নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি সেই দিন হব শান্ত....

বিদ্রোহী ভৃগু

সকল অনাচার আর অনিয়ম জাগায় দ্রোহ.....

বিদ্রোহী ভৃগু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈদুল ফিতর তার হাকীকী মেজাজে ফিরে আসুক

৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৮

“ঈদ” শব্দের অর্থ আনন্দ বা উদ্যাপন আবার ঈদ শব্দের মূল (عید)আরবী শব্দ। এটার আভিধানিক অর্থ ما یعاود مرۃ بعد اخر “একের পর এক যা বার বার আসে।” মানুষ স্বভাবগতভাবে দুঃখজনক ও অকল্যানকর কাজে কষ্ট পায়। যাপিত জীবনে পরিশ্রম, কষ্ট আর নিত্য দিনের পেরেশানির জীবন থেকে যখন বেরিয়ে আসে, অশান্তির জীবন থেকে যখন শান্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে তখনই আপনজন নিয়ে বা স্বগোত্রীয় বা ধর্মীয় লোকদের নিয়ে খুশি উদযাপন করে, আনন্দ অনুষ্ঠান করে। এ অনুষ্ঠানকে কুরআনের ভাষায় বলা হয় ঈদ। যা কুরআনের সুরা মায়েদার ১১৪ নং আয়াতে রয়েছে।

ঈদ সম্পর্কে বুঝতে হলে আগে ঈদ শব্দের অর্থ বুঝতে হবে। ঈদ শব্দের অর্থ খুঁজতে গিয়ে চলুন দেখি বিখ্যাত অভিধান সমূহে কি বলা হয়েছে?
‘আল ইযহার’ অভিধানে বলা হয়েছে, “আনন্দপূর্ণ সকল সমাবেশকে আরব জাতির কাছে ঈদ নামে আখ্যায়িত। কেননা এর প্রত্যাবর্তনে আনন্দের প্রত্যাবর্তন ঘটে।” আবার ‘মুজামুল ওয়াছিত’ অভিধানে বলা হয়েছে-“কোন চিন্তা বা রোগ অথবা আনন্দ- আগ্রহ ইত্যাদির কারণে সস্মরণীয় অবস্থায় কোন সম্মানীত প্রিয় ব্যক্তিত্বের আলোচনার মাহফিলে করা হয়।” অন্যদিকে ‘মিছবাহুল লুগাত’ অভিধানে বলা হয়েছে-“ঈদ ঐ সকল দিন, যা কোন মার্যাদাশীল ব্যক্তি বা কোন ঐতিহ্যবাহী ঘটনার স্মরণে হয়।” এছাড়াও ‘ফিরুজুল লুগাত’ অভিধানে বলা হয়েছে- “ইসলামের নবীর জন্ম দিবসকে ‘ঈদে মীলাদ বলা হয়।” অনুরূপভাবে আরো অসংখ্য অভিধানে বর্ণনা করা হয়েছে।

ঈদ শব্দ শরিয়তে কোন নির্দিষ্ট দিবসের নাম নেই। আবু দাউদ ও মিশকাশ শরীফের বর্ণণায় পাওয়া যায়, ইসলামি শরীয়তে ঈদের যে দুটি দিন রয়েছে তা জাহিলিয়াতের যুগে “নওরোজ” ও “মেহেরজান” নামে ছিল। মহানবী ( সা: ) মদিনায় গমন করে এ দুটি নামের পরিবর্তে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর নামে পালন করেন। ঈদ শব্দ দ্বারা কোন নির্দিষ্ট ঈদকেই বুঝানো হয়নি। ঈদ শব্দ দ্বারা শরীয়তের কোন দিবসের নাম রাখা হয়নি। বরং ঈদের সাথে আদহা, ফিতর যুক্ত করা হয়েছে দুটি উৎসব দিনের বৈশিষ্ট হিসেবে।

ঈদ শব্দের সাথে যুক্ত করে, সম্বন্ধ বা ইদাফত করে ব্যবহার করার মধ্যে কোন বিধি-নিষেধ নেই। কোন সম্প্রদায় যে দিন পরাধীনতা থেকে স্বাধীনতা লাভ করে সে দিনকে ‘স্বাধীনতা দিবস’ বলা হয়। স্বাধীনতা দিবসকে আরবীতে বলা হয় “ঈদুল ইসতেকলাল’। একই ভাবে ১৮ জিলহজ্ব তারিখ শিয়া সম্প্রদায়ের নিকট ‘ঈদে গাদির’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ইরানী বছরের প্রথম দিবস বা নববর্ষকে ‘ঈদে নওরোজ’ নামে পালন করা হয়। ঈদ হচ্ছে একটি বিশেষ পরিভাষা। যে কোন আনন্দময় বা স্মৃতিময় মুক্তি, কল্যান এবং রহমতের দিবসের খুশি বা প্রত্যাবর্তন বোঝাতে ঈদ ব্যবহার করা যায়।

