নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়, কারণে বদলায়, অকারণেও বদলায় । তবে আমি মনে হয় আগের মতই আছি , কখনও বদলাবওনা মনে হয় ! !
তখন আমি আন্ডার-গ্রাজুয়েট করছি। ধানমন্ডিতে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি-তে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং -এ তৃতীয় বর্ষে পড়ি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি-তে পড়ি ভেবে অনেকে ভাবতে পারেন আমরা মনে হয় মালধার পার্টি, আসলে ব্যাপারটা সেরকম নয়। তখন ছয় মাস পর পর সেমিস্টার ফি দিতাম ৪০ হাজার টাকা (এখন লাগে ৮৫ হাজার লাগে যতদূর জানি), এত মালপানি জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সহজ ছিল না! তবে আমি ছোট থাকতেই আমার মার স্বপ্ন ছিল তিনি আমাকে ডাক্তার বানাবেন, ডাক্তাররা মালপানি ভালই কামায়, তাই সব মায়ের মত আমার মাও হয়ত চাইতেন আমিও যেন ভাল দিরহাম কামাই বড় হয়ে! তাই আমি ছোট থাকতেই আমার পড়াশুনার কথা চিন্তা করে একটি জমি কিনে রেখেছিলেন, উদ্দেশ্য ছিল আমি যখন বড় হব তখন এই জমি বিক্রি করে আমাকে তিনি রাশিয়া পাঠাবেন ডাক্তারি পড়তে। পাঠক ভাবতে পারেন, পৃথিবীতে এত দেশ থাকতে রাশিয়া কেন? রাশিয়া পাঠাতে চাওয়ার শানে-নযুল হল আমার এক মামা, আমার মামাও ডাক্তারি পড়তে রাশিয়া গিয়েছিলেন তখন তাই আমার মাও সেখান থেকেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
যাইহোক, ছোট বেলা থেকেই আমি একটি কথা শুনেই বড় হয়েছি, পৃথিবীতে কেয়ামত হয়ে যাক আমাকে ডাক্তার হতেই হবে! মালপানি যা লাগবে সেটা নিয়ে আমাকে চিন্তা করতে হবে না! তবে আমি রেজাল্ট কি করি, না করি সেদিকে মা-বাবার কারো কোন খেয়াল ছিল না, এমনকি কি রেজাল্ট করলাম এগুলো জিজ্ঞেসও করতেন না, আমার প্রতি তাদের বিশ্বাস ছিল দেখার মতন! আমার আব্বার সাথে আমার যে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক ছিল ব্যাপারটা তেমন না, তবে তিনি আমাকে জীবন একটি চড়ও মারেন নি, ধমকতো দূর কি বাত! আব্বার সাথে একটি সূক্ষ্ণ দূরত্ব ছিল তবে শ্রদ্ধা ছিল অটুট, তেমন কথা হত না তবে তিনি যখন বাসায় আসতেন আমি তার পাশে গিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকতাম, টুকটাক কথা বলতাম, তার কথা শুনতাম, সত্য বলতে আব্বা বাসায় থাকলে আমার দারুণ লাগত, আমি সব কাজ ফেলে তার কথা শুনতাম। এমন ভদ্র, শান্ত শিষ্ট এবং সৎ মানুষ আমি জীবনে দেখিনি! পাঠক মাত্রই বুঝার কথা অনেক লাই পেয়েছি জীবনে। একটি উদাহারন দিচ্ছি, তখন ক্লাস টেইনে পড়ি, কয়েকজন বন্ধু মিলে এক চাচার কলা বাগান সাবাড় করলাম, সাথে বাগানের অনেক গাছ কেটে ফেলেছিলাম (এই ব্যার্থ মিশন নিয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিলাম ব্লগে, লিংক)। চুরি করে ধরা খেয়েছিলাম, বাসায় বিচার নিয়ে আসলেও আমাকে কিছুই বলেনি বাসা থেকে তবে এই অবাধ স্বাধীনতায় আমি কখনও বিগড়ে যাইনি! বোধহয় আমার আব্বার কিছু গুন জেনেটি-কালি পেয়েছিলাম! আসলে সেই বয়সটাই ছিল চুরি-চামারি করার হয়ত, বায়তুল মোকাররমের হুজুরকেও যদি জিজ্ঞেস করা হয়, হুজুর আপনি ছোট বেলায় এই ধরনের কোন আকাম করছিলেন নাকি? হুজুরও হয়ত বলবেন ইয়ে মানে আমিও ছোট বেলায় অমুকের গাছের লেবু চুরি করছিলাম (কায়দা করে নিজের অপরাধ হালকা করলাম আরকি!)।
