নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৩০ বছর চাকরি করেছি; অবসর নিয়েছি কর্নেল পদবীতে ২০০৬ সালে। এরপর এযাবৎ প্রিন্সিপাল হিসেবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে; এখন অর্কিড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা-তে। ‘স্কুল সাইকোলোজি’ নিয়েও কাজ করছি।

আশরাফ আল দীন

কবি, শিক্ষাবিদ ও প্যারেন্টিং এক্সপার্ট

আশরাফ আল দীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি সহজ সুন্নত

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৫৭

একটি সহজ সুন্নত ।। আশরাফ আল দীন

একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত আমরা অত্যন্ত সহজেই প্রতিপালন করতে পারি। তা হলোঃ মসজিদে জামাতে সালাত আদায় করার পর অল্প কিছু সময় আরাম করে বসা এবং কিছু তসবিহ তাহলীল করা। যদি মসজিদেই আরো কিছু সালাত (সুন্নাত বা নফল) পড়তে চাই, যদিও এর সওয়াব একই সালাত বাড়ীতে বা অন্যত্র পড়ার সওয়াবের চাইতে অনেক কম, তাহলে যেই স্থানে ফরজ আদায় করেছি সেই স্থান থেকে সরে গিয়ে, ডানে-বামে বা সামনে-পেছনে, বাকি সালাত পড়া।

কোন কোন ওয়াক্তের সালাতে ফরজ আদায়ের পর পরই আশপাশের মুসল্লীরা দাঁড়িয়ে যান এবং বাকি সালাত আদায় করেন। এই সময় আমি নিজেও দাঁড়িয়ে গিয়ে পাশের মুসল্লির সাথে জায়গা বদল করে নিই। তারপর ওই স্থানে বসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের সুন্নত অনুযায়ী কিছু তসবিহ তাহলীল করি, অথবা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করি। এতে যার সাথে আমি স্থান পরিবর্তন করলাম তাঁরও, তাঁর অজান্তেই, একটি সুন্নত আদায় করা হয়ে গেলো। এখানে দু'টি সুন্নত আদায় করা হলো। একটি হলো, জামায়াতে সালাতের পর পর নতুন সালাত শুরু না করে কিছুক্ষণ বসে তসবি তাহলীল করা। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবেই সালাত আদায়ের পর কিছুক্ষণ সুস্থির হয়ে বসতেন এবং তসবিহ পাঠ করতেন ও নিজে নিজে দোয়া (মোনাজাত অর্থে) করতেন, সকলকে নিয়ে একসাথে হাত তুলে নয়। আরেকটি সুন্নত হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন যেখানে জামায়াতে ফরজ সালাত আদায় করা হলো সেখানেই অন্য সালাত আদায় না করে ডানে বামে সামনে পিছনে সরে গিয়ে আদায় করতে। তবে তিনি আরো উৎসাহিত করেছেন, ফরজ ছাড়া বাকী সালাতগুলো মসজিদে না পড়ে নিজের বাড়িতে অথবা কর্মস্থলে গিয়ে আদায় করতে। তিনি বলেছেন, (জামায়াতে ফরজ সালাত ছাড়া অন্য সালাতগুলো) মসজিদে আদায় না করে অন্যত্র (বাড়ীতে বা কর্মক্ষেত্রে) আদায় করা মসজিদে নববীতে (তিনি বলেছেন ‘আমার মসজিদে’) আদায় করার চেয়ে সওয়াব বেশী। আর আমরা জানি যে, পবিত্র কাবার মসজিদ, মসজিদুল আকসা এবং মসজিদে নববীতে সালাত আদায় করলে পৃথিবীর অন্য যে কোন মসজিদে একই পরিমাণ সালাত আদায়ের তুলনায় বহু বেশী গুণ সওয়াব হয়। অবশ্য একথাটা কেবল জামায়াতে ফরজ সালাত আদায়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

ইদানিং অনেককে দেখা যায় মসজিদে ফরজ সালাতের জামায়াত শেষ হওয়ার সাথে সাথেই উঠে দাঁড়িয়ে চলাচল করা শুরু করে দেন। এটা সুন্নাহ-বিরোধী কাজ। এই কাজ থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। নিতান্ত জরুরি না হলে কোন মুসলমানের জন্য উচিত নয় সালাম ফেরানোর পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ধীরে-সুস্থে সালাত শেষ না করে চট করে উঠে দাঁড়িয়ে চলাচল শুরু করা। গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে, এটা আদবেরও খেলাফ। কারণ আমরা যদি মনে করি যে, সালাত হলো আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ এবং আল্লাহর সাথে কথোপকথন, তাহলে ভাবতে হবেঃ মহামহিম আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সাথে সাথেই এতটা তাড়াহুড়ো করবো কিনা! এধরণের তাড়াহুড়ো তো সমাজের কোন গণ্যমান্য লোকের সাথে সাক্ষাতের ক্ষেত্রেও আমরা করি না এবং তা করাটাকে আমরা অভদ্রতা বলে গণ্য করি। অথচ এই ক্ষুদ্র মানুষটার তুলনায় আল্লাহর শান ও মর্যাদা কত সীমাহীন বার বেশী! এছাড়া ফরজ সালাতের পর অন্য সালাতগুলো বাড়িতে এসে অথবা কর্মস্থলে গিয়ে আদায় করার চেষ্টা করা উচিত। তবে, কারো জরুরত থাকলে সেটা ভিন্ন কথা।

