নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য দুঃখিত .

হাবি জাবি মাথায় যা আসে তাই লিখি, কখনও মাথা লিখি কখনও ছাতা লিখি। লেখার উপায় যখন একটা পাইছি।

রংধণু

রংধণুর সাত রং দরকার নেই। একটা রং হলেই চলবে। সাদা। সেখানে আমি সাত রং বানিয়ে নিব।

রংধণু › বিস্তারিত পোস্টঃ

••• ভাবনার দোলাচল •••

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৭

"এই চা গরম চা গরম......... স্যার চা নিবেন??"

"হু...... না। কিরে কেমন আছিস??"

"এইতো স্যার আফনাগো দোয়ায় ভালো"

"দোয়া!! কি কস দোয়াই করি না। নিজের জন্যও করি না......"

"হে হে হে ...... কি যে কন!! "

"বেচাকেনা কেমন??"

"ঐ যে আফনাদের দোয়ায়………"

"হুম"

"স্যার আজকে চা খাইবেন না??"

"নাহ্‌, তুই বরং ঐ যে দেখছিস মেয়েটা একা বসে আছে সেই আপারে চা দিয়া আয়। পারলে একটু গল্প করিস। বেচারি একা বসে মনে হয় বিরক্ত হচ্ছে......... "



=============





" এই তুই বল ওর চেহারাটা আলু আলু না দেখতে??"

"আফাফাআআআআ......... কি যে কন! স্যারের চেহারা ছবি মাশাল্লা। পুরা হিরুদের মতো" টুকলা গদ্গদ হয়ে বলে।

"ভালো করে দেখ........."



টুকলা ভালো মতো শাফকাতের দিকে তাকায়। একবার ঘাড় ডানে আবার আরেকবার বামের দিকে দেখে। খুব নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করে যেন তাকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। তাই সে চায় না তার এই রিপোর্টে কোন গাফিলতি থাকুক।



"জে আফা, আপনে কিছুটা হইলেও হাছা কইছেন। স্যারের চেহারাটা কিছুটা মিষ্টি আলুর মতো। লাল টুইটুইক্কা।" বলেই টুকলা তার সাদা দাঁত বের করে একটা হাসি দেয়।



অনু হাতের মাঝে একটা কিল দিয়ে বলে উঠে,

"এই জন্যই তোর কাছ থেকে রোজ চা খাই। যদিও তোর চাটা পুরা যাচ্ছেতাই। তবুও খাই কারণ তুই তোর স্যারের মতোই সত্যবাদী"



আবার টুকলা তার সাদা দাঁতের ঝিলিক দেখায়।



"তুই চা একটু ভালোমতো বানাতে পারলে তোর চায়ের দাম দিগুণ করে দিব। কি ভালো বানাতে পারবি না?"

"আলবত পারমু। পাত্তিটা একটু ভালো দিতে হইব এই যা"

অনু চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বলে,

" তা কি পাতি দিস এখন??"

"লাশের লাইগা যেই পাত্তি বিক্রি করে তা দেই"



অনু অপ্রস্তুত হওয়াতে চায়ের কাপ হতে কিছু চা ছলকে তার শাড়ির কুঁচির ভাজে হারিয়ে গেল।

"কিইইইইইইইই ......... পাতি!!"

"লাশে দেওনের পাত্তি। মনসুর মিয়ার কাছে থেইকা কিনি, কম দামে পাওন যায়। ম্যালাদিনের পরিচয় বইলা আমার থেকে একটু কমও নেয়।"

"টুকলা তুই...... তুইইই কখনো আর আমার কাছে চা বেচতে আসবি না। এমনকি এই পার্কেও না। বুঝলি??"

"কি কন আফা!! তয়লে বেচমু কই?"

"যেখানে মন চায় সেখানে কিন্তু এই পার্কে না।"

" আফা কইলা-মতো ভালো চাপাতি দিয়া এখন থেইকা বানা-মু!"



