![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা মোটামুটি সবাই জানি যে এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। শুধু সম্প্রসারিতই হচ্ছে না, এর সম্প্রসারনের গতিবেগও বাড়ছে।মহাকাশ বা মহাশুন্যের প্রকৃতি কেমন, সেটা বোঝার জন্য আমরা তিনটি অবস্থা বিবেচনা করতে পারি। অবস্থাগুলো হলো বদ্ধ, খোলা এবং সমতল। এই মহাবিশ্ব বদ্ধ, খোলা বা সমতল হলে লক্ষ-কোটি বছর পর এর কি পরিনতি কেমন হতে পারে?
মহাকাশ বা মহাবিশ্ব যদি বদ্ধ প্রকৃতির হয়, তবে গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ পরস্পর থেকে দূরে সরে যেতে যেতে একটা সময় আবার কাছে আসা শুরু করবে। মানে মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে হতে আবার সংকুচিত হওয়া শুরু করবে এবং সর্বকালের সর্ববৃহৎ কৃষ্ণগহ্বরে পরিনত হবে।
যদি আমাদের মহাবিশ্ব খোলা হয়, তবে মহাবিশ্ব প্রসারনের হার এতো বেড়ে যাবে যে, নক্ষত্র বা ছায়াপথগুলো পরস্পর থেকে আলোর বেগে দূরে ধাবিত হবে। তখন কোনো গ্রহে যদি কোনো মানুষ বা বুদ্ধিমান প্রানি থাকে, তারা তাদের নিজেদের সূর্য ছাড়া কোনো নক্ষত্র বা তারা দেখতে পাবে না। তারা মনে করবে, এই মহাবিশ্বে আর কোনো কিছুর কোনো অস্তিত্ব নেই। শুধু তারাই এই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত।
আর আমাদের মহাবিশ্ব যদি সমতল হয়, তাহলেও এর শেষ পরিনতি খোলা মহাবিশ্বের মতই হবে। মানে, উভয় ক্ষেত্রেই মহাবিশ্বের আয়তন অসীম হবে আর চিরতরে সম্প্রসারিত হতে থাকবে। খোলা আর সমতল মহাবিশ্বের মধ্যে পার্থক্য হলো মহাশুন্যের জ্যামিতিক প্রকৃতি বা মহাশুন্যের বক্রতা।
আইনস্টাইনসহ তার সমসাময়িক বিজ্ঞানীরা ভাবতেন, মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল নয়, স্থীর এবং চিরকাল এরকমই ছিল ও থাকবে। তাই, তিনি তার জেনারেল রিলেটিভিটির সূত্রে একটা ধ্রুবক যোগ করেন। কিন্তু, পরে যখন হাবল মহাবিশ্বের সম্প্রসারণশীলতার প্রমান দেন, তখন আইনস্টাইন সেই ধ্রুবক তার সূত্র থেকে বাদ দেন এবং একে তার সবচেয়ে বড় ভুল (Biggest blunder) বলে আখ্যায়িত করেন। কিন্তু, পরে আইনস্টাইনের এই ধ্রুবককে আবার ফিরিয়ে আনতে হয়। সেই গল্পে পরে আসছি।
বিজ্ঞানীরা দেখলেন মহাবিশ্বে যে পরিমান পদার্থ দৃশ্যমান, তাতে কিছু অসামঞ্জস্য আছে। বিজ্ঞানী জুইকি ১৯৩৩ সালে কোমা ক্লাস্টারের গ্যালাক্সিগুলোর পারস্পারিক গতি নির্ণয় ও পর্যবেক্ষণ করেন। নিউটনের গতির সূত্র ব্যবহার করে তিনি দেখলেন যে গ্যালাক্সিগুলো এতো বেশি গতিশীল যে তারা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ক্লাস্টার ভেঙ্গে পড়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না। এর কারন খুজতে গিয়ে তিনি দেখলেন, ক্লাস্টারের ভর ক্লাস্টারের ভেতরের সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্র, গ্যাস, যেকোনো ধরনের পদার্থের ভরের সমস্টির চেয়ে একশ গুন বেশি! অতিরিক্ত এই ভরের কারন হিসেবে তিনি ‘ডার্ক ম্যাটার’ আবিস্কার করলেন। যদিও অনেক বিজ্ঞানী সেসময় মনে করতেন, এর অন্যকোনো সহজ ব্যাখ্যা থাকতে পারে।
