নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লাহর নামে

ডাঃ আকন্দ

একজন চিকিৎসক ।

ডাঃ আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবরার হত্যাকান্ড এবং এর থেকে উত্তরণের উপায়

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:১৩

(এক) , অত্যন্ত নিষ্ঠুর ঘটনা ঃ-
--------------------------------------------
শুরুতেই আবরার ফাহাদের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি । এটা মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায় যে , আবরার ফাহাদ বিশ্বমানের একজন বিকাশমান মেধাবী ছিলেন , যিনি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীকে কিছু দিতে পারতেন । তার নিয়তি আমাদের শিখাচ্ছে যে , আর যেনো কোনো আবরার এরকম নিষ্ঠুরভাবে মৃত্যুবরণ না করে । কারণ পিটিয়ে মানুষ হত্যা কি পরিমাণ কষ্টের , তা ভাবলেও ঘা শিউরে উঠে এবং কান্না চলে আসে । কত কাকুতি মিনতি করেছিলো আবরার , তবুও পশুদের মন গলেনি । মহান আল্লাহর নিকট কতশত প্রার্থনা করেছিলো আবরার , কিন্তু মহান আল্লাহ নিয়তির দিকেই আবরারকে ছেড়ে দিয়েছেন এবং শহীদী মর্যাদা দান করেছেন । অতঃপর আমরা আবরার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই এবং এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেনো আর না হয় ।

বাংলাদেশের মানুষ দূর্নীতি করতে করতে , এই দেশ এখন দূর্ভাগা জাতিতে পরিণত হয়েছে । ঢাকা উত্তরের মেয়র আনিসুল হক অত্যন্ত সৎ ও মেধাবী ছিলেন , আমরা তার সেবা পাওয়ার যোগ্য ছিলাম না বিধায় , মহান আল্লাহ তাকে তুলে নিয়েছেন । বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান দেশকে একটি সুন্দর ও শক্তিশালী অর্থনীতি উপহার দিতে পারতেন , কিন্তু রিজার্ভ চুরির ঘটনার দায় কাঁধে নিয়ে তিনি পদত্যাগ করলেন , এখানেও আমরা দূর্ভাগা । আরো পূর্বে গেলে দেখবো - জিয়াউর রহমান ছিলেন অত্যন্ত সৎ , ন্যায়পরায়ণ এবং অত্যন্ত ধার্মিক একজন প্রেসিডেন্ট , তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ এতদিনে বিশ্বে প্রথম দশটি অর্থনীতির দেশের একটি হতো , অথবা সে যদি বিরোধী দলেও থাকতো , তবুও দেশ অত্যন্ত সমৃদ্ধ হতো । পরিতাপের বিষয় হচ্ছে - তার স্ত্রী পুত্র তার কোনো ভালো গুনই পায় নাই । জিয়া বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে নিজেকে ক্ষমতার নির্লোভ প্রমাণ করেছিলেন , যা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিলো , কিন্তু তার স্ত্রী পুত্র তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে উগ্রবাদী গোষ্ঠী এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে দেশকে ধ্বংস করছে ।

যাই হউক , আবরার হত্যাকান্ডের দায় বুয়েট ছাত্রলীগের , তথা সমস্ত ছাত্রলীগের এবং আওয়ামিলীগের তথা শেখ হাসিনার । এই হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার না হলে , আওয়ামিলীগকেই বেশি ভুগতে হবে । কারণ সমস্ত কম্বলের সুতা নষ্ট হয়ে গেলে , কম্বলটাই শেষ ।

(দুই) , আবরার হত্যার প্রত্যক্ষ কারণ ঃ-
----------------------------------------------------
আবরার হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষ কারণ ছিলো - সরকারের সমালোচনা করে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস , যেখানে আবরার বলতে চেয়েছিলেন - সরকার ভারতকে অনেক কিছু দেওয়ার বিনিময়ে কিছুই পায়নি । আর এতেই সরকার দলীয় লোক তাকে শিবির সন্দেহ করে পিটিয়ে হত্যা করে । এমন ঘটনা বিবেকবান মানুষ ঘটাতে পারে না , বরং এটা পশুর কাজ ।

