নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপটু

সমাজবদ্ধ কিংবা মুক্তকারাবদ্ধ এই আমরা শান্তির পথে হন্যে হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত

আদনান০৫০৫

এখনো আমি স্বপ্নে মাছরাঙ্গা পাখির ডানায় ভর করে ছোঁ মেরে মাছ ধরি, কিশোরের আঙ্গুলের টোকায় মাথা ঘুরতে ঘুরতে আমারই মত আরেক মার্বেলের গায়ে ধাক্কা মারি, দুরন্ত বালকের মত ঢিল মেরে মানুষের গাছের ফল চুরি করি, বন্ধুদের সাথে চ্যালেঞ্জ করে এলাকার দুষ্ট মুরুব্বির বাসার গ্লাস ভাঙ্গি বা গণিতের দীপু স্যারের সাইকেলের চাকায় পিন মেরে পাংচার করি।

আদনান০৫০৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

NOIRISH

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:৪১



ছবিঃ Noirish Feelings by Mashroor Nitol



এলিটিজম

এইঅংশের গল্পটা খুব সুখের – তাই যারা যারা সুখে এলার্জি আছে তারা স্কিপ করতে পারেন… সুখে এলার্জি থাকা বলতে – ভ্যাপসা গরমের মধ্যে মাথার উপর সূর্য নিয়া রিক্সায় বসে বসে এসিওয়ালা গাড়িতে বসা মানুষদের দেখলে যারা অযথাই সেই মানুষগুলার ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করেন – তাদের কথা বলতেছি আমি।



গল্পের এখানে বলবো রায়হান চৌধুরীর কথা। হ্যাঁ, এই উনার মত চৌধুরী সাহেবরেই সব সিনেমার ছোটলোকের বাচ্চা নায়কেরা “চৌধুরী সাহেব…” বইলা চিৎকার মারতে গিয়া মুখ দিয়ে থু থু ছিটকায়া পড়ে- ক্যামেরায় ধরা না পড়লেও আমরা বুঝি- কারণ, আমাদের বাস্তবজীবনই যে ঐ নায়কের জীবনের প্রথম ভাগের কাহিনী আর শেষভাগের কাহিনীরে নিজের জীবনে বাস্তব করার জন্যেই আমরা প্রতিদিন শার্টের কলার কালো বানাই।



আজকে চৌধুরী সাহেবের মন খুব ফুরফুরা। তাঁর অফিসের জয়েন করা নতুন পিএস মেয়েটা তাঁর সাথে আজকে চিটাগাং-এ ২দিনের বিজনেস ট্যুরে বেরোবে। এই মেয়ে বহুত ত্যাঁদড় আছে – একটু বোকা কিসিমেরও। অফিসের বসরে খুশী করতে পারলে যে তরতর কইরা উপরে উঠা নিশ্চিত এই মেয়ে তা বুঝেনা। আগেরটা বুঝতো, কিছু বলার আগেই বুইঝা যাইতো – কিন্তু চৌধুরী সাহেব আবার ১ বছরের বেশি কোনো পিএসরে অফিসে রাখেননা – এটা প্রাইভেসি’র জন্যে সুবিধা। প্রাইভেট সেক্রেটারীর কাছে ব্যাক্তিগত তথ্য গোপন করার জন্যে এইটা বেশ কাজে দেয়। তাছাড়া চোখ সওয়ার একটা ব্যাপার আছে না! ১ বছরের বেশি একই পিএস রাখাটা কাইন্ড অফ ব্যাকডেটেড। ইউ নৌ… চৌধুরী সাহেব হ্যাজ টু ডিল উইথ বিজনেসপার্সনস… আর বিজনেস ইজ রিক্রিয়েশন, ফর রিক্রিয়েশন এন্ড বাই রিক্রিয়েশন। এসব সবাই বুঝবেনা – থাক সে কথা।





