নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ্

সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ

আমি তোমার ভিতরের শক্তি কে জাগতে এসেছি বন্ধু। একবার চোখ মেলে দেখো নতুন এক সূর্য উদয় হয়েছে বাংলার আকাশে। কোনো মৃত্যু, কোনো বাধা, কোনো প্রতিকুলতা এই হৃয়য়ের পরম শক্তি ও সত্য সুন্দরকে বিনষ্ট করতে পারবে না। আমি যুগে যুগে আসি আজও এসেছি শুধু তোমাদের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে। আমার এই পথ চলা থামবে না। তোমাদের বাঁচার মাঝে আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো তা যদি কোনো করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও হয়। আমার বাংলাদেশে নতুন এক গণতন্ত্র এসেছে। যা এই পরিবারতন্ত্রকে ভেঙে সত্যের ভিতরের সত্যকে তুলে এনেছে। আজ আমরা বিশ্বের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছি। তোমাদের ভালোবাসাই আমাকে তোমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৪ ফেব্রুয়ারী ১৪ ভালোবাসা দিবসের উপহার “-: হয়তো কোনো এক কালে :- ”

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৭

গত পরশু গল্পটি লিখেছি। কম্পিউটার ছিলো না বলে কাগজ-কলমে লিখেছি। এই গল্পটি ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৪ ভালোবাসা দিবসে আপনদের জন্য গিফট দিলামঃ



-: হয়তো কোনো এক কালে :-



হয়তো কোনো এক কালে, কোনো এক মফস্বল শহরে, স্বর্ণলতা নামের এক ভদ্রমহিলা রিরাট বড় চাকুরী করতেন। সেই শহরের একদম ণৈঋদ কোনের শেষ সীমানায়, নদীর পাড় ঘেসে ছোট্ট সুন্দর একটি পার্ক ছিলো। কিছু সুন্দর সুন্দর হাতাওয়ালা কাঠের বেঞ্চের আসনের বসার ব্যাবস্থা ছিলো। পার্কে অল্প কিছু সুন্দর ফুলগাছ। বড়-মাঝারী ঝাউ গাছ, আকাশ মনি গাছ সহ নাম না জানা ও অসম্ভব সুন্দর কিছু পাতাবাহার, প্রাচীর বাহারী গাছও ছিলো। স্বর্ণলতা প্রায় প্রতিদিনই অফিস শেষে বাসায় হালকা-পাতলা কাজ করে ঠিক সন্ধ্যা আর বিকালের মাঝামাঝি সময় এই পার্কে আসতেন। কখনও পায়চারি করতেন আবার কখনও আস্ত একটি বেঞ্চের একদম মাঝখানে বসে নিজ মনে খোলা গলায় গান গাইতেন। স্বর্ণলতার গান গাওয়ার অভ্যেস দীর্ঘকালের। প্রায় পঞ্চান্ন ছুই ছুই বয়সে বয়সী স্বর্ণলতা কন্ঠের ঢেউ এর সাথে মধু মিষ্টি গলায় এমন সুন্দর করে গাইতে জানতেন যে পার্কে আগত আশে পাশের মানুষজন তাদের কথা বলার ভাষাও পথের বাঁকে পথ খোঁজার মতো করে নিরব বাচ্চার মতো শান্ত শ্রতা হয়ে চোখ বন্ধ করে সেই গান উপলব্ধি করতেন। এ যেনো মায়া ভোলানীয়া অধরা কোনো সুরের গোলাপ ফুল ছিলো।



কোনো এক ছুটির দিনে স্বর্ণলতা দুপুরের পরপরই স্বর্গীয় সুন্দরের পার্কটিতে চলে এলেন। তখন ছিরো বসন্তকাল এসে শিতকালকে তাড়িয়ে দেবার সময় কাল। মিষ্টি রোদের হালকা-উস্নো স্পর্শ ছিলো। এই রোদে শরীর মহাজন বেশ আরা পাচ্ছিলো। এমন যেনো যে শীত ও শরীরের জরতাকে দুর করবার জন্য প্রকৃতি তার আপন হাতে শান্ত-নরম রোদ চন্দনের মতো মাখিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।



