![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
(I am sympathetic and sensitive to the conventional systems)আমি প্রথাগত ব্যবস্থার প্রতি সহানুভূতিশীল ও সংবেদনশীল
Why God cannot be seen?
ঈশ্বরকে দেখা যায় না কেনো?
*
The mind of one free thinker can possess a million ideas. But a million fanatics can have their minds possessed by a single idea.
*
A person can only believe in God if they violate their honesty. And God might punish a lack of honestly more severely than not being able to believe in God.
(উপরের দুইটা কার ডায়লগ জানি না, জানলে আওয়াজ দিয়েন)
>>>
[স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধর্মো ভয়াবহঃ
মানে হলো হিন্দু ধর্মে থাইকা জুতা খাওনও ভালা, অন্য ধর্মের দিকে যাওনের চেয়ে।]
বর্তমানকালে সবচেয়ে বেশী উপেক্ষিত অস্তিত্ব হচ্ছেন ঈশ্বর। আবার এই ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকা না থাকা নিয়ে হানাহানি, খুনাখুনি এবং মারামারিও কম নয়। সত্যি বলতে, প্রাক-যন্ত্রসভ্যতার যুগে ঈশ্বরের আদেশ সমন্বিত গ্রন্থাদি নিয়ে যেরকম উদ্দীপনা মানুষের মাঝে ছিলো, কালের ক্রমশ পরিবর্তনে তার অধিকাংশই আজ নেই। যন্ত্রনির্ভর সভ্যতা, প্রতিযোগিতামূলক পৃথিবী এবং জীবনধারণ উন্নতকরণের তাগিদ মানুষকে অনেকাংশেই ঈশ্বরবিমুখ করেছে। মানুষ এখন ধর্ম পালনে যতখানি সজাগ অনুভূতি থেকে, তারচেয়ে বেশী সজাগ প্রথা থেকে। ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা ও ভক্তিশ্রদ্ধার ব্যাপারগুলো টিকে আছে কেবল মানুষের প্রথা সংরক্ষণের কঠোর নিয়মাবলীর কারণে। আন্তরিক ভক্তিসমৃদ্ধ ধর্ম পালন কেবল গুটিকয়েক লোকের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
যে কারণে ঈশ্বরের প্রভাব বা উপস্থিতি সমাজে খুব একটা দেখা যায় না। বরং মানুষের চরম স্বাধীনতার ফলশ্রুতিতে ঈশ্বরের অস্তিত্ব এখন কঙ্কালসার। সত্যি বলতে ঈশ্বরকে মনে করে ভক্তি করার সময় কই মানুষের?
এই সময়ে তীব্র একটা প্রতিযোগিতা চলছে। নিজেকে এই পৃথিবীর খানা-খন্দের মধ্যে উপযুক্ত গর্তে সেঁধিয়ে বসাবার ছাপ তৈরিতে দম যায় মানুষের। এক একটা অভাব পূরণ থেকে সূচনা হয় নতুন প্রয়োজনের। এরকম ভজঘট ট্রাফিক লাইফে মানুষের ধর্মীয় রিচুয়াল পালনের জন্য ভক্তি আসার উপায়টাই বা কী?
