![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মুসলিম যে আত্মসমর্পন করে আল্লাহর কাছে, হোক সেটা তার ইচ্ছার পক্ষে বা বিপক্ষে।
বিসমিল্লাহ, শুরুতেই বলে রাখি যে, বুখারী মুসলিমের নাম শুনলে এতদিন শীয়াদের গা জ্বলত। আর এখন তাদের সাথে সাথে গা জ্বলে হানাফী মাযহাবের অনুসারীদের।
===========================================
যাইহোক, মহিলাদের মসজিদে যাওয়া নিয়ে যে প্রসিদ্ধ হাদিসটি রয়েছে তা হচ্ছে,
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم. " إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَمْنَعْهَا
#আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত , তিনি বলেন, তোমাদের কারো স্ত্রী যদি (সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য মসজিদে যাওয়ার)অনুমতি চায় তা হলে স্বামী যেন তাকে বাঁধা না দেয়।
সহীহ বুখারি (ইফা), অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 831
এছাড়াও রাসূলুল্লাহ সা: এর যুগে মহিলারা মসজিদে সলাত আদায় করতেন।
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، رضى الله عنها أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي الصُّبْحَ بِغَلَسٍ فَيَنْصَرِفْنَ نِسَاءُ الْمُؤْمِنِينَ، لاَ يُعْرَفْنَ مِنَ الْغَلَسِ، أَوْ لاَ يَعْرِفُ بَعْضُهُنَّ بَعْضًا
#আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্ধকার থাকতেই ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। এরপর মু’মিনের স্ত্রীগণ চলে যেতেন, অন্ধকারের জন্য তাদের চেনা যেত না অথবা বলেছেন, অন্ধকারের জন্য তাঁরা একে অপরকে চিনতেন না।
সহীহ বুখারি (ইফা), অধ্যায়ঃ ১০/ আযান | হাদিস নাম্বার: 830
কথা হচ্ছে মহিলাদের এই মসজিদে সলাত আদায়টিকেই কেন্দ্র করে বিখ্যাত বুজুর্গ ওলিপুরী (অনেকে বলে হাকিমপুরী) বলিয়াছেন, ///''দুষ্ট মৌলভীরা মসজিদে নারীদেরকে উপভোগ করতে/// চায়’’(নাউজুবিল্লাহ)। এই বুজুর্গ আরো বলিয়াছেন, ///বর্তমান যুগে নয়া একটা ফ্যাশন বাইর হইছে, সেটা কি? নারীরা মসজিদে গিয়া জমাতে শরীক হইয়া নামাজ পড়ব (আস্তাগফিরুল্লাহ)///
আল্লাহ এই বুজুর্গরে হেদায়েত দান করুন যেমন হেদায়েত দান করেছিলেন ওমর রা. সহ নওমুসলিম সাহাবীদের।
=========================================
এবার আরেক কম বয়সী বুজুর্গ উক্ত বিখ্যাত বুজুর্গের ফালতু কথার পিছনে খুটি দেওয়ার জন্য বুখারীর একটি হাদিস দিল কাটছাট করে।
হাদিসটি নিম্নরূপ:-
7. উমর (রা.) মহিলাদের মসজিদে যাওয়াকে অপছন্দ ও মাকরুহ মনে করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) হতে বর্ণিত, “উমর (রা.)এর এক স্ত্রী (আতেকা বিন যায়েদ) ফজর ও এশার নামাযের জামাতের জন্য মসজিদে যেতেন। তাকে বলা হল আপনি কেন নামাজের জন্য বের হন ? অথচ আপনি জানেন যে, হযরত উমর (রা.) মসজিদে যাওয়াকে অপছন্দ ও আত্মমর্যাদাবোধ পরিপন্থি মনে করেন। (সহীহ বুখারী)
=> অথচ বুজুর্গ পুরো হাদিসটা দিল না। ওমর রা: নিজের স্ত্রীর মসজিদে যাওয়াকে অপছন্দ ও আত্মমর্যাদাবোধ পরিপন্থি মনে করতেন কিন্তু তিনি মহিলাদের মসজিদে যাওয়াকে নিষিদ্ধ করেননি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাবলে। তিনি নিজের স্ত্রীর জন্য মসজিদে যাওয়াকে নিষিদ্ধ করেননি স্বামী হিসেবে। উপরের হাদিসটিতে ওমর রা: এর স্ত্রীকে প্রশ্ন করার বিষয়টি উক্ত লেখক সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন, কিন্তু স্ত্রী কি উত্তর দিয়েছিলেন সেটা ***গোপন**** করেছেন। সম্পুর্ণ হাদিসটি হচ্ছে,
ইবনুূু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাঃ)-এর স্ত্রী (আতিকাহ বিনত যায়িদ) ফজর ও ইশার সালাত (নামায/নামাজ)-এর জামা’আতে মসজিদে হাযির হতেন। তাঁকে বলা হল, আপনি কেন (সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য) বের হন? অথচ আপনি জানেন যে, উমর (রাঃ) তা অপছন্দ করেন এবং মর্যাদা হানিকর মনে করেন। তিনি জবাব দিলেন, *****তা হলে এমন কি বাধা রয়েছে যে, উমর (রাঃ) স্বয়ং আমাকে (আতিকাহ বিনত যায়িদ) নিষেধ করছেন না? বলা হল, তাঁকে বাধা দেয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বাণীঃ "আল্লাহর দাসীদের আল্লাহর মসজিদে যেতে নিষেধ করো না।"***
