নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"সেকি অন্য তত্ত্ব মানে, মানুষতত্ত্ব যার সত্য হয় মনে\" https://www.facebook.com/ajoblinkon.official

আজব লিংকন

সহজ মানুষ

আজব লিংকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুই রাজাকার - হিস্ট্রি রিপিটস ইট সেলফ

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮


সালটা ১৩ - শিরোনামে কাল্পনিক সত্বার লেখা পড়ে অনেক পুরোন স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তখনকার সময় আর এখনকার সময় প্রায় একই রকম বলা যায়। হিস্ট্রি রিপিটস ইট সেলফ। ২০১৩'তে রাজাকারদের ফাঁসি চাওয়া যেমন সঠিক ছিল। তেমনি ২০২৪'শে আওয়ামী রাজাকারদের ফাঁসি চাওয়াও সঠিক। ইহাতে কোন গ্লানি নাই।

ফেসবুকিং শুরু করি সেই ২০০৯ সালে। আহা কি সে সোনালি দিনগুলি। এখনকার মত সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল না ফেসবুক। শুধু মাত্র শিক্ষিত মানুষদের আনাগোনা ছিল ফেসবুকে। (কাউকে হেও করছি না, বর্তমানে ফেসবুক মানুষের কাছে মূলধারার একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ মানুষ এখন ফেসবুক ব্যবহার করে। যা তখন সবার নাগালে ছিল না)। সে সময় ফেসবুকে যুক্তি তর্ক হতো লেখালিখি ভিত্তিক। এখনকার মত পথের প্যাঁচালি ভিডিও ভিত্তিক না। প্রোপ্যাগান্ডা প্রায় ছিল না বললেই চলে।

সামুতে যোগ দেই ২০১২ সালের শেষের দিকে। তখন তেমন কিছু বুঝতাম না টুকটাক লেখালেখি পড়তাম। রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ হতে ইন্টার পাশ করে ২০১২'তে ঢাকার জীবন শুরু। ঠাঁই হলো মিরপুর শেওড়া পাড়ার একটা সাততলা দালানের ছাদে একরুমের চিলেকোঠায়। চিলেকোঠার জীবন উপন্যাসের থেকে কোন অংশে কম ছিল না। থাক সেদিকে না হয় নাই যাই। ২০১৩ সালে ঢাকায় সবে একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ-তে ভর্তি হয়েছি। রঙিন এই দুনিয়ার পুরটাই যেন আমার হাতের মুঠোয়। মনে কোন ডর-ভয় নাই। লালন অনুরাগী হওয়ায় প্রায় সময় আমার আড্ডা হতো চারুকলায়। কিভাবে জড়িত হলাম জানি না তবে ১৩'র আন্দোলন যুক্তিযুক্ত মনে হওয়ায় এবং ৭১'রের চেতনা বুকের মাঝে থাকায় সে সময় বুক ফুলিয়ে সবার সাথে আমিও বলতে শুরু করলাম, "তুই রাজাকার। তুই রাজাকার"। ১৩'র আন্দোলন কোনদিক থেকেই অযৌক্তিক ছিল না। সে সময় তাই সবার মত আমিও সাধারণ ছাত্র হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম গণজাগরণ মঞ্চের গণজোয়ারে।



আন্দোলনের মাঝখানের দিকে ঢাকা থেকে ফিরে এসেছিলাম নিজের শহরে। সাধারণ ছাত্র হিসেবে যোগ দিলাম জাগরণী মঞ্চ টাউন হল প্রজন্ম চত্বরে। টাউন হলের সামনে তৈরি করা হলো ফাঁসির মঞ্চ। একপাশের রাস্তা বন্ধ করে বিকেল থেকে শুরু হতো আলপনা আঁকা, পেন্টিং করা। একপাশে চলতো গণ সাক্ষর নেওয়া। সন্ধায় শুরু হতো স্লোগান। "তুই রাজাকার, তুই রাজাকার" এবং "ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই" স্লোগানে স্লোগানে ভারি হতে থাকতো ছাত্র-জনতার গণজোয়ার। রাতে শহর প্রদক্ষিণ করে হতো মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ। এসবের মাঝে কোন একদিন বিকেলে প্রজন্ম চত্বরের উপর শুরু হলো জামায়াতের হামলা। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। ইট পাটকেলের বৃষ্টি। পুলিশের হস্তক্ষেপ আর অভিজানে ছন্নছাড়া হয়ে যায় জামায়াত শিবির।