আর মানুষ যদি নাই থাকে, তবে ঈশ্বরকে ভক্তি করবে টা কে? কাজেই ঈশ্বর যে সত্যিই একজন ঈশ্বর, তা প্রমাণের জন্য মানুষের অস্তিত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। Philosopher Descartes (ডেকার্টস)-এর মতে, নানা ধরণের অসঙ্গতি মানবজীবনের নিত্য সঙ্গী হলেও সঙ্গত চিন্তা করার প্রবণতা বা সক্ষমতাই মানুষকে মহান করেছে। আর এই সঙ্গত চিন্তা করার ক্ষমতা অন্য একটি অতি-সঙ্গত অস্তিত্ব ছাড়া প্রাপ্তি সম্ভব নয়। ঈশ্বর হচ্ছেন সেই অতি-সঙ্গত অস্তিত্ব।
তো এখন, সারা পৃথিবী ধর্মীয় কাতার বিবেচনায় দুই ভাগে বিভক্ত। এক, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী। এবং দুই, যারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।
ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের অনেক ভাগ আছে। একদল একাধিক ঈশ্বর (paganism) এ বিশ্বাসী, আরেকদল ট্রিনিটি বা তিন গড-এ বিশ্বাসী, আবার অন্য একদল শুধু এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী।
কিন্তু ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের দল গণহারে মোটামুটি এক।
প্রথমে আসি ঈশ্বরে বিশ্বাসীদেরকে নিয়ে। সমগ্র ঈশ্বরে বিশ্বাসী দলগুলোর ধারণা, তারা নিজেরা ছাড়া অন্য সব ধর্ম মত ভ্রান্ত, ভুল এবং নরকের পথ। এ লক্ষ্যে তাদের নিজস্ব ধর্মগ্রন্থ, ধর্মীয় প্রবর্তক মহাপুরুষ এবং নিজেদের সংস্কারাবদ্ধ একচোখা বিশ্বাসকে জোর দিয়ে প্রচার করে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে তাদের ধর্ম কতখানি সঠিক ও যথার্থ। অন্যরা সব ভণ্ড। তন্মধ্যে এক ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের দাবি উল্লেখ করার মতো। কিন্তু সেদিন একজন প্যাগানিস্ট প্রশ্ন করলো, হিন্দুইজম এবং বুদ্ধিইজম-এ তো ঈশ্বর বলেন নি যে তাঁকে ছেড়ে একাধিক ঈশ্বরের উপাসনা করলে মানুষকে সাজা দেয়া হবে। কিন্তু ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদিইজমে এক ঈশ্বরের পাশাপাশি অন্য ঈশ্বরের পূজা করলে সাজার ব্যবস্থা রাখে হয়েছে। কাজেই হিন্দুইজম এবং বুদ্ধিইজম ধর্মের ঈশ্বর কী ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মের ঈশ্বরের চেয়ে বড় হৃদয়ের নয়, বড় মুক্তমনার নয়?
কঠিন কথা!
আমাদের দেশে এক বিরোধী দল থাকলেই যে বিরাট গ্যাঞ্জাম হয়, আর যদি একাধিক বিরোধী দল থাকে তাহলে তো দলে দলে মারামারি-কাটাকাটির পর কোনো দলেরই অস্তিত্ব থাকবে না। তেমনি অগণিত দল থেকে অগণিত মতের উৎপত্তি হবে।
ঠিক ঈশ্বরও যদি একাধিক থাকেন, তবে তো একাধিক মতবাদ আর একাধিক ব্যাক্তিত্বের তৈরি হবে। পরস্পরের দল নিয়ে ঝগড়া-মারামারি চলবে। কাজেই বর্তমানের অগণিত ধর্মীয় দলগুলো দেখে কী মনে হয়?
ঈশ্বর একাধিক, এ কারণেই দল তৈরি হয়েছে, নাকি মানুষই একাধিক ঈশ্বরকে তৈরি করে দলাদলির অবস্থা তৈরি করে নিয়েছে?
প্রশ্ন খুব স্বাভাবিক, কিন্তু উত্তর স্বাভাবিক নাই।
ধরে নিলাম, শয়তান (একটা পৌরাণিক জ্বীন, যে মানুষের রক্তের মধ্যে শয়তানী তৈরি করতে পারে!) অগণিত দল তৈরিতে সাহায্য করেছে। সে তার পৌরাণিক আকৃতি প্রকাশ করে কেনো বলে না যে, এসো এসো মানুষেরা, আমার শয়তানী ধর্মে এসো।
ঈশ্বর মানুষকে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন বলেই মানুষের সামনে বডিগার্ড ফেরেশতারা বা বডিডেস্ট্রয়ার শয়তান উপস্থিত হতে পারে না। আর কেউ যদি পরীক্ষার হলে নাই জানলো যে পরীক্ষা চলছে, পরীক্ষার হলে নাই দেখলো বডিগার্ডদের এবং বডিডেস্ট্রয়ারদের, তবে সেই পরীক্ষার দাম কিসের?
যাই হোক, পৃথিবীতে অগণিত ধর্ম। এক ধর্ম বাদে বাকি সবাই জাহান্নামে যাবে, ভাবতেই কেমন লাগে। সারাজীবন ভালো কাজ করেও একটা বিশ্বাসের কারণে অনন্তকাল বর্বাদ হয়ে যাবে ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়!
অথচ ধর্মের সত্যতা প্রকাশ করছে কে?
গ্রন্থ।
গ্রন্থের সত্যতা প্রকাশ করছেন কে?
