নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি । তিনি সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন । ১৯৭১ সালে ২৬ শে মার্চে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন ।
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে । মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ও ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বি এন পি প্রতিষ্ঠা করেন । ১৯৮১ সালে ৩০ শে মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুথানে জিয়াউ রহমান নিহত হন। ।
জিয়াউর রহমানের জন্ম এবং শৈশব কালঃ
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯শে জানুয়ারি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার বাগবাড়ী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন । তার পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মাতার নাম ছিল জাহানারা খাতুন ওরফে রানী । পাঁচ ভাইদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন দ্বিতীয় । তার পিতা কলকাতা শহরে এক সরকারি দপ্তরে রসায়নবিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন । তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে এবং কিছুকাল কলকাতা শহরে অতিবাহিত হয় । ভারতবর্ষ বিভাগের পর তার পিতা পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি শহরে চলে যান । তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি হন । ঐ স্কুল থেকে তিনি ১৯৫২ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন এবং তারপর ১৯৫৩ সালে করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন । একই বছর তিনি কাকুল মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেছিলেন ।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে জিয়ার সামরিক জীবনঃ
১৯৫৩ সালে তিনি কাকুল পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন । ১৯৫৫ সালে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন । সামরিক বাহিনীতে তিনি একজন সুদক্ষ প্যারাট্রুপার এবং কমান্ডো হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন এবং স্পেশাল ইন্টেলিজেন্স কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন । করাচীতে দুই বছর চাকুরি করার পর ১৯৫৭ সালে তিনি ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হয়ে আসেন । তিনি ১৯৫৯সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেন । সে সময়ই ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুর শহরে খালেদা খানমের সঙ্গে জিয়াউর রহমান বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ।
১৯৬৫ সালের ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে একটি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে খেমকারান সেক্টরে তিনি অসীম বীরত্বের পরিচয় দেন । যুদ্ধে দুর্ধর্ষ সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য যেসব কোম্পানি সর্বাধিক বীরত্বসূচক পুরস্কার লাভ করে জিয়াউর রহমানের কোম্পানি ছিল এদের অন্যতম । এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য পাকিস্তান সরকার জিয়াউর রহমানকে হিলাল ই জুরাত খেতাবে ভূষিত করা হয় । তাছাড়াও জিয়াউর রহমানের ইউনিট এই যুদ্ধে বীরত্বের জন্য দুটি সিতারা ই জুরাত ও নয়টি তামঘা ই জুরাত মেডাল লাভ করে । ১৯৬৬ সালে তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে পেশাদার ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগ লাভ করেন । সে বছরই তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কোয়েটার স্টাফ কলেজে কমান্ড কোর্সে যোগ দেন । ১৯৬৯ সালে তিনি মেজর পদে উন্নীত হয়ে জয়দেবপুরে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন । এডভান্সড মিলিটারি এন্ড কমান্ড ট্রেনিং কোর্সে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তিনি পশ্চিম জার্মানিতে যান এবং কয়েক মাস বৃটিশ আর্মির সাথেও তিনি কাজ করেন । ১৯৭০ সালে একজন মেজর হিসেবে জিয়াউর রহমান দেশে ফিরে আসেন এবং চট্টগ্রামে নবগঠিত অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড পদের দায়িত্ব লাভ করেন ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাঃ
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালো রাতে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর বর্বরের মতো ঘৃণ্য হামলা চালায় । সে রাতে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনপ্রিয় বাঙালি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বন্দী হন । পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চলে যান আত্মগোপনে । জনগণ তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে । এই সঙ্কটময় মুহূর্তে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকায় পশ্চিম পাকিস্তানী বাহিনীর বর্বর আক্রমণের পর জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করে বিদ্রোহ করেন এবং ২৭শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন ।
ঘোষণা পত্র অনুবাদঃ