আমি তখন নাইনে পড়ি, আমার বন্ধুদের অনেকেই আর্টস এবং কমার্স নিচ্ছে ধুমায়া কিন্তু কেউ ভয়ে সায়েন্স নিচ্ছে না। আমিও বন্ধুদের দেখাদেখি কমার্স বা আর্টস নিব বলে ঠিক করলাম, এতে আমার মা চটলেন, তিনি জানিয়ে দিলেন, হয় আমি সায়েন্স নিব নয়ত আমার লেখা পড়া বন্ধ, তিনি এই একটি ব্যাপারে আমাকে কখনও ছাড় দিতেন না! অনেক জোরাজুড়ি করলাম এমনকি পড়ালেখা ছেড়ে দেবার হুশিয়ারি দিলাম কিন্তু পেরে উঠলাম না, অগত্যা আমার সায়েন্স-ই নিতে হল, তবে সায়েন্স নেয়াটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভাল সিদ্ধান্ত, এর জন্য আমি আমার মার প্রতি সব সময়ই কৃতজ্ঞ কারণ তিনি সেই সময়ে আমাকে জোড় না করলে আজকে হয়ত আমি এই জায়গায় থাকতে পারতাম না! আমি যে সায়েন্স নিয়ে অনেক কিছু করে উলটাইয়া ফেলেছি জীবনে ব্যাপারটা এমন না, তবে আমি আমার বর্তমান অবস্থান নিয়ে তৃপ্ত!
আমি ইন্টারমিডিয়েট পাশ করলাম বিজ্ঞান বিভাগ থেকেই। তবে ডাক্তারি পড়ার প্রতি কোন আগ্রহ পেলাম না, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব। ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতি ভাল লাগার বীচ বপন করেছিল আমার এক প্রাইভেট স্যার, স্যার আমাকে ক্লাস নাইন এবং টেইনে বিজ্ঞান পড়াতেন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে বেশ উৎসাহিত করতেন। আমি স্কুলে মাঝারী মানের ছাত্র ছিলাম তবে স্যারের দৃষ্টিতে আমি ছিলাম সেরা ছাত্র। আমার প্রতি তার এই বিশ্বাসের কারণ কি ছিল আমার জানা নাই। স্যার প্রায় দুই বছর আমাকে পড়িয়েছিলেন এবং তিনি যতটুকু আমাকে পড়িয়েছেন তার থেকে বেশি সব সময় অনুপ্রাণিত করতেন, তার দৃষ্টিতে আমি বড় হলে কিছু একটা হবই! স্যার আমাকে কতটা স্নেহ করতেন তার একটি উদাহারন দিচ্ছি। স্যার কয়েক এলাকায় ঘুরে ঘুরে ছাত্র-ছাত্রী পড়াতেন, স্যার নিজেও তখন অনার্সে পড়ছিলেন। একদিন স্যারের এক ছাত্রীর সাথে আমার মোলাকাত হল, মেয়েটিও আমার মত ক্লাস টেইনে পড়ত তবে অন্য একটি স্কুলে। মেয়েটি যেই এলাকায় থাকে সেখানে আমি প্রায় ক্রিকেট খেলতে যাই, একদিন মাঠে ক্রিকেট খেলছি হঠাৎ একটি মেয়ে আমাকে ডাক দিল, আমি আসলে মেয়েটিকে চিনতাম না তবে মেয়েটি কিভাবে জেনে জেনেছিল আমি সেই স্যারের ছাত্র। আমি মেয়েটির কাছে গেলে মেয়েটি আমাকে বলল আজ তোমাকে দেখলাম প্রথম (একই ক্লাসে ছিলাম তাই তুমি করেই বলেছিল প্রথম দেখায়), তোমার প্রশংসা স্যার প্রায় প্রতিদিনই করে, তাই তোমাকে দেখার অনেক ইচ্ছে ছিল। মেয়েটির সাথে পরে আমার ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল, বিকেলে সেই এলাকায় ক্রিকেট খেলতে গেলে প্রায় কথা হত!