পবিত্র মাহে রমযানের পরে ঈদুল ফিতর আসে। এটাকে ঈদ এ কারনে বলা হয় যে,বান্দা এক মাস রোযা রাখার পর আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বান্দাকে ঈদগাহে নামায শেষে পুরস্কার দান করবেন এবং আল্লাহর রেযামন্দী ফেরেস্তাদের মাধ্যমে প্রকাশ করেন; এ জন্য ঐ দিন বান্দাদের জন্য ‘আনন্দের দিন’, ‘খুশির দিন’ তথা ‘ঈদের দিন। এছাড়াও আমরা মানবিক আরেকটা আনন্দের দিক সম্পর্কেও আমরা সকলে অবগত। মানুষ যখন কাউকে কিছু দান করে বা সাহায্য করে তার মনে এক ধরনের স্বর্গীয় পুলক বা আনন্দ লাভ করে থাকে। পবিত্র রমজান মাসের কঠোর সিয়াম সাধনার পর সাধক তার সংযমের মাধ্যমে উপলদ্ধ কষ্ট, সিয়ামের তাৎপর্য, নির্ধারিত পানাহার বর্জনের মাধ্যমে তার সঞ্চিত জ্ঞান, অর্থ, প্রেম এবং অনুভব ফিতর বা দানের মাধ্যমে মানব কল্যানে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার পথ ধরে মানুষের মাঝে খুশি ছড়িয়ে দেয়া; সবার সাথে আনন্দকে ভাগ করে নেবার যে অপার সূখ লাভ হয় তাই ঈদ বা খুশি। ঈদ আল ফিতর বা দানের বা বিলিয়ে দেবার উৎসব। সেই আনন্দকে ভাগ করে নেবার প্রয়াসেই ঈদের দিনের কোলাকুলি হৃদ্যতার প্রচলন।

ঈদুল ফিতর তার হাকীকী মেজাজে ফিরে আসুক আমাদের ঘরে ঘরে। রমজান মাসের সংযম, সঞ্চয়, কষ্ট অনুভব করার মাধ্যমে মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধের বিকাশ ঘটুক। ফিতরের মাধ্যমে ফিরে আসুক সামাজিক সাম্যতা, ঘুচে যাক অর্থনৈতিক বৈষম্য । নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আমিত্বের বিনাশ ঘটুক; সার্বজনীনতার প্রকাশ ঘটুক ব্যাক্তি, পরিবার, সমাজ দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয়:

তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে
শোন আসমানী তাগিদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ

ঈদ মোবারক।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৪

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: ঈদের বিষয়েঅনেক কিছু জানা হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে

৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভায়া :)

অগ্রিম ঈদের শুভেচ্ছা রইলো

২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ৮:০৬

শায়মা বলেছেন: আর মাত্র একদিন আছে।

ঈদের শুভেচ্ছা ভাইয়া।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এবার বেশ গোলমাল লেগে গেল!
আফগানরা আজ ঈদ করলো, সাথে আমাদের চাঁদপুরী ভাইরা ;)
মাত্র নিউজ দেখলাম মালয়েশিয়ায় চাঁদ দেখা গেছে - তাই কাল ঈদ

আর আমাদের অপেক্ষার প্রহর হলো আরো দীর্ঘ
মঙ্গলবার ঈদ !

ঈদ মোবারক :)

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:২২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: যাক অবশেষে আপনাকে পাওয়া গেছে। আপনাকে আর তপন ভাইয়াকে ধরেই নিয়েছিলাম ঈদের আগে বোধহয় আর পাবো না।
ঈদ সম্পর্কে এমন একটি বিষয় তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার সঙ্গে সহমত পোষণ করে আশায় বুক বাঁধছি, ফিরে আসুক ঈদুল ফিতরের হাকাকী মেজাজ। ঈদ মোবারক।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হারাবো আর কোথা এই সামুর ভুবন ছেড়ে!
জীবনের টানাপোড়েন কখনো দূরিয়া বাড়ায় যদিবা

সুবাহ কা ভোলাকো সামমে লটকে আনাহি পড়েগা ;)
ইয়ে তো সামুকা ইশক হ্যায় :)

ঈদ মোবারক দাদা

৪| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১০:৩৭

জটিল ভাই বলেছেন:
ঈদ মোবারাক।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঈদ মোবারক ভাই

৫| ০১ লা মে, ২০২২ সকাল ৭:৫৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বেশ অনেকদিন পর দেখা দিলেন ।
ঈদের অভিধানিক অর্থ, এর আদি কথা
ও হাকীকী মেজাজ খুব সুন্দর করে
তুলে ধরেছেন। কামনা করি ঈদময়
হোক সকলের জন্য ।

