নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথায় নয় কাজেই পরিচয় হোক সবার

এ সামাদ

আমরা বাংলাদেশর নাগরিক হিসেবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব আমাদেরই। এখানে দলমত নির্বিশেষে দেশের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যেতে হবে।

এ সামাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনতিবিলম্বে পাটকেলঘাটাকে উপজেলায় বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী।

০৯ ই নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১১:৪২



মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত দুগ্ধস্রোতরুপী কপোতাক্ষের তীরে তিল তিল করে গড়ে ওঠে সাতক্ষীরা তথা দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ঐহিত্যবাহী জনপদ পাটকেলঘাটা। এক সময়ের মাটি ও কাঠ বাঁশের তৈরী খুপরি ঘরের পরিবর্তন হয়ে µgvš^‡q আজ রং বে-রংয়ের বহুতল ভবন নির্মাণের ফলে এই জনপদ সহ আশপাশের এলাকার পরিচিতি দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বানিজ্যিক এলাকা হিসাবে সুদীর্ঘ কাল হতে এখানকার সুনাম সুখ্যাতি দেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত হলেও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে অগ্রসর হওয়ায় ক্রমেই এ জনপদটির গুরুত্ব বাড়ছে। কাজেই পাটকেলঘাটাকে জনগুরুত্বপূর্ণ হিসাবে এবং জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন কল্পে পাটকেলঘাটাকে উপজেলা হিসাবে ঘোষনা এখন সময়ের দাবী। সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিনই পাটকেলঘাটা সদর হতে বিভিন্ন প্রকার কৃষি পণ্য ঢাকা, খুলনা, যশোর, কেশবপুর, মনিরামপুর, চুকনগর, ডুমুরিয়া, তালা, কপিলমুনি, পাইকগাছা, কয়রা, সাতক্ষীরা, কলারোয়া, পারুলিয়া, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর, বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ ও ফরিদপুর সহ দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় সড়কপথে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়। তেমনি এসব অঞ্চল থেকেও বহু পণ্য পাটকেলঘাটা বাজার সহ আশ পাশের ব্যবাসায়ীরা আমদানী করে থাকে। এ বাজারকে কেন্দ্র করে আশপাশের এলাকায় ছোট বড় অনেক বাজার গড়ে উঠেছে এবং জনপদে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। তথাপি পাটকেলঘাটা থানা সদরের ব্যবসায়ী সহ এলাকার সাধারণ মানুষের জান মাল ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ২০০৫ সালের ১৩ wW‡m¤^i পাটকেলঘাটা থানা স্থাপিত হয়। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১৪ বিঘা জমির উপর মনোরম পরিবেশে চলছে থানার কার্যক্রম। ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা ও খলিষখালী এই ৫টি জনবহুল ইউনিয়ন নিয়ে এ থানা গঠিত। ইতিহাস ও ঐহিত্যগতভাবে পাটকেলঘাটার পরিচিত বহু প্রাচীন কাল হতে বহমান। পাটকেলঘাটার বুক চিরে †mªvZw¯^bx কপোতাক্ষ এক সময় কুলু কুলু ধ্বনিতে প্রবাহিত হত। তখন পাটকেলঘাটার সাথে নদীপথে নৌকা, লঞ্চ ও ষ্টীমার যোগে বহু মালামাল আমদানী রপ্তানি হত। সেই কপোতাক্ষে এখন বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হওয়ার কারণে নদী পথে যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ। এ এলাকার মালপত্র আনা নেওয়া, যাতায়াত চলে শুধুমাত্র সড়ক পথে। নদী ও সড়ক পথে এক সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল থাকার কারণেও এ এলাকার কৃষি, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা সহ সকল কাজের অনুকুল পরিবেশ দ্রুত তৈরী হয়েছিল। বর্তমানে পাটকেলঘাটা থানায় উল্লেখযোগ্য হিসাবে অনেক কিছুই রয়েছে। যা রীতিমত সময়োপযোগী এবং উপজেলা ঘোষনা সহ বাস্তবায়নের দ্বার উম্মোচনের জন্য যথেষ্ট। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, পাটকেলঘাটার আয়তন ২০৯.৯৭ বর্গ কিঃ মিঃ। জন সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩০৯ জন। ইউনিয়ন ৫টি, গ্রাম ১৩০টি, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৫টি, রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৬টি, বে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৫টি, আলিম মাদ্রাসা ২টি, ফাজিল মাদ্রাসা ১টি, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ১টি, বেসরকারী ডিগ্রী কলেজ ১টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৩টি, টেকনিক্যাল কলেজ ৪টি, শিক্ষার হার ৫১.৮৫%, Dc¯^v¯’¨ কেন্দ্র ১টি, হাট বাজার ২৯টি, পোষ্ট অফিস ৬টি, স্লুইস গেট ৪টি, রেজিঃ সমবায় সমিতি ২৮টি, খাদ্যগুদাম ১টি, পাকা রাস্তা ৬৪.১০কিঃ মিঃ। কাচা রাস্তা ৩২৫.৯৫ কিঃ মিঃ। প্লাস্টিক পাইপ ফ্যাক্টরি ২টি, বিস্কুট ফ্যাক্টরি ২টি, কোল্ডষ্টোরেজ ১টি, পানের বরজ ৩০৮টি, ব্যাংক ৭টি, ইট ভাটা ১০টি, সরকারী ডাক বাংলো ১টি, দর্শনীয় স্থান পাটকেলঘাটা ব্রীজ ও কেওড়া কানন। সরকারী পুকুর ৯টি, মৎস্য ঘের ১১০৩টি, পোল্ট্রি খামার ৭৪টি, তেলের মিল ২৪টি, বধ্য ভূমি ১টি সহ সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দফতর ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর প্রধান কার্যালয় পাটকেলঘাটায় অবস্থিত সহ অবকাঠামোগত সবকিছুই রয়েছে। এছাড়া পাটকেলঘাটা এলাকার পরিচিতি ও সুনাম দীর্ঘকাল হতে যাদের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রথম আই সি এস অফিসার ভূবন মোহন চট্টপ্যাধায়, ভারতবর্ষের প্রখাত গবেষক হাজার বছরের বাংলাভাষা, গান, বৌদ্ধদের দোহার গান এবং চর্যা পদের গবেষক এবং আবিষ্কারক হর প্রসাদ শাস্ত্রী। যশোর জেলা বোর্ডের তৎকালীর প্রকৌশলী ক্ষিতিনাথ ঘোষ, তৎকালীন ভারতীয় রেলওয়ের চীপ একাউন্টেট ও হোড় এন্ড কোং এর মালিক মিঃ হোড়, রায় চরণ সাধু সহ অনেকেই বৃটিশ আমল থেকে এ এলাকায় জন্মগ্রহণ করে স্ব স্ব কর্ম এলাকায় পাটকেলঘাটার নাম উজ্জল করেছেন। এছাড়া তারা অনেকেই এলাকার শিক্ষা সাংস্কৃতি প্রসারের লক্ষ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই এলাকায় একজন প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক যার নাম খান সাহেব আব্দুল ওয়ালী জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। অখ্যাত এ সাহিত্যিকের মৃত্যুর পর ১৯৬০ সালের দিকে যশোরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শরীফ সার ফার্সিতে লেখা পান্ডলিপি উদ্ধার করে বাংলা একাডেমীর মাধ্যমে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া বর্তমানে ভারতের রেল মন্ত্রী মমতা বন্দোপ্যাধ্যায় সহ দেশ বিদেশে বহু নাম করা ব্যক্তিদের জন্ম এখানেই। মুক্তিদ্ধো শহীদ আলহাজ্ব স ম আলাউদ্দীন, শহীদ আলহাজ্ব এ বি এম আলতাফ হোসেন, বাংলাদেশ পরমাণু কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম মতিউর রহমান, অনুসন্ধানী লেখক ও কলামিষ্ট বদরু মোঃ খালেকুজ্জামান (সুহৃদ সরকার), চিত্র নায়িকা মৌসুমী, ইরিন জামান, নাট্যঅভিনেতা শেখ উজ্জল সহ বর্তমানে সাতক্ষীরা ১ আসনের সংসদ সদস্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান সহ ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় কর্মরত সাংবাদিক, কলামিষ্ট, বুদ্ধিজীবি, ডাক্তার, আইনজীবি ব্যবসায়ী সহ সকারের উচ্চ পর্যায়ে চাকুরীরত অনেকেই পাটকেলঘাটায় জন্ম গ্রহণ করেছেন। