![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অতি সাধারন একজন মানুষ। প্রকৃতিগতভাবে একটু নিঃসঙ্গ ধরনের। এমন কি অনেকের মাঝেও একা। পেশায় একজন চিকিৎসক। মানুষের উপকার হয় এমন যেকোন কাজে আমি আছি। আপনারা ডাকলে ইনশাল্লাহ পাশে থাকব।
স্বাস্থ্য; এমন একটি বিষয় যাতে সমাজের প্রতিটি খাত ও খাতের মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
অথচ, স্বাস্থ্যবিষয়ক যেকোন বাজে অকারেন্সের শিকার একমাত্র আমাদের ডাক্তারদেরই হতে হচ্ছে।
বাকি সবাই যে যার দায়িত্বে অবহেলা বা উদাসীনতা দেখিয়ে আমাদের কাঁধে দোষ চাপাচ্ছে, নিজে ও সাথে নির্লজ্জের মত মজা নিচ্ছে!
*আপনি একজন রাজনৈতিক নেতা।
আপনি আপনার এলাকার জনসভায় চিৎকার করে বলেন,"ঘরে ঘরে ডাক্তার পৌছে দিয়েছি, আপনারা সেবা পাবেন।"
তা জনাব, ডাক্তার দিয়েছেন, তার বসার জায়গা দিয়েছেন তো? কাজ করার পরিবেশ কেমন? নিরাপত্তা কি আছে তার?? থাকার জায়গা কি আছে, বাস করা কি যায়? যাতায়াতের কি ব্যবস্থা?? ঔষধ পর্যাপ্ত পরিমানে সাপ্লাই দিয়েছেন কি? প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা কি করেছেন?
এগুলা কিছু নিয়ে আপনার মাথাব্যথা নাই। কারন বলদ জনগন আপনার বড় বড় বুলি শুনে সিল মেরে দিয়েছে, আপনাকে এখন পাওয়া যাবে অন্যকোথাও।
অথচ, বাস্তবসম্মতভাবে পরিকল্পনা প্রনয়ন করার কথা ছিল আপনার। ঘরের দরজায় ডাক্তার পাঠানোর প্রতিস্রুতি না দিয়ে আপনার বলা উচিত ছিল, আপনাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন, আমি তাই করব।
*আপনি সরকারী আমলা?
বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতিতে আপনার জড়াজড়ি। স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে সুবিধামত নিয়োগ দেন, কাজ দেন কন্ট্রাকটারকে, আমাদের হাস্পাতালগুলো পড়ে থাকে ভাংগাচোরা, রুগ্ন। কোন বরাদ্দ পরিমানমত, ঠিকমত, সময়মত পৌছে না।
অথচ, এই খাতের সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাওয়ার কথা। আপনি নানাভাবে কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করে, ডাক্তারদের কাছে দাবী করেন কোয়ালিটি সেবা! তা বাতুলতা মাত্র।
*আপনি বড় ব্যাবসায়ী।
পন্য আনছেন, টাকা কামাবেন। মেশাচ্ছেন ভেজাল, শিশুখাদ্য থেকে পশুখাদ্যে পর্যন্ত। কার কিডনী লিভার নস্ট হল এটা আপনার মাথাব্যথা না।
অথচ, এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি আপনি খেলতে পারেন না। মানুষকে আধমরা করে আমাদের হুংকার দেন, ব্যাটা বাচাতে পারলি না কেন? আপনার ৫ তারা হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারদের ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে অসুস্থ মানুষগুলোকে নি:স্ব করতে আপনার একটুও খারাপ লাগেনা!
ভারতের চিকিতসা সেবা ভাল, স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়, অনেকেই বলেন। ওখানকার সব বড় বড় হাসপাতালগুলো বড় বড় ব্যাবসায়ীরা চ্যারিটি হিসেবে করেছে। একটা পয়সা নেয় না সেখান থেকে। আর আমাদের ৫ তারা হাসপাতালগুলোর কথা তো বলাই বাহুল্য। বড় বড় বিজনেস ম্যাগনেটরা টাকা ঢালেন গানের আসরে, শাহরুখ-ক্যাটরিনাদের নাচ দেখতে।
জনগণের জন্য চ্যারিটি করার টাকা কই??