ধীরে ধীরে ১৩'র আন্দোলন ঘিরে অনেক নোংরা রাজনীতি নিজ চোখে দেখলাম। আন্দোলন কিভাবে হাইজ্যাক হয়ে যায় দেখলাম। আন্দোলনে কিভাবে খাওয়া দাওয়া আসে দেখলাম। আন্দোলন কিভাবে উজ্জিবিত রাখা হয় দেখলাম। আওয়ামীলিগের পক্ষ থেকে গোপনে টাকা ঢালাও দেখলাম। জামায়াত শিবিরের সকল প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের দ্বারা জালাও পোড়াও করা দেখলাম। অর্থ ও স্বার্থের লোভে স্বনামধন্য শিল্পীদের নাচ-গান সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও বিনোদনের মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে দেখলাম। অবুঝ আবেগী সাধারণ ছাত্রদের কাঁধে বন্দুক রেখে আওয়ামীলীগ কিভাবে নিজেরদের ফায়দা হাসিল করলো দেখলাম। এমন কি একদিন চাঁদে সাইদীর ছবি পর্যন্ত দেখলাম। 'মেয়েরা হলো তেঁতুল দেখলেই লালা ঝরে' - আল্লামা শফীর মন্তব্যে নারীদের প্রতিবাদ মিছিল পর্যন্ত দেখলাম। বাঁশেরকেল্লা পেইজে ছাগু দেখলাম। রাতের আঁধারে মতিঝিল শাপলা চত্বরে পুলিশের হামলায় রক্তের মিছিল দেখলাম। ১৩'র আন্দলনে যুক্ত ব্লগারদের রেড তালিকাও বের হতে দেখলাম। সরকারের কাছ থেকে বড় অংকের সুযোগ সুবিধা নিয়ে অনেক ব্লগার ও অনলাইন এক্টিভিস্টদের বিদেশে চলে যেতে দেখলাম, যাকে বলে দিস ইজ পিওর বিজনেস আন্ড লাইফ সেট ম্যান। আর কি কি যে দেখলাম এখন স্মৃতিতে আসছে না।



আস্তিক নাস্তিক ইসু এটা একটা নোংরা রাজনীতির বিশাল বড় গেম। এই গেমে পরার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা আমার নেই। একশ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ীরা নাস্তিকতাকে ইসু বানিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় উগ্রবাদী ভাষণ এখন পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। অপর দিকে সো কল্ড নাস্তিক নামধারী মানুষ এইসব ইসলামী চেতনাধারী রাজনৈতিক ধান্দাবাজ মানুষদের ইন্ধন যুগিয়ে যাচ্ছে। কেউ কারো থেকে কম না। আমার মতে দুনিয়াতে নাস্তিক বলে কিছু নেই। যদি সরল ভাষায় বলি, যে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে স্বীকার করে না তাকে নাস্তিক বলে। আপনি বলে দিলেন ঈশ্বর বলে কিছু নেই আর সাথে সাথে আপনি নাস্তিক হয়ে গেলেন, আসলে বিষয়টা এত সহজ না। আপনাকে গবেষণা করে সঠিক তথ্য-প্রমাণ দিয়ে দেখাতে হবে যে ঈশ্বর নেই তবেই আপনি নাস্তিক। ধরে নিলাম তথ্য-প্রমাণ দিয়েও না হয় আপনি প্রায় প্রমাণ করে দিলেন ঈশ্বর নেই এবং আপনি সেটা বিশ্বাস করেন। তবে এখানেই বাঁধবে আপনার জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা, কারণ "বিশ্বাস" শব্দটা নিজেই একটা ঈশ্বর। নিজেকে বিশ্বাস করা মানে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করা।
সুতরাং নাস্তিক বলে কিছু নেই। আপনি চাইলে এদের কাফের কিংবা মুশরিকের বলতে পারেন।