যাইহোক ইন্টারমিডিয়েটের পর আমাকে বাসা থেকে প্রবল চাপ প্রয়োগ করা হল যাতে ডাক্তারি পড়ি তবে এবার আর পেরে উঠল না। আমি ভর্তি হলাম কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ। আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ে বেশ মজা পেয়ে গেলাম, বেশ মনোযোগ সহকারে পড়তাম, এলাকায় আড্ডা একেবারেই বন্ধ, আমার জীবন শুধু ইউনিভার্সিটি কেন্দ্রিক ছিল তখন। পড়াশুনার পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি-তে হার্ডওয়ার এন্ড সফটওয়্যার ক্লাব, এবং পোগ্রামিং ক্লাবে জয়েন করলাম। আমাদের এক শিক্ষক ছিলেন ইউনিভার্সিটিতে, নাম ড. ফয়েজ খান। আমার জীবনে যে কয়জন ভাল শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি স্যার ছিলেন তাদের অন্যতম। স্যার আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান ছিলেন তখন । স্যার এক সময় বুয়েটের শিক্ষক ছিলেন, পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় বিশ বছর উচ্চ পদে চাকরি করে দেশে ফিরে আবার শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন (স্যার এখন বর্তমানে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে কর্মরত আছেন)। ড. ফয়েজ খান স্যার আমাদের বেসিক ইলেক্টিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স পড়াতেন, তিনি এত সুন্দর করে পড়াতেন, আমি জীবনে অনেক শিক্ষকের সান্নিধ্য পেয়েছি তবে তার মত করে এত কঠিন বিষয় সহজে কেউ পড়ায়নি, স্যারের পড়ানোটা এখনো আমার মাথায় গেঁথে আছে।
আমি যখন ইউনিভার্সিটি-তে তৃতীয় বর্ষে পড়ি তখন আমাদের ডিপার্টমেন্টে সফটওয়্যার এন্ড হার্ডওয়ার ফেয়ার হল, আমি স্যারের আন্ডারে একটি প্রজেক্ট করি তখন, ইলেক্ট্রিক্যাল একটি মেশিন বানিয়েছিলাম, সেখানে বিচারক হয়ে এসেছিলেন অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি তার মধ্যে বুয়েটের কায়কোবাদ স্যারও ছিলেন। প্রতিযোগিতায় আমার প্রজেক্ট প্রথম পুরস্কার পায়, আমার নাম তখন প্রথম আলো পত্রিকায় এসেছিল, সেই ক্ষুদ্র অর্জন তখন আমার কাছে পৃথিবীর সেরা অর্জন ছিল, ইউনিভার্সিটিতে পোগ্রামিং কনটেস্টেও দু-বার টানা চ্যাম্পিয়ন এবং একবার দ্বিতীয় হয়েছিলাম, ভিসির থেকে পুরস্কার পেয়েছিলাম তখন, সবকিছু মিলিয়ে স্যার আমাকে বেশ স্নেহ করতেন। একদিন স্যার আমাকে ডেকে বললেন তোমাদের ব্যাচের ফাস্ট এবং সেকেন্ড বয়ের সিভি দাও, আমি তোমাদের হয়ে একটি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চাই, আমি ছিলাম ফাস্ট বয়, আমি আর আমার এক বন্ধু আমাদের সিভি দিয়েছিলাম। তখন জানতাম না স্যার কোথায় পাঠাবেন, অনেকদিন পর একটি ইমেইল পেলাম কোরিয়ান এম্বাসী থেকে, তারা আরও ডকুমেন্ট চায় আমাদের দুজনের