নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপটু

সমাজবদ্ধ কিংবা মুক্তকারাবদ্ধ এই আমরা শান্তির পথে হন্যে হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত

আদনান০৫০৫

এখনো আমি স্বপ্নে মাছরাঙ্গা পাখির ডানায় ভর করে ছোঁ মেরে মাছ ধরি, কিশোরের আঙ্গুলের টোকায় মাথা ঘুরতে ঘুরতে আমারই মত আরেক মার্বেলের গায়ে ধাক্কা মারি, দুরন্ত বালকের মত ঢিল মেরে মানুষের গাছের ফল চুরি করি, বন্ধুদের সাথে চ্যালেঞ্জ করে এলাকার দুষ্ট মুরুব্বির বাসার গ্লাস ভাঙ্গি বা গণিতের দীপু স্যারের সাইকেলের চাকায় পিন মেরে পাংচার করি।

আদনান০৫০৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন আমি সিনেমার শিল্পমূল্য বিচারে অস্কারকে বোগাস বলি

২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ১:৪৮

বেশ কিছু মুভি নিয়ে আলোচনা করতে গেলেই যদি “ভালো লাগেনাই”বলে ফেলি – ভালো লাগছে এমন লোকজনের তীব্র আক্রমণের শিকার হই। “কেন ভালো লাগছে?” – সেই প্রশ্নের জবাবে “অস্কার পাইছে, ভালো লাগবেনা কেন?” এই যুক্তি হইলো বহুলচর্চিত একটা উত্তর। তো প্রতিবছরই এই অস্কার প্রদানের কিছুদিন আগেপরে যে কানাকানি-গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়, এইটা নিয়ে মাতামাতিতে সবসময়ই নিরাসক্তি অনুভব করেছি। অস্কারের আগে আগে মুভি নিয়ে জল্পনা-কল্পনা, আর পরে না পেলে হাহুতাশ মোটামুটি নিয়মিত একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব কম ক্ষেত্রেই দেখেছি পছন্দের ক্যাটাগরীতে পছন্দের শিল্পী না পাওয়ায় আফসোস করেনা। আজকে আমি ব্যাখ্যা করবো সিনেমার শিল্পমূল্য বিচারে কেন অস্কারকে আমি সবসময়ই একটা বাজে মাধ্যম হিসেবে মনে করে আসছি।



অস্কার নিয়ে কিছু সূচনাবক্তব্য





বর্তমানে সুপরিচিত “দা অস্কার”-এর আগের নাম ছিলো “একাডেমী এওয়ার্ডস”, আম্পাস বা “একাডেমি অফ মোশন পিকচার্স আর্টস এন্ড সাইন্স” এর একটি উদ্যোগ। আম্পাস-এর প্রতিষ্ঠাতা আমেরিকার বিখ্যাত মুভি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান “মেট্রো- গোল্ডউইন-মেয়ার”। ১৯২৯ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করা এই পুরষ্কারটি দেয়া হত ৯ টি বিভাগে, যদিও বর্তমানে ২৫টির মত বিভাগে মনোনয়ন দেয়া হয় এতে- আসছে ২০১৪এর মার্চের দিকে হবে অস্কারের ৮৬তম আসর। সারা বিশ্বজুড়ে ১০০টিরও বেশি দেশের টেলিভিশনে অস্কারপ্রদান অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, আর অস্কারকে ঘিরেই বহু পরিচালক-প্রযোজক তাঁদের মুভির মুক্তির তারিখ নির্ধারণ করেন – এ কারণে বেশ ভেবেচিন্তেই এই বস্তুটির বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে আমাকে।



কিছু বিখ্যাত সমালোচনা

অস্কার অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রচার ও প্রসার যেহেতু সারাবিশ্বব্যাপী – তাই অস্কারপ্রাপ্তিই নিশ্চিত করে একটা মুভির সারাবিশ্বে ব্যাপক ব্যবসার একটি বিজ্ঞাপণমাধ্যম হিসেবে। আর তাই “অস্কার সিজন”- এ অস্কার পাওয়ার জন্যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে লবিইং-এর ইদুঁরদৌড় খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। গুণগত মানের চেয়ে তাই বিপণনের দৌরাত্ম্যই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্কারজয়ের মাপকাঠি – নিঃসন্দেহে বলা যায়। নিউইয়র্কে এক কনফারেন্সে ২০০৯ সালে এই গোমরটাই ফাঁস করে দিলেন অস্কারজয়ী পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও কিছু অস্কার অনুষ্ঠানেরই নির্মাতা উইলিয়াম ফ্রিডকিন। তাঁর বক্তব্যের একটা বাক্যই যথেষ্ট এক্ষেত্রে – “the greatest promotion scheme that any industry ever devised for itself”।