"অনু কি শুরু করলে? বেচারা গরীব মানুষ। এই পাতির দাম কম তাইতো এটা ইউজ করে।"

"খবরদার তুমি আমাদের মাঝে কথা বলবে না।"



শাফকাত রোজ এমন করেই টুকলা আর অনুর মাঝে দ্বন্দ্বের সমাধান করতে গিয়েও পারে না। শাফকাতের মাঝে মাঝে টুকলাকে তার শত্রু মনে হয়। এক সপ্তাহ পর শুধু এখানে আসে শুধু অনুর সাথে একান্তে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য আর সে কিনা তাকে পাত্তা না দিয়ে টুকলা নামক এক চা বিক্রেতা ছোকরার সাথে গল্প জুড়ে দেয়। মাঝে মাঝে মন চায় টুকলাকে এক লাথি দিয়ে মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়ে দিতে।

কিন্তু অনুর জন্য তাকে কিছু বলতেও পারে না। আর এই ব্যাটাও ঠিক সপ্তাহর এই সময় আর কোন জুটি চোখে যেন তার পড়ে না, তাদের কাছেই চা বিক্রি করতে আসে।



শাফকাত ঠিক করেছে আর সপ্তাহে সপ্তাহে অনুর সাথে দেখা করবে না। অনেক হয়েছে। দেখা করার নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাছের পাতা গুণেই সময় কেটে যায় তার। কেন যে এই মেয়ের সামনে আসলে সে তার হম্বিতম্বি ভাবটা দেখাতে পারে না!!





===========





"কিরে সে কি কাঁদছে?"

"হ স্যার। মায়া লাগতেছে আপাটারে দেইখা।"

"চা খায় নাই?"

"পত্থম নিতে চায় নাই। পরে জোরাজুরিতে নিছে।'



আমি দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে দূরে বসা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। সে কিছুক্ষণ পর পর ঘড়ি দেখছে আর শাড়ির আঁচল টেনে চোখ মুছছে।

"টুকলা?"

"জে স্যার?"

"আজকে কি তোর বাবারে স্বপ্ন দেখছোছ?"

"হ স্যার।"



টুকলা থুতনিটা বিমর্ষ ভঙ্গীতে নিচে নামিয়ে রাখে।

"মনসুর মিয়াকে?"



টুকলা এবার আরও জোরে মাথা নেড়ে তার ছেঁড়া স্যান্ডেলের ফিতার দিকে তাকিয়ে তা নাড়াচাড়া করতে থাকে।

"তা মনসুর মিয়া কি বলল?"

"কইলো কিরে টুইক্কা আজকাল আর দেখি পাত্তি নিতে আসোস না?"

"তুই কি বললি?"

“আমি আচমকা হেরে দেখাতে পয়লা কিচ্ছু কইতে পারলাম না। পরে কইলাম আমি আর পাত্তি নিমু না। অনু আফায় খাইতে চায় না”

এইটা কওনের লগে লগে মনসুর মিয়া দিলো এক কইশা থাপ্পড়। থাপ্পড়ের চোটে চোখে আন্ধার দেখতেছিলাম। পয়লা ঠাওর করতে পারি নাই। হেরপর দেখি মনসুর মিয়া আচমকা আমার সামনে নাই। বুকে দুই সের থুতু ছিটাইলাম।



"আচ্ছা, স্যার জাইগা জাইগা কি মরা মাইনষেরে দেখা সম্ভব??"

"কি জানি? আমিতো কোনদিন দেখি নাই!"

"ও"

"আজকে যাই।"

"কাইল আসবেন না?"

"দেখি...... "



==========





"অনু তুমি এটা কি শুরু করলে?? আজকে তিন সপ্তাহ পর আসলাম। চুপ করে থাকবে?"

" চুপ করে থাকব কেন?? গল্প করব"

"তো বিশ মিনিট হয়েছে এসেছি। গল্প করছ নাতো!"

"টুকলাকে খুঁজছি। ও এলে গল্প শুরু করব। চা খেতে খেতে"

এই বলে অনু ঘাড় ঘুরিয়ে টুকলাকে খুঁজতে লাগল।



শাফকাত আবারও একশ একবার পণ করল আর কোনদিন নিজের ইচ্ছেতে অনুর সাথে দেখা করতে আসবে না। যেদিন অনু বলবে সেদিন সে আসবে।

" ওহ... অনু একটা কথা বলা হয়নি!"

"কি?"

"টুকলা নাকি এখান আর চা বিক্রি করে না।"

"তুমি কিভাবে জানলে?"

দূরে একটা টোকাইকে দেখিয়ে শাফকাত বলতে লাগল,

"ঐ যে ...... ঐ পিচ্চিটা বলেছে। ও নাকি কি মিছিল মিটিং করে বেড়ায়।"

"তোমার মতো!! তাহলে শেষ পর্যন্ত........."

