নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশের এক মফস্বল শহরের ছেলে আমি। ব্লগে সোনা মানিক নামে লেখলে ও আমার নাম গাউছুর রাহমান। নিন্মবিত্ত হবার কারনে সমাজের অনেক নির্যাতন নিপীড়ন এর মধ্যে বড় হয়েছি তাই সাধারন মানুষের কষ্ট কিছুটা হলে ও বুঝি তাই শোষিত মানুষের হয়ে লেখার পথ বেছে নিয়েছি।

সোনা মানিক

কথা কম বলেন বাচবেন বেশিদিন...পারলে লিখা যান...

সোনা মানিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একাত্তর এর শরণার্থী

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৪৫


একাত্তর সালের মে মাসে স্টেটসম্যান পত্রিকায় মনোজিত মিত্র বাংলাদেশের শরণার্থীদের নিয়ে একটি রিপোর্ট লেখেন। বাংলাদেশের অভ্যান্তরিন অবস্থা কতটা খারাপ ছিল এবং গণহত্যার মাত্রা কোন পর্যায়ের হলে এত বিপুল সংখ্যক মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে পারে তার একটা বাস্তব চিত্র আমরা এ রিপোর্ট থেকে ধারণা করতেপারিঃ
.
''ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী শহর সাবরুম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের মাঝে দিয়ে বয়ে চলেছে সংকীর্ণ ফেনী নদী। গত সপ্তাহে এপ্রিল মাসের এক সকালে স্থানীয় নৌকাতে করে নদী পার হচ্ছিলাম। আমি আমার পিছনে দেখতে পাচ্ছিলাম হাজারো বাংলাদেশী শরণার্থী। নদী পার হবার অপেক্ষায় আমার সামনেও ছিল আরও হাজারো মানুষ এবং অগণিত মানুষ অগভীর জল মাড়িয়ে জিনিসপত্র কাঁধে করে অপর পাড়ে যাচ্ছিল। ১৫ কিলোমিটার দূরেই তুমুল গোলাগুলি চলছিল এবং তাঁদের যাত্রা ছিল অব্যাহত।

এটা ছিল সেই দৃশ্যগুলোর মাঝে অন্যতম, যা এক মুহূর্তে সব পরিষ্কার করে দেয়। আপনাকে শুধু দেখতে হবে ভিড় ঠেলে হাজারো মানুষের ছুটে চলা, তাঁদের আতঙ্কগ্রস্থ মুখচ্ছবি এবং একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য তাঁদের ব্যাকুলতা এমনকি রাস্তায় রাত কাটানো। পার্বত্য সীমান্তবর্তী শহর রামগড় তখনো মুক্তি ফৌজের দখলে ছিল। কিন্তু পাকিস্তানী আর্মি সামনে এগিয়ে আসছিল। তারা নির্মমভাবে শেলিং করে গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছে। এই গ্রামগুলো থেকেই হাজারো লোক পালিয়ে এসেছিলেন।

এপ্রিলের ৩য় এবং ৪র্থ সপ্তাহে সাবরুম ছিল ত্রিপুরার সব চেয়ে জনবহুল সীমান্ত। তখন প্রায় ২,০০,০০০ শরণার্থী মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এসে জড়ো হন। অন্যান্য সীমান্ত এলাকাতে শরণার্থীরা আগেই আসা শুরু করেছিলেন। হাজার হাজার মানুষ সিলেট, কুমিল্লা এবং নোয়াখালী জেলা থেকে সোনামুরা, কমলাসাগর, দবীপুর এবং অন্যান্য সীমান্ত দিয়ে এসেছিলেন। আগরতলা থেকে এই বিভিন্ন সীমান্তে পরিদর্শনের সময় আমি সবখানে দেখি শুধু শরণার্থী আর শরণার্থী; রাস্তার পাশে, তাবুতে, স্কুলে, কলেজে, ব্যাক্তিগত ঘরে, মাঠে, রাস্তায়।

