![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অবস্থান মৌনতায়,.....
লজ্জাস্থানের হিফাযত
বলতে বুঝায়, মানুষ এর অপব্যবহার ও
অপপ্রয়োগ
থেকে বেঁচে থাকা এবং স্বীয়
শরীরের জৈবিক চাহিদা পূরণ
তথা যৌন স্পৃহা মেটানোর জন্য
সেসব পন্থা অবলম্বন করা যা শরীআত
কর্তৃক অনুমোদিত ও স্বীকৃত।
অনুপ্রেরণা স্বরূপ লজ্জাস্থান
হিফাযত সম্পর্কীত ফযীলত লক্ষ্য
করুন।
পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে
ﻭﺍﻟﺬﻳﻦ ﻫﻢ ﻟﻔﺮﻭﺟﻬﻢ ﺣﻔﻈﻮﻥ. ﺍﻻ ﻋﻠﻲ ﺍﺯﻭﺍﺟﻬﻢ ﺍﻭ ﻣﺎ
ﻣﻠﻜﺖ ﺍﻳﻤﺎﻧﻬﻢ ﻓﺎﻧﻬﻢ ﻏﻴﺮ ﻣﻠﻮﻣﻴﻦ. ﻓﻤﻦ ﺍﺑﺘﻔﻲ ﻭﺭﺍﺀ ﺫﻟﻚ
ﻓﺎﻭﻟﺌﻚ ﻫﻢ ﺍﻟﻌﺪﻭﻥ .
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“এবং যারা যৌনাঙ্গগুলোকে সংযত
রাখে, নিজেদের পত্নীগণ
অথবা তাদের ওই শরীআত সম্মত
দাসীদের নিকট ব্যতীত যারা তাদের
হাতের মালিকানাধীন।
এতে তাদেরকে তিরস্কার
করা হবে না, সুতরাং যারা এ
দু’প্রকার ব্যতীত অন্য কিছু
কামনা করে তারাই
সীমা লঙ্ঘনকারী।” (পারা-১৮,
সূরা আল মুমিন, আয়াত নং-৫-৭)
সারওয়ারে আলম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামও উম্মতদের
মাঝে অনুপ্রেরণা সৃষ্টির
লক্ষ্যে লজ্জাস্থানের হিফাযত
সম্পর্কীত অনেক ফযীলত
বর্ণনা করেছেন।
১। হযরত সায়্যিদুনা ইবনে আব্বাস
রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
নবী করিম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, হে কোরাইশ যুবকেরা!
তোমরা তোমাদের লজ্জাস্থানের
হিফাযত কর এবং ব্যভিচারে লিপ্ত
হয়ো না। যে তার লজ্জাস্থানের
হিফাযত করবে, তার জন্য জান্নাত
অনিবার্য।
২। হযরত সায়্যিদুনা আবু
হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, মহিলারা যখন পাঁচ ওয়াক্ত
নামায আদায় করবে, তাদের
লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে,
তাদের স্বামীদের আনুগত্য করবে,
তখন তারা জান্নাতের
যে দরজা দিয়েই
ইচ্ছে করবে জান্নাতে প্রবেশ
করতে পারবে।
(মুসনাদে আবু হুরায়রা, হাদিস
নং-4151)
এবার জেনে নেই, যৌন
তৃপ্তি মেটানোর বৈধ মাধ্যম সমূহ
প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
শরয়ীভাবে দু’ধরনের মহিলাদের
দ্বারা যৌন
তৃপ্তি মেটানো জায়েজ। ১। নিজ
স্ত্রী ২। শরয়ী দাসী।
(দেখুন উপরের কুরআন এর আয়াত)
কিন্তু বর্তমান
যুগে শরয়ী দাসী পাওয়া না যাওয়ার
কারণে শুধুমাত্র নিজ
স্ত্রী দ্বারাই যৌন
তৃপ্তি মেটানো সম্ভপর।এ দিকটার
প্রতি দৃষ্টি আকর্ষ্ণ
করে রহমতে আলম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন
স্থানে উৎসাহ ব্যঞ্জক বাণী ইরশাদ
করেন।
১।
হযরতে সায়্যিদাতুনা আয়শা সিদ্বিকাহ
রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহা হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ
ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
নিকাহ বা বিবাহ করা আমার
সুন্নাত। সুতরাং যে আমার
সুন্নতের উপর আমল করবে না,
সে আমার দলভূক্ত নহে। তাই
তোমরা নিকাহ
করো যাতে আমি তোমাদের
সংখ্যাধিক্যতা নিয়ে কিয়ামত
দিবসে অন্যান্য উম্মতদের উপর গর্ব
করতে পারি। যে নিকাহ করতে সক্ষম
সে যেন নিকাহ করে , আর যে সক্ষম নয়
সে যেন রোযা রাখে।
কেননা রোযা যৌন
ক্ষুধাকে নিবৃত্ত করে।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, খন্ড ৪, হাদীস
নং-১৮৪৬)
২। হযরতে সায়্যিদুনা আব্দুল্লাহ
বিন মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, হে যুবক সম্প্রদায়!