বিজ্ঞানী টনি টাইসন ও তার সহকর্মীরা পাঁচ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে CL0024+1654 নামক নক্ষত্রপুঞ্জ পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
এই চিত্র থেকে এই নক্ষত্রপুঞ্জের প্রকৃতি (mass distribution)/ ভরের বন্টন বের করা একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া। এটা করতে গিয়ে টাইসন ও তার সহকর্মীরা একটি কম্পিউটার মডেল দাড় করালেন এমনভাবে যা ঠিক এই নক্ষত্রপুঞ্জের চিত্রকেই প্রতিফলিত করে। প্রতিটি আলোকরশ্মি এর উৎপত্তিস্থল পাঁচ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূর থেকে কিভাবে আসলে এমন চিত্র দাঁড়ায়, এসব অত্যন্ত নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করে তারা তাদের মডেল দাঁড় করালেন। টাইসন ও তার সহকর্মীরা যে কম্পিউটার মডেল পেলেন, সেখানে এই নক্ষত্রপুঞ্জের কোথায় কোথায় বিভিন্ন ভর ছড়িয়ে আছে, তার নিখুত চিত্র পেলেন।
চিত্রটিতে কোনো অসামঞ্জস্য আছে বলে মনে হলো তাদের। কারন, চিত্রের প্রতিটি স্পাইক/চূড়া এক একটা গ্যালাক্সির অবস্থান বোঝায়। কিন্তু, বেশিরভাগ ভরের অবস্থান দেখা যাচ্ছে গ্যালাক্সিগুলোর ফাঁকে ফাঁকে, যেখানে নিকষ কালো আধার ছাড়া আর কিছুই নেই। গ্যালাক্সিগুলোতে যতো ভরের পদার্থ আছে, তার চেয়ে চল্লিশগুণেরও বেশি ভরের অবস্থান দেখা যাচ্ছে গ্যালাক্সিগুলোর ফাঁকের সেই অন্ধকার স্থানগুলোতে! তো এই ডার্ক ম্যাটার গ্যালাক্সিগুলোর মধ্যে আটকা পড়ে নেইই, বরং নক্ষত্রপুঞ্জের ঘনত্বের জন্যও দায়ী।
মহাবিশ্বে ভরের পরিমান থেকে বিজ্ঞানীরা বুঝলেন যে এটা বদ্ধ প্রকৃতির মহাবিশ্ব নয়। কিন্তু, এটা সমতল নাকি খোলা প্রকৃতির মহাবিশ্ব এটা বের করার জন্য আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। ১৯৯৭ সালে এন্টার্কটিকায় একটি পরীক্ষা চালানো হয়, যা BOOMERANG (Ballon Observations of Millimetric Extragalactic Radiation and Geophysics) নামে পরিচিত। একটা বেলুনে মাইক্রোওয়েভ রেডিওমিটার যুক্ত করে আকাশে ছেড়ে দেয়া হয়। মেরুর বাতাসের সাহায্যে এটি সারা বিশ্ব ঘুরে আবার ফিরে আসে। দক্ষিন মেরুতে এটা করা খুব সহজ, কারন শুধু বৃত্তাকারে খুব উচুতে ঘুরলেই সারা পৃথিবী ঘোরা হয়। এই পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল মহাকাশের মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশনের ছবি তোলা যা পরমশুন্য তাপমাত্রার মাত্র তিন ডিগ্রি উপরে। মহাকাশের যে ছবি পাওয়া গেল, তাকে বদ্ধ, খোলা ও সমতল বক্রতার মহাবিশ্বের কম্পিউটার মডেলের সাথে তুলনা করে দেখা গেল যে, আমাদের এই মহাবিশ্বের বক্রতা সমতল প্রকৃতির।