স্বর্ণলতা অবাক ডাগর নয়নে লক্ষ্য করলেন যে, এই পার্কের সাথে পরিচয় হবার পর এই প্রথম পার্কটিতে স্বর্ণলতা ছাড়া অন্য কোনো মানুষজন নেই। অবাক হওয়া ও নিজ মনের ভালোলাগা সমানুপাতিক হারে মিশ্রন করলে যে অনুভুতির জন্ম নেয় তেমনই লাগছিল। স্বর্ণলতার গান গাইতে প্রবল হৃদয় তালে ইচ্ছে জাগছিলো। নদীর দিকে একটু খেয়াল পড়তেই স্বর্ণলতা আরও বেশী অবাক হয়ে উঠলেন। একি-গো! দেখলেন নদীতে আজ কোনো প্রকার জলযান নেই। মাছ ধরার মাছুরিয়া-জেলেরাও যে মোটের উপর একজনও ছিলো না। এই চুপ চাপ শান্ত নিবির প্রকৃতির সরব উপস্থিতিকে যখন স্বর্ণলতা তার অনুভবের ছোঁয়া দিয়ে কুড়িয়ে নিজমনে নিয়ে এসে যতনে রেখে দেবার পথে অগ্রসর হতে চলছিলেন ঠিক তখনই ষাটোর্ধ কাচাপাকা চুল ও মস্ত বড় গোঁফওয়ালা (ঠিক আমাদের মোহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের সাথে প্রায় মিলে যায়) এক ভদ্রলোক পার্কের ছোট দরজা পা দিয়ে আলতো করে খুলে পার্কের দিকে প্রবেশ করেছিলেন।



ভদ্রলোকের পরনে নীল পোরো টি-শার্ট, লালের মধ্যে কালো চেকের ট্রাউজার, দু’হাতে দুটি চুরির মতো ব্রেসলেট পরা ছিলো। একটি ব্রেসলেট স্বর্ণের হবে অন্যটি চান্দির হবে হয়তো। পায়ে সাদা কেডস। মাথায় কাচাপাকা চুল হেমন্তর শুরুর দিকের সাদাকালো মেঘের মতো বাতাসে উড়ছিলো। স্বর্ণলতাকে ঐ ভদ্রলোক খেয়াল করেছেন কিনা তা স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু স্বর্ণলতার হঠাৎ এ-কি হলো ওই ভদ্রলোকের দিক থেকে চোখ সরিয়ে আবারও সেই চোখের ফোকাস ভদ্রলোকের গোঁফের উপর গিয়েই লেগেছিলো। গোঁফ থেকে চোখ সরে যখন তা চেহারার দিকে গিয়ে মুখমন্ডল স্পষ্ট হয়ে উঠলো। ঠিক অমনি সময় স্বর্ণলতার নিজের ভিতরে ভুমিকম্প অনুভব করে শিহরিত হয়ে উঠছিলো। আরে এই তো সে!!! এই ভদ্রলোককে তো স্বর্ণলতা অনেক ভালো করেই চিনতেন, জানতেন ও বুঝতেন। তখন ভদ্রলোকের অনেক কিছুই ছিলো কিন্তু গোঁফ ছিলো না।



হায়রে কপাল! এতো সুন্দর চেহারার পুরুষকে কি গোঁফে মানায়! স্বর্ণলতার মন আপন বেগেই বলে উঠলো। ভিতরের শিহরনকে কোনো ভাবেই বাধ সাধিয়ে রাখা যাচ্ছিল না। ভদ্রলোক আপন বেগেই এগিয়ে চলছিলেন। স্বর্ণলতার অন্তর দেবতা যেনো মানতেই পারছেন না যে ওই মানুষ এখানে কেনো?

তার ক্ষনিক বাদে নিজের অজান্তেই কন্ঠে মাঝারি স্বরে আওয়াজ ফুটিয়ে ডাক দিয়ে বলে উঠলেন স্বর্ণলতাঃ

এই! এই!! এই!!! অনন্ত



ভদ্রলোকের নাম অনন্ত। অনন্ত স্বর্ণলতার ডাকে সারা দিলেন। আস্তে ধীরে কাছে এসে একদম স্বর্ণলতার সামনা-সামনি দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বললেনঃ



ভালো আছো লতা? এসো বসে কথা বলি।



স্বর্ণলতার সাথে অনন্তন দেখা হলো পয়ত্রিশ বছর পরে। পয়ত্রিশ বছর যে অনেক কাল তা কিন্তু অনন্তর ভাবে বোঝা গেলো না। অনন্তর ভাবখানা এমন যে প্রতিদিনই যেনো দেখা হয। স্বর্ণলতার ও ভিতরের শিহরন ভাব খপ করে কেটে গিয়েছিলো। তাই একটুও সময় নষ্ট না করে দু’জন সবথেকে কাছের বেঞ্চটিতেই আসন পেতে নিয়েছিলেন।



এর পর পরই শুরু হয়েছিলো দু’জনের পয়ত্রিশ বছরের সামান্য বিরতির পর কথোপকথনঃ



[প্রিয় পাঠক, আপনাদের সুবিধার্থে অনন্ত স্বর্নলতার সেই দিনের বলা কথা গুলো নাটোকের মতো করে কথার আগে আগে ক্যারেক্টারের নাম লিখে দিলাম। যাতে করে খৈ হারিয়ে না ফেলেন।]



অনন্ত আবারও বললোঃ ভালো আছো লতা?

