নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবেক চক্রবর্তী

আমি একজন সাধারন মানুষ

বিবেক চক্রবর্তী › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনমনে প্রশ্ন নং-১, শ্রেষ্ঠ কে ? মুক্তিযোদ্ধা নাকি রাজাকার...! ( বিবেক চক্রবর্ত্তী )

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:০১

স্বাধীনতা যুদ্ধ বিরোধী ঘৃণিত রাজাকার , আলসামস, কিংবা আলবদর গোষ্ঠী স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কাছে তো বটেই, দেশ-দেশান্তরে সভ্য সমাজের কাছেও নিঃসন্দেহে ধিকৃত। জন্মাবধি এটাইতো বুঝেছি, জেনে আসছিও তাই। এই বিশেষ শ্রেণীর কর্মকান্ডের ইতিহাসও এমন স্বাক্ষর বহন করেই চলছে। এক কথায় বলা যায় -এই দেশদ্রোহী বেঈমানরা একেবারে নির্ভেজাল ফরমালিন মুক্ত খাঁটি রাজাকার। যদি ধরে নেওয়া যায় উপরোক্ত মন্তব্য গুলো প্রশ্নাতীত ভাবে একেবারেই সঠিক - তবেই বিপরীত ভাবে যে প্রশ্নটা উদয় হয়, তা হলো-সকল মুক্তিযোদ্ধা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সকল মহারথীগণ কত পারসেন্ট ফরমালিন মুক্ত সত্যিকারের স্বাধীনতার চেতনা লালনকারী ??? সর্প দর্শনের যে যন্ত্রনায় বিক্ষিপ্ত জাতি হানাদারদের কবল হতে তাজা রক্তের বিনিময়ে দেশকে দখলমুক্ত করে লাল - সবুজের পতাকা বাঙালির হৃদয়াকাশে উড়িয়েছিল, তার সম্মান কী আজ পূর্ণাঙ্গ ভাবে অক্ষুন্ন আছে ? যারা এ স্বাধীনতা চায়নি-তারা দন্ত বিকশিত করে কটাক্ষ ও বিদ্রুপের ভঙ্গিতে যখন বলছে- ওরে মুক্তিযোদ্ধারা- তোরা তোদের স্বাধীন দেশে কেমন আছিস, ভালো আছিসতো...? অপশক্তি, অপকর্ম, জুলম-নির্যাতন, লুটপাট, গুম-খুন, হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নি সংযোগ বন্ধ করে নিজেদের স্বাধীন গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়েছিস তো...??? স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি অথবা মুক্তিযোদ্ধারা অপরাধীর মত মাথা নিচু করে অবশ্যই বলবে- তয় মনু ভোজ্জ ? ঘটনা অইছে কি, পাকিস্তানি ভাইগো আমলের মতো কিল, মুরা-থাপ্পর মোগ দেশে (বাংলাদেশে) অহনো হগোলি আছেরে ভাই ...! তবে মাথা উঁচু করে গর্বের সাথে নিশ্চই বলতে পারেন -আগে তো মনু অগো (পাকিস্তানি) লগে মারা-মারি করতাম, অহন তো আর হেইয়া অয় না, অহন মোরা-মোরাই করি...! .. তবে কি, উন্নতি কিছুই হয়নি ? না তা নয়, হয়েছে বটে-যা ৪২ বছরের প্রত্যাশার কাছে ছিটে ফুঁটো মাত্র। তাহলে, এক কথায় এমন ব্যর্থতার কারণ কি ? অপশক্তির আছর বাঙালির শুদ্ধ সংস্কারকে অসভ্যতায় একেবারে উম্মাদ করে ফেলেছে। আমরা অতি মাত্রায় আত্মকেন্দ্রিক ও ব্যক্তি স্বার্থপরতার আবর্তে ঘূর্ণায়মান। ফলে অন্যকে বঞ্চিত করার প্রবনতা এবং অর্থ ও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার কালো ঔরস থেকে জাত নির্মমতা, নির্জ্জ্বলতা , সকল প্রকার বেহায়াপনা আজ প্রকাশ্যে প্রায় সব ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠিত। বিভিন্ন সময়ে যারা সরকার পরিচালনায় থাকেন বা থেকেছেন, তাদের কর্মকান্ডের বেলায়ও এ লজ্জ্বাটি প্রযোজ্য বলে জনগণের দৃষ্টি