ডার্ক ম্যাটারের প্রকৃতি, পরিমান ইত্যাদি নির্ণয়ের জন্য বিজ্ঞানীরা নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালালেন। যে ফলাফল পেলেন, তার জন্যও তারা প্রস্তুত ছিলেন না। দেখা গেল যে, সমতল প্রকৃতির মহাবিশ্বের জন্য যে পরিমান ভরের দরকার এই মহাবিশ্বে, সমস্ত গ্যালাক্সি ও তার আশে-পাশের যত পদার্থ আছে, যতো ডার্ক ম্যাটার আছে, তাদের সমস্ত ভর সমতল মহাবিশ্বের ভরের মাত্র ত্রিশভাগ। এর মধ্যে প্রায় পঁচিশ ভাগ ভর ডার্ক ম্যাটারের, বাকি প্রায় পাঁচভাগ ভর সকল দৃশ্যমান পদার্থের। এই মহাবিশ্বের চিরসম্প্রসারনশীলতা ব্যাখ্যার জন্য তাই আইনস্টাইনের সেই ধ্রুবককে আবার হিসেবের মধ্যে আনতে হয়। তাহলে বাকি শক্তি বা ভরের জন্য কি দায়ী?
বাকি শক্তির জন্য শূন্যস্থানই দায়ী! যদি কোনো স্থান থেকে সবকিছু, সবধরনের কনিকা, রেডিয়েশন সবকিছু সরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে তার যে ভর বা শক্তি হবে, তাই আইনস্টাইনের এই ধ্রুবকের জন্য দায়ী। অর্থাৎ দৃশ্যমান পদার্থ ও ডার্ক ম্যাটার ছাড়া বাকি ৭০-৭৫ ভাগ শক্তি রয়েছে শুন্যস্থানের মধ্যে যার কারনে আমাদের এই মহাবিশ্ব চিরসম্প্রসারনশীল।
এই শুন্যস্থান হতে কিভাবে সবকিছুর সৃষ্টি হলো সে গল্প আরেকদিন করব (যদি সময়/ সুযোগ পাই!)। বিজ্ঞানীরা বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর অংক কসার পর একটা মোটামুটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছেন কিভাবে কোয়ান্টাম ফ্ল্যাকচুয়েশনের মাধ্যমে সবকিছুর সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে সমাজে কিছু ইসলামী পন্ডিত দেখা যায়, যারা দাবি করেন এই তথ্য পবিত্র কোরানে আছে। রেফারেন্স হিসেবে তারা সাধারনত সুরা বাকারার ১১৭ নম্বর আয়াতের কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রনালয়ের ওয়েব সাইটে দেখলাম সেখানে এই সুরার ১১৭ নম্বর আয়াতের যে অনুবাদ করা আছে, সেখানে শুন্য হতে পদার্থের সৃষ্টির কথা বলা নাই। আয়াতটি আমি ইংরেজি ও বাংলায় তুলে দিচ্ছি-
To him is due the primal origin of the heavens and the earth: when he decrees a matter, He says to it: “Be”, and it is.
আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীর স্রস্টা এবং যখন তিনি কোন কিছু করিতে সিদ্ধান্ত করেন তখন উহার জন্য শুধু বলেন, ‘হও’, আর উহা হইয়া যায়।
www.quranmiracles.com নামক এক ইসলামিক ওয়েব সাইটে দেখলাম এই অনুবাদ একটু ভিন্নভাবে করা। সেটা হলো-
Creator of the heavens and the earth from nothingness, He has only to say when He wills a thing, “Be,” and it is.