তোমাদের মধ্যে যার বিবাহের
সামর্থ আছে, সে যেন অবশ্যই বিবাহ
করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি অবনত
রাখার এবং লজ্জাস্থান
সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অধিকতর
সহায়ক। আর যে সামর্থের অধিকারী নয়
সে যেন রোযা রাখে।
কেননা রোযা তার জন্য ঢাল স্বরূপ।
(সহীহ বুখারি, খন্ড ৩, হাদীস
নং-৫০৬০)
নিকাহ তথা বিবাহের শরয়ী বিধান
স্মরণ রাখবেন, নিকাহ সর্বাবস্থায়
সুন্নাত নহে। বরং কখনো কখনো ফরয
কখনো ওয়াজিব আবার কখনো মাকরূহ,
আর কখনো তা হারাম। বিস্তারিত
নিচে-
১। ফরয- যৌন ক্ষুধার তীব্রতায়
পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার প্রবল
আশংকা থাকলে ফরয,
না করলে গুনাহগার হবে।
২। ওয়াজিব- স্ত্রীর ভরন পোষনের
সামর্থ্ বিদ্যমান
থাকলে এবং রিপুর তাড়নায় যিন,
কুদৃষ্টি, হস্তমৈথুন
ইত্যাদি পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার
প্রবল আশংকা থাকলে তখন নিকাহ
করা ওয়াজিব। না করলে গুনাহগার
হবে।
৩। সুন্নাতে মুআক্কাদাহ- স্ত্রীর
মহর ও ভরন পোষনের সামর্থ্ বিদ্যমান
থাকলে দাম্পত্য অধিকার সমূহ
যথাযথভাবে আদায়ে সক্ষম
হলে এবং যৌনাকাঙ্খা তীব্রতর
না হলে তখন বিবাহ
করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ।
তবে এমতাবস্থায় বিবাহ না করার উপর
অটল থাকা গুনাহ। আর যদি হারাম
থেকে বাঁচার এবং যৌন
তৃপ্তি লাভের উদ্দেশ্য
নিয়ে বিবহ করে, তাহলে সাওয়াবও
পাওয়া যাবে। আর যদি শুধুমাত্র
উপভোগ কিংবা যৌন
তৃপ্তি মেটানোর
উদ্দেশ্যে নিয়ে বিবাহ
করে থাকে , তাহলে সাওয়াব
পাওয়া যাবে না তবে বিবাহ শুদ্ধ
হয়ে যাবে।
৪। মাকরূহ- যদি আশংকা হয় যে বিবাহ
করলে স্ত্রীর ভরন পোষন
এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় দাম্পত্য
অধিকার সমূহ যথাযথ পালন
করতে পারবে না, তাহলে বিবাহ
করা মাকরূহ।
৫। হারাম- যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে,
বিবাহ করলে স্ত্রীর ভরন-পোষন ও
অন্যান্য প্রয়োজনীয় অধিকার সমূহ
যথাযথ পালন করতে পারবে না। তখন
বিবহ করা হারাম
এবং জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত
কাজ্। এমতাবস্থায় যৌন
উত্তেজনা দমন করার জন্য
রোযা রাখার অভ্যাসই
গড়ে তুলতে হবে।
(বাহারে শরীআত, খন্ড ৭, পৃ.৫৫৯)
নিজ স্ত্রীর সাথে কখন যৌন মিলন
জায়েজ নয়?
ইহাও স্মরণ রাখবেন যে, নিজ স্ত্রীর
সাথে সহবাস করার সময়ও শরীআত
কর্তৃক নির্ধারিত বিধি বিধান
সমূহ মেনে চলা পুরুষের জন্য
অপরিহার্য। যদি সহবাস করার সময়
শরয়ী বিধি বিধান
গুলো মেনে চলা না হয়,
তাহলে সে গুনাহগার হব।
শরয়ী বিধি বিধান মেনে না চলার
কয়েকটি পন্থা রয়েছে।
১। ঋতুস্রাব কালীন সময়ে স্ত্রীর
সাথে সহবাস করা- পবিত্র
কুরআনে মজীদে ঋতুস্রাব কালীন
সময়ে সহবাস করা থেকে নিষেধ
করা হয়েছে। যেমন-
ﻭﻳﺴﺌﻠﻮﻧﻚ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﺤﻴﺾ. ﻗﻞ ﻫﻮ ﺍﺫﻱ. ﻓﺎﻋﺘﺰﻟﻮﺍ ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ
ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺤﻴﺾ .
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“এবং হে হাবীব!
আপনাকে লোকেরা জিজ্ঞাসা করছে রজ:স্রাবের
বিধান। আপনি বলুন, সেটা কষ্ট
অবস্থা, সুতরাং তোমরা স্ত্রীদের
নিকট থেকে পৃথক
থাকো রজঃস্রাবের
দিনগুলোতে।” (বাকারাহ, আয়াত-২২২)
সদরুশ শরীআ হাকিমুল উম্মত
মুফতি মুহাম্মদ আমজাদ
আলী আজমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার
ফতোয়ায় লিখেছেন, হায়েয ও
নিফাসের সময় স্ত্রীর
নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত কোন
অংশে কাপড় বিহীন অবস্থায়
পুরুষের কোন অঙ্গ দ্বারা স্পর্শ
করা জায়েয নেই। চাই
কামোত্তেজনার সাথে স্পর্শ করুক
বা কামোত্তেজনা বিহীন স্পর্শ
করুক। তবে যদি স্ত্রীর শরীরে কাপড়
বা অন্য কোন আবরণ থাকে এবং স্পর্শ
করলে শরীরের উষ্ণতা অনুভুত না হয়,
তাহলে স্পর্শ করতে কোন
অসুবিধা নেই।
(বাহারে শরীআত, খন্ড ২, পৃ.১১৮)
২। স্ত্রীর গুহ্যদ্বার দিয়ে সঙ্গম
করা।
রহমতে আলম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর
গুহ্যদ্বার (পায়ু পথ, পায়খানার
রাস্তা, পিছনের রাস্তা)
দিয়ে সঙ্গম করে সে মালউন
বা অভিশপ্ত। (আবু দাউদ, খন্ড ২,
হাদীস নং- ২১৬২)
অপর এক স্থানে তিনি আরো বলেন,
আল্লাহ তাআলা সে ব্যক্তির
প্রতি রহমতের দৃষ্টি নিবদ্ধ করবেন
না, যে পুরুষের
সাথে কিংবা স্ত্রীর গুহ্যদ্বার
দিয়ে সহবাস করে।
(তিরমিযী, ২য় খন্ড, হাদীস নং-১১৬৮)
৩। উলঙ্গ অবস্থায় কিবলার দিকে মুখ
দেয়া কিংবা কিবলার দিকে পিঠ
দেয়া।
ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাতে উল্লেখ
আছে, উলঙ্গ অবস্থায়
কিবলামুখী হওয়া কিংবা কিবলাকে পিছ
দেয়া মাকরূহে তাহরীমী। (১০ম খন্ড,
পৃ.৩৮৮)
যৌন তৃপ্তি মেটানোর নিষিদ্ধ
মাধ্যম সমূহ
নিজ স্ত্রী ও শরয়ী দাসী ব্যতিত
যৌন তৃপ্তি মেটানোর আরো অনেক
পন্থা রয়েছে। যেমন যিনা,
সমকামিতা, জীবজন্তুর সাথে সঙ্গম
করা, হস্তমৈথুন করা ইত্যাদি।
এগুলো সবই হারাম ও অবৈধ।
সে নাজায়িয ও হারাম পন্থা সমূহের
বিস্তারিত বর্ণনা লক্ষ্য করুন।
১। যিনা
ইহা হারাম ও
জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত কাজ।
সে অপবিত্র কাজ হতে নিষেধ
করে মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র
কুরআনে ইরশাদ করেছেন,
ﻻ ﺗﻘﺮﺑﻮﺍ ﺍﻟﺰﻧﻲ ﺍﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻓﺎﺣﺸﺔ. ﻭﺳﺎﺀ ﺳﺒﻴﻼ .
