নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সরল বচন

ধাতবগোলক

জন্মেছি যখন চিহ্ন রেখেই যাবো....

ধাতবগোলক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অনুগল্পঃ অসমতায়ন

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:১৯

কারেন্ট চলে গিয়ে হঠাৎ রুম অন্ধকার হয়ে যেতেই রানু টের পেলো মিফতা তার আরেকটু কাছে ঘেঁষে এসেছে। অন্ধকারে ছেলেটার ঘামের মিষ্টি গন্ধ তার নাকে আসে। ছেলেটা যেন এই গরমের ভেতরই রানুর শরীরের আরেকটু উষ্ণতা কেড়ে নিতে চায়।



-মিফতা...

- হুম

- কি করছো তুমি?

- হুম্মম্মম...



রানু নিশ্চিত নয়, তবু তার মনে হলো, অন্ধকারে ছেলেটা নিঃশব্দে হাসছে। রানু সোফার উপরেই আরেকটু সরে বসতে চাইলো, লাভ হলো না। ছেলেটার স্পর্শ সে টের পাচ্ছেই। রানুর নরম শরীরের সাথে যেন অন্ধকারে আঠা লেগে গেছে ছেলেটার।



রানু প্রচন্ড রাগ আর বিরক্তিতে ঝটকা মেরে আরেকটু সরে যেতে যেতে ভাবে, ক্লাশ টেনের একটা ছেলে এতটা কামুক,ইতর হয় কিভাবে?



রানু মেয়েটা আর দশটা নিন্মবিত্ত পরিবারের মেধাবী মেয়ের মতই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে স্কুল কলেজ পেরিয়ে ভালো একটা মেডিকেলে জায়গা করে নিয়েছে। পড়াশুনার খরচ জুটানোর জন্য তাকে টিউশানি খুঁজতে হয়। মিফতা তার এযাবত কালের সবচেয়ে লাভজজনক টিউশানি, কেমিস্ট্রি আর বায়োলজি পড়ায় সপ্তাহে তিনদিন, হাজার তিনেক টাকার মত পায়। সে খুশিই ছিলো।



ঝামেলা হলো কয়েকদিন পর যখন সে আবিষ্কার করলো জটিল এক রাসায়নিক সমীকরণ বুঝানোর সময়ে ছেলেটা খাতার দিকে না, ড্যাব ড্যাব করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকানোর এঙ্গেলটা উপলব্ধি করে সে হতবাক হয়ে যায়।



রানু আহামরি সুন্দর কোন মেয়ে না। সারা জীবন অভাবে অনটনে কেটেছে বলে শরীরেও সেরকম বাঁক, খাঁজ নাই। সম্ভত বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান মিফতা এতটা ঘনিষ্ঠ কোন মেয়ের সাথে হয় নি। বয়ঃসন্ধিকালের অবদমিত সব বাসনা এখন উথলে উঠতে চাচ্ছে।



এপ্রিলের কোন এক শুক্রবার। রানু পড়ানো শুরু করতেই টের পেল, কিছু একটা গড়বড় আছে। সেই কারেন্ট যাওয়ার দিনের পর থেকে সে বেশ সাবধানী হয়ে গেছে। আজ মিফতাকে একটু নার্ভাস আবার খুশি খুশি লাগছে। হঠাৎ রানুর কি জানি সন্দেহ হলো।



- মিফতা, তোমার আম্মুকে একটু ডাকোতো।



মিফতা একটু মিষ্টি হেসে জ্বলজ্বলে চোখে বলে "বাসায় কেউ নাই ম্যাডাম"



রানুর মনে ছ্যাঁৎ করে উঠে। সে স্থির চোখে মিফতার দিকে তাকিয়ে থাকে। ঘোরের মধ্যে যেন সে দেখে মিফতা তার হাত চেপে ধরলো। অদ্ভুত ভাংগা গলায় সে বললো, "ম্যাডাম, আমি আপনাকে ...ভালোবাসি"



মিফতার বাচ্চা বাচ্চা মুখে কথাটা এতটাই বিচিত্র লাগে যে সে হঠাৎ হেসে দেয়। মিফতা বোকার মত তাকিয়ে থাকে।



রানুর হঠাৎ খারাপই লাগে, বেচারা মনে হয় ক্লাসের বন্ধু বান্ধবের কাছে থেকে এডাল্ট কন্টেন্ট সম্পর্কে জানতে পেরেছে প্রথমে, এখন নানারকম ফ্যান্টাসিতে ভ্যগছে। কোন মেয়ের সাথে যেচে খাতির করার সাহস নাই তাই নজর পড়েছে ম্যাডামের উপর! আহারে!



"দেখো মিফতা, তুমি অনেক লক্ষি একটা ছেলে। আর আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি তোমার ম্যাডাম না? আমি কি কখনো তোমাকে বকা দেই বা মারি?" মিফতার চেহারে দেখে মনে হলো সে উদ্ভ্রান্ত হয়ে গেছে। রানু বলতে থাকে,"কিন্তু তোমার মনে যা আছে, সেটাও আমি জানি। দেখো আমি কত্ত বড়, বুড়ি হয়ে গেছি! তোমার মত কিউট ছেলের জন্য কত্ত মেয়ে লাইন দিয়ে থাকবে! কিন্তু সবকিছুরই তো একটা সময় আছে তাইনা? এই যে তুমি ঘটনা গুলো ঘটাচ্ছো, তোমার আম্মু শুনলে কি ভাব্বেন বলতো!"



মিফতা কিছু বলে না। বেশ কিছুটা তফাতে বসে সে মাথা নিচু করে পায়ের নখ খুঁটতে থাকে। অভিমানে যেন গাল ফুলিয়ে থাকা বাচ্চা যেন একটা। লজ্জিত। অনুতপ্ত।



কোন কারণ নেই, হঠাৎ রানুর মনে হলো, টুক করে যদি ছেলেটার গালে এখন একটা চুমু খেয়ে বসে, কেমন অবাক হবে সে?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:৪২

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: ইন্টারেস্টিং।

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪১

ধাতবগোলক বলেছেন: থ্যাংকস :)

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৯

মামুন রশিদ বলেছেন: চমৎকার! বয়ঃসন্ধিকালের উতল আচরণ নিয়ে দারুণ গল্প!

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪২

ধাতবগোলক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ :)

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮

আবু.তাহের বলেছেন: জোস হইছে।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:০৯

ধাতবগোলক বলেছেন: ধইন্যা :)

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

রহস্যময়ী কন্যা বলেছেন: থিম ভালো লাগসে :)

১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:০৮

ধাতবগোলক বলেছেন: থ্যাংকু :)

৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: হাহা! ফিনিশিংটা মজার।

০৬ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩

ধাতবগোলক বলেছেন: কিছু কথা থাকনা গুপন স্টাইল :প

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.