আবার বিখ্যাত ইসলামিক চিন্তাবিদ ও ব্লগার হারুন ইয়াহিয়ার ওয়েব সাইটে লেখা-
The Originator of the heavens and Earth. When He decides on something, He just says to it, 'Be!' and it is
Link- Click This Link
মানে এখানেও শুন্য থেকে সবকিছুর বা কোনোকিছুর সৃষ্টির কথা লেখা নেই। তারমানে একটি আয়াতের অর্থ খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায়। আমার বক্তব্য হলো, যেকোনো আবিষ্কার বা বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উল্লেখ পবিত্র কোরানে আছে, কোরান একটি বিজ্ঞানময় কিতাব এসব বলে কোরান ও ইসলামকে অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের কাছে শুধু হাস্যকর করা যায়, কোরানের সত্যতা প্রমান করা যায় না। তাই ধর্ম ও বিজ্ঞান আলাদাভাবে চর্চা করতে পারলে ভালো, না হয় যেকোনো একটি নিয়েই থাকা উচিত। ধর্ম দিয়ে বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব না।
তথ্যসুত্রঃ
1. A universe from nothing- Lawrence Krauss
2. Click This Link
3. Click This Link
4. Wikipedia
5. http://www.quran.gov.bd
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৪৭
ঠাহর বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য। কিন্তু, আমি বোধ হয় আমার বক্তব্য আপনাকে বোঝাতে পারিনি। আমি হয়তো এখানে কিছুটা বিজ্ঞান চর্চা করেছি, কিন্তু এটাকে ধর্ম চর্চা বলা যায় না। বিজ্ঞানের দীর্ঘ, জটিল কিন্তু চমকপ্রদ বিষয়কে যখন কোরানের অস্পষ্ট রূপক কোনো বানীতে উল্লেখ আছে বলে দাবী করা হয় (যা নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক ও বিরক্তিকর!), সেই কথাটাই আমি উদাহরনসহ বললাম।
Flat universe- এর আরও পরীক্ষামুলক প্রমান আছে। আমি উপরে শুধু একটাই দিয়েছি। A universe from nothing বইটার Paper back version-এ ৪৫-৪৬ পৃষ্ঠায় আরেকটা পরীক্ষার কথা আপনি পাবেন। Big crunch যে মহাকাশের শেষ পরিনতি হবে না, এটা মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। তবুও কেউ কেউ তার সম্ভাব্যতার কথা বলেন, কিন্তু কোনো প্রমান বা গানিতিক বিশ্লেষণ দেখাতে পারেন না। এখন যদি সেই 'কেউ কেউ' টাও না থাকে Big crunch এর সমর্থনে কথা বলার জন্য, তাহলে আপনার উল্লেখিত কোরানের আয়াত মিথ্যা বলে প্রমানিত হবে। তারপর আপনি যদি সেই আয়াতের নতুন কোনো অর্থ বের করেন, তাহলে ব্যাপারটা কি হাস্যকর হবে না?
আমি নিজে ধর্ম চর্চা করি না, কিন্তু আমার আপনজনেরা করেন। তাদের চর্চা করা ধর্মটাকে যখন এভাবে হাস্যকর করা হয় এবং সেই কারনে যখন তারা কষ্ট পায়, তখন আমি আনন্দ পাই না। মানুষের হয়তো কিছু আধ্যাত্মিক চাহিদা আছে, তাদের ধর্মটাকে বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে গিয়ে এভাবে মিথ্যা বা হাস্যকর হয়ে গেলে সেই আধ্যাত্মিক চাহিদা আর পূরন হবার উপায় থাকে না। এ কারনেই আমি ধর্ম আর বিজ্ঞান আলাদা রাখার পক্ষপাতি। চার্চ যদি ধর্ম আর বিজ্ঞানকে আলাদা করে থাকে, তাহলে তারা সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ইসলামের ঠিকাদারদেরও সেটা করা উচিত। না হলে মুসলমানদের অবস্থা ভালো হবার শেষ সম্ভাবনাটুকুও বিলীন হয়ে যাবে।
২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৮
কবি এবং হিমু বলেছেন: আপনার লেখার সূত্র ধরে কিছু পবিত্র কুরআন বিজ্ঞানের সাথে কটতুকু সর্ম্পক রাখে তা তুলে ধরার সামান্য চেষ্টা করলাম..