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“এবং অবৈধ যৌন সম্ভোগের
নিকটে যেওনা। নিশ্চয়
সেটা অশ্লীলতা এবং অত্যন্ত
নিকৃষ্ট পথ”। (সূরা বনী ইসরাইল,
আয়াত-৩২)
যিনার শরয়ী শাস্তি
নফস ও শয়তানের প্ররোচনার
ফাঁদে আটকা পড়ে সাময়িক যৌন
তৃপ্তি মেটানোর জন্য
যিনা তথা ব্যভিচারে লিপ্ত
হওয়া নর-নারী যদি অবিবাহিত হয়,
তাহলে তাদের শরয়ী শাস্তি হল
তাদের
প্রত্যেককে প্রকাশ্যভাবে সজোরে একশটি বেত্রাঘাত
করা। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র
কুরআনে ইরশাদ করেছেন,
ﺍﺯﺍﻧﻴﺔ ﻭﺍﻟﺰﺍﻧﻲ ﻓﺎﺟﻠﺪﻭﺍ ﻛﻞ ﻭﺍﺣﺪ ﻣﻨﻬﻤﺎ ﻣﺎﺋﺔ ﺟﻠﺪﺓ. ﻭﻻ
ﺗﺄﺧﺬﻛﻢ ﺑﻬﻤﺎ ﺭﺍﻓﺔ ﻓﻲ ﺩﻳﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻥ ﻛﻨﺘﻢ ﺗﺆﻣﻨﻮﻥ ﺑﺎﻟﻠﻪ
ﻭﺍﻟﻴﻮﻡ ﺍﻻﺧﺮ. ﻭﻟﺌﺸﻬﺪ ﻋﺬﺍﺑﻬﻤﺎ ﻃﺎ ﺋﻔﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“যে নারী ব্যভিচারিনী হয়
এবং যে পুরুষ হয়
ব্যভিচারী তবে তাদের
প্রত্যেককে একশত বেত্রাঘাত
করো এবং তোমাদের যেন তাদের
প্রতি দয়া না আসে আল্লাহর
দ্বীনে যদি তোমরা ঈমান
এনে থাকো আল্লাহ ও শেষ দিবসের
উপর এবং উচিত যে, তাদের শাস্তির
সময় মুসলামানদের একটা দল উপস্থিত
থাকবে।” (সূরা আন নূর, আয়াত ২)
বি.দ্র. এ
শাস্তি ইসলামী রাষ্ট্রে কার্যকর
করা যাবে। অন্য রাষ্ট্রে নয়।
ইসলামী আদালতই বাস্তবায়ন
করবে সাধারণ মানুষ নয়।
আর যদি কোন বিবাহিত পুরুষ
বা নারী এ কাজে লিপ্ত হয়,
তাহলে সর্ব
সম্মতিক্রমে তাদেরকে পাথর
মেরে হত্যা করতে হবে। প্রসিদ্ধ
ফাতাওয়ার কিতাব আল বাহরুর রায়েক
গ্রন্থে উল্লেখ আছে,
যদি যিনাকারী বিবাহিত হয়,
তাহলে তাকে কোন উন্মুক্ত
স্থানে পাথর মারতে হবে যতক্ষন
না সে মৃত্যুবরন করে। (খন্ড ৫, পৃ. ১৩)
যিনার পরকালীন শাস্তি
উপরে বর্ণিত শাস্তি পার্থিব
জীবনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আর
যিনাকারী ব্যক্তি যদি তওবাবিহীন
মারা যায়,
তাহলে পরকালে তাকে মর্মন্তুদ
বেদনাদায়ক শাস্তির
মুখোমুখি হতে হবে।
১। হযরতে সায়্যিদুনা সামুরাহ বিন
জুনদুব রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
একদা রহমতে আলম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায
পড়ানোর পর আমাদের
অভিমূখী হয়ে বললেন, আজ রাত
আমি স্বপ্ন যোগে দেখলাম, আমার
নিকট দু’জন ব্যক্তি আসল
এবং আমাকে এক পবিত্র ভূমির
দিকে নিয়ে গেল। আমরা তন্দুরের
ন্যায় একটি গর্তের নিকট
গিয়ে পৌঁছলাম, যার উপরের অংশ ছিল
সংকীর্ণ এবং নিচের অংশ ছিল
প্রশস্ত। উহাতে দাউ দাউ করে আগুন
জ্বলছিল এবং সে আগুনে কিছু
পুরুষ ও মহিলা উলঙ্গাবস্থায়
অবস্থান করছিল। যখন আগুনের
শিখা বৃদ্ধ পায় তখন তারা উপরের
দিকে চলে যায়, আর যখন আগুনের
শিখা হ্রাস পায়, তখন শিখার
সাথে সাথে তারাও নিচের
দিকে নেমে আসে। আমি জিজ্ঞেস
করলাম, এরা কারা? সে দু’জন
ব্যক্তি বলল, এরা হল যিনাকারী নর-
নারী। (বুখারী, ১ম খন্ড, হাদীস
নং-১৩৮৬)
২। আল্লামা শামশুদ্দিন
যাহবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন,
