নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইদানিং সৌদি আরব

০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৮

ইদানিং সৌদি আরব।। আশরাফ আল দীন
‘সৌদি আরব’ বলতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে, মুসলমানদের নিকট অতি-পবিত্র দু’টি স্থান মক্কা ও মদীনার কথা। এই দু’টি স্থানের অবস্থান আমাদের কলিজার কাছাকাছি এবং জায়গা দু’টি অতি মর্যাদার ও অতি সম্মানের। সেই সম্মানের কিছু অংশ আমরা বিনা আপত্তিতে বরাদ্দ করে দিই ওই দু’টি স্থানকে ধারণ ও পরিচর্যাকারী দেশ সৌদি আরবের দিকে। ইসলামে রাজতন্ত্র নেই, তবু আমরা সৌদি রাজতন্ত্র নিয়ে খুব বেশী ওজর-আপত্তি করি না। ওই দেশের মাটির উপরে বা নীচে পাওয়া সকল সম্পদকে, যে কোন লুটেরা শাসকের মতো, ওরা দখল করে নিয়েছে আল সৌদ পরিবারের নিজস্ব সম্পদ হিসেবে! এত বড় অন্যায় ও জুলুমকেও হাসিমুখে মেনে নিয়ে আমরা আশা করি যে ওরাই নেতৃত্ব দেবে গোটা মুসলিম জাহানের! আমরা বলতে গেলে নিঃশর্তভাবেই ভালবাসি সৌদি আরবকে, এবং ওদের শাসক রাজবংশকে। গণতন্ত্রহীন বাকস্বাধীনতাহীন এই দেশটির প্রতি আমাদের আবেগ-ভালবাসা যেন শর্তহীন!
ইতিহাস থেকে জানা যায়,সৌদি রাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার গোড়ার দিকে বাদশাহর পরিবারের সাথে হযরত মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাব ( রহঃ) এর পারিবারিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সূত্র ধরে, বিশেষত মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহাবের ব্যক্তিগত প্রভাবে স্থির হয় যে, সৌদি আরব নামের রাষ্ট্রকে যৌথভাবে পরিচালনা করবেন বাদশাহ এবং ওলামা পরিষদ। দীর্ঘদিন এই ব্যবস্থা কার্যকর থাকে। পবিত্র কোরআনকে এই রাষ্ট্রের সংবিধান হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ইসলামের বিধি বিধান কঠোরভাবে পালন করাটাই আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে, এমনও নজির আছে যে, ইসলামের বিধি বিধান লংঘন করার দায়ে ও ওলামা পরিষদের সিদ্ধান্তে বাদশাহকে নিজের পদ ছেড়ে দিতে হয়েছে পরবর্তী বাদশাহ কাছে। কিন্তু অবস্থার ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে থাকে এবং পরবর্তীকালের ক্ষমতালোভী বাদশাহরা ওলামা পরিষদকে, আইন পরিবর্তন করে ও নানা কৌশলে, ক্ষমতাহীন করতে থাকেন। ক্রমশ রাজতন্ত্র স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে এবং স্পষ্ট বাদী ও হক্কানী আলেমদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। অনেকদিন থেকেই হক্কানী আলেমদের জেলে পুরে ফেলা বা গুম করে ফেলা সৌদি আরবে সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজতন্ত্রের নির্দয় নিয়ন্ত্রণ এত বেশি কঠোর যে জনগণের কিছু বলার কোন উপায় নেই! এ বিষয়ে পশ্চিমারা উচ্চবাচ্য করে না সঙ্গত কারণেই। বাদশাহরা পশ্চিমাদের পদলেহন করে, এমন কি রীতিমতো পূঁজা করে, নিজেদের ক্ষমতা নিরুপদ্রব ও পাকাপোক্ত করে রাখার জন্য। আর, পশ্চিমারা বাদশাহদের স্বার্থ রক্ষা করে প্রথমতঃ আল্লাহর দেয় সীমাহীন তৈল-সম্পদের অংশ উপভোগ করার জন্য। আর, দ্বিতীয়তঃ সহি ইসলামের চর্চা ও অনুসরণ যেন সৌদি আরবের নেতৃত্বে না হতে পারে এবং, প্রধাণতঃ, সৌদি আরবের নেতৃত্বে, অথবা অন্যকোন ভাবেও, যেন মুসলিম ইম্মাহ ঐকৃবদ্ধ হতে না পারে। মূলতঃ ইসলাম ও মুসলমানদের অধঃপতন যেন হয় এবং ইসরালের পরিকল্পনা অনুযায়ী "মুসলমানদের বারোটা যেন বাজে" সেটা নিশ্চিত করাই আমেরিকা বা পশ্চিমাদের মূল লক্ষ্য!

অবশ্য, এবার যখন যুক্তরাষ্ট্রের Washington Post পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত, এবং এককালের সৌদি রাজপরিবারের ঘণিষ্ট ব্যক্তি, জনাব জামাল খাসোগীকে অত্যন্ত নির্মম ও ঔদ্যত্বপূর্ণভাবে গুম করা হলো আঙ্কারাস্থ সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর, পশ্চিমা বিশ্বের প্রায় সকলেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করলো। কোথাও কোথাও নিন্দার ঝড় উঠলো। কেউ কেউ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ করে যথাযথ বিচারের দাবী তুললো। নির্মমভাবে হত্যার এবং কল্পনাতীত নৃশংসতার সাথে মৃতদেহটিকে নিশ্চিহ্ন করার প্রামাণিক তথ্য প্রকাশ করেছে তুরস্ক। জনাব খাশোগী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী। সেই হিসেবে এই ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবীতে সবচেয়ে সোচ্চার হবার কথা ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। তবে, ট্রাম্প সরকারের অর্থ-লোলুপতার কাছে সেই আশা ফিকে হয়ে গেছে। এক্ষণে, সুস্পষ্ট ও পরিকল্পিত আর আন্তর্যাতিক নীতি-বিরোধী এই হত্যাকান্ডের বিষয়টি চলে গেছে ভূ-রাজনীতির দাবার কোর্টে!
আসল কথা হচ্ছে, সৌদি আরবের এখন সেই ইসলামী জৌলুস নেই এবং তাদের কার্যক্রম জাহেলিয়াতের নির্মমতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে, সৌদি আরবের বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উদার নীতির ফলে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর বসানো হচ্ছে, বৈবাহিক সম্পর্কের প্রমাণ ছাড়াই নারী-পুরুষের হোটেলে রাত্রি যাপনের মতো হারাম কাজকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। রাজানুকূল্যে ব্যান্ড শো ও অশ্লীল গানের আসর বসানো হচ্ছে। ইসরাইল ও ইসলামের শত্রুদের সাথে, ঘোষণা দিয়ে সুসম্পর্ক তৈরী করা হচ্ছে। ফলে, সারা বিশ্বের ধর্মভীরু মুসলমানদের হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধাপূর্ণ আসন থেকে বহুদূরে ছিটকে পড়ছে সৌদি আরব এবং ফলতঃ তারা বিশ্ব মুসলিমের বা উম্মাহর নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা হারাচ্ছে।
রচনাকালঃ মিরপুর ঢাকা ।। ২৮ অক্টোবর ২০১৮

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২১

ঢাবিয়ান বলেছেন: ইসলাম ও রাস্ট্র সৌদিিআরবেের মাঝে দুরত্ব কয়েক কোটি আলোকবর্ষ

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: আজও সৌদি একটা বর্বর দেশ।

৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:৪২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এদের আচরণ মুনাফেকদের মত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.