##ইউরোপীয় দার্শনিক ও বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করত যে,পৃথীবি মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং সূর্য সহ অন্যান্য জিনিসগুলো একে কেন্দ্র করে চারদিকে ঘুরে।এ ভূকেন্দ্রিক ধারণা,পাশ্চাত্যে খৃষ্টপৃর্ব ২য় শতাব্দীতে টলেমীর যুগ থেকে বিদ্যামান ছিল।১৫১২ খৃঃ নিকোলাস কোপারনিকাস গ্রহের গতি আছে মর্মে- সূর্যকেন্দ্রিক তত্ব দেন।এই তত্বে বলা হয়,সৌরজগতের কেন্দবিন্দু- সূর্য গতিহীন।কিন্তু অন্যান্য গ্রহগুলো একে কেন্দ্র করে চারদিকে ঘুরে।১৬০৯ খৃঃ জার্মান বিজ্ঞানী ইউহান্নাস কেপলার ‘Astronomia Nova’নামক একটি বই প্রকাশ করেন।তিনি তাতে মত প্রকাশ করেন যে, গ্রহগুলো শুধুমাত্র সূর্যের চারদিকে ডিম্বাকৃতির কক্ষপথেই চলে না,বরং সেগুলো নিজ নিজ কক্ষপথে অনিয়মিত গতিতে আবর্তিত হয়।এ জ্ঞানের আলোকে ইউরোপীয় বিজ্ঞানীদের পক্ষে সৌরজগতের বহু বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব হয়েছে,যার মধ্যে দিন রাতের বিষয়টি অন্যতম।এসকল আবিষ্কারের পর ধারনা করা হয় যে, সূর্য স্থিতিশীল যা পৃথিবীর মত নিজ কক্ষপথে আবর্তন করে না।
“তিনি সৃষ্টি করেছেন রাত ও দিন এবং চাঁদ-সূর্য। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।” (সূরা আম্বিয়া -৩৩)
এ আয়াতে (আরবী)শব্দটি ব্যবহূত হয়েছে যা (আরবী) থেকে এসেছে। শাব্দিক অর্থ সাঁতার কাটা। এ শব্দটি কোন জিনিসের গতি বুঝানোর জন্য ব্যবহূত হয়। আপনি যমীনে কোন ব্যাক্তির জন্য এ শব্দটি ব্যবহার করলে এর অর্থ এটা নয় যে, তিনি গড়াগড়ি দিচ্ছেন। বরং এর অর্থ হবে তিনি হাটেন বা দৌড়ান।আর পানিতে অবস্থানকারী কোন ব্যক্তির জন্য ব্যবহার করলে এর অর্থ তিনি ‘ভাসেন’ হবে না, বরং এর অর্থ হবে, তিনি সাঁতার কাটেন।অনুরূপভাবে আপনি যদি শব্দটি আকাশ সম্পকির্ত কোন জিনিস,যেমন সূর্য সম্পর্কে ব্যবহার করেন,তখন এর অর্থ শুধু মহাশূন্যে উড়া নয়,বরং এর অর্থ হল,তা মহাশূন্যে আবর্তিত হয়। স্কুলের অধিকাংশ পাঠ্যপুস্তকে এ সত্যটি উল্লেখ আছে যে,সূর্য নিজ কক্ষপথে ঘুরে। সূর্যের নিজ কক্ষে আবর্তনকে বুঝার জন্য টেবিলের উপরে সূর্যের প্রতিকৃতি প্রদর্শন করা দরকার। চোখ বাঁধা না হলে যে কেউ সূর্যের প্রতিকৃতিটি পরীক্ষা করতে পারে। দেখা গেছে,সূর্যের রয়েছে অবস্থান স্থলসমূহ যা প্রতি ২৫দিনে একবার আবর্তন করে থাকে। অর্থাৎ নিজ কক্ষপথে আবর্তন করতে সূর্যের প্রায় ২৫ দিন সময় লাগে।আল্লাহ কোরআন মজীদে বলেনঃ“সূর্য নাগাল পেতে পারে না চাঁদের এবং রাত আগে চলে না দিনের। প্রত্যেকেই আপন আপন কক্ষপথে সন্তরণ করে।” সূরা ইয়াসিন -৪০