যাবুর শরীফে উল্লেখ আছে, নিশ্চয়ই
যিনাকারীদেরকে লজ্জাস্থানে বেঁধে আগুনে ঝুলিয়ে রাখা হবে এবং তাদেরকে লোহার
হাতুড়ী দিয়ে প্রহার করা হবে, যখন
তারা প্রহারে যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ
হয়ে ফরিয়াদ করবে, তখন আযাবের
দায়িত্বে নিয়োজিত
ফিরিশতারা বলবে, তোমাদের এ
ফরিয়াদ তখন কোথায় ছিল, যখন
তোমরা আনন্দ আহলাদে মত্ত ছিলে।
ভোগ সম্ভোগে বিহ্বল ছিলে,
এবং তোমাদের পুরুষাঙ্গ
যৌনাঙ্গে ঢুকিয়েছিলে। তখন
তোমরা তো আল্লাহকে ভয়ও
করনি এবং তাঁকে লজ্জাও করনি।
(কিতাবুল কবায়ের পৃ.৫৫)
৩। হযরতে সায়্যিদুনা মাকহুল
দামেস্কী তাবেয়ী বর্ণনা করেন,
দোযখীদের তীব্র দুর্গন্ধ অনুভূত
হবে তখন তারা বলবে, আমরাতো এর
চেয়ে তীব্র দুর্গন্ধ আর
কখনো অনুভব করিনি। তখন
তাদেরকে বলা হবে,
ইহা যিনাকারীদের লজ্জাস্থানের
দুর্গন্ধ। (ঐ, পৃ.৫৭)
৪। বর্ণিত আছে যে, বর্ণিত
আছে যে জাহান্নামে এমন
একটি উপত্যকা রয়েছে যা সাপ
বিচ্ছুতে পরিপূর্ণ। সেখানকার
প্রতিটি বিচ্ছু খচ্ছরের সমান
মোটা এবং প্রতিটি বিচ্ছুর
সত্তরটি হুল রয়েছে, আর
প্রতিটি হুলে একটি একটি বিষের
থলে রয়েছে। এ
বিচ্ছুগুলো যিনাকারীকে দংশন
করতে থাকবে এবং তার শরীরে বিষ
ছড়িয়ে দিবে। যিনাকারী এক বৎসর
পর্যন্ত সে দংশনের ব্যথার কষ্ট
অনুভব করতে থাকবে। অতঃপর তার
গোশত পঁচে হলুদ রঙের হয়ে যাবে।
এবং তার লজ্জাস্থান হতে পুঁজ ও
হলুদ রঙের পানি প্রবাহিত
হতে থাকবে। (ঐ, পৃ.৫৯)
৫। কিতাবুল কবায়ের এ উল্লেখ আছে,
যে ব্যক্তি এমন কোন
মহিলাকে কামোত্তেজনার
সাথে স্পর্শ করবে যে মহিলা তার
জন্য হালাল নয়, সে কিয়ামত দিবসে এ
অবস্থায় উত্থিত হবে যে তার হাত
সে মহিলার ঘাড়ের সাথে সংযুক্ত
থাকবে। আর যদি সে ঐ
মহিলাকে চুম্বন দিয়ে থাকে,
তাহলে তার ওষ্ঠদ্বয়কে আগুনের
কাঁচি দ্বারা কর্তন করা হবে। আর
যদি সে ঐ মহিলার
সাথে যিনা করে থাকে, তাহলে তার
উরুদ্বয় কিয়ামত দিবসে তার
বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে এবং বলবে,
আমরা হারাম কাজের জন্য সাওয়ার
হয়েছিলাম। ইহা শুনে আল্লাহ
তাআলা তার প্রতি গযবের
দৃষ্টিতে দেখবেন। তখন তার
চেহারার গোশত ঝরে পড়বে।
সে ব্যক্তি তার যিনার
কথা অস্বীকার করে বলবে,
আমিতো যিনা করিনি, কিন্তু তার
জবান তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য
দিয়ে বলবে, আমি সে মহিলার
সাথে কতা বলেছিলাম, যে আমার
জন্য হালাল ছিল না, তার হাত বলবে,
আমরা হারামের দিকে প্রসারিত
হয়েছিলাম, তার চক্ষুদ্বয় বলবে,
আমরা হারামের প্রতি দৃষ্টিপাত
করেছিলাম, তার পদযুগল বলবে,
আমরা হারামের দিকে গিয়েছিলাম,
তার লজ্জাস্থান বলবে,
আমি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছিলাম।
আমলনামা ফিরিশতাদের একজন বলবে,
আমি শ্রবণ করেছিলাম এবং অপরজন
বলবে আমি লিখেছিলাম। আল্লাহ
তাআলা বলবেন, আমি তার কাজ
দেখেছিলাম এবং আমি তা গোপন
রেখেছিলাম। অতঃপর তিনি বলবেন,
হে আমার ফিরিশতারা!
