নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোববার শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনা

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০



শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার শাবি ভিসিবিরোধী শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা । ভিসির পদত্যাগ দাবিতে কর্মসূচি পালনকালে এই হামলা চালানো হয় । এতে ১০জন শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা । এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বরেণ্য লেখক ডঃ জাফর ইকবালের স্ত্রী ডঃ ইয়াসমিন হক লাঞ্ছিত হন ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হাতে ।
এ ঘটনাকে বর্বর হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন শিক্ষকরা । ডঃ জাফর ইকবাল ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন হামলাকারীরা যদি আমার ছাত্র হয়ে থাকে তবে আমার গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া উচিত । হামলার প্রতিবাদে আজ ক্যাম্পাসে অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং কালোব্যাজ ধারণসহ প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা ।

হামলার ঠিক আগ মুহূর্তে ভিসি অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়া তার কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বাধা দেন । একপর্যায়ে শিক্ষকদের হাতে ভিসি লাঞ্ছিতও হন । হামলা লাঞ্ছনার ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকরাও ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয় ।
শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার তীব্র নিন্দা এবং এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র আসক এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকজনেরা । পৃথক বিবৃতিতে তারা দোষীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন । আসক ভিসি অধ্যাপক আমিনুল হক ভূইয়ার পদত্যাগও দাবি করেছেন । ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব । সংগঠনটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন ।
কয়েক মাস ধরে ভিসির পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদ । এর মধ্যেই রোববার সকাল ১০টায় বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস এবং বিকাল ৩ টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডাকেন ভিসি । এ সভা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকরা সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দেন ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান শিক্ষকদের ঘোষিত আন্দোলন প্রতিহত করতে সকাল সাড়ে ৫টায় ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ । ৭টায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপস্থিত হলে ছাত্রলীগের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় । এই সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থী দাবি করেন । যদিও সেখানে সিনিয়র সহসভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ সহসভাপতি অঞ্জন রায় এবং সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম সবুজসহ শাবি ছাত্রলীগের বেশ কজন নেতাও ছিলেন ।
৮টার দিকে ভিসি ডঃ আমিনুল হক ভূইয়া সেখানে এলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় । শিক্ষকরা ব্যানার টানিয়ে ভিসিকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেন । এ সময় ভিসি ভবনের ফটকে বসা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা শিক্ষকদের ব্যানার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে । এ নিয়ে শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয় । এর ফাকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন ভিসি । সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত উঠে যাওয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষকরা আবারও বাধা দেন । এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে ভিসি সিঁড়িতে পড়ে যেয়ে পায়ে আঘাত পান ।
প্রত্যদর্শীরা আরও বলেছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তখন জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায় । তারা শাবিপ্রবির মাটি ছাত্রলীগের ঘাটি ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের ব্যানারও কেড়ে নেন । ছাত্রলীগের হামলায় অধ্যাপক ইয়াসমিন হক এবং আরেক শিক্ষক মাটিতে পড়ে যান । মাটিতে পড়ে যাওয়া শিক্ষককে এক ছাত্রলীগ কর্মী লাথিও মারে । কয়েকজন শিক্ষককে কিল ঘুষি এবং গলায় ধাক্কা দেয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা । এ সময় এক শিক্ষকের হাত থেকে রক্ত ঝরতেও দেখা যায় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ আকন্দ ও অঞ্জন রায় এবং সাজেদুল ইসলাম সবুজও হামলায় অংশ নিয়েছেন । ছাত্রলীগ কর্মী পরিসংখ্যানের ধনী রাম রায়, সমাজবিজ্ঞানের আবদুল বাতেন তন্ময়, বনবিদ্যার আরিফুর রহমান আরিফ, আবদুস সালাম মঞ্জু, ইন্ডাস্ট্রিয়ালের কামরুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানের আরিফুর রহমান কেনেডি, জুয়েল, ইংরেজির ফয়সাল আহমদ, পরিসংখ্যানের তমাল, সমাজবিজ্ঞানের নজরুল ইসলাম, বনবিদ্যার জাহিদকেও হামলায় অংশ নিতে দেখা গেছে ।
ভিসিপন্থী হিসেবে পরিচিত মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুক্তচিন্তা চর্চায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম অধ্যাপক জহির বিন আলম প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার এবং সহকারী প্রক্টররা এই সময় অদূরে দাড়িয়েছিলেন । তারা কেউ ছাত্রলীগ কর্মীদের থামানোর চেষ্টা করেননি । জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন দুই পক্ষের মাঝখানে দাড়িয়ে হাত জোড় করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানায় এরপর কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে ভিসি ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার নিজ কক্ষেই অবস্থান করেন। এক পর্যায়ে ভবনের নিচতলায় অধ্যাপক ইয়াসমিন হক অবস্থান নিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে ধরেন । এ সময় আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয় । পরে ভিসি ভবন থেকে বেরিয়ে অধ্যাপক ইয়াসমিন হক বলেন ভিসি তো এ ছাত্রলীগকে নিয়েই আছেন । এরাই তার পেটুয়া বাহিনী । এই যে পরিবেশ নষ্ট করা হল এর জন্য ভিসিই দায়ী থাকবেন । সকালে হামলা করার জন্য ভিসি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে রাতে বৈঠক করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি ।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল ইসলাম বলেন ভিসি ছাত্রলীগকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে । তাদের হামলায় তিনিসহ ১০ শিক্ষক আহত হয়েছেন । অধ্যাপক ইয়াসমিন হক ছাড়াও মারধরের শিকার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনূস বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল গনি, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাসানুজ্জামান শ্যামল, সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক উদ্দিন, এনক সমাদ্দার ও মোস্তফা কামাল মাসুদ । এরপরও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভিসি ভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষকরা । এ ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন । এরপর তারা একাডেমিক ভবনে চলে যান ।
এর মধ্যেই সকাল সাড়ে ১০টায় বোর্ড অব অ্যাডভান্সড স্টাডিস ও বেলা ৩টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করেন ভিসি অধ্যাপক আমিনুল হক ভুইয়া । তিনি বলেন আমাকে কার্যালয়ে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে । শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমি একাডেমিক কাউন্সিল করতে এসেছি । আর ছাত্ররা এসেছে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে । আজকে এ পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি । রোববারের ঘটনাকে ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয় আখ্যা দেন অধ্যাপক আমিনুল হক । তবে তিনি দাবি করেন শিক্ষকদের ওপর হামলা হয়েছে এ রকম কোনো অভিযোগ শিক্ষকরা আমার কাছে করেননি । বরং শিক্ষকদের হামলায় আমি পায়ে ব্যথা পেয়েছি । শিক্ষকদের বাধায় আমি রাস্তা দিয়ে অফিসে ঢুকতে পারিনি । আমাকে কাদামাটি ও ঘাসের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে হয়েছে । শিক্ষকরা হামলা বা লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন এ রকম কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসলে আমি অবশ্যই ব্যবস্থা নেব ।