স্বর্ণলতা এই প্রশ্নের উত্তর দেবার প্রয়োজন বোধ করছিলেন না। তাই সামান্য মাথা ঝাকিয়ে বলেছিলেনঃ

তোমাকে এভাবে দেখতে পাবো স্বপ্নেও ভাবি নি।

অনন্তঃ আমি ভেবেছিলাম রেখেছিলাম। স্বপ্নে না বাস্তবে। অনেক দিন আগে। অনেক রকম ভাবে। তার মধ্যে এই ক্ষনটাই সত্য হয়ে ধরা দিলো। কেমন আছো বললে নাতো?



স্বর্ণলতাঃ আগে তুমি বলো। তুমি কেমন ছিলে বা আছো?



অনন্তঃ আমি সবসময়ই ভালো থাকি। সেই আগের ভালো আর এখনকার ভালো দুয়ে মিলে ভালো ভালো অর্থাৎ ডাবল ভালো বা ভালো স্কয়ার না বলে চেয়ে ভালো আছি বলাই শ্রেয়।



স্বর্ণলতাঃ তুমি যখন ভালো আছো বলছো ধরে নাও আমিও ভালো আছি। তুমি এখন কি করো অনন্ত? কোথায় থাকো? তোমার স্ত্রী-সন্তান-পরিবার ভালো আছে?



অনন্তঃ এ প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না। তারচেয়ে তোমার কথা শুনি। বলো....



স্বর্ণলতাঃ আমার সম্বন্ধে তুমি জানো না?



অনন্তঃ না জানি না। জানলে জিজ্ঞাস করতাম না।



স্বর্ণলতাঃ জানার দরকারও নেই। যা ফুরিয়ে গেছে তা এক করা কি যায় বলো?



অনন্তঃ তুমি আমি যখন জানাজানির ব্যাপারে না জানানোর পক্ষে তাই এই সব প্রসংগই থাক। কি বলো? তোমার মতেই তো আমার মত মিলে যেতো।



স্বর্ণলতাঃ তাহলে এই পঁয়ত্রিশ বছর কার মতে চললে?



অনন্তঃ তোমার মতেই তো চলেছি। কি অদ্ভুত শুনাচ্ছে? চিন্তা করে দেখো, তুমি আমায় যে যে অঙ্গীকার ও আদেশ দিয়ে ছিলে সব আমার মনে আলপিনে কাগজ সেটে দেয়ার মতো মুখস্ত হয়ে আছে। সেখান থেকেই তোমার মতে মত মিলিয়েই তো চলে এসেছি। অসুবিধা কোনো কিছু তো হয়নিই বরং সুবিধাই হয়েছে বেশী বেশী।



স্বর্ণলতাঃ ভালো বললে! “সুবিধা হয়েছে!” শোনো, সুবিধা হওয়া, ভালোভাবে বাঁচার আশা, নিজের মানুষকে নিজের কাছে রাখা, প্রিয় মানুষকে দেখার আশা করতে নেই। এই আশা যে করে, তার মনে হতাশা বাবুই পাখির মতো বাসা বাঁধে।



অনন্তঃ আমি তোমার সাথে একমত না প্রিয়তম। যিনি মনে সবটুকু জায়গা ভরে আপন মানুষকে যতন করে রাখতে জানে। তার সব হারাতে পারে কিন্তু আপন মানুষ হারাবে কিভাবে বলো? আর মনে ফাঁকা ও ফুটো ফাটা থাকলেই তো নিরাশা, হতাশা রূপে আসে। তুমি তো জানই আমার সকল চাওয়া-পাওয়া-আশা-আকাংক্ষা-স্বপ্ন-সুখ-আনন্দ সবই তো একমাত্র তুমিই। তাইতো আমার মনের যা কিছু সব তোমারই দেয়া। তোমার থেকে পাওয়া ব্যাটুকুও যে ব্যাথা মনে হয় নি। ঐ ব্যাথাকেও একটি ত্রকোনা কাঁচের পাত্রে ঠেসে মনের জাদুঘরে রেখে দিয়েছি। শুধু মনের জাদুঘরে রেখে দেয়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এরপর আর দেখতে যাওয়া হয় নি, যে ব্যাথাটা ঠিক জায়গায় ঠিক মতো আছে কিনা। আবার ভুলতেও পারিনি যে মনের জাদুঘরে ত্রিকোন কাঁচের জারে ঐ ব্যাথা রাখা আছে। তোমার স্মৃতির এতো এতো অসম্ভব সুন্দরের মাঝ থেকে কেনো যে ব্যাথা হারিয়ে গেলো না তা বোঝার সাধ্য আমার নাই। অনেক কিছু না বোঝার দলে ঐ ব্যাথার স্থান হয়ে গেছে- এটাই বরং ভালো হয়েছে- কি বলো?



