![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথা কম বলেন বাচবেন বেশিদিন...পারলে লিখা যান...
২৫ নভেম্বর ১৯৭১, বাংলাদেশ নিউজলেটার শিকাগোর ৩১ নম্বর সংখ্যায় 'জাতিসংঘে বাংলাদেশ রিফিউজি ক্যাম্প' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপাহয়। দলিলপত্রের ৬ষ্ঠ খন্ডে সংরক্ষিত এই প্রতিবেদন থেকে আমরা ব্যাতিক্রম এক আন্দোলনের কথা জানতে পারি এবং সে দিনগুলোতে দেশে-দেশে বাংলাদেশের পক্ষে গড়েওঠা গণআন্দোলনের ব্যাপকতা সম্পর্কেও আমরা আঁচ করতেপারি।
.
''ভারতে বাঙ্গালী শরণার্থী ক্যাম্পের চিত্র তুলে ধরার জন্য গত ১ নভেম্বর তারিখে জাতিসংঘ ভবনের সামনের হ্যামারসজোল্ড প্লাজায় সুয়ারেজ পাইপ দিয়ে একটি শরণার্থী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। পাকিস্তানী বর্বর হানাদার বাহিনীর অত্যাচার থেকে ইন্ডিয়াতে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ মিলিয়ন বাঙ্গালীর অবস্থা তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ একশন কোয়ালিশন কর্তৃক স্থাপিত ক্যাম্পটি ১ সপ্তাহ ধরে অবস্থান করেছিল।
ভাত, ডাল এবং ভারতের শরণার্থী ক্যাম্পের রেশনের উপর নির্ভর করে স্বেচ্ছাসেবীরা পুরো সপ্তাহ ক্যাম্পে অবস্থা করেছিল। ইউএন রিফিউজি ক্যাম্পের সংগঠকদের উদ্ধৃতি অনুযায়ী, ক্যাম্পের অবস্থান করা স্বেচ্ছাসেবীরা কলেরা, টায়ফয়েড দ্বারা মৃত্যু ঝুঁকিতে ছিলনা, এমনকি তাঁদের হতভাগ্য স্বজাতির মত বর্বর সেনা আক্রমনের শিকার ছিলনা কিন্তু তাঁরা জাতিসংঘের ভালো খাদ্য গ্রহণ করা এবং ভালো পোষাক পড়া কূটনৈতিকদের কাছে বাংলাদেশের করুণ বাস্তবতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশ একশন কোয়ালিশন এর চেয়ারম্যান ইগাল রুডেঙ্কো বলেছেন, “ক্যাম্পটি গত সাত মাসে বিশ্ব সম্প্রদায়ের অগ্রহনযোগ্য অসাড়তা এবং অনৈতিক মৌনতার বিরুদ্ধে একটু প্রতিবাদ, যখন একটি পুরো জাতি মানব সভ্যতার সবচেয়ে বর্বর গণহত্যার শিকার হচ্ছিল”। তিনি আরো বলেন “ক্যাম্পটি ছিল মার্কিন সরকারের পাকিস্তানী সেনা শাষনের প্রতি অস্ত্র এবং আর্থিক সহায়তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দের প্রকৃতিকে উপেক্ষা করে যেখান গণতন্ত্র পৃথিবীর সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল স্বৈরতন্ত্রের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে সেখানে মার্কিন সরকার অনবরত আন্তর্জাতিক ত্রাণ কার্যক্রম কে নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে, তাতে শুধুমাত্র নিপীড়নের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে”।
রুডেঙ্কো বলেন, জাতিসংঘের সব সহায়তা পশ্চিম পাকিস্তানের সেনা শাষকদের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে আগের ত্রাণ সহায়তাগুলো সামরিক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।
কোয়ালিশনে আর্থিক সহায়তাদানকারী গ্রুপগুলোর মাঝে রয়েছে- বাংলাদেশের জন্য আমেরিকান, আমেরিকার বাংলাদেশলীগ, পূর্ববঙ্গ রক্ষা কমিটি, যুদ্ধ প্রতিরোধক লীগ, কোয়াকার সামাজিক কার্যক্রম কর্মসূচী, ক্যাথলিক শান্তি সংঘ এবং আরও এক ডজনেরও বেশি নাগরিক সংগঠন।
কবি এলেন গিন্সবার্গ এবং ডব্লিও. এস. মরউইন সপ্তাহব্যাপী কবিতা আবৃতি কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। কর্মসূচিতে আরো অন্তর্ভুক্ত ছিল ত্রাণ সংগ্রহ, স্মৃতিচারণ, সিক্সথ এভিনিউতে শান্তি মিছিল, পাকিস্তান কনস্যুলেট অভিমুখে প্রতিবাদ মিছিল।''
.
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কোন এক রিফিউজি ক্যাম্প থেকে ছবিটি তুলেছেন 'রঘু রায়'।
দুঃসহ সে দিনগুলি সম্পর্কে আপনাদের কিছুটা হলেও ধারণা দেওয়ার জন্য ছবিটি 'মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ' থেকে সংগ্রহ করে প্রকাশ করা হল।
.
''রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু, পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে
এইটুকু শিশু এতবড় চোখ দিশেহারা মা কারকাছে ছোটে।
সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, এত এত শুধু মানুষের মুখ,
যুদ্ধ মৃত্যু তবুও স্বপ্ন ফসলের মাঠ ফেলে আসা সুখ।''
-কবি এলেন গিন্সবার্গ
১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৩৯
সোনা মানিক বলেছেন: আমরা বাঙ্গালীরা কখনই তা বুঝবো না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:৪০
চাঁদগাজী বলেছেন:
আমরা অনেকেই সেগুলোর সাক্ষী। বাংগালী এমন কস্ট করেছে, যা ১৯৭১ সালের মতো সময়ে বিশ্ব সহজে বুঝেনি; এখনকার বাংগালীরা এই সম্পর্কে সামান্য জানেন।