ঈশ্বর।
ঈশ্বরের সত্যতা প্রকাশ করছেন কে?
গ্রন্থ।
গ্রন্থের সত্যতা প্রকাশ করছে কে?
আরে ভাই ধর্ম।
এইরকম সার্কেল দিয়েই ধর্মকে জানতে হচ্ছে। নতুন কোনো উপায়, উপলব্ধি বা জ্ঞান আছে কী যা দিয়ে ধর্মকে খোলাসা করে জানা যাবে?
সামুর একজন ব্লগার লিখেছিলেন, সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন একটি শক্তি। যদি একে শক্তিমান বলা হয়, তবে মানবিক গুণাবলী আরোপ করা হলো। যদি বলা হয় দয়াময়, তবেও মানবিক গুণ আরোপ করা হলো। অথচ মানবিক গুণ শুধু শক্তিমান বা দয়াময়ে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে হিংসুক, লোভী, অত্যাচারী এসব গুণাবলীও আছে। কাজেই মানবিক গুণাবলী আরোপ করতে যাওয়া কেনো? ঈশ্বর কী মানবিক কেউ নাকি?
উত্তর আসে, ঈশ্বরের গুণ থেকে মানুষ পেয়েছে।
প্রশ্ন আসে, তবে বদগুণ গুলো কোথা থেকে মানুষ পেলো?
উত্তর নাই।
যুগ যুগ ধরে ধর্মের নামে রক্ত ঝড়েছে অগণিত। এটা হচ্ছে ধর্মের সবচেয়ে বড় দোষ। ধর্ম কখনো কখনো হয়তো শান্তিপূর্ণভাবে মানুষকে বাগে আনতে পেরেছে, কিন্তু সেই শান্তিপূর্ণতা অর্জনের পথও রচিত হয়েছে রক্ত দিয়ে। কাজেই, কী এমন আছে ধর্মগ্রন্থে যা মানুষকে এক করতে পারে?
এমন কিছু আছে, যা সব মানুষকে এক করতে পারে?
জন্মগত ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে মানুষ বড় হয়, পালন করতে থাকে, অন্ধের মতো পালন করতে থাকে। তারপর ধর্ম অধ্যায়ন না করেই মরে যায়। মরার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে চায় ওইপারে জান্নাতের জায়গা অর্জনের মতো পূণ্য হয়েছে কিনা!
কী অদ্ভুত জীবন যাপন করে মানুষ!
এবার আসি, ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের কথায়। অবিশ্বাসীরা অধিকাংশই তীব্র বৈজ্ঞানিক যুক্তি দ্বারা আচ্ছন্ন। কেউ কেউ আবার চক্ষু দর্শনের ক্ষমতা দ্বারা আচ্ছন্ন। জগতের সুখ-দুঃখে ঈশ্বরের অস্তিত্ব দেখতে না পেয়ে তারা ঈশ্বরকে ত্যাগ করেছে। বিজ্ঞানমনষ্করা অবশ্য ঈশ্বরকে মাইক্রোস্কোপ বা টেলিস্কোপ দিয়ে দেখতে চায়। খালি চোখে তারা বিশ্বাসী নয়।
তবে এই ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের একটা গ্রুপ আছে যারা নিজেদের ভাবনা অকপটে সরল যুক্তিতে প্রকাশ করে, আরেক দল আছে চলমান প্রথাগত ধর্মীয় ব্যবস্থাকে আঘাত (ব্লাসফেমি-blasphemy) করে করে প্রকাশ করে। আমার জানামতে অধিকাংশ ধর্মই বলে, যার যার ধর্ম যার যার। জোর-জবরদস্তির কিছু নাই।
তবে দ্বিতীয় গোত্রের অবিশ্বাসীরা কেনো ব্লাসফেমির আশ্রয় নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করে বোধগম্য নয়। ব্লাসফেমি ছাড়া কি ঈশ্বরের অস্তিত্ব মুছে দেয়া যায় না? তবে তো তাদের যুক্তি বেশ দুর্বল। তাছাড়া অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি সাম্প্রদায়িকতা, আর ইসলামের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি করলে মুক্তমনা- এ কেমন বিচার?