অনু বেঞ্চ হতে উঠে গিয়ে দ্রুত পায়ে শাফতাকের সামনে পাক দিতে থাকে। কিছুক্ষণ ঠোঁট কামড়ে অনু বলে উঠে,

"তাহলে আমার সাথে এখন গল্প করবে কে? টুকলা যদি ফিরেও আসে আমার কি উচিত হবে তার সাথে গল্প করা??"

"কি আবোল তাবোল বলছ!!"



অনু পায়চারী বন্ধ করে শাফকাতের পাশে এসে শীতল দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। অনুর তাকানোটা ঠাণ্ডা মনে হলেও ওর শ্বাসনালী খুব উঠানামা করছে কিছু একটা বলার জন্য যেন।



"তোমার মনে আছে আমি তোমাকে একটা শর্ত দিয়েছিলাম?"

"কি যেন কি??" শাফকাত মনে করার চেষ্টা করতে থাকে, জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকিয়ে।

"জানতাম তুমি ভুলে গেছো!!"

"প্লিজ একটু মনে করিয়ে দাও না?"



অনু শাফকাতের দিক হতে মুখ সরিয়ে প্রায় পিছন ফেরার ভঙ্গি করে বলতে লাগল,

"যেদিন তুমি ওসব মিছিল মিটিঙে যাওয়া বন্ধ করবে সেদিন হতে তোমার সাথে আমার সব গল্প করব"



শাফকাত জোরে জোরে মাথা উপরে নিচে নামিয়ে বলতে লাগল,

"হুম, হুম বলেছিলে। কিন্তু আমিও বলেছিলাম ভবিষ্যতে কিছু করতে হলে ওসবে যেতে হয়। তুমি কি চাও না আমি দেশ নিয়ে ভাবি?? দেশের জন্য কাজ করি??"

"চাই চাই...... কিন্তু অন্যভাবেও দেশের সেবা করা যায়। "



"অনেক দেরি হয়ে গেছে। এখন আর সম্ভব না"

"তাহলে আমার পক্ষ্যেও সম্ভব না তোমার সাথে থাকা..............."

অনু হনহন করে হাঁটা দেয় পার্কের পেছনের গেটের দিকে। শাফকাত কাতর দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ অনুর চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে পাশে রাখা অনুর ব্যাগ হাতে নিয়ে পিছু নেয়।



=========





"চা গরম চা গরম"

"আজ আর মিছিলে যাস না?"



"ওহ স্যার! কখন আইছেন?"

"অনেকক্ষণ............. ঐ যে ওনার সাথে বসে বসে তোর গল্প করা দেখছিলাম। কি বলে সে?"



"কিছু কয় না। আফায় আগে অনেক গফ করতো। এখন আর করেন না। কি যেন হইছে। চায়ের কাপটা ধইরা ঝিম মাইরা বইসা থাকে। "

"ও"

"যা ঐখানে যা ঐ দাদুটা মনে হয় তোকে ডাকছে। চা দিয়ে আয়।"

"যাইতে মন চাইতেছে না। হের দরকার অইলে নিজেই আইব। আফনে ঐ গুলাগুলির ঘটনাডা কন হেইডা শুনি।"



"কোনটা?"

"ঐ যে ঐদিনকা কইতে নিছিলেন!"



"আজ না, আমার সাথে গল্প করলে তোর লস হবে। আমি চাও-তো খাইনা যে তুই কিছু টাকার জন্য বসে থাকবি!"



"আফনার লগে দেশ লইয়া কথা কইতে ভাল্লাগে। কেন জানি শইললে জোর পাই। গঞ্জিডা ছিইড়া খাড়াইয়া শইললের জোর দেখাইতে মনে লয়।" বলতে বলতেই টুকলা কিছুটা জোর দেখানোর ভঙ্গি করে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।



"হইছে হইছে এসব ফালতু আলাপ বাদ।"

"স্যার... একটা কথা কমু??"



"বল"

"হুদাও আফাডারে না কান্দাইয়া পাশে গিয়া বইলে-ইতো পারেন। রাগ কইমা যাইব"



"হুম..."



"আইজ কয়দিন ধইরাই দেখতাছি আফায় একদিকে আফনে আরেকদিকে"

"হুম..."