স্বর্ণলতার চোখ বার বার পানিতে ডুবু ডুবু হয়ে শেষ রক্ষা হয়ে হিরক খন্ডের মতো মহাদামি অশ্রু পাত হচ্ছে তো হচ্ছেই। এর মধ্যে অনন্ত তার বিশ-বাইশ বছর বয়সে যেমন আজব কাজ কারবার করতেন ঠিক তেমনি এক অদ্ভুন কান্ড দেখালো তা হলো অনন্তর হাতের তর্জনী দিয়ে স্বর্ণ লতার চোখের পানি মুছে দিয়ে, হাতে লাগা পানিটুকু জিহ্বা দিয়ে চেটে খেয়ে ফেললো। অনন্তর চেহারায় এমন ভাব ফুটলো যেনো চোখের জল খেয়ে ফেলা সব মানুষেরই কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।



অনন্তঃ এই লক্ষ্মীছাড়া প্রিয়লতা!!! এই দিকে তাকাও! কেঁদো না বলছি। শোনো---

[এরপর হাতে অদ্ভুত ভঙ্গিমা করে অনন্ত বললো]

একটুকু ভাত খাবে!

বক মারতে যাবে!!

ডরাবে নাতো?

হুম্‌ম্‌ম............



আচমকা স্বর্ণলতার চেহারায় কান্না হাসির রূপরেখা একসাথে ফুটে উঠলো। যেমন করে আকাশে মেঘ রোদ আর রামধনু একই সময় একই সাথে ধরা পরে।



স্বর্ণলতাঃ বলতে পারো অনন্ত? তুমি আমি কি এমন পাপ করেছিলাম? কি এমন অপরাধ করেছিলাম যে আমাদের হাতের স্বপ্নগুলোও পুরণ হলো না? একসাথে চিরকাল থাকতে চেয়েছিলাম দু’জনে। সুন্দর একটি সংসারের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কোনো কালে ভুলেও আমাদের আন্ডাস্টাডিং এ সমস্যা হয় নি। নিখাদ নিঃস্বার্থ ভাবে শুধু তোমাকে কাছে চেয়েছিলাম। না ছিলো ভয়, না ছিলো লোভ, না ছিলো স্বার্থ, শুধু মাত্র প্রেম ছিলো। আমাদের জীবনের সব সুখ স্রষ্টা কেড়ে নিলেন কেনো? ১ সেকেন্ড-২ সেকেন্ড, ১ মিনিট-২ মিনিট, ১ ঘন্টা-২ ঘন্টা, ১সপ্তাহ-২সপ্তাহ, ১মাস-২মাস, ১বছর-২বছর, ১যুগ-২যুগ হতে হতে আজ ৩যুগ হতে ১ বছর বাকি আছে। ইস! পঁয়ত্রিশটি বছর এভাবে কাটিয়ে দিলাম। ক্ষনে ক্ষনে তোমাকে কাছে পাবার সাধ হয়েছিলো। তোমার চোখ, তোমার মুখ, তোমার হাসি, তোমার পাগলামি, তোমার মুখে মিষ্টি করে বলা I Love You মন পেতে শোনা। সুখের ঊর্দ্ধে যে সুখ থাকে, সেই সুখের সংসার রচনা করা। তুমি আমি এক হয়ে ভবিষ্যতের জন্য নবাগতকে পৃথিবিতে নিয়ে আসার ইচ্ছে, তোমাকে তোমারই প্রিয় গান গেয়ে শুনানোর ইচ্ছে, দু’জন মিলে অনেক অনেক দূরের কোনো সুন্দর ভ্রমন বিহারে যাবার ইচ্ছে। তোমার চরনে আমার জীবন ভর প্রণাম করার ইচ্ছে, শত-ঝরে শত-আঘাতে শুধু তোমার বুকে আশ্রয় নিয়ে নিরাপদে থাকার ইচ্ছে, তোমার কোনো ছোট রোগ-জ্বর হলে সেবা শুশ্রুসা দিয়ে সারিয়ে তোলার ইচ্ছে, জ্বরের ঘোরে পায়ের নীচে সরষে তেল মেজে দেবার ইচ্ছে, নিজ হাতে তোমার গলায় টাই বেঁধে দেবার ইচ্ছে, আমি হাতে মেহেদী লাগিয়ে যখন শুকানোর অপেক্ষায় থাকবো ঠিক সেই সময় তোমার হাত দিয়ে আমার মুখে খাবার খাবার ইচ্ছে, তোমার বাবু তোমাকে উপহার দেবার পর তুমি দুর্বল আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করবে এমন সব ইচ্ছে, সব চাওয়া, সব স্বপ্ন, সব আশা, সব আনন্দ, এই দীর্ঘ ৩ যুগে বিশর্জন দিতে দিতে আমি আজও বেঁচে আছি কেনো? কেনো এই অযাচিত অন্যপথের অভিষাপ শুধু কি আমাদের জন্যই স্রষ্টা ধার্য্য করলেন? কিন্তু কেনো? দেবতা হয়তো মানুষের জীবনের বিরহ যন্ত্রনা দিয়ে নাটক সাজাতে পছন্দ করেন। কিন্তু আমরা তো রক্ত মাংসের মানুষ! এই মনের একমাত্র ও সর্বপ্রধান চাওয়াই ছিলো তোমাকে নিয়ে এক সাথে বাঁচার সাধ-সাধনা। এই পয়ত্রিশ বছর এতো কষ্ট সয়েছি আবার তারপর সইতে সইতে পরপারে চলে যাবো। ব্যাস এই বাজে জীবনের কি দরকার ছিলো বলো?