থেকে। মোটামুটি লোভনীয় স্কলারশিপ, কোরিয়াতে আন্ডার গ্রাজুয়েটের সুযোগ, পড়ালেখা ফ্রি তার উপর মাসে মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা দিবে থাকা খাওয়ার জন্য, কোরিয়াতে তখন মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকাই এনাফ থাকা খাওয়ার জন্য (আমি যেই শহরে ছিলাম)। স্কলারশিপটা যখন প্রায় কনফার্ম হল, তখন আমার বন্ধু বেকে বসল, ও বলল দোস্ত আমি এক মার এক ছেলে, আমি আসলে দেশ ছেড়ে যেতে চাইনা তবে তোর যেতে যদি কোন সাহায্য লাগে আমি তোকে সব রকমের সাহায্য করব, ও আমাকে কাগজ পত্রে ভাল সহযোগিতা করেছিল। কোরিয়াকে ভাল লাগার আরেকটি কারন ছিল আমাদের ইউনিভার্সিটির এক সিনিয়র ভাই, তিনি একটি রোবট বানিয়েছিল সেই রোবট দক্ষিন এশিয়ার ভিতর দ্বিতীয় হয়েছিল বোদ হয়, বাংলাদেশের টিভি পত্রিকায় আলোড়ন করেছিল ব্যাপারটা তখন, সেই ভাই-ও কোরিয়াতে গিয়েছিল পড়াশুনা করতে তাই একটি ফেসিনেশন ছিল কোরিয়ার প্রতি আগে থাকতেই। এভাবে পারি দিলাম কোরিয়াতে।
আমরা কয়েকজন কোরিয়া ফেরত ছাত্রছাত্রী। বাংলাদেশে কোরিয়ান এম্বাসির আয়োজনে গেট-টুগেদার পার্টিতে, সাথে কোরিয়ান রাষ্টদুত। বাম দিক থেকে কোরিয়ানের পাশে আমি।
কোরিয়াকে আমি আমার দ্বিতীয় দেশ হিসেবেই মানি, এখনো সে সম্পর্ক অটুট আছে, আমরা যারা কোরিয়ান সরকারী স্কলারশিপ স্টুডেন্ট ছিলাম বা এখনো যারা আছে, কোরিয়ান এম্বাসি এখনও আমাদের সাথে যোগাযোগ ধরে রেখেছে, এই সম্পর্ক আজীবন থাকবে। আমাদের হোয়াটস-আপ গ্রুপ আছে, এম্বাসীও আছে সেখানে, আমাদের সাথে রেগুলার যোগাযোগ রাখে এবং ঢাকায় বিভিন্ন পোগ্রাম করে আমাদের নিয়ে প্রতি বছর। কয়েক বছর আগে ঢাকায় ছিলাম তখন এম্বাসী থেকে দাওয়াত দিয়েছিল, উপরের ছবিতে রাষ্টদুতের সাথে আমরা কয়েকজন গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে (এখন মনে হয় অন্য কেউ এম্বাসেডর, পরিবারসহ দাওয়াত ছিল, সবাই গিয়েছিলাম)। রিসেন্টলিও একটি গেট-টু-গেদার করেছিল এম্বাসী থেকে তবে বাইরে থাকি বলে যেতে পারিনি তবে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলাম আমরা যারা যারা যেতে পারিনি। কোরিয়া আমার কাছে শুধু একটি দেশ নয়, একটি আবেগের নাম, জীবনের সব চেয়ে ভাল সময় কেটেছে সেখানে।
আমার স্মৃতিচারণমূলক পোষ্টসমূহঃ
স্মৃতিচারণঃ আমি দেশ ছাড়তে চাইনি
স্মৃতিচারণঃ আমি একটি এপোলজি নোট লিখতে চাই
বিজ্ঞান নিয়ে কচলাকচলি করতে হবে
যেমন চলছে জীবন
সদ্য ফেলে আসা কিছু অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা
বন্ধু এবং বন্ধুত্ব
আমার প্রবাস থেকে স্বদেশ ভ্রমণ
অলৌকিকের লৌকিক ব্যাখ্যা
কাজী সাহেব সমাচার
আমার প্রথম মোছ বিসর্জনের গল্প
আমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, অতঃপর...