যাই হোক এই টপিক্সে আর না যাই। আমি ধর্ম ব্যবসায়ীদের এড়িয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আল্লাহর দুনিয়া অনেক বিশাল আপনি আপনার মত থাকেন আমি আমার মত থাকি। এই লেখাটা কোন ধর্ম ব্যবসায়ীর নজরে না পড়লেই হয় কারণ ধর্ম ব্যবসায়ী বলায় ওদের ইগো হার্ট হয়েছে, এখন ওরা কারণ ছাড়াই আমাকে শাহাবাগী নাস্তিক ট্যাগ লাগিয়ে দিবে। হ্যাঁ আওয়ামীলীগের রেখে যাওয়া মতধারার মতোই দাঁড়ি-টুপি-পাঞ্জাবি পড়া কেউ মানে জামায়াত শিবির।


যুগের পরিক্রমায় ২৪'শে এসে একই আন্দোলনীয় চক্রের ইন্দ্রজালে জড়িয়ে পড়ে পতনের মুখে ধাবিত হতে দেখলাম আওয়ামীলীগকে। সাধারণ ছাত্রদের বুকে গুলি চালিয়ে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতের মতই এ যুগের নব্য রাজাকারের খাতায় নাম লেখালো বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ নামক এক সময়ের সবচেয়ে বড় স্বাধীনতাকামী সংগঠন। ২৪'শের ছাত্র আন্দোলনে স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগের হাতে খুন হতে হয় আমার পছন্দের ছোট ভাই "কাব্য যোদ্ধা"-কে। সে পেশায় একজন ফটো জার্নালিস্ট ছিল। ২০ জুলাই সারাদেশে ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট আর কারফিউয়ের মাঝে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ছাত্র আন্দোলনে ওর অবস্থান ছিল ছাত্রদের পক্ষে। ওর মৃত্যু আমাকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। ১৩'র গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে যোগ দেয়া সাধারণ ছাত্রের একজন ছিল "কাব্য যোদ্ধা"। একসময় যে ছেলেটা গলা উঁচিয়ে চিৎকার করেছিল "তুই রাজাকার, তুই রাজাকার" সেই ছেলেটা ২৪'র আন্দোলনে হারিয়ে গেল।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৭

ধুলো মেঘ বলেছেন: কাদের মোল্লা কোন হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলনা এবং মৃত্যুদন্ড দেবার মত কোন অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি - আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই ঐতিহাসিক রায়ের পর আপনি কোন যুক্তিতে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন - আমাকে সেই ব্যাখ্যা দেবেন কি?

কেন আপনার মনে হয়েছিল যে ট্রাইব্যুনালের বিচার সঠিক ছিলনা? কেন বিচারকদের উপর চাপ প্রয়োগ করে ফাঁসির রায় আদায় করতে হল?

২| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৪

কিরকুট বলেছেন: ছি !! ছি !!! কাদের মোল্লা তুলশী পাতা ছিলো । তারে রাজাকার বইলা মহা পাপ হইয়াছে ।

৩| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ২০২৪ এর বিজয়ীরা ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চের উত্থানকে কোন চোখে দেখে? তথাকথিত ধার্মিকদের আস্ফালন কেমন দেখছেন? বা এমন পরিস্থিতিতে কেমন বোধ করছেন? সামনে কী দিন আসছে?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.