নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাসূলের(দঃ) প্রতি ভালবাসা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:০২

রাসূলের(দঃ) প্রতি ভালবাসা।। আশরাফ আল দীন

আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানের ভালোবাসা থাকতে হবে এবং সেই ভালোবাসা হচ্ছে 'চরম ভালোবাসা'। অর্থাৎ আমাদের প্রত্যেকের কাছে পৃথিবীর সবকিছু এমনকি নিজের জীবনের চেয়েও প্রিয় হতে হবে আল্লাহর রাসূল (দঃ)। এই কথাটা কোরআন এবং হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত। তাই আমাদেরকে বুঝতে হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা কি অর্থাৎ রাসূলকে ভালোবাসা মানে কি।

তাঁর প্রতি কেবল বেশি বেশি দরুদ পড়ার মাধ্যমে যদি আমরা আমাদের এই দায়িত্ব শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবি তাহলে তা সঠিক কাজ হবে না। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রাসূলের (দঃ) প্রতি ভালোবাসার কয়েকটি দিক এভাবে উল্লেখ করা যায়ঃ
১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস জানা এবং সহিহ হাদিস জানার পর তা অনুসরণ করার সাহস নিজের মধ্যে রাখা।
২. রাসূল (দঃ) এর জীবনী পাঠ করা, তা ভালভাবে আত্মস্থ করা এবং আমাদের কাজে কর্মে ও জীবনের প্রত্যেকটি স্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা, কাজ ও আদর্শকে উজ্জীবিত করা।
৩. মানব চরিত্রের এহেন অধঃপতিত সময়ে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর উত্তম চরিত্র আশা ও মুক্তির পাথেয় হিসেবে তুলে ধরে বিশ্বাস সৃষ্টি করা যে, তিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমত ও কল্যাণ হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন।
৪. তাঁর সীমাহীন ত্যাগ ও কষ্টের কথা স্মরণ করে এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য, বিশেষ করে অনাগত উম্মাহর জন্য, তাঁর ভালোবাসার কথা হৃদয়ে ধারণ করে গভীর ভালোবাসা ও আদবের সাথে নীরবে উচ্চারিত দরুদ দিয়ে নিজের জিহ্বাকে যত বেশি সম্ভব ভিজিয়ে রাখা।

উপরের এই চারটি পয়েন্টকে ব্যাখ্যা করে অনেক কথাই বলা যায়। প্রথমে যা বলতে চাই তা হলো, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র মানবজাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। এই ঘোষণা সমগ্র সৃষ্টিজগতের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর এবং আমরা তা কোরআনের মাধ্যমে জেনেছি। সুতরাং অন্য যে কোন ধর্মের মানুষ যদি তাঁর জীবনের প্রদর্শিত আদর্শকে অনুসরণ করে তাহলে তারাও নিঃসন্দেহে উপকৃত হবে। কারণ, জীবনের পথ পরিভ্রমণকারী প্রত্যেক মানুষেরই একটি জীবনাদর্শ দরকার এবং সেই জীবনাদর্শ হলো মহানবী মুহাম্মদ (দঃ)। এই কথাটা যারা মুসলমান নয় তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া মুসলমানদেরই দায়িত্ব, যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেষ নবী হিসেবে মেনে নিয়েছে। একজন আদর্শ চরিত্রকে অনুসরণ করে তারা যদি জীবনের দিশা খুঁজে পায়, সঠিক পথে ফিরে আসে সেটাই হবে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর। তাই এই জ্ঞান তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এবং এই ধারণা তাদের কাছে স্পষ্ট করতে হবে যে, তিনি কেবল মুসলমানদের নবী নন, তিনি সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য প্রেরিত হয়েছেন। তাঁর জীবনাদর্শ লিখিতভাবে বিস্তারিতভাবে আমাদের কাছে মওজুদ আছে। সুতরাং সবার উচিত সেই জীবনাদর্শকে জানা এবং অনুসরণ করার চেষ্টা করা আপন আপন কল্যাণের জন্য।