গুরু সেই নার্সারী থেকে শুরু
একটি অদ্ভুদ গাছের গল্প
চুরি বিদ্যা
খেয়ে যায় মোছওয়ালা নাম পরে দাড়িওয়ালার
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন। শুধু বাংলাদেশই না পৃথিবীর প্রায় ৩০-৩৫ দেশে স্কলারশিপ দেয় কোরিয়া এবং সব দেশে আমি যতদূর জানি তাদের ভিতর কমিটি গঠন করে দিয়ে যোগাযোগ ধরে রেখেছে, আসলে এতে দুই দেশেরই লাভ লংটার্মে।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪২
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
আপনি জীবনে যা পেয়েছেন তা কি চেয়েছিলেন?
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: আসলে সেভাবে কখনও ভেবে দেখিনি। তবে সকল অবস্থায় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি, জীবনে যা পেয়েছি তাতেই খুশী এবং যা পাইনি তা নিয়ে আফসোস নেই কখনো!
৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:১৫
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
কার্যকর জীবনদর্শন। আপনি এখন কোথায় দেশে নাকি কোরিয়া?
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:১৯
কাছের-মানুষ বলেছেন: দেশে না, এখন আমেরিকায় আছি।
৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:২০
জ্যাক স্মিথ বলেছেন: স্মৃতি কথা পড়ে ভালো লাগলো, আপনি অসাধারণ একজন মা পেয়েছেন। আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেক বড় কিন্তু আপনাকে দেখলে মনে হয়, সদ্য কলেজ গোয়িং এক ছোকড়া।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১১:২৫
কাছের-মানুষ বলেছেন: হা হা! আপনি ঠিকই বলেছেন!
প্রতিটি মানুষের জীবনেই বিশাল গল্প থাকে সেটা সুখের বা দুখের যে কোন কিছুই হতে পারে! আমি বিভিন্ন মুহুর্তের খন্ড খন্ড স্মৃতিগুলো লেখার মাধম্যে ধরে রাখার চেষ্টা করছি।
৫| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: ছবিতে কাছের মানুষ কি কাছে আছে নাকি দূরে বসে?
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৪৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: হা হা! ক্যাপশনে বলা আছে কাছেই আছি বসে!
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন: একটা সুন্দরী কোরিয়ান কন্যার সাথে পরিচয় করায়া দিয়েন তো !
বোধ করি আমাদের দেশের সব বাবা মায়েরই আজন্ম শখ যে ছেলে হবে ডাক্তার নয়তো ইঞ্জিনিয়ার !
আমার বাপের প্রবল ইচ্ছে ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবে । এদিকে আমার রক্ত দেখলেই মাথা ঘুরে উঠে সেই খবর কেউ নেয় না ।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৪৩
কাছের-মানুষ বলেছেন: আমাদের বাংলাদেশের এমনকি এই সাবকন্টিনেন্টের অবস্থা বোধ হয় একই, সবাই চায় ছেলে-মেয়ে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হোক বড় হয়ে! এখানে ছেলেমেয়েদের উপর চাপিয়ে দেবার একটি প্রবণতা থাকে।
একটা সুন্দরী কোরিয়ান কন্যার সাথে পরিচয় করায়া দিয়েন তো !
আমার দেখছি ব্যাপারটা কি করা যায় ! হা হা
যাইহোক কোরিয়ান মেয়েরা কিন্তু সত্যিই ভয়াবহ সুন্দরী!
৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:২৮
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
দক্ষিণ কোরিয়া একটি উপকারী দেশ। তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশকে দক্ষিণ কোরিয়া অনেক অনেক উপকার করেছেন।
০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ দুপুর ১:৪৪
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, কোরিয়ানরা সৎ হয় এবং তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশকে সাহায্য করে, প্রযুক্তি দিয়েও তারা এগিয়ে, স্যামসাং, এলজি, হুন্দাই এর মত কোম্পানিগুলো তাদের সামর্থ্যের প্রমাণ করে, পড়াশুনা গবেষণায় তারা অনেক এগিয়ে গেছে।
৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:০০
করুণাধারা বলেছেন: এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে চীন, জাপান, মালয়েশিয়া এসব দেশে অনেককে পড়তে যেতে শুনেছি, কিন্তু কোরিয়াতে পড়তে যাওয়া মানুষ আপনি প্রথম। আমার সব সময় ছিল আগ্রহ ছিল এটা জানার যে, কিভাবে আপনি কোরিয়ায় পড়তে গেলেন। জানতে পেরে ভালো লাগলো।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:৩৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: কোরিয়াতে আসলে প্রচুর বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী যায়! সেখানে সরকারী স্কলারশিপ থেকে শুরু করে প্রফেসরের ফান্ড অনেকে পড়াশুনা করে। হাজার হাজার বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রী সেখানে পড়াশুনা করে। আমার সাথে যারা ছিল সেই সময় তাদের অনেকে এখন আমেরিকা আছে, কেউ এখনো কোরিয়াতে জব করছে, প্রতি সেমিস্টারে বাংলাদেশ থেকে করিয়াতে যায় পড়তে।
৯| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৮:৪৬
শেরজা তপন বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদের ফর্মুলা ধরে আমিও তেমন ধারনা করেছিলাম
কোরিয়ান খাবার আর ফিল্ম তো দুর্দান্ত! মেয়েরাও দারুণ সুন্দরী বটে। আপনার সব স্মৃতিকথা সময় করে পড়ব।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:৩৬
কাছের-মানুষ বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদের ফর্মুলা ধরে আমিও তেমন ধারনা করেছিলাম
হা হা আপনি বুদ্ধিমান মানুষ।
হ্যাঁ কোরিয়ান খাবার সত্যিই দুর্দান্ত, মেয়েরা-তো অবশ্যই সুন্দরী! কোরিয়ান পপ, ড্রামা বিশ্বে নিজেদের জায়গা দখল করেছে। আমি ড্রামা বলতে কোরিয়ান ড্রামাই বেশী দেখি, ভাষাটা যেহেতু জানা আমার দেখতে দারুণ লাগে, যারা ভাষা জানে না তারা নেটফ্লিক্সে হিন্দি ডাবড, ইংলিশ ভাষাও আছে!
১০| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ৯:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটি ভালো লেগেছে।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১২:৩৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৪৮
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক লেখা।
০৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:১২
কাছের-মানুষ বলেছেন: পাঠ ও মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল।
১২| ১৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৮:০৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার দূরদর্শী মায়ের দূরদৃষ্টির প্রশংসা না করে পারছিনা। সন্তানের পড়ালেখার জন্য কত আগে থেকে তিনি তার ভাবনাকে কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত করেছিলেন!