তাছাড়া এটা তো সত্যি যে , সরকার ভারতের প্রশংসা করে সবসময় এবং ভারতকে প্রচুর দেয় কিন্তু তেমন নিতে পারে না । কারণ ভারত এই সরকারকে যেকোনো অন্যায় কাজেও সমর্থন করে । যেমন - সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন । অন্যদিকে বিএনপি ভারতকে এত দেয় না , কিন্তু বিএনপিকে সারা পৃথিবী জামাত শিবিরের সঙ্গ ছাড়তে বললেও , ঘাড় ত্যাড়া খালেদা তারেক জামাত শিবিরকে ছাড়লো না । কারণ সারা পৃথিবী জানে জামাত শিবির একটি উগ্রবাদী দল ।

এটা ঠিক যে , বর্তমান সরকার স্বৈরাচারী সরকার , কারণ তারা বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে , বিরোধীদলকে হাজার হাজার মামলা দিয়ে কর্মীদের এবং নেতাদের জেলে দিয়েছে । অন্যদিকে সরকার বিরোধীরা এক হতে না পারার সুযোগে সরকার একদলীয় শাসন কায়েম করার চেষ্টা করছে । সরকার বিরোধীরা এক হতে পারবে এমন লক্ষ্মণও দেখা যাচ্ছে না , সম্ভবত মিলতে মিলতে অনেক দিন লেগে যাবে । ততদিনে সরকার নামাতে গেলে অনেক রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকবে । সব দল না মিললে এই সরকার অনেকদিন থেকে যাবে ।

বাংলাদেশে একদলকে অনেকদিন ক্ষমতা দিলে তারা স্বৈরাচার হয়ে যাবে , তাই ২ বা ৩ টার্মের বেশি ক্ষমতা দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হবে না ।

( তিন ) , আবরার হত্যার পরোক্ষ কারণ ঃ-
---------------------------------------------------------
আবরার হত্যার পরোক্ষ কারণ হচ্ছে - রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠার রাজনীতি , কারণ হত্যাকারীরা তাকে শিবির সন্দেহ করে পিটিয়ে হত্যা করে । রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠা পেলে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নিজেকে খাপ খাইয়ে চলতে পারবে না । বাকি ১০ শতাংশ লোক লজ্জায় এবং চাপে পড়ে ধর্ম প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করছে । যেটায় সওয়াব না হয়ে , বরং বড় পাপ হচ্ছে । (১)।

আবরার যদি শিবির করেও থাকে তবুও তাকে হত্যা করা যাবে না । কারণ ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা বা মেনে না নিলে সমাজে বা রাষ্ট্রে কখনোই শান্তি আসবে না । শিবির নৈতিক চর্চা করে এবং ধর্ম চর্চা করে , তাহলে তোমরাও নৈতিক চর্চা ও ধর্মচর্চা করো , কিন্তু কোনোভাবেই রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করা যাবে না । কেননা শিবির রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে বলেই এত অশান্তি ।

বাংলাদেশের বড় দুই দল নৈতিক এবং ধর্মচর্চা করে না বলেই , অন্যান্য দলগুলি ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষকে মুনাফিক বানাচ্ছে । (২) । তাছাড়া বড় দুই দল নৈতিক বা ধর্ম শিক্ষা দেয় না বলেই সন্ত্রাস তৈরি হয় এবং মদ , জুয়া , লটারি ইত্যাদি অপরাধ দলে স্থান পায় । কিন্তু এর চাইতে বড় অপরাধ করছে ইসলামিক দলগুলো । ইসলামি দলগুলো রাষ্ট্রে শরিয়ত প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করছে , যা বর্তমানে হারাম । (৩) , (৪) । জামাত শিবির ৯০ ভাগ মানুষের উপর ধর্মকে চাপিয়ে দিচ্ছে । এরা রক্তপাত এবং মারামারিকে উৎসাহ দেয় এবং বলে এটা জিহাদ । অপরদিকে অন্য ইসলামি দলগুলো রাজনীতির মাধ্যমে শরিয়ত প্রতিষ্ঠা করতে চায় , এটাও হারাম ।