দা ইনফর্মার(১৯৩৫)” মুভির জন্যে অস্কার পেয়েও তা প্রত্যাখ্যান করার মধ্যে দিয়েই এ কাতারে সবার প্রথমে নাম লেখান ডাডলি নিকোলস – যদিও সেটা ছিলো চিত্রনাট্যকারদের একটা ধর্মঘটের ফলশ্রুতিতে। অস্কার অনুষ্ঠানটি প্রকৃতপক্ষেই সবচেয়ে তীব্র সমালোচিত হয় “প্যাটন” ও “ডঃ স্ট্রেঞ্জলাভ” এর জন্যে বিখ্যাত জর্জ সি. স্কট ১৯৭০ সালে “প্যাটন” মুভিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেতা পুরষ্কার পান এবং অস্কারকে “meat parade” উপমায় অভিহিত করে তাচ্ছিল্য করেন (অস্কার নিয়ে তাঁর তীব্র তাচ্ছিল্যভরা বক্তব্য – “a two-hour meat parade, a public display with contrived suspense for economic reasons. I don’t want any part of it.”)। অবাক করার জন্যে একজনের প্রসংগ না এনে পারছিনা – তিনি মার্লোন ব্রান্ডো। আর তিনি ১৯৭২ সালে “দি গডফাদার” মুভির জন্যে সেরা অভিনেতার পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করেন – কারণটা ছিলো আদি(নেটিভ) আমেরিকানদের প্রতি হলিউড ইন্ডাস্ট্রির বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ।



ভোটিং-এর প্রিমর্টেম – পোস্টমর্টেম





প্রতিবছরের অস্কারের মনোনয়নপর্ব শুরু হয় নভেম্বরের দিকে।



কিভাবে পুরষ্কারপ্রত্যাশীরা মুভি জমা দেয়?

প্রায় ৬০০০ এর মত মেম্বারের পুরষ্কারের জন্যে ভোট দেয়ার ক্ষমতা থাকে। আর নিজেদের বানানো মুভি যাতে ভোটাররা ঠিকঠাকভাবে দেখে তা নিশ্চিত করার জন্যে ভোটারদের জন্যে মুভির ডিভিডি, কমার্শিয়াল কপি বা স্পেশাল স্ক্রিনিং-এর ব্যবস্থা করে দেয় আগ্রহী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা ব্যাক্তি। একাডেমীর দাবি অনুযায়ী – এইক্ষেত্রে যাতে কোনোপ্রকার কারচুপি, মুভির কপির সাথে উপঢৌকন পাঠানো না হয় সে ব্যাপারে তীক্ষ্ম নজরদারি করে তাঁরা।



কারা ভোট দেয়? কারা ভোট গোণে?

ভোটের ব্যালটপেপার একাডেমীর মনোনীত প্রায় ৬০০০ মেম্বারের কাছে পৌঁছানো হয় ডিসেম্বরের শেষদিকে। প্রত্যেকটি ইন্ডিভিজুয়াল ক্যাটাগরীতে মনোনয়ন দিতে বেছে নেয়া হয় সেই পেশাগত মেম্বারদেরকেই। যেমন – পরিচালকরা সেরা পরিচালনা ক্যাটাগরী, অভিনেতা-নেত্রীরা অভিনেতা-নেত্রী ক্যাটাগরীতে, সম্পাদকরা সম্পাদক ক্যাটাগরী, গ্রাফিক্স-কস্টিউম ডিজাইনসহ বাকি ক্যাটাগরীতেও সেই কাজগুলোতেই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মেম্বাররা ভোট দিবেন। তবে “এনিমেটেড ফিচার ফিল্ম” এবং “ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ফিল্ম” এই দুটি ক্যাটাগরীতে ভোটপ্রদান করেন বিভিন্ন শাখায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন “স্ক্রীনিং কমিটি”র ভোটাররা। আর “বেস্ট পিকচার” ক্যাটাগরীতে ভোট দেন সব মনোনীত ভোটাররাই।



