![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি কবি নই, তবু কাব্যের ভাষায় বলবো আজ.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।.।।
ধেৎ, আজও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেল। আজ থেকে নতুন ইংলিশ প্রাইভেট শুরু, রাজিব স্যারের বাসায় যেতে হবে, শুনেছি উনি অনেক রুড, ছেলেপেলেদের মানসম্মান বলে কিছু রাখেন না। ঘুম থেকে তড়িঘড়ি করেই ছুট দেই স্যারের বাসায়। বাসার কাছেই , হেঁটেই যাওয়া যায়। স্যার পড়ানো শুরু করার কথা ৯.৩০ টা থেকে এখন বাজে ৯.৪০, চার তলায় স্যারের বাসা, দৌড়ে উঠতে উঠতে হাঁপিয়ে গেলাম। পৌঁছে দেখি স্যার পড়ানো শুরু করে দিয়ছেন আর আমার দিকে বিরক্তির দৃস্তিতে তাকালেন আর বললেন বসও গিয়ে, কিন্তু বসব কোথায়, ছেলেদের সারিতে একটা সিট ও খালি নেই। স্যারের ঠিক পাশেই এক মেয়ের পাশে একটা সিট খালি ছিল তাই বাধ্য হয়ে সেখানেই বসতে হল। সামনের সীটগুলোতে কেউ ঝুঁকি নিয়ে বসতে চায় না, স্যার কখন মান সম্মানের বারোটা বাজিয়ে দেন। কারণ পান থেকে চুন খসলেই স্যার এমন কথা বলবেন যা অন্য সবার হাসির খোরাক হলেও যাকে নিয়ে বলেছেন ওর অবস্থা খারাপ। এ ব্যাপারে রাজিব স্যারের বেশ সুনাম রয়েছে, রাজিব স্যার যদিও আমার কলেজের স্যার নন তবে শুনেছি উনি খুব ভালো ইংরেজি পড়ান, তাই টেস্ট পরীক্ষার পর এইচ এস সি’র আগে ওনার কাছে পড়তে আসা।
ক্লাস ভালই চলছিল কিন্তু একটা মেয়ের পাশে বসায় কিছু টা অস্বস্তিতে পড়ে গেছি, খেয়াল করে দেখলাম মেয়েটা কেমন মুখ টিপে টিপে হাসছে, বোধহয় আমার এই গোবেচারা স্বভাব আর অস্বস্তি দেখে ও বেশ মজা পাচ্ছে।এভাবে কোনরকমে প্রথম ক্লাস টা কাটালাম, ক্লাস শেষ হয় ১০.৩০ টায়। ক্লাস শেষে দিলাম ছুট কারনে আমি আরেক কোচিং এ ১১ টা থেকে মডেল টেস্ট দিতে যাবো। তাই দারিয়ে কারো সাথে পরিচিত হবার সময় নেই।
স্যারের বাসায় সপ্তাহে তিন দিন ক্লাস, একদিন পর পর ক্লাস। পরের ক্লাসে খেয়াল করলাম ওই মেয়েটা ওর এক বান্ধবির সাথে একসাথে কোচিং আসে আর একসাথে বসে। দেখলাম মেয়েটা কেমন আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি হাসে, প্রথমে একটু কেমন লাগলেও পরে বেশ কেমন ভালো লাগছিল। কিন্তু আমার এক অদ্ভুত স্বভাব, মেয়েদের দেখলেই নার্ভাস হয়ে যাই আর কথা খুব একটা বলতে পারি না। স্যারের কথার সুবাদে জানতে পারলাম মেয়েটার নাম ফারজানা। খেয়াল করলাম ফারজানা প্রতিদিন ই ক্লাস শেষে নিচে ওর বান্ধবিকে নিয়ে ওয়েট করে , আর আমি দারাতে পারি না কারণ আমার মডেল টেস্ট শুরু হয়ে যাবে ১১ টায় , তাই দেরি না করে রাস্তা পার হয়ে গাড়িতে উঠে পড়ি আর গাড়িতে উঠে খেয়াল করি আমি চলে আসার পরপরই ও রিক্সা ঠিক করছে, কেন যেন মনে হল ও আমার জন্যেই অপেক্ষা করছিল। এভাবে বেশ কদিন চলে গেল কিন্তু ওর সাথে পরিচিত হওয়া বা কথা বলা কোনটাই হয়ে উঠে নি। কিন্তু ও ঠিকই ক্লাসে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো আর চোখাচোখি হলেই কেমন একটা রহস্যময় হাসি হাসতো। আমি বুঝতে পারছি মেয়েটা হয়তো আমাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে কিন্তু আমার ওই দিকে নজর নেয়ার ফুসরত নেই কারণ সামনে পরীক্ষা আর আমি মাত্র এইচ এস সি দেবো, এখনো প্রেম করার বয়স হয়েছে নাকি ?