কেড়েছে। আমরা কী দেখেছি ? মনে পড়ে, সাংসদ- সংসদভবণ, মন্ত্রি কিংবা মন্ত্রণালয়, এমন কি সরকারকে পাশ কাটিয়েও বিভিন্ন নামে অন্য কোন বিতর্কিত আলাদিনের চেরাগ ভবণ আমাদের জুজুর ভয় কম দেখায়নি..! সংসদে মন্ত্রি এমপিদের কোরাম সংকট হলেও চেরাগ ভবণে যে ভুতের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল সেখানে অপকর্ম বাস্তবায়নের কোরাম সংকট কখনো দেখা যায়নি..! তবে কথায় আছে, আল্লার মাইর দুনিয়ার বাইর। আমরা দেখেছি সময়ের ব্যবধানে অপরাধ প্রথমে অপরাধীকেই গ্রাস করেছে। হীন রাজনীতির গর্ভে যে ফ্রাংকেনষ্টাইনের জন্ম হয় , সে প্রথমেই তার জন্মদাতাকেই পানি ছাড়া গিলে একেবারে বিষ্ঠায় পরিণত করে। বাস্তবে এর সত্যতা দেখছিও তাই। সে বিষ্ঠার র্দুগন্ধে আজও মানুষ নাকে রুমাল চাপা দিয়ে আছে। মনে রাখা দরকার এটাই বিধির বিধান। সুতরাং বর্তমানে কোন রাজনৈতিক দল কিংবা দলের প্রধান যদি জনমত উপেক্ষা করে , অতীত কোন অবদান বা প্রেক্ষাপটের প্রতি কৃতজ্ঞতা কিংবা মূল্যায়নের দোহাই দিয়ে বর্তমানে পাপ কার্যে লিপ্ত এমন কোন ব্যক্তি বা পরিবারের প্রতি সহানুভূতিশীল হন ,তবে সেটা অবশ্যই অতি পান্ডিত্য দোষে পাপাশ্রয়ীহবে। আর সেই পাপ সৃষ্ট ফ্রাংকেনষ্টাইনের মাধ্যমেই পাপাশ্রয়ীকে গ্রাস করতে কোন রকম দ্বিধা করবে বলে মনে করি না। সুতরাং- পাপ থেকে পতন হয়-ধার্মিক তুমি পাপ ধ্যান ভঙ্গ করে সত্যের ধ্যানে নিমগ্ন হও। এগুলো বিধাতার কঠিন পরীক্ষা, উত্তীর্ণ হও..! অন্যথায়, নিশ্চিত ভাবেই ফলাফল হবে ছত্রভংগ। যা হউক আবারো লিখার উদ্দেশ্যে আগমন করা যাক...লিখার প্রারম্ভেই প্রশ্ন তুলেছিলাম সব মুক্তিযোদ্ধারাই খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা কিনা এবং সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনতার চেতনা লালন করে কিনা..! ...সম্প্রতি গণমাধ্যমে জ্ঞাত হই-৭০ জন ইউপি চেয়ারম্যানকে বর্তমান মাসেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভাল কাজের স্বীকৃতির সম্মান হিসাবে পৌনে এক ভরি স্বর্ণের নির্মিত ক্রেষ্ট প্রদান করা হবে। খবরটির সাথে সম্মান কথাটি সংযুক্ত থাকায় রীতিমত চমকে উঠলাম..! আবারো রাষ্ট্রিয় সম্মান ? আবারো মর্যাদা হানীকর সেই স্বর্ণ ? কদিন আগেই মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিদেশী বন্ধুদের সম্মানিত করার প্রয়াসে স্বর্ণ নির্মিত ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়েছিল। সেই ক্রেষ্টে স্বর্ণ জালিয়াতির কারণে সম্মান ভূলুন্ঠিত হয়ে রাষ্ট্র ও জনগনের মর্যাদাকে হীন করা হলো। সম্মানের নামে বিদেশী বন্ধুদের কানে টান দেওয়া হলো..! প্রশ্ন হলো বিদেশী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রদানে স্বর্ণ নির্মিত ক্রেষ্টে জালিয়াতি কারা করেছিল ? তারা অবশ্যই ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা কিংবা পরোক্ষ বা পত্যক্ষ ভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। সন্দেহাতীত ভাবেই বলা যায় কোন রাজাকারের সম্পৃক্ততা সেখানে থাকার সুযোগ ছিল না ? সরকারী পর্যায়ে যারা এই