![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গতকাল রাত্রে ফেইসবুকে আমার মেডিক্যালের কনফেশন পেইজে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম।সেই পোস্ট নিয়ে তো অনেক কাহিনী।সেই কাহিনী এখানে বলার প্রয়োজন দেখিনা।শুধু কনফেশনটা হুবুহু তুলে দিলাম।
একটা কাহিনী বলব।শুধু আমার কাহিনী বললে ভুল হবে,আমাদের কয়েকজনের কাহিনী।কিন্তু যেহুতু কনফেজটা আমি করছি তাই সঙ্গত কারনেই বন্ধুদের নাম গোপন রাখলাম।যারা বোঝার তারা ঠিকই বুঝবে,বাকিরা না বুঝেই মজা নিবে। :p
ফার্স্ট ইয়ারের কথা।মেডিক্যালের স্টুডেন্ট মাত্রই জানে এর পড়ালেখা কতটা বিষাক্ত!তো বিষে বিষে আমরা সর্বদাই নীল হয়ে থাকতাম।কিন্তু তাতে কি হবে,আমাদের শয়তানিতে তা কখনই ব্যাঘাত ঘটাতে পারতোনা।যতই নীল হতাম,ততই নতুন নতুন শয়তানির নীলছবি* মাথায় ঘুরপাক খেত।
আমাদের চার বন্ধুর একটা নিয়ম ছিল।যত যাই করিনা কেন,পরীক্ষার আগের রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর চারজন ৪টা সিগারেট ধরাতাম,তারপর পড়া শুরু করতাম।সারারাত পড়ে পরীক্ষা দিয়ে এসে তারপর ঘুম দিতাম।প্রথম কয়েকটা পরীক্ষা ভালোই গেল।সমস্যার শুরু হল কিছুদিন পর থেকে,যখন রুমে আর একজনের আসা শুরু হল!
গল্পের সুবিধার জন্য আমার বন্ধুদের নাম দেয়া দরকার।আমি তো আমিই।ধরে নেই আমার বাকি তিন বন্ধুর নাম যথাক্রমে "ন","ম",আর "দ"।আর ঐযে নতুন আর একজনের কথা বললাম,ধরে নেই তার নাম "ঘ"।
ফিজিওলজির কোন একটা কার্ড ফাইনালের আগের রাত।সবে পড়তে বসছি।"ঘ" এসে হাজির,
-এই তোরা কি পড়ছিস?এই বলনা তোরা কি পড়ছিস?
-"ঘ" মামা দ্যাখ ডিস্টার্ব করিস না।কিচ্ছু কিন্তু পড়িনাই।
-কি যে বলিস তোরা!তোদের কি আর পড়া লাগে?তোরা তো বসলেই পাশ।
-দ্যাখ,পড়তে দে।মাত্র শুরু করসি।তোর মত কয়েকবার করে পড়ে যেতে পারিনা,প্রতিবার লেকচার ক্লাসে ঢুকতে ঢুকতে একবার সিলেবাস কমপ্লিট হয়।
-তোরা যে কি না।খালি খালি বাজে কথা।
এইরকম কথা কয়েকঘন্টা চলতে থাকে।প্রথমে চরম মেজাজ খারাপ হয়,একপর্যায়ে হতাশ হয়ে একটু পরপর একজন আর একজনের মুখের দিকে তাকাতে থাকি।যাই হোক,ফলাফল যা হওয়ার তাই,ফেইল না করলেও গ্রেজ নিয়ে অসম্মানের সহিত পাশ।
পরের দিন চারজন চিন্তা করতে বসলাম,কি করা যায়?অনেক চিন্তাভাবনা করে লাইব্রেরি থেকে কিছু মোটা মোটা বই নিয়ে আসলাম।তো যথারীতি পরীক্ষার আগের রাতে "ঘ" এসে হাজির।ওকে দেখা মাত্রই আমরা ওই বইগুলো খুলে পড়া শুরু করলাম।
-এই তোরা কি পড়ছিস?দেখি দেখি তোরা কি পড়ছিস?ধুর ছাই,বলনা এসব কি পড়ছিস? :O
-ক্যান তুই জানোসনা?আব্দুর রহমান স্যার তো কোশ্চেন দিয়া দিসে।এইসব বই থেকে কোশ্চেন করসে।
-হ্যাঁ!!!কি বলছিসরে তোরা?আমার কি হবে রে,এই দে না,কি পড়ছিস দে না।আমি এখনই খাতা কলম নিয়ে আসছি।
যথারীতি পরীক্ষা হল।"ঘ" দেখি মুখ কালো করে দাঁড়িয়ে আছে।ওদিকে তো আমরা হাসতে হাসতে এখন যাই তখন যাই অবস্থা।কিন্তু কথায় আছে আজ হাসি তো কাল কান্না,কিন্তু কাল যে পরের পরীক্ষাতেই আসবে কে ভেবেছিল!!!