নাস্তিকদের শেষ পরিণতি সম্পর্কে প্লেটো তার দি রিপাবলিক বইতেও উল্লেখ করেছেন একটু ঘুরিয়ে যেমন–
অধার্মিক (নাস্তিক) যখন মৃত্যুর নিকটবর্তী হয় তখন তার মনে এতদিন পর্যন্ত যে চিন্তা, ভাবনা ও ভীতির উদয় হয়নি, সেগুলোরই উদ্ভব ঘটতে থাকে। পরলোকে যাত্রা যখন তার আসন্ন হয়ে উঠেছে তখন তার কৃতকর্মের ফলস্বরূপ যে শাস্তি তাকে সেই পরলোকে পেতে হবে তার কথা আতঙ্কজনকভাবে তার মনে উদয় হতে থাকে। মর্তলোকের কার্যাবলীর জন্যে পরলোকে দন্ড কিম্বা পুরস্কার লাভের কাহিনী সে পূর্বেও শুনেছে। কিন্তু পূর্বে যে কাহিনী ছিল তার নিকট পরিহাসের বস্তু, আজ তাই হয়ে উঠেছে তার কাছে আতঙ্কের বিষয়। আজ সে ভাবছে, এতকাল যাকে হেসে উড়িয়ে দিয়েছে, সে কাহিনী শেষ পর্যন্ত সত্যও হতে পারে। পরলোকের সান্নিধ্য অথবা বয়সের আধিক্য- যে কারণেই হোক না কেন আজ যেন পরলোক সম্পর্কে তার দৃষ্টিটি বেশ পরিস্কার হয়ে এসেছে; উদ্বেগ এবং আতঙ্কে তাই সে অস্থির হয়ে উঠেছে। আজ সে ভাবতে শুরু করেছে, মর্তলোকের জীবনে কার প্রতি কোন অন্যায় সে করেছে। এই হিসাব নিকাশে যখন সে দেখতে পায় যে, অন্যায়ের অংশ তার মোটেই কম নয়, তখন শিশুর মতই নিদ্রার মধ্যে দুঃসপ্নে সে আঁৎকে উঠে; মন তার নানা দুশ্চিন্তায় ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। কিন্তু ধার্মিকের (আস্তিক) সুন্দর আশাই তার পরলোকের পথে প্রিয় সঙ্গী হিসেবে তাকে অভয় দিতে থাকে। এই কথাগুলো সংক্ষেপে পিন্ডর বলেছেন এভাবে-
‘যে ধর্মের পথে রয়েছে এবং পবিত্র জীবন-যাপন করেছে আশা তার আত্মার সঙ্গী; তার বার্ধক্যে আর পরলোকের পথে আশা তাকে ভরসা যোগায়; কারণ, দুশ্চিন্তায় অস্থির আত্মাকে শান্ত করার ক্ষমতা একমাত্র আশারই আছে।’
যদিও এসব যুক্তি নাস্তিকদের যুক্তির ধোপে টিকোয় না। নাস্তিক বা ঈশ্বরে অবিশ্বাসীরা কট্টর যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তে বিশ্বাসী। তবে এক ঈশ্বর সম্বন্ধে অনেক মানুষের রুচিও প্রশংসনীয়। এক ঈশ্বরের বন্দনা বর্তমানে সবচেয়ে বেশী নিরাপদ ও যুক্তিসংগত মনে হয় আমার কাছে। কেনোনা, সমগ্র মহাবিশ্বের সেন্ট্রাল পাওয়ার এখানে একজনকে ধরে নেয়া হয়। (নাস্তিকদের ধরে নেয়ার মতো কোনো সেন্ট্রাল পাওয়ার থাকে না। Atheism-এ সেন্ট্রাল পাওয়ার হচ্ছে শক্তি, এবং মানুষসহ সবকিছু শক্তির রূপান্তর মাত্র।) এবং গাণিতিক নিয়মও তাই বলে, যদি কোনো অসঙ্গায়িত বা অনির্দিষ্ট সংখ্যাকে বের করতে হয়, তবে মনে মনে এর মানকে X ধরলে এক সময় পুরো মানের বিশদ ব্যাখ্যা বেরিয়ে পড়ে। মুক্তমনার একজন ব্লগার, অভিজিত রায় (নিহত)-এর লিখার মন্তব্যে লিখেছিলেন,
“
