![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার ভালোলাগাতেই আমার সন্তুটি আমাতৃপ্তি ।। youtube.com/asifmimhasan
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
অনেকদিন ঢাকা শহরের বদ্ধ বাসায় থাকতে থাকতে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল।তাই,ঈদ উল আযহা ২০১৪ উপলক্ষ্যে আমরা চার জন যানের যান প্রাণের প্রাণ বন্ধু আর আমাদের একজন বড় ভাই সিদ্ধান্ত নিলাম লং ড্রাইভ এ কোথাও বেড়াইতে যাব।যেখানে চারদিকে থাকবে সবুজের ছড়াছড়ি মুখ হা করে নিতে পারব খোলা বিশুদ্ধ বাতাস !! বত্রিশপাটির হাসি ঈদের দিন রাতে এ নিয়ে আলাপ আলোচনা করে কিছুই হলো না !!অহ্ আমাদের পরিচয় ই তো বলা হয় নি
আমি আসিফ!!
আমার বন্ধুরা হলো---
জিসান যার সাথে আমার ২য় শ্রেনী থেকে বন্ধুত্ব !!এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় ঘুরাঘুরি করি !! ভালোবাসা
আর এক জন আমার মিতা যাকে সবাই ছোট আসিফ বলেই ডাকি !!এই ভ্রমনের পর থেকে তার নাম পাল্টে ওয়াসেফ হয়ে গেছে।
আবশ্য আমাদের সবার নাম ই পাল্টে গেছে !!
সর্বশেষে বলব বন্ধু তাহসিন এর কথা যাহার আম্মু মানে আমাদের সকলের আন্টি একজন মাননীয় পুলিশ সদস্য !!এই তাহসিন ই আমাদের সকলের নাম পাল্টে দিয়েছে !!মানে হল ভ্রমনের পর থেকে আমরা আমাদের অব্যবহার করা নাম গুলো দিয়েই একে আপরকে ডাকা ডাকি করি !!
একটি কথা,
আমাদের দলছুট বন্ধু সাগর যাকে আমরা মিস্ করছি ভীষন !!!
আর আমাদের সম্মানিত বড় ভাই বকুল ভাই!
এখন আসল ঘটনায় আসি-ইদ উল আযহা’র পরদিন সকাল 10 টার দিকে ওয়াসেফ এর ফোনে ঘুম ভাঙল।বলে রাখা ভালো যে আমাদের মাথায় লং ড্রাইভ এর বুদ্ধি আসলো কারন ওয়াসেফদের গাড়ি ছিল আমরা তার গাড়ি করেই লং ড্রাইভ এ যেতে চাইছিলাম।ওয়াসেফ ফোন দিয়ে বলল তাদের গাড়ি ফ্রি আছে সুতরাং আমরা যেতে পারব।যেই কথা সেই কাজ।আমি উঠে নাজমুল কে ফোন দিলাম কিন্তু ওর ফোন বন্ধ থাকায় আন্টির ফোনে ফোন দিয়ে নাজমুলকে বললাম তারাতারি তৈরী হয়ে আমার বাসায় আসতে।অহ হ্যা নাজমুল হলো জিসানের আরো একটি অব্যাবহ্যত নাম !!
তার পর ফোন দিলাম শাহরিয়ার কে কি মজা তার ফোন ও যথারীতী বন্ধ পেলাম!!
শাহরিয়ার মানে তাহসিন এর বাসা আমার বাসার পাশে হওয়ায় আমি হাত মুখ না ধুয়েই তাকে গিয়ে ডেকে তুললাম !যদিও ডাকাডাকির কাজ টা আমাদের চীরসবুজ আঙেল ই করেছিল !!
আমি বাসায় ফিরে তৈরী হয়ে বসে আছি তখন নাজমুল আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে আগের বার আমি ওকে কেন ফোন দিয়ে ছিলাম!!ওকে আমি বুঝিয়ে বললাম ভেংচি তারপর বেচারা তৈরী হয়ে আমার বাসায় আসলো আমি নাজমুল আর বকুল ভাই বের হয়ে শহিরিয়ার কে নিয়ে ওয়াসেফদের গ্যারেজে গেলাম !!