আমি মেজর জিয়া বাংলাদেশ লিবারেশন আর্মির প্রাদেশিক কমাণ্ডার ইন চিফ শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি । আমি আরো ঘোষণা করছি যে আমরা শেখ মুজিবর রহমানের অধীনে একটি সার্বভৌম এবং আইনসিদ্ধ সরকার গঠন করেছি যা আইন ও সংবিধান অনুযায়ী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের সরকার জোট নিরপেক্ষ নীতি মেনে চলতে বদ্ধপরিকর । এ রাষ্ট্র সকল জাতীর সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে এবং বিশ্বশান্তির জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে । আমি সকল দেশের সরকারকে তাদের নিজ নিজ দেশে বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি । শেখ মুজিবর রহমানের সরকার একটি সার্বভৌম এবং আইনসম্মত সরকার ও বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃত ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদানঃ
মেজর জিয়া এবং তার বাহিনী সামনের সারি থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং বেশ কয়েকদিন তারা চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রনে রাখতে সক্ষম হন । পরবর্তীতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর অভিযানের মুখে কৌশলগতভাবে তারা সীমান্ত অতিক্রম করেন । ১৭ই এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে প্রথমে জিয়াউর রহমান ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন এবং চট্রগ্রাম, পার্বত্য চট্রগ্রাম, নোয়াখালী,রাঙ্গামাটি, মিরসরাই, রামগড়, ফেণী প্রভৃতি স্থানে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন । তিনি সেনা ছাত্র যুব সদস্যদের সংগঠিত করে পরবর্তীতে ১ম,৩য় ও ৮ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এই তিনটি ব্যাটালিয়নের সমন্বয়ে মুক্তিবাহিনীর প্রথম নিয়মিত সশস্ত্র ব্রিগেড জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন । স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন । ১৯৭১ সালের এপ্রিল হতে জুন পর্যন্ত ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার এবং তারপর জুন হতে অক্টোবর পর্যন্ত ১১ নম্বর সেক্টরের এবং জেড ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমান যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন । স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বের জন্য তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয় ।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে জিয়ার সামরিক জীবনঃ
স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমান্ডার নিয়োগ করা হয় এবং ১৯৭২ সালের জুন মাসে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ নিযুক্ত হন । জিয়াউর রহমান ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি ব্রিগেডিয়ার পদে এবং সে বছরের শেষ দিকে মেজর জেনারেল পদে এবং ১৯৭৫ সালের ২৫ শে আগস্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন । ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হতে অবসর গ্রহণ করেন ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান থাকাকালে জিয়াউর রহমান এই গাড়িটি ব্যবহার করতেন ।
৭ই নভেম্বরের সিপাহী জনতার বিপ্লবঃ
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানের হত্যাকান্ডের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন । তারপরে সেই একই বছরে ২৫শে আগষ্ট জিয়াউর রহমান চীফ অফ আর্মী স্টাফ পদে নিযুক্ত হন । সে বছরের ৩রা নভেম্বর বীর বিক্রম কর্নেল শাফায়াত জামিলের নেতৃত্বাধীন ঢাকা ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডের সহায়তায় বীর উত্তম মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ এক ব্যার্থ সামরিক অভ্যুত্থান ঘটান । এর ফলে ৬ই নভেম্বর খন্দকার মোশতাক আহমেদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি হন । এর পর জিয়াউর রহমানকে চীফ অফ আর্মি স্টাফ হিসেবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় এবং তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাসভবনে গৃহবন্দী করে রাখা হয় যা সেনাবাহিনীর মধ্যে তার জনপ্রিয়তার কারনে অত্যন্ত বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয় । সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গের প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুদ্ধ সেনাসদস্যরা বীর উত্তম কর্নেল অবঃ আবু তাহেরের নেতৃত্বে ৭ই নভেম্বর সিপাহী জনতার আরেক পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং ২য় ফিল্ড আর্টিলারির সেনাসদস্যরা লেঃ কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদের আর্টিলারি নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানকে তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্ত করে ২য় ফিল্ড আর্টিলারির সদরদপ্তরে নিয়ে আসেন । সে দিন সকালেই পাল্টা অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় কর্নেল অবঃ আবু তাহেরের অধীনস্থ সৈন্যরা ক্যাপ্টেন জলিল এবং ক্যাপ্টেন আসাদের নেতৃত্বে শেরে বাংলা নগরে ১০ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদরদপ্তরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম ও কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীর বিক্রম এবং লেঃ কর্নেল এ টি এম হায়দার বীর উত্তম কে হত্যা করে ।