একবার আপনের লগে গফ করি আরেকবার হের লগে। আফায়ো জানি কেমন করে। আগে কি গফটাই না করতো এখন আর করেনা।



"তোর কি আমার কথা শুনতে ভালো লাগে নারে?"

"কিযে কন?? আল্লার কিড়া ভাল্লাগে। আফনে কন দেশের কতা, হেইডা ভাল্লাগে। আগে আফায় গফ করতো এখন আফনে করেন।“

“স্যার আপনেরা কি রাগ করছেন?"



"উম..."



"একডা বুদ্দি দেই। জোরে জোরে আফারে দুইডা গাইল দেন সামনে গিয়া। দেকবেন পুশকুনিত সব রাগ ডুইবা মরছে। মনসুর মিয়া যখন বাঁইচা আছিল তখন হে রোজ রাইতে হের বউরে গুমুর গুমুর কইরা মারতে মারতে গাইল দিতো। হেরপর বেয়ানবেলা দেকতাম সব ঠিক।"



"অহহ ভালো কথা, আজো কি মনসুর মিয়াকে দেখছিস?"



টুকলা তার পরামর্শের তুবড়ি ছোটানো বন্ধ করে মাথা নিচের দিকে দিয়ে উপরে নিচে ঝাঁকায়"



"তা কি বলল আজ??"



"সব কেমন আউলা ঝাউলা কতা!! একবার মুখ দিয়ে ঠুশ কইরা আওয়াজ করে, আরেকবার কয় টুইক্কা মিছিলে যাইস না তোরও রক্ত খাবলা দিয়া খাইয়া ফালাবে।"



"আর কি বলে?"

"কয় মাকড়ডারে ছাড়ানের আগেই ঠুশ। পোলাডাও গেল গেল লগে আমারে লইয়াও গেল.........।"



"হুম আসলেই অদ্ভুত কথাবার্তা!"



"স্যার সকাল থেইকা ভাইবা একটা কথা মনে হইছে আমার। কাউরে কইবেন নাতো??"

"নাহ্‌!"

"কিড়া কাডেন। কন আল্লার কিড়া"

"আচ্ছা আল্লার কিড়া"



"আমার মনে হয় বোমাডা ফাডাইতে গিয়াই মনসুর মিয়া ঠুস হইয়া গেছে"

"তোর এমন কেন মনে হল?"

"হেইত আমারে মিছিলে পাঠাইত। আমি কই এরা কোন দল?? কয়, তোর এতো বুইঝা কাম নাই। বড় পাত্তি দিব যে, কামের বেলায় আগে সে। আমার মনে হয় হেরে বড় পাত্তি দিছিল কেউ"

"পাত্তি কি?? চা পাতা?"



"হুর স্যার, আফনে মিছিল মিটিংয়ে যান পাত্তি চিনেন না!! টেকা স্যার। বড় বড় চকচইক্কা নোট। আবার নোট যে চকচইক্কা হইব তা ঠিক না। চা পাত্তির মতো এইটার মদ্দে কোন ফারতক্য নাই। ময়লা পাত্তির যেই দাম, চকচইক্কা পাত্তির হেই দাম।"



আমি টুকলার দিক হতে মুখ ফিরিয়ে আবার পার্কের কোণে বসা মেয়েটার দিকে তাকাই। পাশ হতে দেখে মনে হচ্ছে সে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত। এখন আর আঁচল টেনে চোখ মুছছে না।



"এসব আলাপ আজকের জন্য বাদ...... তুই বরং ঐ আপারে গিয়ে বল রোজ রোজ এভাবে অপেক্ষা যেন আর না করে। বাসায় চলে যেতে বল"



"আফনে গিয়া বলেন, তায়লে আফা আগে শুনব" টুকলা যেন মজা পাচ্ছে এমন ভঙ্গিতে মুখ বাকিয়ে বলতে থাকে।



"তোকে যা করতে বলছি কর। রোজ একা পার্কে বসে থাকা নিরাপদ না"



টুকলা চায়ের ফ্লাক্সটা হাতে দোলাতে দোলাতে ছেড়া স্যান্ডেল টেনে হাঁটতে হাঁটতে মেয়েটার দিকে এগিয়ে যায়।



"অহহ শোন আরো বলিস, যে মরে যায় সে আর আসে না। "



টুকলা মাঝ পথে থেমে গিয়ে ঘাড় ফিরাতে ফিরাতেই বলতে থাকে,

"এ্যা......... কি কইছেন স্যার??"