ছবি তথ্যঃ যুগান্তর ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

নির্বাকের মিছিল বলেছেন: হামলার ঘটনার ভিডিও

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:২২

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার লিংকে যেতে পারলাম না । আমার নেটওয়ার্ক দূর্বল বলে । শেয়ার করায় ধন্যবাদ ।

২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:০৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: লজ্জাজনক ঘটনা! এরা ছাত্র না সন্ত্রাসী?

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:২০

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার সাধু ভাই । এরা ছাত্র নাম ধারী কিছু কলঙ্ক । এদের জন্যই আজ গোটা জাতির কলঙ্ক ।

৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:০৯

আমরা সূর্যসেনার দল বলেছেন: এ ঘটনা শুধুই লজ্জার, এ ঘটনা জাতিকে নতুন আরেকটি কলঙ্ক লাগালো...ধিক্কার জানাই সেই সিস্টেম কে যে সিস্টেম এ ধরনের ঘটনা ঘটার প্রয়াশ পায়।

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:২০

আমি মিন্টু বলেছেন: পুরো বাঙ্গালি জাতির জন্য নতুন এক লজ্জার ইতিহাস ।

৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১০

ছাসা ডোনার বলেছেন: ধীক্কার জানাই এই ঘটনার সংগে জড়িত ভিসি এবং হাম্বালীগের সন্ত্রাসীদের!!!!!!!!!!!!!!!!

৩১ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৫৬

আমি মিন্টু বলেছেন: দোষ আমাদের মাথার ভাই । মাথা কিন্তু মগজ নাই । তাই কাউকে কিছুর বলারো নাই । নিরবে শুধু দেখে যান ।
আর শুধু জয়বাংলার জয়ও ধ্বনি গান । মিথ্যে ভালোবাসা সম মমতার করতালি পান ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.