###১৯২৫খৃঃ জ্যোতির্বিদ এডউইন হাবেল পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণের সাহায্যে বলেছেন,প্রতিটি ছায়াপথ অন্য ছায়াপথ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে। এর অপর অর্থ হল,মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এখন বৈজ্ঞানিক সত্য। কোরআন মহাবিশ্বের প্রকৃতি সম্পর্কে একই কথা বলেছে।আল্লাহ বলেনঃ“আমি নিজ ক্ষমতা বলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই এর সম্প্রসারণকারী।”সূরা যারিয়াত-৪৭
আরবী শব্দ (আরবী) এর বিশুদ্ধ অনুবাদ হল,‘সম্প্রসারণকারী।’ এটা মহাবিশ্বের ব্যাপক সম্প্রসারণশীলতার প্রতি ইঙ্গিতবাহী।
প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ স্টিফেন হকিং তার A Brief History of time বইতে লিখেছেন মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ সম্পর্কিত আবিষ্কার বিংশ শতাব্দীর মহান বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব। মানুষ কর্তৃক টেলিষ্কোপ আবিষ্কারের পূর্বে কোরআন মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের কথা জানিয়েছে।
###প্রাচীন যুগে ‘অণুতত্ব’ নামে একটি তত্ব ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে।২৩০০ বছর আগে, গ্রীকদেশীয় এ তত্বটি যিনি দেন,তার নাম,Democritus।ডেমোক্রিটাস ও তার পরবর্তী যুগের লোকেরা মনে করত যে,বস্তুর সর্বাধিক ক্ষুদ্র একক হচ্ছে,অণু।প্রাচীন আরবরাও তা বিশ্বাস করত।আরবী শব্দ (আরবী) এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে,অণু।সম্প্রতি,আধুনিক বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে যে, বিভক্ত করা যায়।অণুকে বিভক্ত করার বিষয়টি বিংশ শতাব্দীর আবিষ্কার।আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে এ শব্দটি আরবদের কাছেও ছিল অসাধারণ।কেননা,কেউ (আরবী )শব্দের সীমাবদ্ধ অর্থের গতি অতিক্রম করতে পারেনি।কোরআনের নিম্নের আয়াতটি (আরবী ) শব্দের এই সীমা স্বীকার করেনা।আল্লাহ বলেনঃ“কাফেররা বলে,আমাদের উপর কেয়ামত আসবে না।বলুন,কেন আসবেনা? আমার প্রতিপালকের শপথ,অবশ্যই আসবে।তিনি অদৃশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত।আসমান ও যমীনে অণু পরিমাণ কিংবা তা থেকে ক্ষুদ্র ও বড় কোন কিছুই তার অগোচরে নয়।সমস্তই আছে সুষ্পষ্ট কিতাবে।”( সূরা সাবা-৩) অনুরূপ বর্ণনা সূরা ইউসুফের ৬১নং আয়াতেও আছে।
####৫৮০ খৃঃ বর্ণার্ড পলিসি সর্বপ্রথম বর্তমান যুগের পানি চক্র সম্পর্কে আলোচনা করেন।তিনি সাগর থেকে বাষ্পাকারে পানির উড়ে যাওয়া এবং পরে ঠান্ডা হয়ে মেঘে পরিণত হওয়ার বিষয়ে মত প্রকাশ করেন।মেঘমালা সাগর থেকে দূরবর্তী ভূখন্ডের উপর ঘনীভূত হয়ে পরে বৃষ্টি আকারে নীচে পতিত হয়।বৃষ্টির পানি খাল-বিল ও নদী-নালায় জড় হয়ে অব্যাহত নিয়মে সাগরে প্রবাহিত হয়।খৃষ্টপূর্ব ৭ শতাব্দী আগে,মিলেটাসের থেলসের মতে সাগরের উপরিভাগের ছিঁটানো পানি কণাকে ধারণকারী বাতাস, ভূখন্ডে তা বৃষ্টি আকারে ছড়িয়ে দেয়।