নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন শিক্ষক, লেখালেখি, সম্পাদনা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশ কে ভালবাসি। দেশের জন্য, মানুষের জন্য সামান্য হলেও কিছু করতে চাই।

মা, মাটি ও মানুষকে ভালবাসি। ভালবাসতে চাই।

বিএইচ মাহিনী

I am a social worker.

বিএইচ মাহিনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাইমারি স্কুলে ধর্মীয় শিক্ষকের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:১৩

দূর্নীতিমুক্ত একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মানে ধর্মীয় শিক্ষার বিকল্প নেই। ধর্ম শিক্ষা মানুষকে বিনয়ী ও নীতিবান করে গড়ে তোলে। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ধর্মীয় শিক্ষা চালু আছে। আছে মাধ্যমিকেও। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্তত পাঁচজন শিক্ষক থাকেন। পাঁচজন শিক্ষকেরই কেউ না কেউ পড়ান ইসলাম শিক্ষা ও অন্যান্য ধর্ম শিক্ষা। বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী শিক্ষক তা পড়ান; কিন্তু ধর্ম শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষকরা তা পড়ান।
এভাবেই ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক না থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে সাধারণ শিক্ষকরা পড়ান ইসলাম শিক্ষা। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক, ইসলাম শিক্ষার জন্য ক্লাসও নির্ধারিত থাকে; অন্য শিক্ষকরা তা পড়ান। এর স্থলে পঞ্চম শ্রেণীর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের নামাজসহ ইসলামের মূল বিষয়গুলো শেখানো, তাদের নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন করে গড়ে তোলা এবং তাদের কোমল হৃদয়ে তাওহিদ ও রেসালাতের পাশাপাশি ইসলামের দেশপ্রেম, মানবতার ছবি মজবুতভাবে এঁকে দিতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পাঁচ শিক্ষকের একজন ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিলেই সমস্যাটি থাকত না। কোমলমতি শিশুরা তাদের ধর্মশিক্ষার অধিকার পেত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মশিক্ষার এ মৌলিক অধিাকার নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সরকার সারা দেশে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।’ (প্রথম আলো : ২১ জানুয়ারি, ২০১০)।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রীর অনেক ঘোষণাই বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তা বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১১ সালে মাদরাসা শিক্ষার প্রসারে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন তিনি। তাও আলোর মুখ দেখেছে। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকদের ন্যায়সংগত অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেন তিনি। তাও বাস্তবায়নের পথে। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষার অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সে ঘোষণা আলোর মুখ দেখেনি আজও।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ইসলামী শিক্ষা নিশ্চিত হলে শিশুরা নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠত। ধর্মীয় আকিদা-বিশ্বাস ও নামাজসহ বিভিন্ন ইবাদত শেখার পাশাপাশি সত্য কথা বলা, পরোপকার করা, বড়দের সম্মান ও শ্রদ্ধা করার মানসিকতা তৈরি হতো।
আবার সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের কোমল হৃদয়ে গড়ে উঠত শক্তিশালী অবস্থান। এ ছাত্রটি বড় হয়ে সত্যবাদী হতো, দুর্নীতি ও অন্যায় থেকে দূরে থাকত। তাওহিদ, রেসালাতসহ ইসলামের সৌন্দর্য এবং মানবতাবোধ ও পরোপকারের মজবুত ছবি তার হৃদয়ে বদ্ধমূল থাকায় ধর্মের কথা বলে কেউ তাকে জঙ্গিবাদের অভিশপ্ত জীবনে নিয়ে যেতে পারত না।
কিন্তু ইসলামে মানবতার যে মহান শিক্ষা আছে, তা দেশের সব মুসলিম শিশুকে যথাযথভাবে না জানানোর কারণে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই আজ জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনেও উঠে আসে এমনটিই। ‘জঙ্গি কর্মকা-ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭২ ছাত্র-শিক্ষক’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বিত্তবান পরিবারের সন্তানদের বেশিরভাগই সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা পায় না। তাদের কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর ধর্ম নিয়ে নতুন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। সেখানে ধর্মান্ধ বন্ধু ও মতলবি শিক্ষকের পাল্লায় পড়ে ধর্মান্ধ হয়ে ওঠে।’ (প্রথম আলো : ১ আগস্ট, ২০১৬)। ‘আধুনিকতা’র নামে ধর্মীয় শিক্ষা না দেয়ায় তরুণ-তরুণীরা যখন বড় হতে থাকে, তখনই তারা ধর্মীয় জ্ঞানের শূন্যতা অনুভব করে। ধর্মীয় বিষয়গুলো জানতে দ্বারস্থ হয় ইন্টানেটের।
অন্যদিকে ইন্টারনেটের বিশাল এ উন্মুক্ত মাধ্যমে ফাঁদ পেতে রাখে বিপথগামী জঙ্গিরা। বিপুল সম্ভাবনাময় তরুণ প্রজন্ম ইসলামের ‘জ্ঞানার্জন’ করতে গিয়ে জঙ্গিদের ফাঁদে পা দেয়। শিক্ষার্থীদের ইসলামের মৌলিক জ্ঞানের এ শূন্যতাকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গিরা কৌশলে তাদের মগজধোলাই করে তাদের বিপথে ঠেলে দেয়। এর বিষাক্ত ছোবলে আক্রান্ত হয়ে তারা হারিয়ে যায় জঙ্গিবাদের অতল গহ্বরে। যদি শিক্ষার্থীদের ধর্মের মৌলিক জ্ঞান থাকত তাহলে তাদের স্ব স্ব ধর্মীয় জ্ঞানের রাডারে এটা ধরা পড়ত যে, জঙ্গিরা ধর্মের নামে তাদের ভুল বোঝাচ্ছে। তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারত জঙ্গিদের বিষাক্ত ছোবল থেকে। আগামী প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত রাখতেও ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের সৌন্দর্য তুলে ধরে শিশুদের মনে জঙ্গিবাদের প্রতি ঘৃণা তৈরি করে দিয়ে প্রকৃত ধর্মের শিক্ষা দিতে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
০৮-১২-১৭

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.