আরেকটি কথা এভাবে বলা যায়ঃ বর্তমানে কোরআনের এবং হাদিসের সুসংরক্ষিত যাচাই বাছাই কৃত জ্ঞান অত্যন্ত অল্প পরিশ্রমে হাতের কাছে পাওয়া যায় এবং তার চর্চা করা যায়। অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে তা বর্তমানে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে কারো সন্দেহ নেই। সুতরাং সহি হাদিস মোতাবেক কোন নতুন কিছু যদি আমাদের জানা হয়ে যায় তাহলে আমাদের সেই সাহস থাকা উচিত, রাসূলের প্রতি সেই ভালোবাসা থাকা উচিত, যে আমি সহি হাদিস মোতাবেক নতুন কোন কিছু জানার সাথে সাথেই এতদিন যা অনুসরণ করে আসছিলাম, যার কোন সহি হাদিসের ভিত্তি নেই বা কিছু দূর্বলতা আছে, তা বাদ দিয়ে সহি হাদিসকে অনুসরণ করব। এই সৎসাহস আমাদের থাকা উচিত। এটা কোন বিতর্কের বিষয় নয়, এটা জ্ঞানের এবং বুঝার বিষয় মাত্র। শয়তান আমাদের মধ্যে দলাদলি এবং কোন্দল সৃষ্টি করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যদি তা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারি তাহলে তো কখনোই সহি হাদিসের ভিত্তিতে এবং কোরআনের আয়াতের নির্দেশের ভিত্তিতে আমরা জীবনযাপন করতে পারব না। আমরা পূর্বসূরিদের ভুলগুলোকেও যদি অনুসরণ করতে থাকি তাহলে আমাদেরকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। আমাদেরকে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের জীবনী অনুসরণ করতে হবে পক্ষপাতহীন ভাবে। এখানে কোন দলাদলি নেই, এখানে কোন জেদের প্রশ্ন নেই। এতদিন কি করেছি সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো সঠিক জ্ঞানটুকু অর্জন করা এবং তা অনুসরণ করা। মৃত্যু আসার পূর্বেই আমাদের ভুলগুলোকে সংশোধন করে নিতে হবে। আর আমরা জানি না মৃত্যু কখন আসবে। তাই সময় ক্ষেপণ না করেই, বিতর্ক বিভ্রান্তিতে না জড়িয়েই আমাদের ভুলগুলো সংশোধন করে নিতে হবে। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।

প্রিয় নবীর (দঃ) জীবনী সম্পর্কে যদি বলি তাহলে বলতে হবে, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ নবী-জীবনীগ্রন্থ, বাংলাভাষায় তো বটেই, বিভিন্ন ভাষায় বর্তমানে মজুদ আছে। মিডিয়াতে বিভিন্নভাবে তা অত্যন্ত সহজলভ্য। আমাদের উচিত হবে এই নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে পড়াশোনা করা, কয়েকজন একত্রিত হয়ে আলোচনা করা, বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিযোগিতামূলকভাবে জ্ঞান অন্বেষণের জন্য এই নিয়ে ওয়ার্কশপ পরিচালনা করা এবং গবেষণা করা। রাসুল সাঃ এর জীবনী আমাদের জন্য এক অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ। এই সম্পর্কে অনাঘ্রাতভাবে বা অবহেলায় ফেলে রাখা মানেই নিজেদের ক্ষতি করা, মানব জাতির ক্ষতি করা।
আল্লাহ আমাদেরকে তৌফিক দিন আমরা যেন মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কার্যকর ভালোবাসা স্থাপন ও প্রকাশ করতে পারি। আমিন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:১৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


মানুষ নিজের জীবনের চেয়ে কাউকে বেশী ভালোবাসে না।

২| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মোহাম্মদকে কে চিনেছে?
অথচ সবাই তারই আকাংখি
জ্ঞাতে অজ্ঞাতে তারই মূখাপেক্ষি
মোহাম্মদ সবেতেই আছে।

ল্বাকাদ জা আকুম রাসুলুম
মিন আনফুসিকুম
বুঝে নিলে পাবে রাসুল
আপনা হলকুম।

হাকীকতে রাসুল চিনো
মোহাম্মদ সাল্লে আলায়
মুর্শিদ মাঝে সেই রুপেরই
মা’আরেফ যায় দেখা যায়।।

৩| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহকে পেতে হলে আগে নবি (সঃ) কে পেতে হবে।

৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৪৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এ রকম অনেক ঘটনা ঘটে যে সন্তানকে বাঁচাতে গিয়ে মা/ বাবা জীবন দিয়েছে।

সুফিবাদ অনেক কুফরি ও বেদআতে পরিপূর্ণ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.