নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রহস্য অনেক অথবা কিছুই রহস্য নেই।

শহীদুল ইসলাম অর্ক

খুঁজি- নিজেকে, অন্যকেও...

শহীদুল ইসলাম অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যন্ত্রপোঁকা

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:০৩

ফার্মগেটে সারি সারি যন্ত্রপোঁকাগুলিকে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। ছোট ছোট বালকগুলি, একেকটি যন্ত্রপোঁকার সাথে অবিরাম হাঁক ছাড়ে,' জিগাতলা,জিগাতলা।' যাত্রীরা মাথা নিচু করে যন্ত্রপোঁকার ভিতরে প্রবেশ করে।পনের ষোল জন হলেই যন্ত্রপোঁকার পেট ভরে যায়। যান্ত্রিক গুঞ্জন তুলে, ধোয়া উড়িয়ে একে একে প্রস্থান করে। জিগাতলায় এদের দেখি। তখন হাঁক ছাড়ে, ফার্মগেট বলে, কখনও ফারামগেট, কখনোবা ফারাংগেট! বড়ও বিচিত্র ডাক!

মাথা নিচু করে আমি একটি যন্ত্রপোঁকার পেটে প্রবেশ করি। চাপাচাপি লোকজন। চরম গরমে অতিষ্ঠ প্রাণ। হঠাৎ আমার সামনে বসা এক নারীকে দেখে চমকে উঠলাম। রানী ! সেও আমার দিকে তাকিয়েছে। ধীরে ধীরে চোখ নামিয়ে নিলো। আমার মুখে কোনো কথা সরছে না।দুর্দান্ত গতিতেএগিয়ে চলছে যন্ত্রপোঁকা। আমার ভাবনার পাখি উড়াল দিল উল্টোপথে।

সাত বছর আগে আমাদের কী চমৎকার সম্পর্কটাই না ছিল। রানীকে ভালবেসে মহারানী বলে ডাকতাম। সে হেসে কুটি কুটি হত। রোজ রাতে টেলিফোনে তাকে একঘণ্টা কবিতা না শোনালে সে ঘুমোতে যেত না।ওর প্রেমে পড়ার বিষয়টিও ছিল অদ্ভুত। তার মুখে ছিল ব্রুন। তাকে যখন আমি প্রথম দেখি তখন আমার মনে হয়েছিল এরকম সুন্দরী আমি আর কখনও দেখিনি। ভাল করে তাকিয়ে বুঝলাম তার ঐ ব্রুন তাকে বেশি সুন্দরী করে তুলেছে। এ যেন চাঁদের কলংক! কিন্তু আমার বন্ধুরা কেউ ওকে পছন্দ করলো না, ওর ব্রুনের কারণে।

আমরা আড্ডা দিতাম। ঘন্টার পর ঘন্টা কবিতার কথা হত। আমি যা লিখতাম তা ওকে শোনাতাম। মাঝে মাঝে মনে হত ওকে ছাড়া আমার বাঁচা অসম্ভব।

ওর যখন বিয়ে তখন আমার পরিচয় থেকে কিশোর বলে বদনামটুকু মোছেনি। শুনেছি ওর বর বড় ব্যবসায়ী।

এরপর সাত বছর পেরিয়ে গেছে। এখন আর আমি কিশোর নই, পরিপূর্ণ পুরুষ। যেন এক যন্ত্রপোঁকা হয়ে বসবাস করি এই শহরে!

সেই রানী আর আগের রানী নেই। আজকের রানীর মুখে আর কোনো ব্রুনের অস্তিত্ব নেই। চাঁদ যেন আজ হয়ে গেছে আলো জ্বলা এক রুপোর বাটি!

জিগাতলায় নেমে গেল ও। দীর্ঘশাস ফেলে আমি পা বাড়ালাম একা!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.