ছবিঃ Joy – by Gerard Boersma



যাই হোক – নতুন মেয়েটারে রাজি করাতে বেশ ঝক্কি পোহাইতে হইছে চৌধুরীরে। ইনিয়ে-বিনিয়ে- আড়ালে – আবডালে- ইশারা-ইঙ্গিতে বহুবার বুঝানোর চেষ্টা করছেন তাঁরে খুশী না করতে পারলে এই অফিসই শুধু না – এই মেয়ের ভবিষ্যতেও ভালো কিছু হইবোনা। শেষ পর্যন্ত ৩দিন আগে এক আর্ট এক্সিবিশনে তারে নিয়ে যাওয়া হইছিলো এবং সেখানে তার একটা পছন্দের ছবি কিনে দেয়ার বায়না মিটানোতে এই মেয়েরে রাজি করা গেছে। আজকালকার মেয়েগুলার এই হইলো প্রবলেম – এরা শিল্প ঘাঁটে। আরে বাবা! কালিকুলি দিয়া আগপাছ বুঝা যায়না এগুলার মধ্যে এরা যে কি পায়! চৌধুরী গত ২০ বছর ধরে বিজনেস করতেছেন, কম পিএসতো দেখেন্নাই! এই ৫-৭ বছর আগেও মার্কেট থেকে দামি কিছু কাপড়চোপড়, বিদেশ থেকে কয়টা দামি কসমেটিক্স কিনে দিলেই পিএসরা গদগদ হয়ে ঝুইলা পড়তো, আর এখন! ছ্যাঁ!! আল্লাদে আর বাঁচিনা!



গত বছর “লাকোস্টে” থেকে কেনা লাল টাইটা গলায় ঝুলাইয়া চৌধুরী উঠলেন গাড়িতে। লাল টাইয়ের ব্যাপারটা যে শুধু অনন্যা লাল পছন্দ করে তার জন্যে না, লাল হইলো আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। আজকের দিনে চৌধুরীর এটা বেশি দরকার – শি ইজ আ টাফ কিড। অনন্যারে রিসিভ করতে তার বাসা বনানীর দিকে যাওয়া লাগবে – এখানেই আবার আরেক সমস্যা, একটু লুকাইয়া যাইতে হবে। বনানীর দিকে চৌধুরীর বড় পোলা আবার ভার্সিটিতে পড়ে, প্রায়শই তারে ঐখানে রাস্তায়ই দেখা যায় বন্ধুবান্ধব নিয়ে আড্ডা দিতে। আজকালকার পোলাপান যা হইছে না! পড়ালেখার নাম দিয়া সারাদিনরাত টোটো আর আড্ডাবাজিই কইরা বেড়ায় – এটা নাকি আবার হ্যাংআউট। এসব মাথায় আসেনা চৌধুরীর – তাদের সময়ে মাইলখানেক হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলকলেজে যাওয়া লাগতো –হাঁটতে হাঁটতেই কত বন্ধুত্ব, কত খুঁনসুঁটি-ভালবাসার গল্প তৈরী হতো… আর এখনকার পোলাপান ১০ মিনিটের পথও গাড়ি, তাও আবার স্পোর্টসকার নিয়ে বাইর হয়- আর ক্যাম্পাসে গিয়াই এই গাড়ির শৌঅফ চলে, এগুলা না হইলে নাকি আজকাল কেউ পাত্তা দেয়না।



থাক সে কথা আপাতত।



মনোটনি!

