নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফেরিওয়ালা

মেয়ে ঝালমুড়ি খেতে গিয়ে পেঁয়াজ পাই নাই, কাঁচামরিচ পাই নাই। এত্ত এত্ত শূন্যতা ভাল্লাগে না। মেয়ে কাছে এসো, পেঁয়াজ এনে দাও, ঝালমুড়ি মেখে দাও। মেয়ে এইভাবে আর চলে না। আসো কাছে আসো, পাশে বস, নইলে ওই শামিম কাক্কুকে দিয়ে আমায় গুম করে দাও।

বিভ্রান্তিকর ইকুয়েশন

ভাইরে আমি সেলেব্রিটিও না, ইভটিজারও না, নারীর বিশেষ সুবিধা গ্রহনকারীও না, চেতনা ব্যাবসায়িও না, বুদ্ধিজীবীও না। আমি ইস্টুডেন্ট মানুষ, বিদ্যা বেঁচে খাই আর হুমায়ুনের গল্পের হিমুগিরি করি।

বিভ্রান্তিকর ইকুয়েশন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফ্ল্যাশব্যাক

৩১ শে মে, ২০১৪ সকাল ১০:০১

চাচা বলেছিলেন,ডাক্তার হয়ে গ্রামে কিন্তু ফিরে আসতে হবে।

কৈশোরে বুকফুলিয়ে উত্তর দিয়েছিলাম,অবশ্যই চাচা।



সময়কে বিক্রি করে আমি আজ ডাক্তার।

কঠিন প্রচেষ্টায় শহুরে মেডিকেল একটা ঠাই হল,

পরিশ্রমের মূল্যে পসার বাড়ল,

পদোন্নতি হল,

চারিদিকে সুনামে থই থই,

রোগী বাড়তে থাকলো,

একটার পর একটা চেম্বারে আমার নামে বিলবোর্ড এলো,

দিনরাত অমানুষের মত মানুষকে সেবা দিতে লাগলাম,

অনিচ্ছা স্বত্বেও বাণিজ্যিক হয়ে গেলাম,

এই শহরে বাড়ি নিলাম,গাড়ি নিলাম,বন্ধু পেলাম,

সংসার পাতলাম।



ফিরে তাকানো হয়নি,

পুরানো শিকড় গ্রামে যাওয়ার সময় কখনো পাইনি।

কৈশোরের হাসপাতাল দেয়ার স্বপ্ন ভেঙে দিলাম,

বিনা পয়সার চিকিৎসা করার ফালতু বুদ্ধিটা মাথা থেকে দূর করে নিলাম।

পরীক্ষায় খাতায় লেখা এইম ইন লাইফ রচনাটার লাইনগুলো মাঝে মাঝে তিরস্কার করে,

ভারী টাকার নিচে ওগুলো অবশ্য ব্যপার হয়ে উঠে নি কখনো।

ব্যাস্ততার তলে সব ডুবে গেছে,

শুধু আমি যান্ত্রিকতার ভিড়ে বিখ্যাত ডাক্তার হয়ে টিকে রইলাম।



ওইদিন চেম্বারে অবিকল আমার সেই চাচার মত এক বৃদ্ধ আসলেন,

জিজ্ঞেস করলাম,চাচা আপনার সমস্যা কি?

আগের রিপোর্টগুলো এনেছেন?

এইখানে শুয়ে পড়ুন তো,

দেখি আপনার সমস্যা কোথায়?



চাচা একটি উত্তরও দিল না।

মুখের কোণে পরিহাসের হাসি নিয়ে ঠাই বসে রইলেন অনেকক্ষণ।

আমার দিকে খুব আগ্রহের সাথে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,তপু কেমন আছো,বাবা?

মাথাটা ঝিম ঝিম করতে লাগলো,

আমি কি তপু,গ্রামের স্কুলের নিয়মিত ফার্স্ট বয় তপু,

যাকে নিয়ে সবাই স্বপ্ন দেখত,

যে সবাইকে স্বপ্ন দেখাতো,

আমি কি সেই তপু?



এই শহরে এসে নাম বদলেছে,ঠিকানা বদলেছে,স্বপ্ন বদলেছে,বিশ্বাস বদলেছে,মানুষ অচেনা হয়েছে,

ডিগ্রীর নিচে চাপা পড়ে গেছে সব।

বহুকাল পরে তপু নাম শুনে একেবারে কেঁদেই দিলাম।

পুরাণ সেই নাম,আমার সেই চাচা।



চাচাকে একদিন কথা দিয়েছিলাম,গ্রামে ফিরে যাবো।

আজ মনে হয় সেই দিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.