ক্রেষ্ট নির্মাণের বিষয়টি মনিটরিং কিংবা কোয়ালিটি করলো তারা অবশ্যই কোন রাজাকার ছিলেন না ? তারা অবশ্যই কোন না কোন ভাবে ফরমালিন যুক্ত তথাকথিত মুক্তিযোদ্ধা অথবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ভেজাল শক্তি ? যিনি ক্রেষ্ট সরবরাহ করলেন, তিনিও মনে হয় রাজাকার নন বরং গর্বিত মুক্তিযোদ্ধাদের কোন না কোন স্বজন হবার সম্ভাবনাই বেশি...! কারণ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ এত বোকা নয় যে, ক্রেষ্ট সরবরাহের বানিজ্যটি রাজাকারের হাতে রেখে নিজেদের এত বড় সুযোগ হাত ছাড়া করবেন..! বার বার মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছি এই জন্য যে, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিই ক্ষমতায় বহাল আছেন । সরকার কোন ভাবেই এর দায় এড়াতে পারেন না। শোনা যাচ্ছে খাঁটি স্বর্ণ দিয়ে ফের তৈরি নতুন ক্রেষ্ট বিদেশী বন্ধুদের নিকট পূনরায় পাঠানো হবে । বলি..এতে কি কলংক মোচন হবে ? বরং বানিজ্যের আরেকটি সুযোগ সৃষ্টি হবে । তাহলে এক্ষেত্রে সরকারের করণীয় কী ? কী ভাবে সরকার দায় এড়াতে পারেন ? সরকারের দায়িত্ব হবে-যারা বিদেশী মুক্তিযোদ্ধা বন্ধুদের কাছে রাষ্ট্র ও জনগণকে চোর বানালো, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা পাকা-পোক্ত করা । কারণ যে মুক্তিযুদ্ধ দিয়ে আমাদের জন্ম , যে চেতনায় বাঙালির বেড়ে উঠার কথা এবং যে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত লাল-সবুজের পতাকা দিয়ে আমাদের শেষ যাত্রায়ও মৃত দেহটি সম্মানের চাদরে ঢাকা থাকে, তা কিন্তু ফেলনা বা পাশ কাটিয়ে যাবার কিছু নয় । যে চেতনা ধারণের জন্য আপনি- আপনারা আজ এমপি, মন্ত্রি কিংবা প্রধানমন্ত্রি হচ্ছেন বা হতে পারবেন । সুতরাং মুক্তিযুদ্ধে অবদানের সম্মান হিসাবে বিদেশী বন্ধুদের দেয় স্বর্ণের ক্রেষ্টে জালিয়াতির দুঃসাহস যারা দেখালো, সৎ সাহস নিয়ে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে প্রকৃত অপরাধীর বিচার সুনিশ্চিত করাই কেবল সরকারের দায় মুক্তি হিসাবে ব্যথিত জনমনে ও লজ্জ্বিত প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মনে স্বস্তি ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে । এতে ব্যর্থ হলে জনমনে প্রশ্ন আসবে, ক্ষমতায় গেলে কী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হ্রাস পায় ? নাকি চেতনার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় ? এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আর ভেজাল মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির স্বাধিনতার চেতনা ফিরে না এলে-অধম জনতা এবং স্বাধীনতার ইতিহাস না জানা নতুন প্রজন্ম বিব্রত হয়ে বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন করবে-কে শ্রেষ্ঠ ? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ফরমালিন যুক্ত খাঁটি রাজাকার, নাকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী তথাকথিত ভেজাল মুক্তিযোদ্ধাগন ..?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.