সাবরুমেই আমি সবথেকে করুণ দৃশ্যটা দেখি। হাজার হাজার মানুষ রাস্তা আর থানার আঙিনায় বসবাস করছিল। সেখানে প্রকৃত শরণার্থীদের জন্য ইস্যু করা স্লিপ সংগ্রহের জন্য ছিল দীর্ঘ সারি। যখন আমি থানার ভিতরে গেলাম, তখন স্লিপ নেয়ার জন্য সাহায্য চাইতে কিছু বৃদ্ধা আমার কাছে ছুটে আসলেন। যখন পরিবারের একজন সদস্য স্লিপের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল অন্যরা খাবারের সন্ধানে চলে যায়। নিজেদের বানানো তাবুতে মুরুব্বী লোকেরা ঘুমান। শিশুরা লুকোচুরি খেলছিল, তারা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারে নি যে তাঁদের উপর কি দুর্যোগ এসে পড়েছে। অনেকেই খাবারের সন্ধান করছিল। কিন্তু তাঁদের সবার কেনার সামর্থ ছিলনা। কিছু পরিবার নদী পাড়ে তাঁদের বাসনপত্র বিক্রির চেষ্টা করছিল। এগুলো ছিল তাঁদের শেষ সম্বল।

খাবার পানির তীব্র সংকট ছিল। জেলা কর্মকর্তারা অস্থির হয়ে ওঠেন। তাদের কেউ কেউ বলেন কলেরার এক বা দুইটা রিপোর্ট ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। আর যদি ভিড় কমানো না যায়, তাহলে অচিরেই এটা মহামারীতে রুপ নিতে পারে। শরণার্থীদের ক্যাম্পে নিয়ে যাবার জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর ট্রাক আসে। যারা সাথে করে সাইকেল নিয়ে এসেছিল, তাঁরা তা ট্রাকের সাইডে বেঁধে ঝুলিয়ে নিয়ে যায়। নারী, শিশু এবং জরাগ্রস্ত বৃদ্ধেরা হামাগুড়ি দিয়ে ট্রাকে ওঠে। তরুণ ছেলেরা তাদের সাহায্য করে। ওরা এতকিছুর পরেও তাদের উদ্দীপনা ধরে রেখেছিল। কেউ কেউ এত ক্লান্ত ছিল যে কথাও বলতে পারতো না। মাঝেমাঝে এক বা দুজনকে চলন্ত ট্রাক থেকে গলা বাড়িয়ে বমি করে দিতে দেখতাম।

ক্যাম্প গুলো বিভিন্ন এলাকাতে গড়ে তোলা হয়েছিল। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষে ভিড় সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে। তাদের অনেকেই বলেন ত্রিপুরার জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুন হবার পথে।...''
.
.
এদেশের নিরাপরাধ মানুষের সেই করুণ দিনগুলো আপনাদের হৃদয় স্পর্শ করুক। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কোন এক শরনার্থী শিবিরথেকে 'রঘু রায়' ছবিটি তুলেছেন। ছবিটি মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ থেকে নেয়া হয়েছে।
.
''কারকাছে বলি ভাত রুটি কথা, কাকে বলি করো, করো করো ত্রাণ,
কাকে বলি,ওগো মৃত্যু থামাও, মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রান।

সুত্রঃ লেখা টি ফেসবুক থেকে কপি করা, লিখেছেন নোবেল হিমুরা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৫

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: এদেশের নিরাপরাধ মানুষের সেই করুণ দিনগুলো আপনাদের হৃদয় স্পর্শ করুক।
হ্যা, ভাই এটাই প্রত্যাশা....................

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:০৮

সোনা মানিক বলেছেন: আমার ও ভাই একি প্রত্যাশা আমাদের ভাই বোন রা জানুক স্বাধীনতা এত সহজে অর্জিত হয় নি। আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষাথে আমাদের সচেতন হউয়া প্রয়জন

২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


সাব্রুম, হরিণা, শ্রীন গর এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে খোলা আকাশের নীচেও থাকতে হয়েছে।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:০৯

সোনা মানিক বলেছেন: শুধু খুলা আকাশের নিচে নয় ভাই নরদমায় মরতে ও হয়েছে।

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৩

মেহেদী হাসান '' বলেছেন: ১৯৭১ সাল বাংলার মানুষের দুর্বিষহ জীবনযাপন, আর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ বিনিময়ে আজ আমারা স্বাধীন। তবে দেশের অর্থনৈতিক হালের দিক দিয়ে আমারা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি।

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:১২

সোনা মানিক বলেছেন: যত দিন না আমরা জনগন সচেতন হতে পারব তত দিন আমরা পিছিয়ে এ থাকব, আমাদের সামনে আআগানুর চেষ্টা চালিয়ে জেতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.