![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের সাথে মিশতে ও কথা বলতে পছন্দ করি।
এই ঘটনার ৬ দিন পর রেহার জন্য একটা ফোন কিনলাম। তারপর সাথে কিছু টাকা ও ফোন দিয়ে ওর ভাইকে দিয়ে পাঠালাম। এরমধ্যে শুনলাম বাসার অবস্থা খুব খারাপ। আঙ্কেল ঘরে কোন বাজার করে না, কিছু দিনের ভিতর আঙ্কেল রেহার বিয়ে দিয়ে দিবে। ওই ঘটনা রেহার চাচাদের জানান হইছে। সবাই মিলে ওরে বিয়ে দিয়ে দিবে। তখন আল্লাহকে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ!!! আমার কপালটা এমন কেন, শুধু শুধু একটা মানুষ আমার জন্য এতো কষ্ট পাবে? যদিও ওই দিনের ঘটনাতে আমার কোন দোষ ছিল না, কিন্তু প্রতিনিয়ত নিজেকে দোষ দিতাম। চিন্তা করলাম, যেভাবেই পারি এই বছরের মধ্যে একটা জব গোছাতে হবে, নইলে রেহাকে পাবার আশা বাদ দিতে হবে। এর মধ্যে রেহার সব স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হল। যে ছিল আগে ঘরের রাজরানী, সে হয়ে গেল ঘরের দাসীর চেয়ে খারাপ। ঘরের পোষা বিড়ালেরও কিছুটা স্বাধীনতা থাকে, কিন্তু রেহার তাও নাই। রেহার আম্মু ওকে অনেক মারল, ভাইরা তিরস্কার করলো, শুধু নেহা ওকে সাপোর্ট দিয়ে গেল, নইলে ওকে বাঁচানো সম্ভব ছিল না। আর আমিও পারতাম না ওদের এলাকায় যেতে। রেহা সবসময় সুইসাইড করতে চাইত। আমি অনেক কষ্টে ওকে বোজাতাম, বলতাম মরলে এক সাথে মরব, বাঁচলে এক সাথে বাচব। আরো একটা ব্যাপার ছিল যা রেহাকে প্রতি নিয়ত কষ্ট দিত, যা আমি অনেক পড়ে জানতে পারি। আর তাই প্রতি নিয়ত ও চাইত মরে যেতে। যাইহোক এরপর আমাদের আর দেখা হতো না, মাঝে মাঝে ফোনে কথা হতো। রেহা রাত ছাড়া কথা বলতে পারত না। রেহার আব্বু সবসময় ঘর থেকে বের করে দেবার কথা বলত। আর আমি চিন্তা করতাম, যদি ঘর থেকে বের করে দেয়, তখন আমি কি করব, রেহাকে বিয়ে করা এককথায় এখন অসম্ভব। কিন্তু যেভাবেই হোক ওকে আমার বাঁচাতে হবে। প্ল্যান করলাম যদি রেহার আব্বু এখনি বিয়ে দিয়ে দিতে চায়, তবে ওকে হোস্টেলে এনে রাখবো, রেহা নিজেও কাজ পারে, সুতুরাং একভাবে না একভাবে কেটে যাবে। এর মধ্যে আমি একটা জব মেনেজ করব। তাও ওকে মরতে দিবনা, কারন আমি জানতাম ও জীবনেও ওইসময় বিয়ে করবেনা, দরকার হলে মরে যাবে। এরপর থেকে ওর জন্য টাকা জমানো শুরু করি, খেয়ে না খেয়ে গাদার মত খেটে ওর জন্য টাকা জমাতাম, যখন যেখানে যাই কাজ পারতাম, করতাম, কিন্তু কক্ষনও রেহাকে বুঝতে দিতাম না। যদিও পরে বুঝতে পারি সেটা আমার লাইফের চরম ভুল ছিল। প্রতিদিন রাত্রে রেহা আমার সাথে কথা বলতে চাইতো, সারারাত কথা বলতে চাইতো, আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করতাম, কোনোরকমে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওর সাথে কথা চালিয়ে যেতাম। রেহা সারাক্ষণ মরে যাবার কথা বলত, শুধু আমার জন্য পারত না, আমি আর নেহা মিলে বুঝাতাম, আমি সবসময় বলতাম, রেহা চিন্তা করোনা, যদি একান্ত তোমার আব্বু তোমাকে বিয়ে দিতে চায়, তবে তুমি ঘর থেকে বের হয়ে যেয়ো। আমি তোমাকে দরকার হলে হোস্টেলে রেখে পড়াশুনা করাব। আর তাছাড়া তুমি খুব ভাল হাতের কাজ পারো, সুতুরাং তেমন কোন অসুবিধা হবে না। এরপর যদি আমি তোমাকে সাপোর্ট দিতে না পারি, তবে তোমার যা খুশি কর। আমি আর বাধা দিব না। ইনশাল্লাহ, সব ঠিক হয়ে যাবে। এভাবে আস্তে আস্তে আমি ওর মনে বিশ্বাস আনতে শুরু করি, রেহা আবার নুতুন করে বাচার চিন্তা করে। এরপরও ওর মনে আরও একটা ভয় কাজ করে, যা আমাকে সে বলতে পারত না। বললে যদি আমি ওকে ছেড়ে চলে যাই। কিন্তু আর সবার মত রেহাও ভুলে গিয়াছিল, আমি দ্বিপ। কক্ষন বেইমানী করে না, মিথ্যা বলে না, কোনোকিছু ভয় পায় না, যাইহোক সেই কথা পরে আসছি, নভেম্বর মাস থেকে আমি পুরু চেঞ্জ হয়ে গেলাম। কারন আমার পরিবার, রেহার চিন্তা, আমার পড়ালেখা, জব সবকিছু মিলিয়ে আমার মাথা অনেক গরম থাকতো, এরপরে আবার রাত্রে রেহাকে সময় দেয়া। আমি দিন দিন শুকিয়ে যেতে শুরু করলাম, তাও রেহাকে বুঝতে দিতাম না। ওইদিনের পর ওর আব্বু ওকে আর বের হতে দিতনা, প্রায় সময় আজেবাজে কথা বলত। ওর আম্মুকে বকা দিত। সারাদিন ঘরের মধ্যে চিল্লাচিল্লি করে রাখত। রেহা যা খেতে চাইতো, জানত কিন্তু আনত না। রেহা প্রায় সময় না খেয়ে থাকতো, আর তাই আমি সবসময় বকা দিতাম। মাঝেমাঝে আমি রেহার জন্য চিকেন সুপ কিনে দিয়ে আসতাম। যখনি আমাদের বাসায়ে কোন ভাল খাবার রান্না হতো বা কেউ আনত, তখন আমি সেটা রেখে দিতাম, দেখা হলে দিতাম। যাইহোক আমাদের আর দেখা হতনা, আমিও এলাকায় যেতে পারতাম না, এভাবে দুজনের কঠিন দিন কাটতে লাগলো।
আগের গুলো এখানে
চলবে.................
©somewhere in net ltd.