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পূর্বে গত ২৬/১২/০৮ সন্ধ্যায় পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে শেষ নির্বাচনী জনসভায় বর্তমান এমপি ঘোষনা করেন নির্বাচনে জয়ী হয়ে পাটকেলঘাটাকে উপজেলার রুপান্তর করা হবে। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত, সাবেক সাংসদ বি এম নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, সাবেক সচিব শাফী আহম্মেদ, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, পাটকেলঘাটা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রেহেনা খানম, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম সহ ২৪ জন নেতৃবৃন্দ। মহাজোট সরকারের এমপি হিসাবে ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ ১০ মাস পার করলেও আজও পাটকেলঘাটাকে উপজেলা করার কোন ঘোষনা শোনা যায়নি। নির্বাচনী ঘোষনা অনুযায়ী পাটকেলঘাটাকে উপজেলা হিসাবে সরকারী ঘোষনা m¤^‡Ü জানতে চাইলে সাতক্ষীরা ১ আসনের এমপি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, পাটকেলঘাটাকে উপজেলা করার কোন যোগাযোগ এবং ব্যবস্থা এখনও সম্ভব হয়নি। পৌরসভা হিসাবে ঘোষনার জন্য কাজ চলছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম বলেন, পাটকেলঘাটাকে অবশ্যই উপজেলা করার ব্যাপারে আপ্রাণ চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে জনমত সৃষ্টির মাধ্যমে উপজেলা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব। বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতা হাবিবুর রহমান পিন্টু বলেন, অবশ্যই আমি চাই পাটকেলঘাটা থানা উপজেলা হোক। জেলা কৃষকলীগ ও পাটকেলঘাটা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ও ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাধু বলেন, তালা উপজেলার দূরত্ব অনেক বেশী। পাটকেলঘাটা উপজেলা হলে জনগন উপজেলা বাজেট সহ উপজেলা কেন্দ্রিক সকল সুযোগ সুবিধা পাবে। সরকার প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব পাটকেলঘাটা থেকে আয় করে থাকে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পাটকেলঘাটাকে উপজেলা করা জরুরী। জেলা জাসদ ও পাটকেলঘাটা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওবায়েদুস সুলতান বাবলুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগেই মহাজোট প্রার্থীর ঘোষনা ছিল পাটকেলঘাটাকে উপজেলা করা হবে। আশা করছি এ সরকারের আমলেই সেটা হবে। তাহলে আমরা সকলেই উপজেলার সকল সুযোগ সুবিধা পাব। পাটকেলঘাটার কৃতি সন্তান ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মোজাফফর রহমান বলেন, যোগাযোগের দিক থেকে তালা উপজেলা অনেক পিছিয়ে। যাওয়া আসা সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টকর। এছাড়া প্রতিনিয়ত এখানকার কোন লোক তালা উপজেলায় কাজে গেলে হয়রানির শিকার হতে হয়। কাজেই পাটকেলঘাটা অবশ্যই উপজেলা হওয়া দরকার। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আওয়ামীলীগ নেতা মাষ্টার শেখ আব্দুল হাই পাটকেলঘাটার উন্নয়নে উপজেলা হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই বলে জানান। তেমনি এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের প্রাণের দাবী অনতিবিলম্বে পাটকেলঘাটাকে উপজেলা হিসাবে ঘোষনা করা হোক।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.