জানুয়ারীর প্রথমদিকে এই ব্যালট পেপার ভোটারদের কাছে থেকে সংগ্রহ করে পাঠানো হয় আন্তজার্তিক একাউন্টিং সংস্থা প্রাইসওয়াটারহাউজকুপার্স’এর কাছে। জানুয়ারীর ৩য় সপ্তাহের যেকোনো একদিন বিকেল ৫.৩০-এ একাডেমীর নিজস্ব ভবন স্যামুয়েল গোল্ডউইন থিয়েটারে একটি প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে নমিনেশন রেজাল্ট বা প্রথম মনোনয়নগুলো জানিয়ে দেয়া হয়।



চূড়ান্ত ভোটগ্রহণপর্ব

জানুয়ারীর শেষদিকে চূড়ান্ত নির্বাচনের ব্যালটপেপার পাঠানো হয় ভোটারদের কাছে। তা গণনার জন্যে সংগ্রহ করা হয় অল্পকিছুদিনের মাঝেই। অস্কারের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটা হয় রবিবারে – আর সেই রবিবারটাকে বলা হয় “অস্কার সানডে”। এই অস্কার সানডের ঠিক আগের মঙ্গলবারটাতে সংগৃহীত ব্যালট গণনার জন্যে প্রাইসওয়াটারহাউজকুপার্সের কাছে পাঠানো হয়। নির্বাচিত পুরষ্কারগুলি কাদের কাছে যাবে – এই তথ্যটা অস্কার চূড়ান্ত পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঘোষণার আগে একটা খামে বন্দি থাকে – আর সেই খামের ভিতরকার মনোনীত কলাকুশলী বা মুভির নাম জানে শুধুমাত্র প্রাইসওয়াটারহাউজকুপার্সের ২ জন কর্মকর্তাই।



ভোটপদ্ধতি

আগেই বলেছি – সেরা মুভি নির্বাচনের জন্যে ব্যালট পেপারে সিল পড়ে মোট ২ বার। এবার কিভাবে ভোটিং গণনাশেষে মনোনয়ন দেয়া হয় তা আলোচনা করবো।



যে পদ্ধতিতে অস্কারের সেরাদের নির্বাচন করা হয় তাকে বলে “ইন্সট্যান্ট রান-অফ ভোটিং”। এই পদ্ধতিটি বহুল ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি নির্বাচনগুলোতে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৩০০-র কাছাকাছি সঙ্খ্যাক মুভি জমা হয়, আর সেখান থেকে ভোটাওরদেরকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিতে হয় ৫ টি(সেরা মুভি ক্যাটাগরীতে মাঝেমাঝে ১০টিও মনোনয়ন হতেপারে কালেভদ্রে)। এতগুলো মুভি থেকে যেগুলো একেবারেই “সর্বোচ্চ পয়েন্ট” পায়না তারা সরাসরিই বাদ পড়ে যায়। ক্রমান্বয়ে সবচেয়ে কমসঙ্খ্যাক “সর্বোচ্চ পয়েন্ট” পাওয়া মুভি বাদ পড়তে থাকে – এভাবে চূড়ান্ত মনোনয়নের জন্যে ৫টি অবশিষ্ট থাকে। আর দ্বিতীয়বারের ভোটিং শেষে বেছে নেয়া হয় বিজয়ীকে।



এই পদ্ধতির সমস্যা হচ্ছে – যদি কোনো মুভি সব ব্যালটেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পয়েন্ট পায়ও, তারপরেও তা হেরে যেতে পারে অন্য মুভি যা কিনা অল্প কিছু ব্যালটেই সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেয়েছে তার কাছে। আবার ধরা যাক ৮০% ভোটারই কোনো একটি মুভিকে ভোট বাজে দিলো, কিন্তু ২০% দিলো “সর্বোচ্চ পয়েন্ট” – সেই ৮০% তাদের ভোটগুলো একেকজনে একেক মুভিকে দিলো – আখেরে জয়ী হবে ৮০% লোক যাকে পছন্দ করেনি সেই মুভিই। ধারণা করা হয় – আমেরিকার ২০০০ সালের নির্বাচনে রালফ নাদের, বুশের তুলনায় গোরের ভোটে বেশি ভাগ বসিয়েছিলো বলেই আখেরে বুশ জয়ী হয়েছিলো।