অনন্তঃ কান্না থামাও বলছি। জীবন বর তো শুধু কান্নাই দিলে। আজ মোটেও কাঁদতে পারবে না। বলে দিচ্ছি- কান্না থামাও আশালতা! আজ কান্নার দিন না। আজ সব আশা পূর্ণ হবার দিন। কিসের পয়ত্রিশ বছর? ভেবে নাও ঐ পয়ত্রিশ বছর বাস্তব না কোনো এক দুঃস্বপ্ন দেখে কাটিয়েছো। আমাদের স্বপ্ন, আমাদের প্রেম, দু’জনে একসাথে থাকার প্রতিজ্ঞা যেমন ছিলো আজ ঠিক তেমনই আছে। আমাদের প্রেম অমর, আমাদের চাওয়া চিরন্তন, আমাদের আশা মৃত্যুহীন, আমরা যা যা স্বপ্ন দেখেছি শুধু স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেবার জন্যই সেই স্বপনের রচনা করা হয়েছিলো। কোনো স্বপ্ন বিসর্জন বা পায়ে ঠেলে সরিয়ে দেয়ার জন্য দেখিনি। আমাদের দু’জনের সবই একরকমই আছে শুধু বাকি আছে আমাদের দু’জনের একসাথে দেখা স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটিয়ে তারপর প্রেমের পূর্ণতার পথে আগামীক আগমনি বার্তা শোনানোর। আমার দিকে তাকিয়ে দেখো প্রিয়লতা! আমি যে তোমাকে হারানোর জন্য ভালোবাসিনি, একসাথে থাকার জন্য ভালোবেসেছি। আমি তোমায় ছেড়ে কোথায় যাবো বলো? স্রষ্টা কে ভুল বুঝতে হয় না। ঈশ্বরকে আমান্য করলে প্রেম আর সুখ দু’টোই দৌড়ে পালিয়ে মনে মিথ্যের আবাসভূমি তৈরি হয়। প্রকৃতির প্রতি আস্থা রাখতে জানলে দেখবে প্রকৃতি কখনও কখনও অপূর্ণতা তৈরি করেন তার পূর্ণতাকে আরো সুন্দর ও সাবলিল করার জন্যই। আর কোনোদিনও কাঁদবে না বলে দিচ্ছি। তোমার জন্য আজ আমি ধন্যরূপে আবির্ভুত হয়েছি। এখন থেকে এক তুরিতেই তোমার সব দুঃখ অপূর্ণতা পালিয়ে গিয়ে শুধু চিরকালের তরে সুখের স্বর্গই রচিত হবে। যে স্বর্গ থেকে প্রেম এসেছে সেই স্বর্গ নামক প্রেমের কারখানায়ই আমরা থাকবো। সব কালের সব মানুষের বিরহকে রূপান্তর করে প্রেম বানিয়ে দেয়া হবে। কাঁদবে না সোনা। তোমার কান্না আমার বুকে আচর দিচ্ছে কিন্তু। তুমি আমি কোনোদিনও হারাবো না। প্রেম আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে দেখো। সৃষ্টিকর্তা শুধু মানুষকে প্রেমের মধ্যেই বাঁচিয়ে রাখে, অন্য কোকো কিছুর মধ্যে না। এবার স্বাভাবিক হও। তোমার কোলে একটু আমাকে শুতে দিবে?