সূচনা অনুচ্ছেদটি পড়েই আমি আমার মন্তব্যের উপরের অংশটুকু লিখে ফেলেছিলাম। তারপর একটু এগোতেই দেখি আপনি নিজেও আপনার মায়ের আপনাকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে বাধ্য করার ব্যাপারটাকে একটি দূরদর্শী, সঠিক সিদ্ধান্ত হিসেবে কৃতজ্ঞতার সাথে স্বীকৃ্তি দিয়েছেন।
খুব সুন্দর স্মৃতিচারণ পোস্ট দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আমি বলবো, ভেরী ইন্সাপায়ারিং টু।
"সকল অবস্থায় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি, জীবনে যা পেয়েছি তাতেই খুশী এবং যা পাইনি তা নিয়ে আফসোস নেই কখনো!" (২ নং প্রতিমন্তব্য) - আপনার এ ভাবনা ও উপলব্ধির সাথে আমার জীবন-দর্শনের পুরোপুরি মিল রয়েছে।
আমার এক ভাগ্নে, যে লেখাপড়ায় মোটেই তেমন ভালো ছিল না (কিন্তু অত্যন্ত সৎ ও ধর্মভীরু ছিল) কিভাবে কিভাবে যেন কোরিয়ায় চলে যায়। সেখানে গিয়ে কিছু লেখাপড়া করে একটি মোটামুটি সম্মানজনক চাকুরীতে যোগ দিয়ে সেখানেই থিতু হয়। কয়েক বছর আগে তার কোম্পানী তাকে পদোন্নতি দিয়ে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে বদলী করে। সে এখন ভ্যাঙ্কুভারেই থাকে, কিন্তু পুনরায় কোরিয়া ফিরে যেতে উন্মুখ এবং সচেষ্ট। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি সে কেন কোরিয়ার প্রতি এতটা অনুরক্ত। সে জানায় কোরিয়া একটি সুন্দর দেশ যেখানে আইন সবার জন্য সমান ও সহজলভ্য। মানুষগুলো ভীষণ সৎ।
আমার এবং আমার স্ত্রীর এক কোরিয়ান দম্পতি বন্ধু ছিল। চুং সুক লী এবং কিয়ং সুক লী। তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান ছিল। তাদেরকে আমি দেখেছি তারা বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল, আমাদের এবং ভারতীয়দের চেয়ে অনেক বেশি। অবশ্য এখন আর তাদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
করুণাধারা এর মন্তব্যে (কারণ, তার মন্তব্যে উল্লেখিত আগ্রহটা আমারও ছিল) এবং আপনার অনেকগুলো প্রতিমন্তব্যে "লাইক" দিয়েছি। + +
১৭ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ২:০৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা রইল অশেষ।
মোটামুটি নিজের খণ্ড খণ্ড স্মৃতি নিয়ে প্রায় লেখি তবে কোরিয়া নিয়ে তেমন লেখা হয়নি, তাই শুরু করলাম একেবারে শুরু থেকেই।
আপনার আমার আমার জীবন-দর্শনের মিল জেনে ভাল লাগল। আপনার ভাগ্নের পুনরায় কোরিয়া যেতে চাওয়া ব্যাপারটি আমি বুঝি আসলে কোরিয়াকে ভুলে থাকা সম্বব নয়। পৃথিবীর এত শহর , দেশ দেখেছি কিন্তু কোরিয়া সত্যিই বিশেষ। দেশ নিরাপদ, মানুষজন সৎ, পরিশ্রমী এবং কোরিয়ান খাবার ডাইভার্সিটি অনেক। কোরিয়া অনেক জমজমাট, প্রচুর মানুষ, প্রচুর রেস্টুরেন্ট, বাসার নিচে নামলেই সারি সারি রেস্তোরা, অনেক রাত অবধি খোলা থাকে দোকানপাট তাছাড়া কোরিয়া এশিয়া হওয়াতে নিজেদের সাথে একটা কানেকশন ফিল করি বা করতাম।
তাদেরকে আমি দেখেছি তারা বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল, আমাদের এবং ভারতীয়দের চেয়ে অনেক বেশি। অবশ্য এখন আর তাদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই।
আপনি ঠিকই দেখেছেন তারা আমাদের থেকে অনেক বেশী শ্রদ্ধাশীল বয়োজ্যেষ্ঠদের প্রতি। আমাদের কালচারে যেমন "আপনি" "তুমি" এবং "তুই" এই তিনটি উপায়ে আমরা কোন ব্যক্তিকে সম্বোধন করি তবে কোরিয়ান ভাষায় তিনটি নয় চারটি আছে এরকম লেভেল মানে "আপনি" থেকেও আরও উপরের লেভেল আছে সম্বোধনের জন্য যেটা পৃথিবীর অন্য কোন ভাষায় আছে কিনা আমার জানা নেই।
আপনার মন্তব্য বরাবরই বিশেষ কিছু আমার কাছে। থাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮
ডার্ক ম্যান বলেছেন: একটা জিনিস খেয়াল করেছেন, কোরিয়া কিন্তু স্কলারশিপ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি । আপনাদের সাথে সম্পর্কটা ধরে রেখেছে।