বহু বিতর্ক থাকলেও ১৯৩৬ সাল থেকে এই পদ্ধতিটিই চালু আছে অস্কারে, প্রতি ১৫ বছর পরপর এই নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে রিভিউ হয়, কিন্তু এত বছরেও এই পদ্ধতিকেই অস্কার কমিটি স্বীকৃতি দিয়ে রেখেছে।



পদ্ধতিটি বুঝার জন্যে নিচের ছবিটা দেখা যাক এবং আমার দেখা কয়েকটি মুভি নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা করা যাক–







# স্টেজ ১ :

সর্বোচ্চ পয়েন্ট ১ ও সর্বনিম্ন ৪ ধরে ১৪ জন ভোটারকে A, B, C, D – এই ৪টি মুভিকে ভোট দিতে বলা হলো। দেখা গেলো D সবচেয়ে কমসংখ্যাক অর্থাৎ মাত্র ২টি “১” পেয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগক্ষেত্রেই সে ২ পেয়েছে। অর্থাৎ, বেশিরভাগ লোকই D –কে খুব ভালো না বললেও ভালো বলছে, আর কেউই তাকে বাজে মনে করেনি বা “৪” দেয়নি। কিন্তু নিয়মানুযায়ী সে বাদ পড়বে।



আমার নিজস্বই মত – এই D হিসেবেই অনেক গ্রেট ফিল্ম ও ফিলমেকাররা বাদ পড়ে যান। উদাহরণবশত, আপনি কুব্রিকের মুভিগুলোকে ধরতে পারেন। কেউই এগুলোকে একেবারেই বাজে বলবেনা, কিন্তু হাইলি এপ্রিশিয়েট করে খুব কম লোকই। আর অনেকেই একে ভালো, একটু ভালো – এমন এপ্রেসিয়েশনই করবে। প্রসঙ্গত – কুব্রিক অনেকবারই মনোনয়ন পেলেও কখনোই অস্কার পাননি। আমার অন্য ২ সবচেয়ে প্রিয় ফিল্মমেকার – ক্রিস্তফ কিয়েসলোস্কিসত্যজিত রায় – বিদেশী বলে তারাও কিন্তু অস্কার পাননি(সত্যজিত পেয়েছিলেন মৃত্যুশয্যায়, তবে তা কোনো মুভির জন্যে না- সম্মাননা পদক পেয়েছিলেন।)। অথচ এই ৩ মহারথীর মুভিগুলো যুগযুগ ধরে মানুষের মনে বেঁচে আছে। সমসাময়িক মুভিগুলোর কথা চিন্তা করুন – কয়টিই বা সর্বকালের সেরার যে কোনো লিস্টে আছে? আর হিচকক? – প্রায় ১৫ বার করে নমিনেশন পেয়েও জিতেননি কখনো!!! চ্যাপ্লিন? ২ বার নমিনেটেড আর ১ বার জয়!!!



# স্টেজ ২ :

এবার ৪টি মুভির মধ্যে D কে “১” দেয়া ভোটাররা C কে দিয়েছিলো “২” করে। তাই D এর প্রাপ্র “১” পয়েন্টগুলো C কে দেয়া হলো। ফলস্বরুপ – A ও C উভয়েরই “১” হয়ে গেলো।