সহীহ বুখারি (ইফা), অধ্যায়ঃ ১১/ জুমু'আ | হাদিস নাম্বার: 854
লক্ষ্য করুন উপরে স্টার মার্ক করা অংশটুকু গোপন করা হয়েছে। উল্লেখ্য ওমর রা. রাসূলুল্লাহ সা: এর নির্দেশকে মান্য করে চুপ থেকেছেন। স্ত্রীকে মসজিদে যেতে নিষেধ করেননি। আর বর্তমানের বুজুর্গরা ওমর রা: এর চেয়েও একধাপ বেশী এগিয়ে যে, তারা কেউ হাদিসের অংশ কাটছাট করে আবার তাদের কেউ মহিলাদের মসজিদে যাওয়াকে ফ্যাশন বলে, আবার কেউ মসজিদে যাওয়াকে মহিলাদের মসজিদে উপভোগ করার মতো জঘন্য কথা বলে।
ওমর রা: কে রাসূলুল্লাহ সা: এর নিষেধ বাঁধা দিয়ে আটকে রাখতে পেরেছে, কিন্তু বর্তমানের হানাফীদের পারে নাই। বড়ই আফসোসের বিষয়।
এছাড়া উক্ত বুজুর্গ আরো একটি হাদিস বুখারী মুসলিমের বলে উল্লেখ করেছে। অথচ সেটি আমরা তন্য তন্য করেও বুখারী মুসলিমে পেলাম না। বুজুর্গকে হাদিসটির হাদিস নাম্বার বুখারী মুসলিমের অধ্যায় অনুচ্ছেদ সহ উল্লেখ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সে যে হাদিসটি দিয়েছিল তা হচ্ছে,
হযরত আনাস রা. এর বর্ননা অনুযায়ী পাওয়া যায়
" মাসজিদে নববী এর এক নামাযে ৫০ হাজার নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়। "
[ বুখারী, খ.১ , পৃ. ১৫৯, মুসলিম, খ.১ , পৃ.৪৪৬ ]
উপরোক্ত হাদিসটি রয়েছে, ইবনে মাজাহতে। হাদিসটি নিম্নে দেওয়া হল।
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْخَطَّابِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا رُزَيْقٌ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الأَلْهَانِيُّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ " صَلاَةُ الرَّجُلِ فِي بَيْتِهِ بِصَلاَةٍ وَصَلاَتُهُ فِي مَسْجِدِ الْقَبَائِلِ بِخَمْسٍ وَعِشْرِينَ صَلاَةً وَصَلاَتُهُ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُجَمَّعُ فِيهِ بِخَمْسِمِائَةِ صَلاَةٍ وَصَلاَةٌ فِي الْمَسْجِدِ الأَقْصَى بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلاَةٍ وَصَلاَةٌ فِي مَسْجِدِي بِخَمْسِينَ أَلْفِ صَلاَةٍ وَصَلاَةٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ بِمِائَةِ أَلْفِ صَلاَةٍ
আনাস ইবনুূু মালিক থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: কোন ব্যক্তির নিজ ঘরে এক ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) পড়ার সওয়াব এক ওয়াক্ত সালাতেরই সমান, তার পাড়ার বা গোত্রের মাসজিদে তার এক সালাত (নামায/নামাজ) পঁচিশ সালাতের সমতুল্য, জুমুআহ মাসজিদে তার এক সালাত (নামায/নামাজ) পাঁচ শত সালাতের সমান। মাসজিদুল আকসায় তার এক সালাত (নামায/নামাজ) পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমতুল্য, আমার মাসজিদে তার এক সালাত (নামায/নামাজ) পঞ্চাশ হাজার সালাতের সমতুল্য এবং মাসজিদুল হারামে তার এক সালাত (নামায/নামাজ) এক লাখ সালাতের সমতুল্য।
সূত্র: সুনানে ইবনে মাজাহ, অধ্যায়ঃ ৬/ সলাত কায়িম করা ও নিয়ম-কানুন | হাদিস নাম্বার: 1413
Click This Link
হাদিসটির সানাদে أَبُو الْخَطَّابِ الدِّمَشْقِيُّ থাকার কারণে হাদিসটি যঈফ। কারণ তিনি মাজহুল (অজ্ঞাত)। সুতরাং হাদিসটি দিয়ে দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আর যে হাদিস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য না, সেটাকে বুখারী মুসলিমের হাদিস বলাটা খুবই মারাত্মক একটা ব্যাপার।
বুজুর্গকে বলছি যে, আপনি """এক নামাযে ৫০ হাজার নামাযের সওয়াব পাওয়া যায়"""" মর্মে একটি সহীহ হাদিস আরবী ইবারত ও সানাদসহ আমাদের সামনে পেশ করুন।
সময় স্বল্পতার কারণে শুধুমাত্র দুটি হাদিস নিয়ে আলোচনা করলাম। ইনশাআল্লাহ সময় পেলে সবগুলো হাদিস নিয়েই আলোচনা করব।
পরিশেষে বলতে চাই,
আমরা মুসলিমরা মহিলাদের মসজিদে গিয়ে স্বলাত আদায় করাকে হারাম মনে করি না।
আমরা মুসলিমরা আমাদের মহিলাদের যথাযথ পর্দা করে মসজিদে যেতে বাধা দেই না।
আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুন। আমীন।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৭
যান্ত্রিক বলেছেন: মহিলাদের মসজিদে যেতে হলে আগে আমাদের দায়িত্ব সমাজকে সেভাবে নিরাপদ করে গড়ে তোলা।
নইলে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনার দায়ভার আমাদেরই নিতে হবে।