গল্পের এই পার্টটা বোরিং লাগতে পারে, চাইলে স্কিপ করতে পারেন। অথবা গড়গড় করে স্কিমিং করে যাইতে পারেন। বোরিং এই অর্থে – যে ক্লাসের লোকের কথা এখানে আলোচনা করবো তাতে খুব একটা আকর্ষণীয় কিছুই নাই। স্টিভ জবস কিভাবে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে, মন্দিরের খাবার খেয়ে দিন গুজার করেও বিজনেস টাইকুন হইছে সে গল্পটা অথবা ওয়ারেন বাফেট কেমনে টাইকুন হয়েও নিতান্ত গরীবি হালতে চলাফেরা করছে অথবা কিয়ানু রিভস কি করে কোটি কোটি ডলার কামাইয়াও বাসে-ট্রামে সাধারণের মত চলাফেরা করে – এসব গল্পগুলা শুনতে হয়তো সবার ভালো লাগে, কিন্তু এখানে যার কথা বলবো তার মত লোকদের গল্পগুলা খুব একটা সেক্সি না। এসব লোকগুলা শুকতলা ক্ষইতে ক্ষইতে বড়জোর কোনো একটা কোম্পানীর হেড এক্সিকিউটিভ পদ পর্যন্ত যাইতে পারে – এই গল্পতে মজার কিছু নাই। এরা মেনজ ক্লাব থেকে হাজার দুই-তিনেক টাকা দামের জামাকাপড় পরে বন্ধুমহলে একটু-আধটু ভাব নিতে পারে, কিন্তু মাঝেমাঝে আরেক বন্ধুমহলেই আবার তাদের রুচি-কিপ্টামি নিয়ে হাসির রোল পড়ে যায়। এদের বহু কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে মেনজ ক্লাবের যা ২-১টা দামি জামাকাপড় কেনা হয়, সেগুলা খুব বেশি টিকেওনা- সপ্তাহে ৩ দিন একইটাই পাল্টাপাল্টি করে ধোয়া আর পরা, তার মধ্যে আবার বাস-টেম্পুতে গাদাগাদি করে চলাফেরা করতে করতে খুব দ্রুতই ক্ষয়ে যায়। মোটকথা – এরা সমীহ করে অনেক বেশি, কিন্তু সমীহ জিনিসটার বরাদ্দ এদের জন্যে যোজন যোজন কম। এদের মানিব্যাগ ৩ ইঞ্চি ফোলা থাকে বিভিন্ন কোম্পানীর হোমড়াচোমড়াদের কার্ডে, যদিও পশ্চাতদেশের ডান পাশ বা বাম পাশটা অন্য পাশের তুলনায় খানিক কম মাংসল হওয়া ছাড়া সেগুলা খুব একটা কাজে আসেনা। মানিব্যাগটাতে লটারীর টিকেট থাকে, থাকে আইপিও শেয়ারের নাম্বারগুলা – ভাগ্যদেবীর প্রতি অগাধ বিশ্বাস থাকলেও, ভাগ্যদেবীও এদেরকে বোরিং মনে করে জাতে উঠায়না।



শামসুর রহমান সৃজন নামের ছেলেটারে কলেজের সবাই “শামসু” নামে ডাকে, “সৃজন” নামে কেউ তারে ডাকেনা – তার চেহারার সাথে নাকি এই নাম যায়না। এই জন্যে তার মনে খুব অশান্তি – আর্ট কলেজে পড়া একটা ছেলেরে কেউ “শামসু” নামে ডাকবে – এটা খুবই অপমানজনক একটা ব্যাপার। সে কিন্তু এমনিতে মেধাবী ছাত্র ছিলো, কিন্তু বাপ-মায়ের চোখরাঙ্গানিরে গুরুত্ব না দিয়া সে আর্টিস্ট হওয়ার ব্রত নিয়ে আর্ট কলেজে ভর্তি হইলো – ছোটবেলায় “ফটোগ্রাফিক মেমোরী” থেকে খুব দ্রুত ছবি আঁকার প্রতিভা ছিলো তার। তাছাড়া পাড়ার শফিক ভাই – যিনি সিনেমার পোস্টার আর বিলবোর্ড এঁকে ভালোই টাকা কামান, উনিই তারে উদ্বুদ্ধ করছেন এই লাইনে আসার জন্যে – বড় আর্টিস্ট হইতে পারলে একেক ছবির জন্যে মিনিমাম লাখ টাকাও পাওয়া যেতে পারে, আর না হলেও পোস্টার আঁকার কাজতো আছেই। তবে শফিক ভাইসহ পাড়ার সবাই তার বেশ প্রশংসা করে – সে নাকি বড় আর্টিস্ট হবেই একদিন।