# স্টেজ ৩ :

B এর “১” সবচেয়ে কম – তাই বাদ দিন। B কে যারা ১ দিয়েছিলেন তারা D কে দিয়েছিলেন “২” করে, C কে দিয়েছিলেন “৩” করে, A কে দিয়েছিলেন “৪” করে। তাহলে C কেই দেয়া হবে B এর প্রাপ্ত “১” গুলি। তাহলে বিজয়ী হলো আখেরে C ই। মানে “টাইটানিক” এর ক্ষেত্রে ১১টি পুরষ্কার পাওয়া নিশ্চিত হলো যেভাবে। খুব কম লোকই তাকে “খুব ভালো” বললো, খুব কম লোকই তাকে “খুব খারাপ” বললো, মোটামুটি বেশিরভাগই তাকে এভারেজের চেয়েও খারাপ বললো(সন্দেহ থাকলে C এর অবস্থা পুনঃদ্রষ্টব্য)– তাতে কি? “হেয়ার গোজ দা অস্কার টু… ট্যাঁ… ট্যাঁ…ট্যাঁ…”। জেমস ক্যামেরন অস্কারের বিচারে বোধহয় সবচেয়ে সফল পরিচালক – নাকি?



প্রিয় কিছু মুভি এবং তাদের অস্কার স্বীকৃতির হাল

আমি কবে থেকে অস্কারের প্রতি নিরাসক্তি ভোগ করছি এবং কেন করছি?



প্রায় ৭-৮ বছর আগে দেখা আমার প্রিয় মুভি It’s a Wonderful Life (1946) – মুভিটি, খুবই প্রিয় অভিনেতা জেমস স্টুয়ার্ট, প্রিয় একজন ডিরেকটর ফ্রাঙ্ক কাপ্রা – ১৯৪৭ সালে অস্কার হারিয়েছিলো The Best Years of Our Lives (1946) মুভিটি ও কলাকুশলীদের কাছে। হেরে যাওয়া আর জয়ী হওয়া দুটি মুভির পুরষ্কারগুলো দেখুন, অথচ ইট’স এ ওয়ান্ডারফুল লাইফ মুভিটি আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট(আমি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করি এদেরকেই) এর মতে ঠিকই সর্বকালের সর্বসেরা মুভি, পরিচালক, অভিনেতা, ভিলেন – অনেকগুলো ক্যাটাগরীতেই বেস্ট ইয়ারস অব আওয়ার লাইভসকে যোজন যোজন ব্যবধানে পিছনে ফেলেছে।



এরপর কুব্রিকের ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ আর তার এলেক্স চরিত্র, ব্যারি লিনডন, আইজ ওয়াইড শাট(এটা পাবেওনা তা স্বাভাবিক – কারণ আমেরিকার ছদ্মবেশী সমাজ আর অভিজাত শ্রেণীর আঁতে ঘা লেগেছে), ডঃ স্ট্রেঞ্জলাভ, ফুল মেটাল জ্যাকেট(এগুলাও পাবেনা – কারণ যুদ্ধপাগল আমেরিকান নীতি দেখাবা আর তোমারে পুরষ্কার দিমু? এঁ!!)



সর্বকালের সেরা লিস্টের কয়েকটা মুভিই দেখি এবার – "এপোক্যালিপস নাউ" হেরেছিলো "ক্রেমার ভার্সেস ক্রেমার"-এর কাছে- জানি এপোক্যালিপ্সের উপরে ক্রেমার ভার্সেস ক্রেমারকে দাঁড় করাতে পারবেন যদি ১০০ বছরে আপনার দেখা সেরা ফিল্ম হিসেবে বাছতে বলা হয়? তবে বেশি অবিচার না হলেও একটু আধটুতো হয়েছেই শশাঙ্ক রিডেম্পশানের প্রতি, পাল্প ফিকশন আর ফরেস্ট গাম্পেকাছেই হেরেছে সে। হালের সবচেয়ে বোগাস অস্কার যদি আমি বলি, চূড়ান্তভাবে যেবার থেকে অস্কারের প্রতি বিন্দুমাত্রও যা আগ্রহ ছিলো তা বর্জন করেছি তা হলো ২০০৯-এ ডার্ক নাইট, কিউরিয়াস কেস অব বেঞ্জামিন বাটন, রিডার, ভিকি ক্রিস্টিনা বার্সেলোনা এর মত শক্ত চিত্রনাট্যের মুভিগুলোকে উতরিয়ে ৯-১০ টি অস্কার জিতে নেয়া স্লামডগ মিলিয়নিয়ারের এমনকি চিত্রনাট্য ক্যাটাগরীতেও অস্কার জেতায়। মিউজিক ক্যাটাগরীতে দিলেও আমার আপত্তি নেই – কিন্তু বাকি গুলো?!! এরপরেই ঘোষণা দিলাম “অস্কার ফলৌজ বিজনেস/মার্কেট/ বক্স অফিস” – আর অস্কারকে বোগাস মনে করে দূরে থাকলাম।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:০৩