সেখানে গাড়ি আমাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছিল ওয়াসেফ । আমাদের গন্তব্যস্হল কুমিল্লা ময়নামতি শালবন বিহার।
আমরা সবাই গাড়িতে উঠে বসলাম।গাড়ি চলতে শুরু করলো ঈদে ঢাকা শহরের রাস্তা ফাকা থাকায় খুব তারাতারি যেতে পারব ভেবেছিলাম কিন্তু জ্যাম আমাদের মুক্তি দিল না আমরা ঢাকার বাইরে যেতে যেতে অনেক সময় লেগে গেল।আস্তে আস্তে আমরা সবুজের ভিতরে হারিয়ে যেতে লাগলাম।চারিদিকে সবুজ আর সবুজ মাঠ খাল বিল নদী নালা।এমন ই সময় গাড়ির এসি নষ্ট হয়ে গেল আর আমরা জানালা সরিয়ে প্রকৃতির বিশুদ্ধ বাতাসে মনকে উজার করতে লাগলাম আর আমাদের ছবি তোলা কিন্তু চলছেই !!
যদিও আমাদের ভালো কোন ক্যামেরা ছিল না তার পরেও ওয়াসেফ আর বকুল ভাই এর মোবাইল দিয়ে অবিরত ছবি তুলতে থাকলাম।বকূল ভাই মাঝখানে আবার লেখালেখি করল কিছু সময়!!
কুমিল্লা প্রবেশ করেই আমরা অনেকগুলো কঁচি ডাব কিনে মজা করে ডাবের পানি পান করলাম!!
তার পর আবার যাত্রা শুরু হল-
আমরা প্রথমে গেলাম কুমিল্লা বার্ড এ শুনেছিলাম এটা নাকি খুবই সুন্দর অআর আমরা ভেবেছিলাম নানা রকমের পাখি দেখতে পারব আমরা কিন্তু আমাদেরকে ভিতরেই ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছিল না তার পর আমাদের আইডি কার্ড দেখিয়ে ছাত্র হিসেবে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি পেলাম কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে পুরোপুরি অবাক হলাম ভিতরে পাখি বলতে কিছুই নেই আছে শুধু অফিস কিসের অফিস তাও জানি না।
অনেক বাধ্যবাধকতা থাকার কারনে আমরা এখান থেকে বেরিয়ে আসলাম।তার পর এসে দেখি গাড়ির কি যেন নষ্ট হয়ে গেছে আমরা চিন্তায় পড়ে গেলাম !!কিন্তু ড্রাইভার আঙেল আমাদের শান্ত থেকে ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখতে বললেন !
আমরা সেখান থেকে অটো যোগে গেলাম কুমিল্লা ময়নামতি শালবন বিহারে জনপ্রতি ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম !! ফরেইনার দর্শনার্থীদের জন্য যা ২০০ টাকা !!
ভিতরে ঢুকেই মন যেন কেমন শান্ত হয়ে গেল চারদিকে সবুজ আর সবুজ শত বছরের পুরনো মাটির ফলক গুলো ছুয়ে ছুয়ে দেখতে লাগলাম আমরা হারিয়ে গেলাম সবুজের ভিতরে শুয়ে বসে দাড়িয়ে লাফিয়ে আমরা ছবি তুলতে লাগলাম !!
আমাদের একটা দোষ আছে আমরা যে কোন দর্শনীয় জায়গায় গেলে সেখান টা ভালো করে ঘুরে দেখার চেয়ে ছবি তুলি বেশী !!!! ভালো ক্যামেরা নাই তাতে কী ছবি তো তুলতে পারি নাকি!!!!
এ নিয়ে আবার শাহরিয়ার খুবই বিরক্ত !!!