ছবিঃ Painter (1961) by G.Korzhev



আজকের দিনটা শামসু’র জন্যে খুব আনন্দের একটা দিন। ৩ দিন আগে হঠাৎ করেই তাদের আর্ট কলেজের থেকে একটা এক্সিবিশনে তার আঁকা একটা পেন্সিল স্কেচ এক মালদার পার্টি কিনে নিছে ২০ হাজার টাকায়। ভাগ্যদেবী এতদিনে তার প্রতি সহায় হইছে, তাও একেবারে যা-তা সহায় না- এক্কেবারে যারে বলে কানায় কানায় ভরিয়ে দিছে তার প্রার্থনার থালাটা। মাত্রই ১সপ্তা আগে রাস্তার পাড়ের চায়ের দোকানে বসে রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকা গাড়িগুলার দিকে তাকাতে তাকাতে একটা দৃশ্য তার চোখে পড়তেই খচখচ করে আবোলতাবোল একটা ছবি এঁকে ফেললো, ওদিকে কলেজের মাহমুদ স্যার আবার বললেন যেমনেই হোক একটা কিছু এক্সিবিশনে দিতেই হবে – এটা নাকি এসাইনমেন্টের পার্ট। তার নিজের আঁকা অনেক ছবিই আছিলো – কিন্তু মনে মনে ভাবলো কলেজের এই এক্সিবিশনে খুব বেশি লোকজন আসবেনা – এতদিন ধরে যত্নে আঁকা ছবিগুলারে এরকম সস্তা এক্সিবিশনে না দিয়ে বরং এই পেন্সিল স্কেচটাই দিয়ে দিলো। আর এটাই যে ২০ হাজার টাকায় কেউ কিনে নিবে তা সে ভাবতেও পারেনাই। যে ভদ্রলোক এটা কিনছেন তিনি খুবই প্রশংসা করছিলেন এই ছবির, আর তাঁর সাথে আসা মহিলাতো পুরাই গদগদ এটা দেখে। ভদ্রলোক পুরা ছবিটা খুঁটাইয়া খুঁটাইয়া এনালাইসিস করে বলছিলেন কিছু কমপ্লেক্সশন, লাইটিং, স্কেচিং ডেপথ-এর কাজ নিয়ে, তিনি নাকি ইউরোপ-আমেরিকায় শুধুমাত্র নামীদামী পেইন্টারদের ছবি দেখতেই বিভিন্ন এক্সিবিশনে যান – বাংলাদেশেও এই টাইপের কাজটাজ হয় দেখে খুব আশ্চর্য্য হলেন। যদিও মহিলার জোরাজুরিতে ছবিটা কিনছেন বলে মনে হইলো, লোকটারে খুব একটা খুশিও মনে হইলোনা।



কমিজারেশন

এই অংশটা পড়তে নিলে একটু আবেগপ্রবণ হলেও হইতে পারেন। বিশেষ করে আপনি যদি মানবিক দিক দিয়ে খুবই উঁচুশ্রেণীর হন। আই মিন… ধরেন আপনি এসি রুমে শুয়ে আছেন, রাস্তায় বাইর হনও এসি গাড়ীতে চইড়া, শপিং মলে যান বা বাইরে খাইতে যান, ব্র্যন্ড দিয়ে আগাগোড়া মোড়া থাকেন – কিন্তু এত কিছুর পরেও গরীব মানুষের কষ্ট দেখে স্থির থাকতে পারেননা – আপনার জন্যে টিস্যু পেপার পাশে রাখাটা রিকমেন্ড করলাম। এইখানে যার কথা বলবো তাদের জন্যে আপনার দরদের সীমা নাই। তৃতীয় বিশ্ব নিয়া সবাই আফসোস করে কিন্তু আপনি আফসোস করেই ক্ষান্ত দেন তা না, আপনি তাদের নিয়া ভাবেন ঘন্টার পর ঘন্টা। আপনি চেগেভারা’র টিশার্ট পরেন কিন্তু চলনেবলনে বিলাসব্যসন দেখান বলে যে বন্ধুরা আপনারে নিয়া টিটকারি করে আপনি তাদের সাথের আড্ডায় ঝড় তোলেন তৃতীয় বিশ্বের মানুষগুলার জন্যে “কিছু একটা করা দরকার” টাইপের বক্তৃতা দিয়ে। আপনি ইভেন্ট পেইজ খুলেন, শতশত বন্ধুরে ইনভাইট করেন – মাঝেমধ্যেই আপনারা গরীব শিশুদের একবেলা চায়নিজ খাওয়ান, ভালো জামাকাপড় কিনে দেন। সামনের দিনে ফাউন্ডেশন খুলবেনও চিন্তা করতেছেন – আপনার চেষ্টা ও মানবিক আকুলতা দেখে লোকে বিহ্বল হয়।





