফির কাপে মাছি ভাসছে।
ওয়েটার বললো- একটু অপেক্ষা করেন ডুবে যাবে।
তারপর থেকে কফিশপে কফি খেতে গেলেই সেই মাছির কথা মনে পরে যায়। "
আমরা বুজতে পারলাম টাকা বাচানোর জন্য মামা বানিয়ে বানিয়ে গল্প বলছে তবুও হাসি আটকে রাখতে পারলাম না।
অবশেষে মামার কৌতুকের কাছে পরাজিত হয়ে রাস্তার পাশের চায়ের দোকানেই গেলাম কফি খেতে।
তিন কাপ কফির অর্ডার দেয়া হয়েছে। আমরা দোকানের সামনের বেঞ্চ বসে অপেক্ষা করছি। আরো মানুষ বসে আছে। দোকানে গান বাজছে "আমায় ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে...।" গান শুনে মামা বললেন "গানটাকে আরেকটু ছোট করা যেতো। "
আমি বললাম "কিভাবে? "
- "এইযে গানে বলল আমায় ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে, এখানে ঘটনাটি কি হচ্ছে? একবার ভাসাচ্ছে আরেকবার ডুবাচ্ছে তারমানে পানিতে চুবাচ্ছে, তাইনা? "
- "জি মামা। "
-"তাহলে আমায় ভাসাইলি রে আমায় ডুবাইলি রে না বলে আমায় চুবাইলি রে বললেই তো হতো। "
এবার মামার কথ শুনে শুধু আমরা না আশেপাশের সবাই হেসে উঠলো।
মামা যতদিন ছিলো ততদিন অনেক মজা হয়েছিল।
মামা আবার আসছে তারমানে আবারো অনেক মজা হবে।
খবরটা শুনে তাই মনটা আনন্দে লাফিয়ে উঠলো।
......
.......
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৭
ইয়াছির মিশুক বলেছেন: চেষ্টা তো করেছি
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩০
চাঁদগাজী বলেছেন:
তেমন কিছু না, সাধারণ; হাসলে হাসা যায়, না হাসলেও চলে