এরপর জেনারেল জিয়া ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন । তিনি সেনাবাহিনীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গণবাহিনী সৃষ্টি সেনা কর্মকর্তাবৃন্দকে হত্যা সহ বিভিন্ন কারনে কর্নেল অবঃ আবু তাহেরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনেন । এতে ১৯৭৬ সালের ২১শে জুলাই সামরিক ট্রাইব্যুনালে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি হয় । অনেকে ধারনা করেন ৭ই নভেম্বর কর্নেল তাহেরের জনপ্রিয়তা দেখে জিয়াউর রহমান শঙ্কিত ছিলেন । তাই ক্ষমতা নিষ্কণ্টক রাখার জন্যই তাহেরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ আনেন ।
২০১৩ সালের ২০ই মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭৬ সালে দেশদ্রোহীতার অভিযোগে করা তাহেরের বিচার এবং মৃত্যুদন্ডকে অবৈধ এবং অসাংবিধানিক ঘোষনা করে এবং এটিকে হত্যাকান্ড হিসেবে অভিহিত করে ।
১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর সিপাহি জনতা বিপ্লবের পর তিনি রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন । ১৯শে নভেম্বর ১৯৭৬ সালে তাকে পুনরায় সেনাবাহিনীর চীফ অফ আর্মী স্টাফ পদে দায়িত্বে প্রত্যাবর্তন করা হয় এবং উপ প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয় । জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালের ৮ই মার্চ মহিলা পুলিশ গঠন করেন ১৯৭৬ সালে কলম্বোতে জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং বাংলাদেশ ৭ জাতি গ্রুপের চেয়ারম্যান পদে পদোন্নতি লাভ করেন । ১৯৭৬ সালেই তিনি উলশি যদুনাথপুর থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন উদ্বোধন করেন । ১৯৭৬ সালের ২৯শে নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন । ১৯৭৬ সালে গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন করেন ১৯৭৭ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি একুশের পদক প্রবর্তন করেন এবং রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত সায়েম এর উত্তরসূরি হিসেবে ২১শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে জিয়াউর রহমান শপথ গ্রহণ করেন । রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন জিয়া দেশে আবার গণতন্ত্রায়ণের উদ্যোগ নেন । তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালুর সিদ্ধান্ত নেন ।
১৯৭৮ সালের ৩রা জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিয়াউর রহমান জয়লাভ করেন । এই নির্বাচনে মোট ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল । এ নির্বাচনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন । ২ জনের মনোনয়নপত্র বাছাই এ বাদ পড়ায় বৈধভাবে মনোনীত প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন । ১ জন আপীল দাখিল করায় ও তার আপীল গৃহীত হওয়ায় এবং কোন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা ১০ জন ছিল । এরপর জিয়াউর রহমান মে মাসে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা এবং আস্থা যাচাইয়ের জন্য ৩০শে মে গণভোট অনুষ্ঠান ও হাঁ সূচক ভোটে বিপুল জনসমর্থন লাভ করেন ।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের তত্ত্ব প্রদান করে তা জনপ্রিয় করে তোলেন । বাংলাদেশে বহু সংখ্যক বিভিন্ন ধরনের মতের এবং ধর্মের নানা জাতিগোষ্ঠী বাস করে । তাদের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার মাত্রা এবং ধরন একে অপরের থেকে ভিন্ন । তাই জিয়া মনে করেন যে ভাষা বা সংস্কৃতির ভিত্তিতে না ভূখণ্ডের ভিত্তিতেই জাতীয়তাবাদকে গ্রহণ করা উচিত । তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ জাতি ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ সংস্কৃতি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের ঐক্য এবং সংহতির ওপর গুরুত্ত্ব আরোপ করেন এবং এই ধারণা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার শক্তি হিসেবে বাংলাদেশে শক্তিশালী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস চালান ।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই জিয়াউর রহমান দেশে শান্তি শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে আত্মনিয়োগ করেন । এতদুদ্দেশ্যে তিনি পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী করেন । পুলিশ বাহিনীর সংখ্যা আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ করে তিনি তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন । সশস্ত্র বাহিনীতেও তিনি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন । তিনি কঠোর প্রশিক্ষণ ব্যাবস্থার মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে পেশাগত শৃঙ্খলা উন্নয়নের কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং তাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করেন । সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে যথেষ্ট সফল হলেও জিয়াউর রহমানকে বেশ কয়েকটি সেনা বিদ্রোহ এবং সামরিক অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার মোকাবেলা করতে হয় । এসব বিদ্রোহ দমনে বাধ্য হয়ে তাকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় ।