ছবিঃ ‘The Flower Girl’ by Augustus Edwin Mulready



কুলসুম আজকের দিনটায় ফুল বেচবেনা আর। আর্ট কলেজের এক স্যারে বলছেন তারে নাকি ভালো খাবারদাবার, কাপড় চোপড় কিনে দিবেন। স্যারে নাকি একটা ছবি আঁকছিলেন, সেখানে কুলসুমও ছিলো- সেই ছবিটা নাকি অনেক টাকা দিয়া বেচতে পারছিলেন। এই খুশিতেই স্যার নাকি তারে এই খাবারদাবার-কাপড়চোপড় কিনে দিবেন। কুলসুম তার জীবনে এরকম অনেকই দেখছে – প্রায়শই ক্যামেরাওয়ালা স্যারেরা তার ফুল হাতে নিয়ে হাসিহাসি মুখ দিয়ে ছবি তুলে, কেউই ২-৪টাকার সিঙ্গারা, পাউরুটি, কলার বেশি খুব একটা কিছু দেয়না। তবে এই স্যার বোধহয় অনেক বড় শিল্পী, বড় শিল্পী না হইলে কি আর কারুর মন এত বড় হয়! গত বছরের ঈদে কি এক ফাউন্ডেশান-মেশান কয় তারা যে লাল ফ্রকটা দিছিলো কুলসুম আজকে সেটা পরেই বের হইলো। কুলসুমের মনে অনেক খুশি আজকে – পুরাই ঈদ ঈদ লাগতেছে।



ফ্ল্যাশব্যাক- এক সপ্তাহ আগে

রায়হান চৌধুরী সাহেবের মেজাজ প্রচন্ড খারাপ। খুব গুরুত্বপূর্ণ এক মিটিং আছে অফিসে, কিন্তু গাড়ি আটকে আছে জ্যামে প্রায় দেড় ঘন্টা যাবত। এই দেশ যে কবে আগাবে! একেতো জ্যাম তার উপরে গাড়ির কাচে ঠকঠক করে ভিক্ষুক, আমড়াবিক্রেতা, ফুলবিক্রেতারা ধাক্কা দিচ্ছে কিছুক্ষণ পরপর। এদেশের ভিক্ষুকগুলা একেকটা গার্বেজ… হোয়াট অন আর্থ দে আর হিয়ার ফর?! আর আমড়া বিক্রেতাগুলোও বিক্রি করছে ফর্মালিম মেশানো লালচে ২-৩ দিন আগের আমড়া। ফুল যে চৌধুরীর পছন্দ না তা নয়, প্রতিবছরই নায়লা- মানে উনার স্ত্রী’র জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে বাসায় একগাদা ফুল কিনেন তিনি। কিন্তু আজকে এমনিতেই মেজাজটা চড়া – একটা ফুলবিক্রেতা মেয়েকে ধরে গালে একটা চড় বসিয়ে দিতে ইচ্ছা করছে। হাত ময়লা করার দরকার নাই – ড্রাইভারটা তাকে একগাদা খিস্তিখেউড় দিলো তাতে যেনো এই গার্বেজপ্রোডাক্টটা মজা পেয়েছে – দ্বিগুণ জোরে ধাক্কাচ্ছে।



ড্রাইভারকে বললেন মেয়েটাকে ধরে চড় বসিয়ে দিতে। কিন্তু ড্রাইভারটা বোধহয় বেশি জোরেই মেরেছে – মেয়েটা গালে হাত দিয়ে চোখমুখ শক্ত করে নিষ্পলক তাকিয়ে আছে চৌধুরীর দিকে – কাঁদছেও না।