স্বর্ণলতাঃ শোও!

অনন্ত বাচ্চা ছেলের মতো স্বর্ণলতার কোলে শুয়ে পড়েছিলো। স্বর্ণলতার বঁকা আঙ্গুল অনন্তর কাঁচাপাকা চুলে বিলি কাঁটতে কাঁটতে কথা দু’জনে দু’জনের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতেই লাগলো।



স্বর্ণলতাঃ তুমি যে বললে এই পয়ত্রিশ বছর ছিলো মিথ্যে বাজে স্বপ্ন। তাহলে আমি বুড়ো হয়ে গেলাম কি করে?



অনন্তঃ কে বলেছে তুমি বুড়ি? ভালোবাসার মানুষটি মানে সবচেয়ে কাছের প্রিয় মানুষটি- শোনো- পৃথিবীতে সবকিছুর হয়তোবা বিকল্প হতে পারে কিন্তু প্রানের থেকে প্রিয় মানুষটির বিকল্প তো তুমি নিজেই। এই দেখো দেখো আমি এখনও তোমার ঐ সরলতা ও মায়াবরা মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। তোমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই তো আমার সব সাধনা, সব আরাধোনা, তোমার প্রেমই আমার প্রেরনা। পয়ত্রিশ বছরকে দুঃস্বপ্ন বলে হোমাকে হয়তো সান্তনা দেবার চেষ্টা করেছি মাত্র। এই পয়ত্রিশ বছর আমরা দু’জনে ত্যাগ স্বীকার করেছি ঠিকই আর সেই সব ত্যাগ আজকের দিনটিতে এসে পয়ত্রিশ বছরের শত হাজার ত্যাগ একসাথে আমাদেরই প্রেমের কাছ থেকে অব্যহতি নিয়ে গেছে। প্রেম কে অর্জন করে নেবার জন্য ত্যাগ সহ্য করে বীরের মতো সামনে এগিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা থাকা অবশ্যক। তাই বলে ত্যাগ আর প্রেম যে এক জিনিস এমন মনে করা ভুল ধারনা ছড়া কিচ্ছু না। ত্যাগ নামক অস্ত্র দিয়ে লড়াই করে প্রেম যখন অর্জন করে নেবে তখন ত্যাগের অস্ত্রটি কোনো এক জায়গায় রেখে দেয়া ভালো। যাতে আবার কখনও দরকার পড়লে নিজেকে সামলে নিতে সহজে ত্যাগ অস্ত্র হাতে তুলে নিতে পারো। মনের মানুষটি যখন প্রবল প্রেমের মাধ্যমে স্বশরীরে তোমার ভিতর বাহিরে সমরূপে বিরাজ করবে তখন প্রেম কে শুধু উপভোগ করতে হয়। এক সেকেন্ড প্রেমকে সঠিক ভাবে উপভোগ করতে না জানলে বেঁচে থাকার ঐ ১সেকেন্ডই বৃথা ও রসকষহির ভাবে জীবন সময়ের অপচয় করা ঠিক না। প্রেমের আনন্দ দু’জনের বাঁচার মতো বেঁচে থাকার জন্য অনেক বেশী যথেষ্ট এর মধ্যে ত্যাগের দুঃখ ভরা পিছুটান অনুভব না করাই বরং ভালো হবে। যে প্রেম ত্যাগ করাকে ভুলতে পারে না সেটা প্রেম নয়- তা হল প্রতিদান, ত্যাগের প্রতিবাদ বা সহজকথায় দ্বায়িত্ববোধ মাত্র। ভেবে দেখো পয়ত্রিশ বছর পিছনে গেছে তাতে কি এমন এলোগেলো আজ তো তোমার কোলে শুয়ে তোমার স্পর্শ পেয়ে, তোমার কথা শুনে সব দুঃখ-ব্যাথা পালিয়ে ছুটাছুটি করে দৌড়ে অন্যকোথাও চলে যাচ্ছে। I Love You.