নির্বাচন ব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং অবাধ রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে জিয়াউর রহমান যত দ্রুত সম্ভব রাজনীতির গণতন্ত্রায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন । এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক রাজনৈতিক দলগুলিকে তাদের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । তিনি সংবাদপত্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন সংবাদপত্রের মাধ্যমে তথ্যের অবাধ প্রবাহ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন । বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদান করেন । ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে তিনি উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে প্রধান করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল জাগদল প্রতিষ্ঠা করেন । ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । এই নির্বাচনে তিনি ৭৬.৬৭% ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এবং রাষ্ট্রপতির পদে নিয়োজিত থাকেন ।
১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর জেনারেল জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন । রাষ্ট্রপতি জিয়া এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন এবং এই দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন । অধ্যাপক এ. কিউ. এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন । জিয়ার এই দলে বাম ডান এবং মধ্যপন্থীসহ সকল স্তরের লোক ছিলেন । বিএনপির সব থেকে প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল এর নিয়োগ পদ্ধতি । প্রায় ৪৫% সদস্য শুধুমাত্র রাজনীতিতে নতুন ছিলেন তাই না তারা ছিলেন তরুণ । ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় রমনা রেস্তোরায় রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের যাত্রা শুরু করেন । জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণাপত্র পাঠ ছাড়াও প্রায় দুই ঘণ্টা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন । সংবাদ সম্মেলনে নতুন দলের আহবায়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি প্রথমে ১৮ জন সদস্যদের নাম এবং ১৯শে সেপ্টেম্বর ওই ১৮ জনসহ ৭৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন । বিএনপি গঠন করার আগে ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল জাগদল নামে আরেকটি দল উপ রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে সভাপতি করে গঠিত হয়েছিল । ২৮শে আগস্ট ১৯৭৮ সালে নতুন দল গঠন করার লক্ষ্যে জাগদলের বর্ধিত সভায় ওই দলটি বিলুপ্ত ঘোষণার মাধ্যমে দলের এবং এর অঙ্গ সংগঠনের সকল সদস্য জিয়াউর রহমান ঘোষিত নতুন দলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় । তিনি রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জয়লাভ করে । নির্বাচনে অংশ নিয়ে আব্দুল মালেক উকিল এর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ৩৯টি এবং মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২টি আসনে জয়লাভ করে । এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ৮টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ১টি এবং মুসলিম ডেমোক্রেটিক লীগ ২০টি আসনে জয়লাভ করে ।
জিয়া প্রবর্তিত উন্নয়নের রাজনীতির কতিপয় সাফল্যঃ
সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান । জাতীয় সংসদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা ।
বিচার বিভাগ এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া ।
দেশে কৃষি বিপ্লব গণশিক্ষা বিপ্লব এবং শিল্প উৎপাদনে বিপ্লব ।
সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাশ্রম এবং সরকারী সহায়তার সমন্বয় ঘটিয়ে ১৪০০ খাল খনন ও পুনর্খনন ।
গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে অতি অল্প সময়ে ৪০ লক্ষ মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দান । গ্রামাঞ্চলে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা প্রদান এবং গ্রামোন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ভিডিপি গঠন ।
গ্রামাঞ্চলে চুরি ডাকাতি রাহাজানি বন্ধ করা ।
হাজার হাজার মাইল রাস্তা ঘাট নির্মাণ ।
২৭৫০০ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ করে গ্রামীণ জনগণের চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধিকরণ । নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা স্থাপনের ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণ ।কলকারখানায় তিন শিফট চালু করে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি ।
কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশকে খাদ্য রপ্তানীর পর্যায়ে উন্নীতকরণ । যুব উন্নয়ন মন্ত্রাণালয় ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যুব ও নারী সমাজকে সম্পৃক্তকরণ ।
ধর্ম মন্ত্রণালয় প্রতিষ্টা করে সকল মানুষের স্ব স্ব ধর্ম পালনের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিকরণ । বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধন । তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামের জনগণকে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করণ এবং সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে দেশ গড়ার কাজে নেতৃত্ব সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গ্রাম সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন । জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আসনলাভ । তিন সদস্যবিশিষ্ট আল কুদস কমিটিতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি।
দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে সার্ক প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণ ।