আবার পরীক্ষার আগের রাত।আমরা নিশ্চিন্ত মনে পড়তে বসেছি।দেখি "ঘ" ছোট ছোট পায়ে হাজির।প্রতিদিনের মতোই আজও দুইদিন আগেই তার সব পড়া শেষ এবং আজও তার পরনে সেই ছাপা লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি।আমাদের মোটা বই ধুমধাম খুলে গেল।বই সোজা না উল্টা দেখার সময় নাই,মাথা ঢুকায়ে পড়া শুরু করলাম।
-যাহ তোরা যে কি দুষ্ট না।আমাকে কেন ভয় দেখালি?
-শুন "ঘ",মেজাজ কিন্তু খারাপ আসে।স্যার আবার কোশ্চেন দিসে।গতদিন ভুল কোশ্চেন পাইসিলাম।
-হ্যাঁ,আমি কি এত বোকা?হা হা হা।তোরা আর আমাকে বোকা বানাতে পারবিনা।হা হা হা।
মানুষ রাগলে নাকি মাথায় রক্ত উঠে যায়।আমার মাথাটা হঠাৎ খুব হালকা হয়ে গেল।হালকা সুরে গান গাইতে গাইতে উঠে রুমের দরজাটা লাগালাম।আমাদের মধ্যে "ম" এর তখন স্যামসং মোবাইল সেট।ওই সেটের ভাইব্রেসন ছিল চরম।টেবিলের উপরে রেখে কল দিলে সেট কাঁপতে কাঁপতে নিচে পরে যেত।সবার সাথে মুহূর্তের মধ্যেই চোখাচোখি হয়ে গেল।আমি আর "দ" মিলে "ঘ " কে বিছানায় চেপে ধরলাম।"ন" ওর লুঙ্গির মধ্যে স্যামসংসহ দুইটা মোবাইল ঢুকাল।তারপর বাকি দুইটা দিয়ে শুরু হল একটার পর একটা কল দেয়া।
-এই।হাহাহা, থাম থাম, হাহাহা,সুরসুরি লাগেতো।এই হাহাহাহা,মরে যাব যে, হাহাহা তোরা থাম।হাহাহা প্লিজ হাহাহা।ওমা হাহাহাহা।ইস হাহাহা,উফ হাহাহা।
-বল আর জীবনেও ডিস্টার্ব করবিনা।কসম কাট।বল আমি শপথ করিতেছি যে...
কিসের পরীক্ষা,আর কিসের চিৎকার।আমরা তখন শপথ গ্রহনে ব্যস্ত।এক শপথ আমরা যে কয়বার করিয়েছিলাম হিসাব নাই।যাকে বলে পৈশাচিকতার মাঝে নির্মল এক আনন্দ।
এরপর থেকে অবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়।যদিও এর মাঝে আরও কয়েকবার আমরা শপথ করিয়েছিলাম।সেসব ক্ষেত্রে অবশ্য কোন উপলক্ষ্য ছিলনা।রুমে আসলেই শপথ গ্রহন :p
এখন আসি কনফেশনের কাজে।আমি আজ কনফেশন করতে ইচ্ছুক না,হাসতে হাসতে শপথ করতে চাই,
"আমি শপথ করিতেছি যে,আমি যা করেছিলাম তা কোনক্রমেই ঠিক করিনাই।তবে দোস্ত "ঘ"।রাগ করিসনা।আমি জানি সেদিন তুইও বিশেষ কষ্ট পাসনাই।পাইলে জেনে শুনে প্রায়ই শপথ নিতে লাফাতে লাফাতে আমার রুমে আসতিনা।তোর শপথ নিয়ে আমি মোটেই মনঃকষ্টে ভুগছিনা।এখনও যদি সময় সুযোগ পাই,আবারও তোর শপথ নিতে চাই।আমার নতুন মোবাইলটা কাঁপতে কাঁপতে ঘর থেকে কিভাবে কিভাবে যেন বাথরুমে চলে যায়।ওটা এটলিস্ট একদিন হলেও ট্রাই করতে চাই...
"নীলছবি* কথাটি কথার কথা হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।আশা রাখি কেউ কিছু মনে করবে না।"
ভাই সাকিব
J-13
২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:২২
সাকিব-আল-নাহিয়ান বলেছেন: আমিও...
২| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮
টেস্টিং সল্ট বলেছেন: ওহ খোদা। ভাই সাকিব আপনি একটা পিস বটে।
১৭ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:৪২
সাকিব-আল-নাহিয়ান বলেছেন: বাহ তুমিই যে টেস্টিং সল্ট আজ জানলাম।হ্যা পিস, তা বলতে পার
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:২৫
একাকী সমুদ্রে বলেছেন:
।আমি আর "দ" মিলে "ঘ " কে বিছানায় চেপে ধরলাম।"ন" ওর লুঙ্গির মধ্যে স্যামসংসহ দুইটা মোবাইল ঢুকাল।তারপর বাকি দুইটা দিয়ে শুরু হল একটার পর একটা কল দেয়া।
হা হা হা । হাসতেই আছি।