এধরণের দৃষ্টি-আকর্ষণী বিষয় যখোন পেশ করা হয় তখোন অযথা নানা যুক্তি দিয়ে, 'এতদিনের অভ্যাসে'র বাহানা দিয়ে অথবা 'এভাবে করলে অসুবিধা কি' ধরনের কথা না বলে আমাদের উচিত বিষয়গুলোকে আপন মনের গভীরে ভেবে দেখা। কারণ, আমার এবং আপনার সকলেরই প্রতি ওয়াক্ত সালাতের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের উচিত প্রতি ওয়াক্ত সালাতের গুণগত মান বা ওজন ‍কিভাবে বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে মনোযোগী হওয়া, অযথা বিতর্কে জিতে যাওয়া নয়।

আসুন আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের দেখানো উপায়ে নামাজ পড়ি, অন্য কারো দেখানো বা শেখানো পদ্ধতিতে নয়।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:৫৬

নাহিদ০৯ বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো। এখন থেকে চেষ্টা করব বাকি সালাত বাসায় এসে পড়ার।

কিছু কিছু সময়ে বাসায় এসে পড়ার নিয়ত করলে পরে নামাজ গুলো আদায় করা হয় না। এক্ষেত্রে এশার নামাজের পরে নামাজগুলো মসজিদে পড়ে নেয়ার চেষ্টা করি।

আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:০১

আশরাফ আল দীন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
‘যে কোন প্রকারের নামাজ মসজিদে পড়লে সওয়াব বেশী’ - এই ভুল ধারণার অপনোদনের জন্য লেখাটা তৈরী করেছিলাম। আমার নিজেরও এই ভুল ধারণা ছিল দীর্ঘদিন। ভাবলাম সবার সাথে শেয়ার করি।
ঠিকই বলেছেন, অনভ্যাসের কারণে আর অন্য কাজে মগ্ন হয়ে যাওয়ার কারণে নিয়ত থাকলেও কখনো কখনো নফল নামাজ না’ও পড়া হতে পারে! মন খারাপ করার প্রয়োজন নেই। নফল তো! অন্য সময় বাড়তি নফল পড়ে নিলেও হবে।
লেন-দেন তো একান্তই আল্লাহর সাথে এবং একান্তভাবেই আপনার!
আল্লাহ রহম করুন।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


মিলিটারী অফিসারেরা ধর্ম পালন করে?

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২১

আশরাফ আল দীন বলেছেন: আমরা যখোন ছোট ছিলাম, তখোন ‘পাকিস্তান আর্মি’ সম্পর্কে খুব বাজে ধারণা ছিল আমাদের। স্বাধীন বাংলদেশে আমরা যোগ দিলাম এবং সেনা সদস্যদের সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক। তারপরও, স্বাধীনতার ১৪ বছর পর, আমি যখোন বিয়ে করতে গেলাম, পরে শুনেছি, শ্বশুর বাড়ীতে নাকি হট্টগোল শুরু হয়েছিল এই কথার উপর যে “কোন সাহসে তোমরা আর্মি অফিসারের সাথে মেয়ে বিয়ে দাও? জানো কিছু ওদের সম্পর্কে?” যা’ই হোক, পরে ওরাই তুষ্ট হয়েছিল যে, ‘আর্মিতেও নিষ্ঠাবান মুসলমান কম নেই!’
তবে, এখোন ভয় হচ্ছে, চাঁদগাজী ওখানে থাকলে মনে হয় আমার বিয়েটাই পন্ড হয়ে যেতো! কি জানি!
বুঝতে পারছি, এখনো দেশে আন্ত-প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয় নি। স্বাধীনতার স্পিরিট অনুযায়ী এমনটা কাম্য নয়।
এদেশের সেনাবাহিনী এদেশের গণমানুষেরই অংশ।
আপনি হয়তো ঠাট্টা করে বলেছেন, বুঝতে পারি।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১২

রাজীব নুর বলেছেন: নামাজ পড়ার ফল পাওয়া যাবে মৃত্যুর পরে।
কিন্তু পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে অনেক কিছু লাগে।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের দেশেও ফরজ সালাতের পর অনেকে বসে থাকে। তবে সেটা তাসবীহ বা সুন্নত হিসেবে নয়, ইমাম সাহেবের সাথে সম্মিলিত মোনাজাতের জন্য। আর যদি ইমাম সাহেব সুন্নত পালন করতে গিয়ে ফরজ সালাতের পর মুনাজাত শুরু না করেন ,তাহলে তেনাকে 'ওয়াহাবী/সালাফী' অপবাদ শুনতে হবে...

৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ২:২৪

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: নবীজি (সাঃ) যেভাবে এবাদত করতে বলেছেন তারচেয়ে ভালো কোনও পদ্ধতি হতে পারেনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.