বেসরকারিখাত এবং উদ্যোগকে উৎসাহিতকরণ । জনশক্তি রপ্তানি তৈরি পোশাক হিমায়িত খাদ্য হস্তশিল্পসহ সকল অপ্রচলিত পণ্যোর রপ্তানীর দ্বার উন্মোচন । শিল্পখাতে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ।
তথ্যঃ
ছবি সূত্রঃ গুগল ।
বঙ্গভবন বায়োগ্রাফি ।
বাংলাদেশ প্রতিদিন ৬ এপ্রিল ২০১৪।
এবং ইন্টারনেট ।
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৭
আমি মিন্টু বলেছেন: ভুলগুলো নজরে নেওয়া অশংখ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানবেন নূর মোহাম্মদ নূরু ভাই ।
২| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৪
রেজওয়ান26 বলেছেন: আপনার হেডিং-এ স্বাধীনতার ঘোষক কাথাটি বাদ পড়েছে। আশাকরি এটা যুক্ত করবেন।
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৮
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । সংযোগ করে দিয়েছি ।
৩| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
ওয়্যারউলফ বলেছেন: জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের প্রথম প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন ।
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩০
আমি মিন্টু বলেছেন: ভালো মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ভাই ।
৪| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮
সময় হলো বলেছেন: প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে জিয়াউর রহমানকে হাস্যকর না বানানোর জন্য ধন্যবাদ।
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৩
আমি মিন্টু বলেছেন: এক পাওয়া যায়না বয়রা কানাগো সঙ্গে আর পারা যায়না আওমিঃর কিছু ঠ্যাঠা সাথে । ধন্যবাদ ভাই কষ্ট করে পোস্ট পড়ার
জন্য ।
৫| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
মিন্টুর নগর সংবাদ বলেছেন: তথ্যপূর্ণ্য একটি পোস্ট ভালো লাগলো । ধন্যবাদ দোস্ত ।
৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ নগর সংবাদ ।
৬| ৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৪৮
প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন: একজন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা যদি কখনো স্বাধীনতা ঘোষণা করে তবে সেটা হয় সামরিক বিদ্রোহ , যেটা মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা যুদ্ধ কখনোই স্বীকৃতি পাবে না,
পাকিস্তান ১৯৭১ সাল থেকেই দাবি করে আসছে , আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ভারতের ষড়যন্ত্রের ফল , ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর মত দেশদ্রোহীরা পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছিল , তাদের সাইজ করে দেশের ম্নগ্লের জন্য অপারেশন সার্চলাইট চালানো হয় , এরপর বাঙালীরা সামরিক বিদ্রোহ করে এবং তারপর গৃহযুদ্ধ শুরু হয় এবং ভারতের ষড়যন্ত্রের কাছে পাকিস্তান সরকার ব্যর্থ হয় , বাংলাদেশের জন্ম হচ্ছে ভারতের ষড়যন্ত্রের ফসল , জিয়ার মত একজন সামরিক অফিসারকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেব প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তানি দাবিকে সত্যি প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং বাংলাদেশের মহান গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধকে একজন সামরিক অফিসারের বিদ্রোহ হিসেবে চালানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন , তাই তখনকার পাকিস্তানের নির্বাচনী নিয়মানুযায়ী বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী , এছাড়াও বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান এবং পুর্ব পাকিস্তনের জাতীয় নেতা , তাই এটা স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান যে স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র অধিকার এবং রাজনৈতিক ম্যান্ডেট বঙ্গবন্ধুর ছিল , উনি ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা করলে কোনভাবে গ্রহণযোগ্য হত না , হবেও না , এবং ইতিহাসের শাশ্বত সত্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন । এই জন্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা মুক্তিযুধে কে গৃহযুদ্ধ , সামরিক বিদ্রোহ এবং ভারতের ষড়যন্ত্র এসব পাকিস্তানি প্রচারণা সফল করতে জিয়ার মত একজন মেজরকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র হচ্ছে ,আসল সত্য হচ্ছে জিয়া ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে ।
বংলাদেশের স্বাধীনতা ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন এবং ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করে , অথচ জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে ২৭শে মার্চ ,
পাঠক লক্ষ্য করুন যেখানে জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন , এমনকি ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করে ,সেখানে জিয়ার মত একজন সামরিক অফিসার ২৭শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ( যার রেঞ্জই ছিল সর্বচ্চো ৫০ কিমি ) থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হয় ????????????? আপনারা সবাই এই মিথায় পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে রুখে দাড়ান।
৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫২
আমি মিন্টু বলেছেন: আপনি যা বলছেন তা যে সত্যি তারই বা প্রমান কি ?