বিধাতা জাদুকরের ন্যায় বিভিন্ন রূপের দ্বারা আমাদের বিভ্রান্ত করতে পারেন না। কারণ, বিধাতার রূপ এক এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে তিনি আপন রূপে প্রতিষ্ঠিত।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক। প্রথমে আমরা পরিবর্তনের কথা ধরি। কোন কিছুতে যখন কোন পরিবর্তন সংঘটিত হয় তখন সে পরিবর্তনের কারণ হয় সেই বস্তু নিজে নয়ত: অপর কোন শক্তি। আর বস্তুর ব্যাপারে যে বস্তু যত উত্তম সে তত অপরিবর্তনীয়। দৃষ্টান্ত স্বরূপ, যে ব্যক্তি যত সুস্থ্য এবং শক্তিশালী সে মদ্য কিম্বা মাংস আহারে ততকম অসুস্থ্য হয়। এমন কি যে উদ্ভিদ যত সতেজ- বায়ূর আঘাত, সূর্যের তাপ বা অপর কোন কারণে তার ক্ষতিও তত কম। সুতরাং যে সবচেয়ে সাহসী এবং সবচেয়ে জ্ঞানী বাইরের কোন প্রভাবে সে বিভ্রান্ত বা পথভ্রষ্ট হবে খুবই সামান্য। কেবল মানুষের ক্ষেত্রে নয়, তৈজসপত্র, গৃহ বা বস্ত্রাদি অর্থাৎ যে কোন সুমিশ্রিত বস্তুর ক্ষেত্রেই একথা সত্য। এ সমস্ত বস্তু যখন সুগঠিত হয় তখন সময় কিম্বা অবস্থান্তরের আঘাতে তাদের পরিবর্তনও খুব সামান্য ঘটে।
সুতরাং যা কিছু উত্তম তা মানুষের শিল্পকর্ম কিম্বা প্রকৃতির সৃষ্টিকর্ম যাই হোক না কেন, বাইরের আঘাতে তার পরিবর্তন খুব সামান্যই সংঘটিত হয়। কিন্তু বিধাতা বা বিধাতার সৃষ্টি সম্পর্কে আমরা কি বলব? বিধাতা নিজে এবং তাঁর সৃষ্টি অবশ্যই সর্বপ্রকার সুসম্পূর্ণ। সুতরাং বাইরের অভিঘাত তাকে বিভিন্ন রূপ গ্রহণে নিশ্চয়ই বাধ্য করতে পারে না। তিনি যদি আদৌ পরিবর্তিত হন তাহলে সে পরিবর্তন সুস্পষ্টত: নিজে থেকেই সাধিত হবেন। আর সেক্ষেত্রে নিজের পরিবর্তন তিনি কি অধিকতর উত্তমের উদ্দেশ্যে সাধন করবেন, না অধিকতর নিকৃষ্টের জন্যে তিনি নিজেকে পরিবর্তন করবেন?
বিধাতা যদি আদৌ পরিবর্তিত হন তাহলে তাকে নিকৃষ্টতর হতে হবে। কারণ, ধর্ম বা কান্তি কোন ক্ষেত্রেই বিধাতা অসম্পূর্ণ ছিলেন এমন কথা আমরা ভাবতে পারিনে। অন্যদিকে বিধাতাই হোন আর মানুষই হোক কেউ নিজেকে নিকৃষ্টতর করে পরিবর্তিত করতে চাইবে না। সুতরাং বলা যায় বিধাতা আদৌ নিজের কোন পরিবর্তন কামনা করতে পারেন না। কারণ, তিনি হচ্ছেন সর্বোত্তম এবং মনোহরতম। তাই তিনি তাঁর নিজের রূপে নিত্যকালের জন্যেই থাকবেন অপরিবর্তিত। সুতরাং কেউ যদি বলেঃ
খোদা বৈদেশিকের বস্ত্র ধারণ করে
বিচিত্ররূপে আমাদের মধ্যে বিচরণ করেন।
তা আমরা বিশ্বাস করতে পারি না। কিন্তু কেউ যদি বলে খোদা অপরিবর্তনীয় হলেও যাদুমন্ত্রাদির সাহায্যে তিনি আমাদের সামনে বিভিন্ন রূপের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে হয়ত: উপস্থিত হতে পারেন। কিন্তু বিধাতা কথায় কিম্বা কর্মে নিজেকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবেন বা নিজের মিথ্যা প্রতিভাস তৈরী করবেন, এমন কথা আমরা ভাবতে পারি না। আর কেউই তার যথার্থ প্রকৃতিতে মিথ্যা প্রতিপন্ন হতে চায় না। যাকে সে নিজের সর্বোত্তম বা যথার্থতম প্রকৃতি বলে বিবেচনা করে সে প্রকৃত মিথ্যার করায়ত্ব হোক, এমন ইচ্ছা কারও পক্ষেই স্বাভাবিক নয়। অর্থাৎ আমরা বলতে চাচ্ছি মানুষ নিজের আত্মার সত্ত্বায়- অর্থাৎ তার চরিত্রের সর্বোত্তম ক্ষেত্রে প্রতারণা বা মিথ্যাকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। এমন প্রবণতা মানুষের কাছে অবশ্যই ঘৃণ্য।