বর্তমানে মানুষ , রাষ্ট্রীয় শরিয়ত শরীর এবং মনের সাথে মানিয়ে নিতে অক্ষম । (৫) । তারপরও মোল্লারা নিজেরা লোকদেখানো শরিয়ত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে নিজেরা মোনাফিক হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষকে মোনাফিক বানাচ্ছে । আর মুনাফিকরা চিরজাহান্নামী । অন্যদিকে জঙ্গিদের সবই তো লোকদেখানো এবং এরা মুশরিক । কারণ তারা লজ্জায় পড়ে নেতার কথা মানছে । তাছাড়া একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আত্মঘাতী হওয়া বর্তমান সময়ে একেবারেই অসম্ভব । কারন মানুষ এখন একেবারেই দুর্বল । (৬) । তাই জঙ্গিরাও অনন্তকাল ধরে জাহান্নামে জ্বলবে । এখন প্রায় প্রতিটি মানুষ অনেকগুলি রোগে আক্রান্ত এবং অনেকগুলি ঔষধ খেয়ে জীবন ধারণ করতে হয় , তার আবার বড় ধরনের যুদ্ধ । এদের উপর মহান আল্লাহর এবং সমস্ত সৃষ্টির লানত ।

উপসংহার ঃ-
-----------------------
বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেওয়া উচিত , তবে ছাত্রদের একক সংগঠন থাকা উচিত । কিন্তু বাস্তবতা হলো বন্ধ হবে না । রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠার রাজনীতি বন্ধ করা উচিত । কিন্তু এটাও হবে না । তদুপরি যেটা হতে পারে - এক বা একাধিক মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল থাকতে হবে , যারা দলের ভিতরে মধ্যপন্থী ধর্মচর্চা করবে , কিন্তু রাষ্ট্রে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করবে না । এমন দলের সদস্য হওয়া প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ । আমি "মডারেট মুসলিম" নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছি , আশা করি আপনারা আমার দলে আসবেন অথবা আপনারা এমন দল তৈরি করবেন ।

( ডাঃ আকন্দ ) ।
---------------------------------------------------------
## তথ্যসূত্র ঃ-
"""""""""""""""""""""
★ (১) আল কোরান , সুরা আল - বাকারা , আয়াত ২৫৬ ।
★ (২) আল কোরান , সুরা আল - বাকারা , আয়াত ১১ ।
★ (৩) আল কোরান , সুরা আল - আনফাল , আয়াত ৬৫ , ৬৬ ।
★ (৪) আল কোরান , সুরা আল - বাকারা , আয়াত ২৮৬ ।
★ (৫) মিশকাত , হাদিস নং - ১৬৯ , [ তিরমিযী ] ।
★ (৬) ৩ দ্রষ্টব্য ।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



আল্লাহ কি এই ছাত্রকে এটুকু হায়াতই দিয়েছিলেন, ও মৃত্যু এভাবেই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন?

২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৪০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি জে: জিয়ার অনেক গুণের কথা বলে, বলেছেন যে, উনি থাকলে, আজকে আমরা অর্থনীতির দিক থেকে বিশ্বে ১০ স্হানে থাকতাম ( ফ্রান্সের স্হানে, জিডিপি ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ); আল্লাহ উনাকে এই রকম করুণ মৃত্যু দিয়ে, জাতিকে কি শাস্তি দিলেন?

৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ৭:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: যদি বলি সব আল্লাহর ইচ্ছা।

৪| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:২৭

সুপারডুপার বলেছেন: ১) ধর্মীয়বাদ হোক নাস্তিকবাদ হোক যেখানেই একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি চালু হবে সেখানেই পাথর ছুড়ে মারা , জবাই করা, পিটিয়ে মারা , জ্যান্ত পুড়ে মারা , গুলি করে মারা ইত্যাদি বর্বরতা প্রায়ই ঘটবে। তাই, যদি একনায়কতন্ত্র হয়, মডারেট মুসলিমরা ক্ষমতায় আসলে নাস্তিকদের, নাস্তিকরা ক্ষমতায় আসলে মডারেট মুসলিমদের পিটিয়ে মারবে

২) বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই মানসিক রোগে আক্রান্ত , কিন্তু তারা এই রোগাক্রান্ত পরিবেশের সাথে অভ্যস্থ বলে নিজেদের এই রোগ আছে তা বুঝতেছে না। কাজেই চিকিৎসার ও প্রয়োজন অনুভব করছে না। পিটিয়ে মারার মন - মানসিক রোগের চিকিৎসা দিন

ডাক্তার আকন্দ সাহেব আপনি ভালো করবেন রাজনীতিতে না এসে , বাংলাদেশে মানসিক হাসপাতাল নির্মাণ করে ও মানুষের মানসিক রোগের চিকিৎসা করে মানব সেবা করে যান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.