আমরা অনেক ক্ষন ঘুরে ফিরে শালবন বিহার থেকে বিদায় নিয়ে আসলাম।
আমরা এখন ভালো একটা হোটেল খুজতে লাগলাম যেখানে অল্প খরচেই ভালো খাবার খেতে পাওয়া যাবে একটা পেলাম ভিতরে গিয়ে বসতেই তোরজোড় শুরু হয়ে গেল্সাবান টাবান দিয়ে হাত ধুয়ে টেবিলে বসলাম সবাই।কিন্তু এই হোটেলে শুধু ভাত থাকায় আমরা এখানে আর খেলাম না আমরা আশে পাশে অনেক জায়গাতে চিকেন বিরিয়ানী খুজে অবশেষে পেলাম আর পেট পুরিয়ে খেলাম।
সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছিল আমরা তখন রওনা দিলাম ময়নামতি রানীর প্রাসাদ দেখতে ওইখানে গিয়ে পৌছতেই মাগরিবের আযান দিল আমরা তারপরেও কিছুটা সময় ওখানে ছিলাম ওখানকার পরিবেশ টা আমাদের কাছে সবচেয়ে ভালো লেগছিল আমরা আপসোস করতে লাগলাম যে কেন আগে এখানে না এসে অন্য জায়গায় গেলাম!!! চশমুদ্দিন
ওই খানে একটা গুহা আছে যা কিনা খুবই ভয়ংকর লোক মুখে শুনেছি আমাদের অতীব কৌতূহল থাকায় আমরা এই অন্ধকার গুহাতে নামলাম এবং ছবি তুললাম !!!
আমাদের ইচ্ছা ছিল বৌদ্ধদের মূর্তি গুলো দেখার শুনেছিলাম ওইখানে নাকি মূর্তি আছে কিন্তু আমাদের ধারণা ভুল ছিল !!
ওইখানে ছিল শুধু ছোট্র একটা হিন্দুদের মন্দির । শাহরিয়ারের ওইটা দেখার প্রবল ইচ্ছা জাগলো !! ওর মাঝে মাঝেই এমন অদ্ভুত ইচ্ছা জাগে !!
সন্ধ্যা বেলা সবাই মানা করেছিল ওই মন্দিরের দিকটাতে না যাবার জন্য কিন্তু কে শুনে কার কথা বাধঁন ছাড়া পাখি তো আকাশে উড়বেই !!
আমাদের কে একজন বলেছিল যে অন্ধকার নেমে এলে জায়গাটা ভালো থাকে না ছিনতাইকারী আর প্রেতান্তাদের ও ভয় আছে!!
তাই আমরা জায়গাটা আর দেরী না করে থেকে রওনা দিলাম !! হঠাৎ পিছন থেকে শুনলাম কে যেন আমার নাম ধরে ডাকল আমি পেছন ফিরে তাবিয়ে দেছি শাহরিয়ার থোঁ দৌড়ে ওই মন্দিরের দিকে যাচ্ছে আমি ও দৌর দিলাম !!!! ভালোই লাগছিলো!!!
তারপর দেখি আমাদের পেছন পেছন বকুল ভাই আর নাজমুল ভাই ও আসলো !!! আমরা ভাবলাম কি না কি !!! তার পর ঘটনা কিছুই ছিল না !! আসল ঘটনা হলো শাহরিয়ার মন্দির টা দেখতে গিয়েছিল !!!
সবাই ঝাড়ি দিল আমরা এভাবে দৌড়ালাম কেন !!!
আমিও শাহরিয়অরকে ঝাড়ি দিলাম !! ভেংচি
তার পর আমরা আস্তে আস্তে মধুর স্মৃতি নিয়ে ঢাকার দিকে ফিরে আসলাম !!
যাওয়া আসার পথে গাড়িতে অনেক মজা করেছিলাম আমরা !!
আস্তে আস্তে সবুজ মাঠ খাল বিল নদী পাখির কলতান সব কিছু থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকায় চলে আসলাম !!!!
আবারো সেই বন্দী জীবন সবুজ বিশুদ্ধ বাতাস আবারো ডাকছে আমাদের !!!
ওয়াসেফ ভাই তাদের গাড়ি নেওয়াতে আনেক আরামে আমরা ভ্রমন করতে পেরেছিলাম।এটা ছিল আমাদের ২য় এবং বেশী আরামদায়ক ও সুন্দর ভ্রমন যার জন্য ওয়াসেফ কে জানানো দরকার ধন্যবাদ !!!!
আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন আমরা একসাথে সবসময় থাকতে পারি।
ইন শা আল্লাহ্ সারা বাংলাদেশ ভ্রমন করতে চাই বাংলাকে জানতে চাই একসাথে !!
এটা আমার প্রথম লেখা আমি জানি আমি ভালো করে মন মতো লিখতে পারি নি।তাই, ভুল ভ্রান্তি গুলো আমাকে ধরিয়ে দিয়ে আমার লেখার উন্নতিতে বিশেষভাবে সাহায্য করার জন্য সম্মানিত সকল যাত্রী ভাই-বোনদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
©somewhere in net ltd.