”
মোদ্দা কথা, এক ঈশ্বর বন্দনা উৎকৃষ্ট পন্থা মনে হলেও, অগণিত ধর্মের ধার্মিকদের চাপে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বর্তমানে অত্যন্ত সংকটে ফেলেছে মানবজাতিরাই। ঈশ্বর কোন ধর্মের সাথে আছেন, তা বলতে গিয়ে বুক কেঁপে উঠছে। হতে পারে, ঈশ্বর প্রদত্ত একটি ধর্ম আছে। কিন্তু সেই ধর্মের ড্রাইভারদের ভুল চালনায় তাকে দেখতে অন্যান্য ধর্মের মতো ঠোসা ঠোসা লাগছে। সেক্ষেত্রে মানুষের দোষ না দিয়ে উপায় কী?
সাধারণ মানুষের জীবনে যান্ত্রিকতাই ধীরে ধীরে ঈশ্বরকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা করার বুদ্ধিবৃত্তিকে নষ্ট করে দিবে। অগণিত মানুষ কিছু না বুঝে, না জেনে, না শুনে, শুধু বাবা-মায়ের আদেশে ধর্ম ধর্ম করে মরলো, আমরা কে কে- ই বা জানতে পেরেছি তারা কী স্বর্গবাসী না নরকবাসী?
কেউই জানতে পারিনি। এখন ঈশ্বর যদি বিশেষ অনুগ্রহ করেন, তবেই মানবজাতি হয়তো ঈশ্বরে বিশ্বাস করার সঠিক কারণ খুঁজে পাবে। নচেৎ ঈশ্বরহীন সমাজে ঈশ্বর নিয়ে অযথা কাটাকাটি বাড়বে বৈ কমবে না। পাশাপাশি অনন্তকাল যদি থেকে যায়, তবে মানুষের বিপদের জন্য মানুষের বুদ্ধিই দায়ী হবে। যে বুদ্ধির উন্নয়ন ঘটিয়েছিলেন একদা ঈশ্বর নিজেই।
২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: ++
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬
আবু জাকারিয়া বলেছেন: নাস্তিক হওয়ার একটি সুবিধা আছে, সারা জীবন নিঃচিন্তায় কাটিয়ে দেয়া যায়। ঈশ্বর ভয় থাকেনা মনের মধ্যে। ভাল কাজ খারাপ কাজ অসংকচে করা যায়।
কিন্তু আস্তিক হওয়ায় দুটি সুবিধা আছে
১। ধর্মের পথে চলে সুন্দর একটা জীবন নিয়ে পথ চলা যায়।
২।মৃত্যুর সময় মনে আতংক নিয়ে মরতে হয়না।
এখন মানুষ যে পথ খুশি বেছে নিতে পারে। এটা তার ব্যাপার।
প্লোটোর কথা গুলোর সাথে পুরোপুরি একমত আমি।
৪| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩
আরাফাত নিলয় বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আবু জাকারিয়া ভাই ঠিকই বলেছেন, নাস্তিকদের কেন্দ্রবিহীন জীবন০যাপন পদ্ধতি খুবই ভারসাম্যহীন বলে মনে হয় আমার। কেনোনা, মানুষ এমন কোনো প্রাণী নয় যে চূড়ান্তভাবে শক্তিশালী বা চিরজীবি। সেরা জীব হিসেবে বুদ্ধিমান সে, কিন্তু অত্যন্ত ভঙ্গুর ও ক্ষণস্থায়ী। তাই ঈশ্বরকে অস্বীকার করলে চূড়ান্তভাবে নিঃসঙ্গই থেকে যায় মানুষ।
তবে প্রশ্ন হলো, সেইসব হতভাগা মানুষ, যারা আলোর পথ পায়নি, তাদের আলোর পথ দেখাবে কে? আর যদি কেউ না দেখায়, তবে কি তারা অনন্তকালের জন্য নরকেই পঁচে মরবে?