চ্যারিটি তো করে যাবে ডাক্তারগুলা। খেতে পারুক আর না পারুক, রোগীর ফি নিতে পারবে না। ন্যায্য ফি নিলেই সে কসাই।
আর আপনারা হলেন, "জাহান্নামের দেবতা!"
একটা পয়সা ইনভেস্ট করেন না দেশে সহজে চিকিতসা সরঞ্জাম তৈরীর, যাতে দাম কমে আসলে সেবার দাম কমে আসত।
*আপনি একজন মিডিয়াকর্মী।
সমাজের জন্য উপকারী, স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য জনগণকে পৌছে দেবার দায়িত্ব আপনাদের ছিল। কোন হাসপাতালে নতুন রোগীবান্ধব কিছু চালু হলে বা কোন কাজ করলে সেটা আপনারা সচেতনভাবে চেপে যান। কিন্তু ঐ তথ্যটি জানা থাকলে হয়ত আরো হাজার জীবন বাচত।
অথচ, আপনার লিখবেন, প্রচার করবেন কিভাবে ডাক্তার তথাকথিত 'ভূল চিকিতসায়' রোগি মেরেছেন, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উপর মানুষের আস্থা কিভাবে নস্ট করতে হয়, তার চেস্টা আপনারা করে যান দিন-রাত। সত্যিকার ডাক্তার নয়, বরং ভূয়া ডাক্তার সেজে থাকা মানুষদের নিয়ে আপনারা স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুসঠান করেন!
কি বিচিত্র চিড়িয়া আপনারা!!
*আপনি বাংলাদেশের নামকরা ব্যাংকের মালিক বা এম ডি।
উচ্চ হারে ঋন দেবেন চিকিতসা যন্ত্রাংশ কেনার জন্য। সুদের হার কমাবেন না। আপনার লস হয়ে যাবে। কিন্তু আশা করবেন হাসপাতালের বিল কম হবে! সহজ শর্তে স্বাস্থ্য ঋন দেবেন না আপনারা যাতে স্বল্প আয়ের নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত মানুষ চিকিতসা ব্যয় মেটাতে পারে। কিন্তু বলবেন বিল দিতে না পারায় রোগীর সাথে আমরা কসাইগিরি করেছি।আপনার লোনের ইন্সটলমেন্ট কি কয়েকটা মাফ করে দেবেন?
*আপনি আইন শৃংখলা বাহিনির সদস্য/বিচার বিভাগের হোমরা-চোমরা।
পথে পড়ে থাকা অজ্ঞান মানুষকে হাসপাতালে পৌছে দাতার প্রান ওসঠাগত হতে দেখেছি আপনাদের জেরায়, কেউ কেউ হয়রানিরো স্বীকার হয়েছে। এখন আর কেউ কাউকে আনতে চায় না, পড়ে থাকা মানুষটা পথেই মরে যায়।
হাসপাতালে ঝামেলা হলে আপনারা ঝামেলাকারীদের পক্ষ নেন। গ্রেফতার করেন ডাক্তার।
অথচ, ডাক্তারের ধর্ষক বা খুনীদের খুজে পাওয়া যায় না। গেলেও তারা আইনের ফাক গলে বেরিয়ে পড়ে।
*আপনি বড় ইঞ্জিনিয়ার বা সায়েন্টিস্ট।
একটা মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটর তো তৈরী করলেন না। এখনো একটা আই সি ইউ বেডের পাম্প ঠিক করাতে চাইনিজ মেকানিক আনা লাগে। কিন্তু আপনিই আমাদের রক্তচোষা বলে গাল দেন!
এরকম ধরে ধরে প্রত্যেকজন, প্রতিটি পেশাজীবি মানুষকে নির্দিস্ট করে বলা যায়,
স্বাস্থ্য খাতে আপনার যে কর্তব্য ছিল, যে দায় ছিল, সেটার কতটুকু পালন করেছেন আপনি??
তিল পরিমান ও না।
আমরা শুধু শ্রমে-ঘামে সেবা দিয়ে যাব, আর আপনারা আমাদের রক্ত ঝরাবেন অন্যায়ভাবে, এটা মেনে নেয়া হবে না!
দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা,
শুধিতে হইবে ঋণ।।
২৬ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৩৬
আত্মমগ্ন আিম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই কমেন্টের জন্য।
আপনি যা বলেছেন এর পুরোটাই সত্যি,আমি ফেনীতে থাকি। একই চিত্র এই শহরেও অনেক। ডাক্তারদের ক্লিনিকের মালিকানার ব্যাপারে বলব,ডাক্তাররা মূলত কিছু পরিমান শেয়ার হোল্ডার ই থাকেন।
এসব কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
কিন্তু আইন যারা করার কথা, তারা অসত। যারা আইন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকে, তারাও অসত।
কার কাছে সমাধান চাইবেন আপনি?
তবে একথাও সত্য, আপনার উল্লিখিত ধরনের ডাক্তার সামগ্রিক সংখ্যার তুলনায় কম। তবু অপরাধ তো অপরাধই।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৪০
ছণ্ণ্ ছাড়া বলেছেন: জেলা শহরের অধিকাংশ ক্লিনিকের সাথে সরকারী ডাক্তাররা জড়িত। সরকারী চাকুরী বিধিতে সরকারী কর্মচারীদের ব্যবসা করার বিধান না থাকলেও এখানে এসব দেখার কেউ নেই। নামে বেনামে ডাক্তার বা তার স্ত্রী বা সন্তানেরা এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রত্যেক্ষভাবে জড়িত। ক্লিনিক মালিকরা রোগী যাকে বর্তমানে মুরগী বলা হয়, ধরার জন্য এমন কোন ক্ষীণ প্রচেষ্ঠা নাই যে করে না। টেম্পু স্ট্যান্ড সদর হাসপাতালের সামনে। বাস স্ট্যান্ড, নৌকা লঞ্চ ঘাটে ক্লিনিক গুলো কর্তৃক নিয়োগকৃত দালালরা উৎ পেতে থাকে। রোগী আসা মাত্রই ঝাপিয়ে পড়ে। যে কেউ ইচ্ছে করলে এ ঘটনা দেখতে পারে। প্রতি শুক্রবার এ ধরনের কার্যকলাপ সব কিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।
এসব ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্লিনিক মালিক জানান, শুক্রবার দিন ডাকা থেকে আগত চিকিৎসকদের নূন্যতম ৫,০০০ টাকা দিতে হয়। রোগী পাক বা না পাক তাতে ডাক্তারের কিছু আসে যায় না। এসব টাকা দিতে অনেক সময় ক্লিনিক মালিকদের হিমশিম খেতে হয়। সেজন্য ওনারা এভাবে মুরগী (রোগী) ধরে বলে জানান।
সরকারী হাসপাতালেই প্যাথলজী পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিরা ও চিকিৎসকরা কমিশন নামের চকচকে বস্তুটির কাছে নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এসব দালালদের অবাধ বাণিজ্যেও সুযোগ করে দেন। হাসপাতালের প্যাথলজি পরীক্ষার ইচ্ছাকৃত সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে এরা গরীব রোগীদেও ফুসলিয়ে ক্লিনিকে পাঠায়। মৃত্যু পথযাত্রী বা অসুস্থ প্রিয়জনের মূখের দিকে তাকিয়ে শেষ সম্ভলটি তুলে দেয় এসব প্রতারকদের হাতে।
এসব ক্লিনিক গুলো কোন রকম পরীক্ষা নীরিক্ষা ছাড়াই মনগড়া রিপোর্ট দেয়া হয় এ সব সরল লোকদের সাথে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ কোন বিল্ডিং এর দু-একটি কক্ষে এসব ডায়াগনেষ্টিক সেন্টারের অধিকাংশটিতেও পরীক্ষা চালাবার মত কোন সাধারণ অস্তিত্বও নেই। এদেও আছে মনোহর প্যাড ও কিছু ডাক্তারের সিল ছাপ্পড়। কিছু ডাক্তার আছেন, যারা নিয়মিত টাকার বিনিময়ে এ রিপোর্টে নির্দ্বিদ্বায় সই কওে যান। আর তুলে ভরা সে সব রিপোর্টেও ভিত্তিতে ভূল চিকিৎসায় স্বাভাবিক ভাবে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। ফলশ্রুতিতে আরো টেষ্ট.. .. আরো টাকা.. .. তারপর আবারও সেই একই চক্র। অনেকের চোখে সামনে .. .. অনেকের চোখের আড়ালে চলছে এ মৃত্যু।