৭| ৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪২
সাদী ফেরদৌস বলেছেন: যাক এই প্রথম দেখলাম কেউ একজন সত্যিকারের কাছাকাছি গিয়েছেন । ধন্যবাদ
৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫০
আমি মিন্টু বলেছেন: হুম হয়ত বা ।
৮| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:২৯
রঙতুলি বলেছেন: পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।।
৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২
আমি মিন্টু বলেছেন: আপনাকেও পাঠের জন্য ধন্যবাদ ।
৯| ৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪
কালের সময় বলেছেন: অসাধারণ তর্থ্য পূর্ণ্য পোস্ট । ধন্যবাদ মিন্টু ভাইয়া ।
৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৩
আমি মিন্টু বলেছেন: আপনাকেও পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া ।
১০| ৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৬
চাঁপাডাঙার চান্দু বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটার জন্য। নতুন প্রজন্ম অনেক কিছুই জানেনা দেশের এই শ্রেষ্ঠ সন্তানটি সম্পর্কে। একটা মানুষ বারবার দেশের বিপদে সামনে এসে হাল ধরেছেন; অথচ তথাকথিত প্রজন্ম আমেরিকার কোন ছ্যাঁচড়া ফকির লাল জিয়াকে নিয়ে কি র্যাপ গাইল, সেইটা শুনেই উহু আহা করে। জিয়ার উন্নয়ন, সততা সম্পর্কে জানে না কিন্তু জাফর দালালের ফাঁপরবাজি শুনে লোকদেখানো দেশ গড়ার শপথ নেয়। তাদের শপথে যখন গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যায়, গোপালি পুলিশের ভয়ে লিটনের ফ্ল্যাটে বসে স্টেডিয়ামে পাকি পতাকা দেখা গেল কেন সেইটা নিয়া স্ট্যাটাস দেয়।
এই দেশে সবকিছুই টাকার কাছে বিক্রি হয়, টাকার কারণে জাসদের ইনু আওয়ামী লীগ করে। খালেদ মোশাররফের বেশ্যা মেয়ে সংসদের সংরক্ষিত আসনে লুতফা তাহেরের পাশে বসে বাপের হত্যার জন্য জিয়াকে দায়ী করে। বাপের নাম দিয়ে কি হবে?? হাসিনার কৃপায় যদি আগামী তিন পুরুষের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়, তবে কে জিয়াকে গালি না দিবে?? প্রেসক্লাবের সামনে গুলি খেয়ে পড়ে থাকা মেননও খালেদা জিয়ার দয়ায় বেঁচে গিয়ে হাসিনার কাছে বিক্রি হয়।
আমরা একজন সাহসী সন্তানকে শ্রদ্ধা জানাই, কাউকে দেবতা বানাইনা। হয়তো হাসিনা, জাফর, বামদের প্রোপ্যাগান্ডার কাছে পিছিয়ে থাকবো, কিন্তু দালাল কিনে জিয়ার নামে মিথ্যা গান গাওয়ানোর দরকার নাই। ব্লগ লিখেই সত্য প্রকাশ হবে ইনশাআল্লাহ
০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১২:০৯
আমি মিন্টু বলেছেন: আপনাকেও অসংখ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা পাশে থাকার জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: জিয়াউর রহমান সাবেক সেনাপ্রধান এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন । ১৯৭১ সালে ২৭ শে মার্চে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করে । মুক্তিযুদ্ধের পর জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালের ২১শে এপ্রিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হন ও ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বি এন পি প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি চার বছর বাংলাদেশ শাসন করার পর ১৯৮১ সালে ৩০শে নিহত হন ।