বোকামন বলেছেন:
ভালো লিখেছেন !!
আমি নিজে মুভিও দেখার সময় অস্কার বিষয়টি খুব একটা মাথায় রাখি না।

২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮

আদনান০৫০৫ বলেছেন: আমি আগে মাথায় রাখতাম, এখন বুইঝা গেছি... রাখিনা।

২| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৩৪

ফেলুদার চারমিনার বলেছেন: শোকেসে রাখলাম, পরে পড়ে দেখবো

২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৮

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ২:৩৪

নিষ্‌কর্মা বলেছেন:

অস্কার নিয়ে মাতামাতি হয় একটাই কারনঃ (আমার মনে হয়) অস্কার মুভিগুলো হিট ছবি।

খেয়াল করলে দেখবা, জেমস বন্ড বা এয়ার ফোর্স ওয়ানের মত ছবিগুলো যে অস্কার পায় না। এর কারণ বুঝতে পারি না। তখন মনে হয় অস্কার ওদেরকে এড়িয়ে চলে আর একটু হাইথটের মুভিকে প্রাইজটা দেয়। যাতে করে বিশ্বের লোক বলে যে আম্রিকানরা ইউরোপিয়ানদের মত সভ্য, একটু-আধটু সাহিত্য বোঝে!

I appreciate ur collection. Still watching those I collected from you.

২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪২

আদনান০৫০৫ বলেছেন: বন্ড বা এয়ার ফোর্স ওয়ান মুভিগুলা পায়না - কারণ ঐগুলা সবার ভালো লাগেনা - যেমন আমার লাগেনা। খুব বেশি কিছু চিন্তাআর খোরাক পাইনা তাই দেখিনা।

ইয়ে মানে... আপনারে চিন্তে পারলামনা... একটু করে আওয়াজ দিলে ভালো হইতো।

৪| ২৩ শে জুন, ২০১৩ রাত ৩:০৮

স্বপ্নবাজ বাউন্ডুলে বলেছেন: অনেক তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট।

+++++

২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪২

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২৩ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

হাসান মাহবুব বলেছেন: চোখ বুলিয়ে গেলাম। বিস্তারিত মন্তব্য করব পরে আশা রাখি। অনেক অনুযোগ আছে। আপাতত এটাই বলি, দ্যা কিংস স্পিচ এর মত গড়পড়তা ভালো মুভি ব্ল্যাক সোয়ানের সাথে জিতে যায়! টেরিবল!

আর ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জের কথা নাই বা বললাম! এইটা হজম করার ক্ষমতা ভোটদাতাদের এখনও হয় নাই।

এ্যাপোকালিপস নাউ এখনও দেখি নাই। তবে ক্রেমার ভার্সের ক্রেমার আমার কাছে যোগ্যই মনে হয়েছে। তোমার কথা শুনে এখন কম্পেয়ার করার জন্যে হলেও ওটা নামিয়ে দেখব।

২৩ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

আদনান০৫০৫ বলেছেন: এইটাই হামা ভাই... গড়পড়তা ভালো মুভি আর অলটাইম গ্রেটের কাতারের মুভির মধ্যে পার্থক্য আছে। অস্কারের রাশ-এ গড়োপড়তা মুভি হয়তো খুব ভালো লাগবে - কিন্তু ১ বছর পরে দেখা গেলো সেটা আর ভালো লাগতেছেনা... এইটা নিয়মিত সত্য ঘটনা।

আসলেই, কুব্রিকরে পুরষ্কার তুলে দেয়ার মত সিনেমার হাত খুব বেশি নাই, ভোটাভুটি করার মত ভোটারও নাই।

মাস্ট সি... এপোক্যালিপ্স দেখেন, আমি মোটামুটি নিশ্চিত আপনার ক্রেমারের চেয়ে সেটাকেই যোগ্যতর মনে হবে। গ্রেটেস্ট লিস্টে কিন্তু এপোক্যালিপ্স অনেক উপরে আছে এখনো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.