![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে পড়তে রাজী নই, আমি জেগে থাকব স্বপ্নের সূর্যোদয় দেখার জন্য...........
এক।।
টিউশানির বেতন পাইলাম, তাও আবার ৫০০ বা হাজার টাকার নোটে না একশ টাকার নোটে। মানে পকেটটা বেশ উচুই আছে। বুক পকেটে টাকাটা রাখলে বুকটা উচু উচু লাগে। বুক ফুলিয়ে হাটতে সুবিধা হয় আরকি। মেজাজটা ভাল থকার কথা, কিন্তু মেজাজটা আছে খিচড়ে।
গতকাল পকেটে ছিল মাত্র ৫০০ টাকার একটা নোট। টিলাগড় থেকে আম্বরখানা আসব, ভাড়া ১০ টাকা। আমার কাছে কেউ যদি ৫০০ টাকার নোটা দিয়ে বলে- "মামা ১০ টাকা রাখো" তাহলে আমি প্রথমে যেই কাজটা করব তাহল আস্তে আস্তে আমি একটা গালি দেব বাইন**, এরপর পারলে কষে গালে এমন একটা চড় দেব যাতে ৩২ টা দাঁতই পড়ে যায়। ঐ দাঁতগুলো দিয়ে একটা মালা বানিয়ে গলায় ঝুলিয়ে দেব। এরকম পরিস্থিততে পড়ার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। তাই দোকানে দোকানে ঘুরে ভাংতি করার চেষ্টা করলাম। সবগুলো মুদিখানা আর রিচার্জের দোকান ঘুরলাম, "মামা ৫০০ টাকা ভাংতি হবে?" এমন প্রশ্নের উত্তরে সবাই এককথায় মাথা নাড়ে। মোবাইলে ব্যলেন্স চেক করলাম ৭১ টাকা ১৪ পয়সা, রিচার্জেরও দরকার নেই। অতিথিপরায়ন আর ধার্মিকের ছড়াছড়ির এই দেশে কেউ আমাকে ৫০০ টাকা খুচরা এমনি দেবে না বুঝে গেলাম। তাই আগেই গেছি এমন একটা রিচার্জের দোকানে গিয়ে ৫০ টাকার একটা কার্ড কিনলাম, গায়েব থেকে টাকার খুচরা হাজির হল। এই ছোট্ট মিথ্যাটা কি বলা খুব জরুরী ছিল। আছে কিন্তু দিতে পারব না, আমার নিজের এটা লাগবে। এটা বললে কি হত জানি না। ছোটবেলায় শুনতাম কথা বেশি বললে নাকি আয়ু কমে যায়, তাই মনে হয় সবাই আয়ু বাড়ানোর জন্য একলাইনে উত্তর না দিয়ে ছোট্ট এই মিথ্যটা মাথা নেড়ে বলেছিলেন।
দুই।।
টিউশানি করিয়ে ফিরছিলাম। রাত বেজে গেছে সাড়ে দশটা। এদিকে আবার বৃষ্টিও শুরু হয়েছে। এর ফলাফল কোন সিএনজি বা অটো পাওয়া যাচ্ছে না, আর পাওয়া গেলেও ভাড়া জনপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশী। পকেটে টাকা আছে, ২০ টাকা ভাড়ার পরিবর্তে ৩০ বা ৪০ টাকা দিয়ে আসার চাইতে টাকা বেশীই আছে। কিন্তু প্রশ্নটা হল আমি ভাড়াটা বেশী দেব কেন। আম্বরখানা আসলাম প্রায় আধা ঘন্টা দাড়িয়ে থাকার পর। এখানেও একই সমস্যা। রোজার মাস চলে এল। গতবার দেখেছি ইফতারের ঘন্টা বা আধা ঘন্টা আগেও একই অবস্থা হয় এবাও হবে।
তিন।।
ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি এদেশের মনুষ ধর্মভীরু। যারা আপনার প্রযোজনকে কাজে লাগিয়ে আপনার পকেট কাটার ধান্ধায় থাকবে তারা কিভাবে ধার্মিক হয়? চায়ের দোকানে নাস্তিকদের অস্ত্রোপচার করতে দেন এরা পাক্কা খেলোয়ার। শুক্রবার ছাড়া কোন মসজিদেরই ২ সারি ভর্তি হয় না। রোজার মাসে টুপি বিক্রির জন্য অনেকে নতুন ব্যবসা খোলেন। পঞ্চম বা দশম রোজার পর তারাবি কি পাঞ্জেগানা জামাতেই লোক খুজে পাওয়া য়ায়না। আমরা ধর্ম নিয়ে কথা বলতে ভালবাসি, দৈনন্দিন জীবনে মিথ্যা বলতে আমাদের বাধে না। এদেশের মানুষ ধার্মিক না, ধর্মপরায়ন না, ধর্মভীরুও না।
©somewhere in net ltd.