ঈদের অগ্রীম শুভেচ্ছা রইল

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: প্রিয় ভাইজান, সালাম নেবেন।

হুম. বহু বহুদিন পর.।

আপনার জন্যেও অফুরান শুভকামনা
ঈদ মোবারক

৬| ০১ লা মে, ২০২২ সকাল ৮:৩১

বিজন রয় বলেছেন: শুভসকাল।
কেমন আছেন।

ইদ মোবারক।
শুভকামনা।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৭

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুভ রাত্রি বিজন দা’

সারাদিনের ঝড় শেষে এখন বেশ আছি
দীর্ঘ ঈর ঈদ মোবারক :)
হা হাহা

অনেক অনেক শুভকামনা রইলো

৭| ০১ লা মে, ২০২২ দুপুর ১:১০

জুল ভার্ন বলেছেন: ঈদ মুবারক।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঈদ মোবারক প্রিয় ভাইজান

ইফতারের নিমন্ত্রন আর পূরণ হলোনা বুঝি!!!!

ঈদ মোবারক

৮| ০১ লা মে, ২০২২ বিকাল ৩:২৯

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: ঈদের শুভেচ্ছা।

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:০৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঈদ মোবারক ভায়া :)

অনেক অনেক শুভকামনা

৯| ০১ লা মে, ২০২২ বিকাল ৩:৫৭

কিষি বলেছেন: লেখক বলেছেন, আবু দাউদ ও মিশকাশ শরীফের বর্ণণায় পাওয়া যায়, ইসলামি শরীয়তে ঈদের যে দুটি দিন রয়েছে তা জাহিলিয়াতের যুগে “নওরোজ” ও “মেহেরজান” নামে ছিল। মহানবী ( সা: ) মদিনায় গমন করে এ দুটি নামের পরিবর্তে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর নামে পালন করেন।

:| :-*

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:১২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জ্বি, পোষ্টে বলেছি।
তবুও উল্লেখ করায় ধন্যবাদ

ঈদের শুভেচ্ছা রইলো
ঈদ মোবারক

১০| ০১ লা মে, ২০২২ বিকাল ৫:১৫

কালো যাদুকর বলেছেন: অনেক দিন বাদে আপনাকে পাওয়া গেল। ঈদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম ৷

আসমানী তাগিদে আমরা আমিত্বকে পরিহার করি , ঈদ এর প্রকৃত অর্থ নিয়ে আসুক আপনার ও আমাদের জীবনে ৷ ঈদ মোবারক ৷

০১ লা মে, ২০২২ রাত ১১:১৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম ভায়া. অনেকটা সময় আসতে পারিনি .।

আমিত্ব টুকু ছাড়তে পারলে পরেই সে মানুষ হয়ে ওঠে।
আপনার প্রার্থনায় সহমত
ঈদ মোবারক

১১| ০২ রা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬

নীল আকাশ বলেছেন: ঈদ মুবারক আপনাকে।

০২ রা মে, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ঈদ মোবারক ভাই

১২| ০৯ ই মে, ২০২২ দুপুর ১:৩৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: আমরা ঈদের দিনে আনন্দ উপভোগ করি, সামাজিক মেলামেশা করে চেষ্টা করি ঈদ-আনন্দটাকে কিছুটা ছড়িয়েও দিতে, কিন্তু জাতীয় কবি যেভাবে বলেছেন, ঠিক সেভাবে যেন আমরা 'আপনাকে বিলিয়ে দেয়ার' সেই 'আসমানি তাগিদ'টুকু অনুভব করতে পারি না। তারপরেও, আপনার এ লেখাটা পড়ে হয়তো কেউ কেউ সে তাগিদটা অনুভব করবেন, এবং যা করণীয়, তা করবেন। অর্থাৎ, তারা ঈদের 'হাকীকী মেজাজ'টা ধরতে ও অনুসরণ করতে পারবেন।

ঈদ উৎসবের প্রাক্কালে একটি সংক্ষিপ্ত, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা। সুরা ৫ঃ১১৪ এর রেফারেন্স উল্লেখ করাতে পাঠকদের এ বিষয়ে আরও কিছু ব্যাখ্যা জানার আগ্রহ জন্মালে তা মেটানো সহজ হবে।

পোস্টে অষ্টম প্লাস। + +

১১ ই মে, ২০২২ বিকাল ৫:০৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সিনিয়র

লেখার পুরো মেসেজটা সংক্ষেপে প্রতমিন্তব্যে দারুন সারাংশ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
শুকরিয়া

প্লাসে অনুপ্রাণীত হলাম। কৃতজ্ঞতা আর শুভেচ্ছা রইলো অফুরান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.