এভাবে দেখতে দেখতে প্রায় দু মাস কেটে গেল, পরীক্ষার মাত্র ১ মাস বাকি।ভীষণ ব্যস্ত আমি। কয়েকদিন ধরে ওর বান্ধবীটা একাই আসছে, আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম, ওর অসুখ বিসুখ করে নিতো ? কিন্তু ওর বান্ধবীকে জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করলাম না, একদিন স্যার ই জিজ্ঞেস করলেন, কি ব্যাপার ফারজানা আসে না কেন? ওর বান্ধবী বলল, “স্যার, ওর আকদ হয়ে গেছে, পরীক্ষার পরই ওর বিয়ে” । শুনে বুকটা কেমন ধক করে উঠলো, কেমন অজানা একটা কষ্ট মনটাকে আচ্ছন্ন করে ফেলল, কিন্তু সামলে নিলাম নিজেকে।
আজ স্যারের বাসায় শেষ ক্লাস, দেখতে দেখতে আড়াই মাস কেটে গেছে, গত প্রায় ৫ টা ক্লাসে ফারজানা আসে নি, আজ শেষ ক্লাসে স্যারের সাথে দেখা করতে এসেছে, ওকে আজ আমি বেশ খেয়াল করছি, ওর হাতে একটা আংটি আর ওর আগের সেই হাসিটি আমি দেখতে পেলাম না, আমার দিকে খুব একটা তাকাচ্ছেও না ও, মনে মনে ভাবছি কেমন বদলে গেছে ও। স্যার শেষ ক্লাসে পরীক্ষার কিছু টিপস দিচ্ছিলেন, আমি আনমনে শুনছিলাম। ফারজানা একটু পর স্যার কে বলল, স্যার আমার একটু তাড়া আছে, এই বলে স্যার কে পায়ে ধরে সালাম করে বিদায় নিয়ে চলে গেল। হঠাৎ আমার কি মনে হল আমিও একটু পরেই স্যার কে সালাম করে বেরিয়ে পরি ফারজানা কে শেষবারের মত দেখার আশায়।সিঁড়ি ধরে নামছি আর ভাবছি ফারজানা’র সাথে দেখা হবে তো? নিচতলায় গিয়ে দেখলাম ফারজানা দারিয়ে আছে, আমার বুঝতে বাকি রইল না যে ফারজানা আমার জন্যেই তাড়া আছে বলে স্যারের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে নেমে এসেছে। আমার বুক ধক ধক করছিল, আমাকে দেখেই ফারজানা একটা স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে এগিয়ে আসে কথা বলতে।
>> কেমন আছো রুদ্র ?
> আমি ভালো আছি, তুমি কেমন আছো ফারজানা, শুনলাম তোমার বিয়ে ?
>> হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছ, তা তুমি তো পড়ালেখায় অনেক সিরিয়াস , তুমি নিশ্চয় পরীক্ষায় ভালো করবা ।
> ( আমি একটু হেসে) দোয়া করো, তোমার হাসবেন্ড কি করেন ?
>> সিঙ্গাপুরে বিজনেস আছে ।
> বিয়ের পর কি ওখানেই চলে যাবা ?
>> হ্যাঁ ওখানেই চলে যাবো , রুদ্র। তোমাকে আমার কিছু বলার ছিল।
> বলো
>> তোমাকে আমার অনেক ভালো লাগে, তোমাকে অনেক মিস করব, ভালো থেকো তুমি।
> আমি ও তোমাকে অনেক মিস করব, তুমিও ভালো থেকো ।
ফারজানা আর কিছু না বলে চলে গেল, ওর মুখে কেমন একটা বিষণ্ণতা দেখতে পেলাম। কিন্তু আমাকে ওর ভালো লাগে এ কথাটা বলার সময় ওর চোখে কেমন এক আশ্চর্য মায়া দেখতে পেয়েছিলাম । আমি ও রাস্তা পার হয়ে গাড়িতে উঠে চলে আসি আর ভাবি, ফারজানা যদি আমাকে ভালোই বাসে তবে আরকজনকে বিয়ে করলো কিভাবে ? পরে ভাবি, আমি হয়তো তার ক্ষণিকের ভালো লাগা, ভালোবাসা না। আজ ৬ বছর পর ফারজানার কথা মনে পরল, আমাকে হয়তো ভুলেই গেছে, হয়তো অনেক সংসারী হয়ে গেছে, তবু বলি যেখানেই থাকো ভালো থেকো।
গাড়িতে তপুর একটা গান বাজছে, “শেষ দেখায় মাথা নতয় বলেছ, ভালো কি আমায় বাসো ? জবাবে আমি না বুঝেই বলেছি, ভালো থেকো” ।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৫৯
আজব কবি বলেছেন: সময় নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১২:১৮
আদনান মাননান বলেছেন: Click This Link
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১২:৩২
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো... বলেছেন: সত্যি কাহিনী নাকি??
শুরুতা বেশ ভালো ছিলো। কিন্তু এরপর ফারজানার আকদ করে দিয়েই তো কাহিনী মরে গেল। ভেবেছিলাম অন্য কিছু হবে। আর এতো পিচ্চি বয়সের প্রেম আসলেই টিকে না। রুদ্র তো দেখি ছোট থাকতেই অনেক প্রাক্টিক্যাল ছিলো।
১৮ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:০২
আজব কবি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য,
৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:২৬
খুশবু বলেছেন: ওই সময়টা এমন ছিলো হয়তো ,থাক মন খারাপ করো না
১৮ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ৯:০৩
আজব কবি বলেছেন: মন খারাপ কইরা আর কি লাভ, ও তো এখন অন্যের
৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৫৬
চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: কেমন আছেন কবি?
১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১:২২
আজব কবি বলেছেন: অরে আমার চাটিকিয়াং ভাই, আমি ভাল্ , আপনার কি খবর ???
৬| ২৫ শে নভেম্বর, ২০১১ রাত ২:৩১
চাটিকিয়াং রুমান বলেছেন: আমিও ভালু আছি ভ্রাতা।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৪
আলামিন সরকার বলেছেন: পড়া শেষে, বেলা ঘেষে, আর প্রেম করার সময় থাকে না।
সুন্দর।