তাকে পাকড়াও
করো এবং তাকে আমার
শাস্তি প্রদান করো।
নিঃসন্দেহে তার উপর আমার
শাস্তি খু্বই কঠোর
যে আমাকে লজ্জা ও হায়া করে না।
(ঐ, পৃ.৫৯)
সমকামিতা
সমকামিতা অসংখ্য ইহকালীন ও
পরকালীন বিপদের ধারক বাহক ও
নিন্দনীয় কাজের কদর্যতা কুরআন ও
হাদীস দ্বারা প্রমানিত। মহান
আল্লাহ তাআলা পবিত্র
কুরআনে ইরশাদ করেছেন।
ﻭﻟﻮ ﻃﺎ ﺍﺫ ﻗﺎﻝ ﻟﻘﻮﻣﻪ ﺍﺗﺎﺗﻮﻥ ﺍﻟﻔﺎﺣﺸﺔ ﻣﺎﺳﺒﻘﻜﻢ ﺑﻬﺎ ﻣﻦ
ﺍﺣﺪ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﻴﻦ- ﺍﻣﻜﻢ ﻟﺘﺎﺗﻮﻥ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﺷﻬﻮﺓ ﻣﻨﺪﻭﻥ
ﺍﻟﻨﺴﺎﺀ- ﺑﻞ ﺍﻧﺘﻢ ﻗﻮﻡ ﻣﺴﺮﻓﻮﻥ -
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“এবং লুতকে প্রেরণ করেছ। যখন
সে আপন সম্প্রদায়কে বললো,
তোমরা কি ওই নির্লজ্জ কাজ করছো,
যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বের
মধ্যে কেউ করেনি?
তোমরাতো পুরুষদের নিকট কাম-
তৃপ্তির উদ্দেশ্যে গমন
করছো নারীদেরকে ছেড়ে বরং তোমরা সীমালঙ্গন
করে গেছো। (সূরা আল আরাফ, আয়াত
৮০-৮১)
লুত আলাইহিস সালাম ও এর উম্মতদের
উপর সে কারণেই আযাব নাযিল
হয়েছিল, যার বর্ণনা পবিত্র কুরআন
মাজীদে এ ভাবে প্রদান
করা হয়েছে।
ﻓﻠﻤﺎ ﺟﺎﺀ ﺍﻣﺮﻧﺎ ﺟﻌﻠﻨﺎ ﻋﺎﻟﻴﻬﺎ ﺳﺎﻓﻠﻬﺎ ﻭ ﺍﻣﻄﺮﻧﺎ ﻋﻠﻴﻬﺎ
ﺣﺠﺎﺭﺓ ﻣﻦ ﺳﺠﻴﻞ - ﻣﻨﻀﻮﺩ -
কানযুল ঈমান (কৃত আলা হযরত
মুফতী আহমদ রযা খাঁন রহ.)
হতে অনুবাদ:
“অতঃপর যখন আমার আদেশ আসলো তখন
আমি উক্ত জনপদের
উপরিভাগকে নিচের
দিকে উল্টিয়ে দিলাম এবং তাদের
উপর ক্রমাগত কঙ্কর পাথর বর্ষন
করলাম।”
(সূরা-হুদ, আয়াত-৮২)
সমকামিতার নিন্দায় রসূলুল্লাহ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
থেকে বিভিন্ন হাদীসও বর্ণিত
হয়েছে। যেমন-
১। হযরতে সায়্যিদুনা আমর বিন আবু
আমর রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, যে লূত জাতির কাজ
করবে সে মালউন তথা অভিশপ্ত।
(তিরমিযী, হাদীস নং- ১৪৬১)
২। হযরতে সায়্যিদুনা আবু
হুরায়রা রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, চার প্রকারের লোক
যারা সকাল বেলায় আল্লাহর
আক্রোশে এবং সন্ধ্যাবেলা আল্লাহর
অসন্তুষ্টিতে অতিবাহিত করে।
রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর
রসূল ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরা কারা?