রাস্তার পাড়েই বসা ছিলো শামছু – অলস বসে থাকতে থাকতে অনেকক্ষণ বোরড হচ্ছিলো সে। ব্যাগ থেকে খাতাটা বের করেছিলো কিছু একটা এঁকে টাইম পাসের জন্যে – রাস্তায় ফুলওয়ালী এক মেয়ে একহাতে কয়েকটা গোলাপ ফুল আর আরেকহাত গালে দিয়ে জ্যামে এক গাড়ির ভিতরের সাহেবের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে ছিলো – ভাবলো এই ছবিটা একেঁ ফেলা যাক – সময়টাতো কাটাতে হবে, নাকি?





ছবিঃ বর্ন টু ওয়ার্ক - জিএমবি আকাশ

মন্তব্য ৩৮ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৩৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:১৫

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
অসাম হৈসে আদনান, খুব খুব চমৎকার লাগলো।
ভেরী ওয়েল ডান ||

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মুন, পড়ার জন্যে এবং পিঠ চাপড়ে দেয়ার জন্যে।

শুভকামনা।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৮:১৬

কালোপরী বলেছেন: +++++++

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:১৩

নেকড়েমানব বলেছেন: দোস্তো, যা লিখসস অনেক কিছুই মাথার উপ্রে দিয়া গেছে, অভারল ভালাই হইসে, +++ :-B

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৬

আদনান০৫০৫ বলেছেন: তুই নেকড়েমানবরে যে চশমা পরাইতে পারছি এটাইতো অনেক।

৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: সত্যি চমৎকার!!!!!

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসঙ্খ্য ধনবাদ বর্ষণ!

৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৪৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

সুন্দর উপস্থাপনা। ++++ রইল

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদে সিক্ত হোন হে কান্ডারী!

৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: খূব ভালো একটা পোষ্ট। +।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শরৎ ভাই, পড়ার জন্যে এবং অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্যে।

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর। ভাল লাগলো + :)

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫০

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন।

৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫১

অনাহূত বলেছেন: বাহ্, কি সুন্দর ফুটিয়ে তুলেছেন প্রত্যেকটা প্লট। At the point of ending - ফুলবিক্রেতা মেয়েটা, চৌধুরী এবঙ আর্টিস্ট এর কম্বিনেশনটা দারুণ করেছেন। খুব সাধারণ, দৈনন্দিন জীবনের গল্প - ছুঁয়ে গেছে।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫২

আদনান০৫০৫ বলেছেন: দৈনন্দিন জীবনটাইতো অনেক গল্পময়... লাইক হিচকক সেইড - সিনেমা ইজ নট এ স্লাইচ অফ লাইফ বাট এ পিস অফ কেক।

ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০১

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: বহুদিন এত সুন্দর কিছু পড়ি নাই

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

আদনান০৫০৫ বলেছেন: এই প্রশংসাটা আমাকে দারুণভাবে নাড়া দিলো, এরকম কিছু লেখার তীব্র তৃষ্ণাবোধ করবো এখন থেকে।

১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৫

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঘটনা পরম্পরা এবং আন্তঃসম্পর্কের মাঝে অনেক চমৎকার ব্যাপার চলে এসেছে। সুখ, বোরডম এবং আবেগ যেন এক সুঁতোয় গাঁথা। সুঁতোর একটা প্যাঁচ খুললেই পুরা ডিজাইনের মত আমাদের অনুভূতি আর কর্মপন্থার নকশাও চেঞ্জ হয়ে যায়। অতি চমৎকার ফরম্যাটের একটা ছোটগল্প। তুমি নিয়মিত লেখো না কেন?

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

আদনান০৫০৫ বলেছেন: হামা ভাই, আপনার কাছ থেকে প্রশংসা আমার কাছে অনেক বড় একটা অনুপ্রেরণা।

আর এই গল্পটার প্যাটার্ণ কল্পনায় আপনার লেখাগুলো পড়ার প্রভাব গুরুতরভাবেই বোধ করেছিলাম।

লিখবো, অবশ্যই লিখবো।

১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

মামুলি আদমি বলেছেন: +++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ।

১২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: Banglay comments na korle mon vorbena. Ty bakita banglar jonno.