টুকলা চেয়ে দেখে এতক্ষণ তার সাথে গল্প করা লোকটার বেঞ্চিটা শূন্য। হাঁটতে আসা এক পৌঢ় সেদিকে বসার জন্য এগোচ্ছে। টুকলার চাওয়ার ভঙ্গি দেখে বলল,



"কিরে?? চা আছে??"



===========





অনুপমা একটার পর একটা কাগজ ছিঁড়ে শুধু ট্রাশ বক্সটাই ভরাচ্ছে। পাশ টেবিলে বসা শাফকাত সাহেব অনেকক্ষণ ধরে তা দেখছে।

"ম্যাডাম কি করছেন?? একি কাজ অনেকক্ষণ ধরে আপনাকে করতে দেখছি। এনি প্রবলেম?"



অনুপমা কিছুক্ষণ শাফকাত সাহবের দিকে তাকিয়ে ভাবছে।

"আমি চাইছিনা আপনি মারা যান। চাই-ছিনা টুকলা আপনাকে আর দেখুক"



শাফকাত কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে অনুপমার দিকে তাকিয়ে বলল,

"কে টুকলা?? আর আমি মারা যাব!! মানে কি??"



অনুপমা কিছুক্ষণ কাগজের দিকে আবার কিছুক্ষণ শাফকাত সাহেবের দিকে তাকিয়ে নিজেই বুঝতে পারল কি ঘোরের মাঝে কাটিয়েছে সে কিছুটা সময়।



"আমার কি দোষ!! বলেন?? সম্পাদক সাহেব বললেন এমন একটা গল্প লিখতে আজকের মধ্যে যা কিনা বর্তমান রাজনীতি উঠে আসে। আর আমি মেজাজ খিঁচ মেরে আপানার নাম নিয়ে গল্প লিখতে থাকি। আপনি যেখানে রাজনীতির দ্বন্দ্বে বোমার আঘাতে মিছিলে মারা যান। টুকলা নামে এক চা বিক্রেতা আপনাকে রোজ দেখে। এদিকে আপনার প্রেমিকা যে সে আপানার জন্য রোজ অপেক্ষা করতে থাকে। "



"গল্পটা ভালোই চলছিল কিন্তু শেষে এসে মনে হল শাফকাতকে মেরে মেয়েটাকে এভাবে কষ্ট দেয়া আমার উচিত হয়নি। তাই কাগজ ছিঁড়েই যাচ্ছি, ছিঁড়েই যাচ্ছি......... এন্ডিং বদলানের জন্য।"



শাফকাত সাহেব কিছুটা অবাক হয়ে অনুপমার দিকে তাকায়।

"আপনি আজ বাড়ি চলে যান। কাল লিখেন । আমি স্যারকে বলে দিব যেন আপনাকে কিছুটা সময় দেয় জমা দেয়ার।"



"হুম......... আপনি বলছেন?"

"হ্যাঁ হ্যাভ সাম রেস্ট ম্যাডাম"



স্বচ্ছ কাঁচের জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকাতে তাকাতে অনুপমা আনমনে বলে উঠে,

" হুম.........আমারও তাই মনে হয়। "



========+++========

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৬

আশিকুজ্জামান পিয়াশ বলেছেন: ভাল লাগল।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

রংধণু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ

২| ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১:১৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পড়তে গিয়ে প্রথমে একটু গুলিয়ে ফেলেছিলাম। তাই দুই বার পড়লাম। ভাল লিখেছেন। কথোপকথনে চমৎকার কাজ হয়েছে।

তবে ওই যে- গুলিয়ে ফেলা! যদি লেখাটা আরেকটু কাটছাঁট করে, আরেকটু গুছিয়ে দিতে পারতেন, তবে লেখায় স্রোতস্বিনী একটা ভাব এসে যেত, ফলে পাঠক পড়তে গিয়ে কোথাও ঠেকত না, তরতরিয়ে এগুতে পারত।

ভাল থাকবেন।

১৯ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ২:০৩

রংধণু বলেছেন: দারুন বলেছেন। শুনে ভালোলাগল। মনে রাখলাম। অনেক ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.