স্বর্ণলতাঃ এখন আমার মনে হচ্ছে তোমার সাথে পয়ত্রিশ বছর পর না। ঠিক যেনো গতকালের পর আবার আজ তোমায় পেয়েছি। আর এই এক দিনেই কতো চুল পেকে গেছে তোমার। আ-হা-রে! তোমার চুলও তো কমে যাচ্ছে। ছোট্ট কুয়ার মতো টাকও দেখা যাচ্ছে্ অনন্ত তুমি সবসময় অমন সুন্দর বুঝিয়ে-সুঝিয়ে-গুছিয়ে কথা বলো কি করে? মনে আছে কতো সুন্দর করে তুমি লিখতে জানতে। আমায় বলেছিলে তুমি অনেক বড় লেখক হবে। অনেক লেখা লিখেছো- তাই না?



অনন্তঃ না গো স্বর্ণলতা! আমার রাইটার হবার ইচ্ছে হয়েছিলো তুমি পড়তে ভালোবাসো বলে। তুমি পাশে না থেকে আমার লেখা যদি সবার আগে না পড়তে পারো তাহলে আমি রাইটার-ফাইটার হয়ে কি করবো বলো? এজন্য সবসময় তোমাকে অর্জন করার জন্য দুঃস্বপ্নের সাগর ত্যাগের শক্তি দিয়ে সাঁতরে পার করার চেষ্টা করেছি কিন্তু লেখক হই নি। লিখতে শুরু করলে যে পারতামও না। শুধু তোমার কথা ভেবে কান্না আসতো যে! এখন থেকে লিখবো- যদি তুমি অনুমতি দাও দেবী!



স্বর্ণলতাঃ এরকম আইনস্টাইন মার্কা গোঁফ রেখেছো কেনো? সুন্দর মুখকে অসুন্দর করে রেখেছো কেনো?



অনন্তঃ এই যে তুমি আমাকে তোমার মনের মতো করে সাজিয়ে নেবে বলে। তুমি তো সবসময় আমাকে সুন্দর করে সাঁজাতে চাইতে বলেই নিজেকে অবহেলা করে গোঁফ রেখেছি। আজই ফেলে দেবো। তুমি যেভাবে আমাকে দেখতে চাও ঠিক সেভাবে রাঙিয়ে নাও। কি নেবে না?



স্বর্ণলতাঃ অবশ্যই! বাছাধন এবার যদি দেখি ঠিকঠাক ভাবে খাওয়া দাওয়া না করো আর পোষাকে আর জুতোয় ধুলো ময়লা থাকে। আর যদি সীগারেট টানো তাহলে তোমাকে কি করে ভালো করতে হয় আমার জানা আছে।



অনন্তঃ হাসালে মুগ্ধলতা! সীগারেট, ময়লা, ধুলো, নিজের সাথে অনিয়ম করা কি আমার কাছে তোমার থেকে দামি বলো? পকেটে কয়েকটা সীগারেট আছে তুমি নিজের হাতে ভেঙে ফেলো। আর যদি কখনও হারানোর চেষ্টা করে সফল হও তখন সীগারেট শুধু টানবোই না- নিজ হাতে সীগারেটের আগুনে ছ্যাকা দিতে দিতে নিজেকে বাইরে পোড়া মানুষে পরিনত করবো কিন্ত বলে দিচ্ছি।



স্বর্ণলতাঃ আমার খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছে- এতগুলো বছর কেটে গেলো আর তুমি আমাকে তুলে নিয়ে যেতে। শুনেছি টাকা-কড়ি দিয়ে নাকি জোড় করে বিয়ের আসর থেকেও উঠিয়ে নিয়ে আসা যায়। তুমি যদি এরকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেও আমাকে নিয়ে যেতে- তাহলেও তো মন্দ হতো না্



অনন্তঃ দ্যাখো! প্রেম কে জয় করতে হয় শুধু প্রেম দিয়েই্ এ সব সন্ত্রাসি জোড় প্রভাব হলো মিথ্যে ও অন্যায়ের প্রশ্রয় আর প্রেমের শক্তি অসীম। কেউ যদি তার প্রেমের শক্তি প্রমাণ করে দেখতে চায়- দেখবে প্রেমের চেষ্টার সাথে প্রকৃতি আপনা থেকে এসেই সাহায্য করবে। যেমন ধরো কোনো শক্ত গাছ লাগিয়ে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি দাও, সার দাও, বেড়া দাও, মন থেকে যত্ন করো দেখবে সেই আদরের গাছ শুধু বেড়েই চলবে কিন্তু কোনোদিনও ছোট হতে শিখবে না। সেই গাছ শুকিয়ে গেলেও গাছের গোড়া থেকেও আরো শক্ত গাছ জন্মাবে। যত্নের ফল হবে মন্দের যত্নকারীকেই আঘাত দেবার মাধ্যমে।



স্বর্ণলতাঃ তোমাকে এখনও আমার অধরাই মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে তুমি আমার কল্পনা। এই ক্ষন কি বাস্তব নাকি প্রেমের ঘোরে আছি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না- পয়ত্রিশ বছর পর আমার এ কি হলো?