তিনি ইরশাদ করলেন, তারা হল
সে সমস্ত পুরুষ যারা মহিলাদের
সাদৃশ্যতা অবলম্বল
করে এবং সে সমস্ত
মহিলা যারা পুরুষদের
সাদৃশ্যতা অবলম্বন
করে এবং যারা জীবজন্তু ও
পুরুষদের সাথে খারাপ
কাজে লিপ্ত হয়।(কানযুল উম্মাল,
হাদীস নং-৪৩৯৭৫)
৩। হযরতে সায়্যিদুনা আবু সাঈদ
খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, শীঘ্রই এ
উম্মতদের মধ্যে এমন একদল লোক
সৃষ্টি হবে,
যাদেরকে লুতিয়া বা সমকামী বলা হবে।
এরা তিন ধরনের হয়ে থাকবে।
১। যারা আমরদ তথা সুদর্শন বালকদের
দৈহিক গঠন দেখবে এবং তাদের
সাথে কথা-বার্তা বলবে।
২। যারা তাদের সাথে করমর্দন ও
কোলাকোলি করবে।
৩। যারা তাদের সাথে খারাপ
কাজে লিপ্ত হবে। এরা সকলের উপর
আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক। কিন্তু
তাদের মধ্যে যারা তওবা করবে।
আল্লাহ তা’আলা তাদের তওবা কবুল
করবেন এবং তারা লানত
হতে পরিত্রান লাভ করবে। (ঐ, হাদীস
নং-১৩১২৯)
সমকামিতার শরয়ী শাস্তি
১। হযরতে সায়্যিদুনা ইবনে আব্বাস
রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
রসূলুল্লাহ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, তোমরা যাকে লুত জাতির
আমল করতে দেখবে,
তাহলে যে করবে এবং যার
মাধ্যমে করবে উভয়কে হত্যা করো।
(মুস্তাদরাক, হাদীস ন্ং-৮১১৩)
২। হযরতে সায়্যিদুনা ইবনে আব্বাস
রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু সমকামীদের
শাস্তির ক্ষেত্রে বলেছেন,
তাদেরকে এলাকার কোন সুউচ্চ
দেয়ালের উপর
থেকে নিচে ফেলে দিয়ে তারপর
পাথর নিক্ষেপ
করে তাদেরকে হত্যা করতে হবে।
যেমনিভাবে লুত আলাইহিস সালাম
এর সম্প্রদায়ের প্রতি করা হয়েছিল।
৩। হযরতে সায়্যিদুনা খালিদ বিন
ওয়ালিদ হযরতে সায়্যিদুনা আবু বকর
সিদ্দীক রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু এর
নিকট চিঠির
মাধ্যমে জানতে চেয়েছিলেন যে,
আমি এখানে এমন এক ব্যক্তির সন্ধান
পেয়েছি, যে নিজকে স্বেচ্ছায়
অন্যান্যদের কে ভোগ করতে দেয়।
হযরতে সায়্যিদুনা আবু বকর
সিদ্দীক রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু এ
ব্যপারে সাহাবায়ে কিরামদের
নিকট পরামর্শ চাইলেন।
হযরতে সায়্যিদুনা আলী রাদ্বীয়াল্লাহু
আনহু বললেন, নিঃসন্দেহে এটা এমন
এক ধরনের গুনাহ যা শুধুমাত্র
একটি জাতি তথা লুত জাতি করেছিল,
নিশ্চয়ই আল্লাহ
আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন,
তিনি সে জাতিকে কি শাস্তি দিয়েছিলেন।
সুতরাং আমার পরামর্শ হল,
তাকে জ্বালিয়ে ফেলা হোক।
অতঃপর হযরত আবু বকর
রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু হযরত খালিদ
বিন ওয়ালিদ কে লিখেছিলেন, যেন
তাকে পুড়িয়ে ফেলা হয়। হযরত খালিদ
বিন ওয়ালিদ হযরতে সায়্যিদুনা আবু
বকর সিদ্দীক রাদ্বীয়াল্লাহু
আনহু এর নির্দেশ মোতাবেক
তাকে আগুনে জ্বালিয়ে ফেললেন।
(কিতাবুল কবায়ের, পৃ.৬৬)
সমকামীদের পরলৌকিক শাস্তি
১।
হযরতে সায়্যিদুনা আলী রাদ্বীয়াল্লাহু
আনহু বর্ণনা করেন,
যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় অপর
ব্যক্তিকে নিজ দেহ ভোগ করতে দেয়,
এমনকি অপর ব্যক্তিও
সে কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে আল্লাহ
তাআলা তাকে নারীর নয়গুন যৌন
ক্ষুধা দিয়ে লিপ্ত করে দেবেন
এবং কিয়ামত পর্যন্ত
তা কবরে শয়তানকে তার
পাশে রাখবেন। (ঐ)
২।
হযরতে সায়্যিদুনা ওকি রাদ্বীয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
যে ব্যক্তি লুত জাতির আমল
করে মৃত্যুবরণ করবে, দাফনের পর
তাকে লুত জাতির
কবরস্থানে স্থানান্তরিত
করা হবে এবং তার হাশরও তাদের
সাথে করা হবে। (কানযুল উম্মাল,
৫/১৩৫)
৩। বর্ণিত আছে যে,
হযরতে সায়্যিদুনা ঈসা আলাইহিস
সালাম তাঁর কোন এক
ভ্রমণকালে কোন এক আগুনের পাশ
দিয়ে অতিক্রম করেছিলেন, যে আগুন
কোন ব্যক্তির উপর জ্বলছিল।
তিনি সে আগুন নেভানোর জন্য
তাতে পানি ঢাললেন।
তিনি দেখতে পেলেন হঠাৎ সে আগুন
একজন বালকের রূপ ধারন করে ফেলল।
এবং সে লোকটি আগুন হয়ে গেল। এ
দৃশ্য দেখে তিনি খুবই অবাক
হয়ে পড়লেন এবং তিনি আল্লাহ
তাআলার দরবারে ফরিয়াদ করলেন,
হে আমার প্রভু!