১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৮

মগজ ভরা মাথা বলেছেন: নেট ব্যাবহার করেন কিন্তু ইন্টারনেট হতে কোনো আ্য় নেই? অন্তত ইন্টারনেট আর মোবাইল খরচটা নিজেই আয় করুন খুব সহজে Click This Link

নেট ব্যাবহার করেন কিন্তু ইন্টারনেট হতে কোনো আ্য় নেই? অন্তত ইন্টারনেট আর মোবাইল খরচটা নিজেই আয় করুন খুব সহজে Click This Link


নেট ব্যাবহার করেন কিন্তু ইন্টারনেট হতে কোনো আ্য় নেই? অন্তত ইন্টারনেট আর মোবাইল খরচটা নিজেই আয় করুন খুব সহজে Click This Link

১৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভাল লেগেছে।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৪

আদনান০৫০৫ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রফেসর।

১৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: আপনার গল্পের সব কিছু আমার পছন্দ হয়েছে। আমার স্বল্প জ্ঞানের ধারণা একটা অসাধারণ গল্প আপনি লিখে ফেলেছেন। একটানে পড়ে ফেলার গল্প। না পড়ে নিস্তার পাওয়া যায় না।
অনেক ভাল থাকবেন আর ঈদের শুভেচ্ছা জানবেন।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৫

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।

ঈদের শুভেচ্ছা।

১৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫১

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: সামুভিত্তিক আমাদের একটি সাহিত্য-গ্রুপ থাকা উচিত

০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৫

আদনান০৫০৫ বলেছেন: পড়েছি। আসলেই এরকম কিছু থাকলে ভালো হয়।

১৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:০০

নূর আদনান বলেছেন: আসলেই অসাধারন হইছে গল্পটা, সাথে আবার ছবি! চমৎকার

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৪

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসঙ্খ্য ধনবাদ!

১৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২০

আরিফ আরাফাত রুশো বলেছেন: এটা তো চমতকার স্ক্রীনপ্লে।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৪৫

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসঙ্খ্য ধনবাদ

১৯| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৮

প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ার বলেছেন: ঘটনা পরম্পরা এবং গল্পের চরিত্রদের অন্তর্গত যোগসূত্র চমৎকার। দুর্দান্ত ছোট গল্প।

পুরো পড়ে মনে হল পিএস মেয়েটাকে কম আলো ফেলা হয়েছে। মনে হইছে মেয়েটা হলেও হতে পারত রায়হান চৌধুরী বড় ছেলের জিএফ। সিরিয়াস কিছু না, ভাবলাম আরকি। :)

১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২৬

আদনান০৫০৫ বলেছেন: প্রশংসা শুনে অত্যন্ত অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আরো ছোট গল্প লেখার উৎসাহ পাই তাতে।

হতে পারতো, তবে গল্পে ওকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইনি। এর আগে "মোনালিসা" লিখেছিলাম - সেটা পড়ার অনুরোধ রইলো। বুঝবেন - কর্পোরেট ঘরানার অনেকগুলো টুলসের প্রতিই আমার বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব আছে।

তার চেয়ে বরং ফুলওয়ালীকেই গুরুত্ব দিলাম। তাঁর অংশটা অনেক ছোট আকারে বর্ণনা দিলেও পুরো গল্পের ড্রাইভার সে।

অনেক ধন্যবাদ আবারো।

২০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:৩৯

অদৃশ্য বলেছেন:




খুবই সুন্দরভাবে গল্পটি উপস্থাপন করেছেন... আমার খুবই ভালো লেগেছে লিখাটি... এক কথায় চমৎকার...

সামনে আরও লিখুন... কথা হবে

শুভকামনা...

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

আদনান০৫০৫ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ অদৃশ্য। প্রেরণা আমার হাতে পদ্মফুলের মত অগণিত হয়ে ফুটুক।

শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.