অনন্তঃ শোনো পূর্ণলতা! আজ যদি তুমি এই বাস্তবকে স্বপ্ন মনে করো তাহলে আমি আর কোনোদিনও তোমায় নিতে আসতে পারবো না। আর যদি বাস্তব মনে করে আমাদের সব স্বপ্ন ও আশা গুলোকে পূর্ণ করার জন্য আমার হাত ধরে আসতে চাও। তাহলে এক্ষুনি আমার সাথে চলো।



স্বর্ণলতাঃ কোথায়? কিভাবে? হ্যাঁ আমি তোমায় ছাড়া আর কার সাথে থাকবো বলো? তুমি আমার দুনিয়া-সবজগতের-সবকিছু। আমায় নিয়ে চলো অনন্ত্



অনন্তঃ ওঠো! এক্ষুনি যেতে হবে। তুমি যে ঘরের স্বপ্ন দেখলে ওরকম ঘর তোমার জন্য আবিষ্কার করে পরম যত্নে রেখে দিয়েছি। চলো! আমার হাত ধরে নদীর পাড়ে এসো।



অনন্ত আর স্বর্ণলতা নদীর পাড়ে দু’জন দু’জনের কাধে হাত দিয়ে দঁড়িয়ে ছিরো। এমন সময আকাশ থেকে একটি ষড়ভুজ আকৃতির সাথে ছয়টি অর্ধবৃত্ত আকারের সোনালী কালারের একটি আনকমন চাকতির মতো দেখতে ঘুরে পাক খেতে খেতে নদীর জলের একটু উপর থেকে একদম ওদের কাছাকাছি চলে এসেছিলো। চাকতিটির উপরের অংশ পকেট ঘরির ঢাকনার মতো খুরে গিয়েছিলো। অন্তত স্বর্ণলতাকে হাত ধরে টেনে ঐ চাকতির মতো সুন্দর জনযানটির ভিতর নিয়ে গিয়েছিলো। সাথে সাথেই জলযানটির ঢাকনার মতো দরজা আটকানো হয়েছিলো। তার পর কয়েক পলকের মধ্যেই উপরে উঠে ঘুরতে ঘুরতে নাচতে নাচতে উড়ে চলে গিয়েছিলো। কোথায় গিয়েছিলো কেউ কোনোদিন তা জানলো না।



ফাঁকা পার্ক এর কিছুক্ষন বাদে লোকে লোকারন্য হয়েছিরো। দেখা গেলো একটি বিদঘুটে লাশ পার্কের বেঞ্চে নির্মম ভাবে পড়ে ছিলো। লাশের মুখ আগুনে জলসানো। চেনা যাচ্ছিলো না কে কাকে এমন করে মেরে এখানে শুইয়ে রেখেছিলো। স্বর্ণলতার অফিস কলিগরা বলছিলেন এটা নাকি স্বর্ণলতার মৃত্যু দেহ। স্বর্ণলতার বর্বর স্বামী নাকি এমন কান্ড ঘটিয়েছিলেন বলে সবাই সন্দেহ করেছিরো। স্বর্ণলতার স্বামী নাকি পালিয়ে গিয়েছেন। তবে স্বামী বেচারা বেশীদিন পালিয়ে থাকতে পারেন নি। তবে স্বামী ব্যাটার লাশও পাওয়া গেছে ঠিক পার্কের বেঞ্চিতে পাওয়া লাশটির মতো অবস্থায় এবং একই জায়গায়। সাধারণ মানুষের মনে স্বর্ণলতার মর্ডার ও তার স্বামীর উচিৎ বিচার হওয়া সম্বন্ধে কোনো প্রকার সন্দেহ রইলো না।



[এই গল্পটি পুরোপুরি কাল্পনিক। কারও জীবনের সাথে কখনও মিলে গেলে দয়া করে আমাকে দায়ী করবেন না। কেউ যদি এই গল্পটিকে নাটকে বা এম.পি-থ্রী ফরমাটে কিংবা এফ.এম রেডিওতে প্রকাশ করতে চাইলে করতে পারবেন। তবে কোনো কথামালার উপর কোনো প্রকার আচড় কাটা চলবে না।]







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.