আপনি তারা উভয়কে তাদের পার্থিব
অবস্থায় ফিরিয়ে দিন
যাতে আমি তাদের কে তাদের
ব্যাপার সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করতে পারি। অতঃপর আল্লাহ তাদের
উভয়কে জীবিত করে দিলেন।
তিনি দেখতে পেলেন, তারা একজন
পুরুষ ও একজন বালক।
তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন,
তোমাদের উভয়ের ব্যাপারটা কি?
পুরুষটি জবাব দিল, হে রূহুল্লাহ!
আমি ুদনিয়াতে এ বালকটির
ভালবাসায় বন্দী হয়ে পড়েছিলাম।
রিপুর তাড়না আমাকে এই বালকটির
সাথে অবৈধকাজে লিপ্ত হতে বাধ্য
করেছিল, ফলে আমি তার সাথে অবৈধ
কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছিলাম।
অতঃপর আমরা যখন মৃত্যু বরণ করলাম,
তখন এই বালকটি আগুন হয়ে আমাকে দহন
করছে এবং আমিও আগুন হয়ে তাকে দহন
করছি। আমাদের এ শাস্তি ক্বিয়ামত
পর্যন্ত জারি থাকব্ (কিতাবুল
কাবায়ের, পৃ.৬৬)
হস্তমৈথুন করা
এ কাজও শরীআত কর্তৃক
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও শরীআতের
নিকট খুবই অপছন্দনীয়।
সারওয়ারে আলম, নূরে মুজাসসাম
(নূরের দেহ বিশিষ্ট), শাহে বনী আদম
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, যে ব্যক্তি হস্তমৈথুন
করবে সে অভিশপ্ত।
(ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, ১০ খন্ড,
পৃ.৮০)
মুফতী শাহ আহমদ রযা খাঁন
রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর
সুবিশাল (ওজন ৪০ কেজি) ফতোয়ার
গ্রন্থে হস্ত মৈথুন
সম্পর্কে লিখেছেন, এ কাজ
অপবিত্র, হারাম ও নাজায়িয।
(ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, ১০ খন্ড,
পৃ.৮০)
রসূল ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হস্ত
মৈথুন কারীর কঠোর শাস্তির
কথা বর্ণিত হয়েছে।
১। আল্লামা শামশুদ্দিন
যাহবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন,
রহমতে আলম ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
সল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ
করেছেন, সাত প্রকারের লোকের
প্রতি আল্লাহ লানত প্রদান
করেছেন, কিয়ামত
দিবসে তিনি তাদের প্রতি রহমতের
দৃষ্টিও নিবদ্ধ করবেন
না এবং তিনি তাদেরকে বলবেন,
তোমরা জাহান্নামে প্রবেশকারীদের
সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করো,
যদি তারা তওবা না করে মৃত্যুবরণ
করে। সে সাত প্রকারের লোক হল- ১।
অবৈধ কাজে লিপ্ত ব্যক্তি ২।
জীবজন্তুর সাথে খারাপ
কাজে লিপ্ত ব্যক্তি
৩। মা ও মেয়েকে এক সাথে বিবাহ
বন্ধনে আবদ্ধকারী ব্যক্তি ৪।
হস্তমৈথুন কারী ব্যক্তি
(কিতাবুল কবায়ের, পৃ.৬৩)
(বাকি তিনটি যে বইটি থেকে টাইপ
করছি সেটাতে মিস টাইপিং-এডমিন)
২। আল্লামা মাহমুদ
আলুসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর
তাফসির রুহুল
মায়ানীতে লিখেছেন,
হযরতে সায়্যিদুনা আতা রাদ্বীয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমি শুনেছি কিয়ামত দিবসে একদল
লোককে হাশরের ময়দানে এমন অবস্থায়
উপস্থিত করা হবে যে, তাদের হস্ত
সমূহ গর্ভবতী থাকবে। তিনি বলেন,
আমার মনে হয় তারা হবে সে সমস্ত
লোক যারা নিজ হস্তে গোসল
ওয়াজিব করতো অর্থাৎ হস্ত মৈথুন
করত।
তিনি আরো লিখেছেন,
হযরতে সায়্যিদুনা সাঈদ বিন
জুবায়ের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত, তিনি ইরশাদ করেছেন,
আল্লাহ তাআলা এমন এক
সম্প্রদায়কে আজাবে লিপ্ত
করিয়েছেন, যারা নিজেদের
লজ্জাস্থানকে অবৈধ পন্থায়
ব্যবহার করেছিল।
(রুহুল মায়ানী, সূরা আল মুমিনুন,
আয়াত-০৩)
©somewhere in net ltd.