৫| ১৭ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩
একলা চলো রে বলেছেন: আস্তিক এবং নাস্তিক ছাড়া আরেকটি জঘন্য শ্রেণী আছে, এই শ্রেণীর মানুষ আস্তিকতা এবং নাস্তিকতা উভয় শ্রেণীকে একটি নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করার চেষ্টা করে। সত্যি বলতে কি, এরাই সবচেয়ে বড় ভন্ড। আমরা সবাই সবার বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করব এবং আমরা সবসময় নিরপেক্ষ ভাবে সব কিছু বিচার করব; এ ধরনের কথা যেখানে শোনা যায়, বুঝতে হবে ছদ্মবেশী ভন্ডরা সেখানে লুকিয়ে আছে। একজন চিন্তাশীল মানুষ কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না।
৬| ১৮ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৭:৪২
জাফরুল মবীন বলেছেন: ঈশ্বর নিজেই তাঁর অস্তিত্ব মানুষের বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দিয়েছেন।আর বিশ্বাসতো এক প্রকার উচ্চমার্গের অনুভূতি।অনুভূতিকে যেমন খালি চোখে দেখা যায় না ঠিক তেমনি ঈশ্বরকেও খালি চোখে দেখা যায় না।
৭| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০
আরাফাত নিলয় বলেছেন: ভালো বলেছেন। ধন্যবাদ।
৮| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: আরাফাত নিলয় ভাই মন্ত্যের কোঠায় নয়, প্রতি উত্তের কোঠায় লিখুন।তাতে সুন্দর ও ভাল দেখাবে।
২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬
আরাফাত নিলয় বলেছেন: দু:খিত ভাই, আপনার কথাটি বুঝতে পারলাম না। অনুগ্রহ করে যদি আবার বলতেন।
৯| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: বুঝতে পেরেছেন আপনি। হয়তো খেয়াল করে দেখেননি।
আপনি যে ভাবে আমার মন্তব্যের উত্তর করেছেন আমি সেটাই বলছিলাম।
যা আগের প্রতি উত্তর গুলিতে করেননি।
৩০ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩
আরাফাত নিলয় বলেছেন: লেখক বলেছেন: ঈশ্বরকে নিয়ে আমার জিজ্ঞাসার অন্ত নেই। ঈশ্বর সব ক্ষমা করেন, শুধু শিরক করা ক্ষমা করেন না। তার মানে কি, শুধু ১টা বিশ্বাসের কারণে মানুষ অনন্তকাল নরকবাস করবে
আবার, স্বর্গে ৬০/৭০টি হুর/পরী আছে, অথচ দুনিয়াতে একের বেশী হুর/পরী নিয়ে সংসার করতে গেলে মহা তুলকালাম কান্ড ঘটে। ঈশ্বরের স্বরূপ বিশ্লেষণের জন্য পড়ার চেষ্টা করছি। তথ্য বা মন্তব্যের ভুলভ্রান্তি হলে গোচরে আনবেন। ধন্যবাদ।
১০| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫০
ডিজিটাল বাকের ভাই বলেছেন: অনেক প্রশ্ন ছিল , কমেন্টে লিখে শেষ করা যাবে নাহ
১১| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪
আরাফাত নিলয় বলেছেন: অনেক জানার ছিলো, এক জীবনে জানা যাবে না।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৫৯
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: মোদ্দা কথা, এক ঈশ্বর বন্দনা উৎকৃষ্ট পন্থা মনে হলেও, অগণিত ধর্মের ধার্মিকদের চাপে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বর্তমানে অত্যন্ত সংকটে ফেলেছে মানবজাতিরাই। ঈশ্বর কোন ধর্মের সাথে আছেন, তা বলতে গিয়ে বুক কেঁপে উঠছে। হতে পারে, ঈশ্বর প্রদত্ত একটি ধর্ম আছে। কিন্তু সেই ধর্মের ড্রাইভারদের ভুল চালনায় তাকে দেখতে অন্যান্য ধর্মের মতো ঠোসা ঠোসা লাগছে। সেক্ষেত্রে মানুষের দোষ না দিয়ে উপায় কী?
++