![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উফফ এইভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে?
বসতে বসতে হাত পায়ের ঝিঁ ঝিঁ ধরে গেছে।
এইসবের কোন মানে হয়? সারাজীবনে যত ছবি সে তুলে নাই সব আজকে মনে হয় তোলা হয়ে গেছে। মহা উৎসাহে সবাই ছবি তুলে চলেছে। তার নিজের ছবি কেমন আসছে তা নিয়া কারো মাথা ব্যাথা নাই। কিছুক্ষণ পরেই এইসব চলে যাবে ফেসবুকে।
পুচকা পোলাপাইন কমেন্ট করবে ‘আপি তোমাকে ভাল লাগছে, তা তুমি কবে এইরকম বর পাবে’। তার পাশে ছেলে থাকলে ‘সবাই তো করে ফেলছে, তুমিও মরহুম হও’।
বাবাজী কেমন আছো’?
বয়স্ক লোকের কথায় নিজের ভাবনার জগত থেকে উঠে আসে অয়ন।
’জী চাচা ভালো’।
এই লোককে কোথায় দেখেছে মনে করতে পারে না। হবে হয়তো বাবার কোন বন্ধু। গায়ের থেকে ভুরভুর করে আতর আর পানের গন্ধ আসছে। এই রকম গন্ধের কোন লোকের প্রতি কেন জানি ভক্তি চলে আসে। মনে হয় এরা অনেক সুখী, জীবনে জটিলতা কম।
চাচা পাশে বসলেন। উনার সাথে মনে হয় কেউ আসেনি। তাই ছবি তোলার হিড়িক একটু কমে গেল। শুধু ক্যামেরাম্যান ভিডিও করে চলেছে। চাচার পাশে বসে থাকার মাঝে কেমন জানি আলাদা ব্যাপার আছে। উনি সহজে উঠবেন বলে মনে হয় না। ওদিকে ছবি তোলার জন্য এক হালি মেয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে চাচার দিকে তাকিয়ে আছে। কখন উনি নামবেন।
‘বাবা ‘অয়ন’ বিয়েতে এসেছি, তেমন কিছু দিতে পারি নাই’।
বলে উনি আমার হাতের মাঝে একটি কাগজের প্যাকেট গুঁজে দিলেন। পরক্ষণেই কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নেমে চলে গেলেন। অনেক মানুষের ভিড়ে আমি অবাক হয়ে তার চলে যাওয়া দেখছি। পাঞ্জাবীর পকেট থেকে রুমাল বের করে ওপারে হারিয়ে গেলেন। উনি কি কাঁদছিলেন? উনি কে? কেন কাঁদবেন?
এক হালি মেয়ের মেকআপ আর পাউডারের গন্ধে আবারো ভাবনার জগত থেকে উঠে এলো অয়ন। এদের গন্ধে কোন ভক্তি পাচ্ছে না সে , কেমন জানি মেজাজ খারাপ হচ্ছে এখন। আচ্ছা প্যাকেটটা খুলে দেখবে? ভিতরে কি আছে? নাকি গিফটের ওখানে দিয়ে আসবে। মজনু মিয়া “বরপক্ষ” লেখা টেবিলে বসে আছে। না ওখানে দিবে না। মজনু মিয়াকে বিশ্বাস নেই। গায়েব করে দিতে পারে।
প্যাকেটটা খোলার জন্য অস্থির হয়ে গেছে সে। ছোটবেলায় বাবা অফিস থেকে সন্ধ্যায় আসার সময় কোন প্যাকেট নিয়া আসলে যেরকম অস্থির হত কি এনেছে দেখার জন্য, অনেকটা সেরকম।
বড় মামা হন্তদন্ত হয়ে এদিক ওদিক ছুটছেন। অথছ ছোটাছুটির কিছু নাই। সবাই আসছে যাচ্ছে খেয়ে যাচ্ছে। উনার এত ছোটাছুটির কি আছে? মামাকে ডেকে এনে টয়লেট যাবার কথা বলে নিরিবিলিতে এলাম। বড় মামা জানে আমি সিগারেট খাই হয়তো ভেবেছে, ছেলে সিগারেট খাবার জন্য একটু বিরতি চাইছে।
প্যাকেট খুলে একজোড়া কানের দুল দেখতে পেল অয়ন। কেমন জানি চেনা চেনা লাগছে। আরে এই দুল এখানে এল কেমন করে? এটা তো দীপা কে দিয়েছিল সে।
পাশ দিয়ে দুটি লোক হেঁটে যাচ্ছিল । নিজেদের ভিতর স্বাভাবিক আলাপচারিতা হচ্ছে । একজন আরেকজনকে বলছে ‘সিরাজ ভাইকে মাফ করে দেন, মৃত মানুষের উপর অভিমান রাখতে নাই’।
অভিমান!!!!
অভিমানের কথা শুনে অয়নের দীপার কথা মনে পড়ে যায়।
দীপার কি কিছু হয়েছে? ওই বয়স্ক লোকটি কি দীপার কিছু হয়? বাবা হয়? কিন্তু দীপার বাবা তো অনেক আগেই মারা গিয়েছে? তাহলে দীপাও কি?
অনেক প্রশ্ন নিয়ে সে ভিড়ের ভিতর বয়স্ক লোকটিকে খোঁজে? এত মানুষের ভিতর তাকে কোথাও পায় না।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৩৭
সানড্যান্স বলেছেন: ভাই প্রভাতেরে প্রভা পড়ছিলাম!