প্লেটোর যুগ থেকে এটাকে ‘তারতারুস’ বলা হত।এমন কি ১৮শ শতাব্দীর বিখ্যাত চিন্তাবিদ ডেস কার্টেজও এমত পোষণ করতেন।১৯শতকে এরিষ্টেটলের তত্ব সর্বত্র বিদ্যমান ছিল।ঐ তত্বে বলা হয় যে, পাহাড়ের ঠান্ডা গভীর গুহায় পানি ঘনীভূত হয় এবং মাটির নীচ দিয়ে প্রবাহিত হ্রদ ঝর্ণাগুলোকে পানি সরবরাহ করে।বর্তমান যুগে আমরা জানতে পেরেছি যে, বৃষ্টির পানি মাটির ফাটল দিয়ে ভেতরে চুইয়ে পড়ার কারণে ঐ পানি পাওয়া যায়।একথাই কোরআনের নিম্নোক্ত আয়াতে এভাবে বলা হয়েছেঃ“তুমি কি দেখনি যে,আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, তারপর সে পানি যমীনের ঝর্ণাসমূহে প্রবাহিত করেছেন,এর দ্বারা বিভিন্ন রংয়ের ফসল উৎপন্ন করেন?- সূরা যোমার -২১
তিনি আরো বলেনঃ“আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত, তারপর তাকে যমীনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। -সূরা আল মুমিনূন -১৮
#####‘Earth’নামক একটি বই বিশ্বের বহু বিশ্বদ্যালয়ে ভূ-তত্ব বিদ্যার রেফারেন্স বই হিসেবে গণ্য হয়।ঐ বইয়ের একজন প্রখ্যাত লেখক হলেন ডঃ ফ্রাস্ক প্রেস।তিনি ১২ বছর ব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান একাডেমীর প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিম্মি কার্টরের বিজ্ঞান উপদেষ্টা ছিলেন।ঐ বইতে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে,পাহাড় হচ্ছে গোঁজ বা পেরেকের আকৃতি বিশিষ্ট এবং তা সকল কিছুর একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র যার মূল মাটির গভীরে প্রোথিত।ডঃ প্রেসের মতে, পাহাড় ভূপৃষ্টের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।কোরআনের নিম্নের আয়াতেও অনুরূপ বর্ণনা পাওয়া যায়ঃ“আমরা কি যমীনকে বিছানা এবং পাহাড়কে পেরেক লোহা বানাইনি?” -সূরা আন নাবা- ৬-৭।“আমি পৃথিবীতে ভারী বোঝা রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুঁকে না পড়ে ।”সূরা আল আম্বিয়া -৩১ অনুরূপ বর্ণনা সূরা লোকমানের ১০নং আয়াত এবং সূরা নাহলের ১৫নং আয়াতেও আছে।
######উদ্ভিদ বিজ্ঞানের মতে প্রত্যেক গাছের মধ্যে পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ আছে।এমনকি সমলিঙ্গ বিশিষ্ট গাছেরও পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ আছে।আল্লাহ বলেনঃ‘তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন উদ্ভিদ জোড়ায় জোড়ায় উৎপন্ন করেছি।’সূরা তোহা-৫৩
#####ব্যক্তির পরিচয় নির্ধারণের ব্যাপারে কোরআন কেন আঙ্গুলের ছাপ সম্পর্কে কথা বলেছে ? ১৮৮০ সালে স্যার ফ্রান্সিস গোল্ট এর গবেষণার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে আঙ্গুলের ছাপকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।পৃথিবীতে এমন দু’জন ব্যক্তি নেই যাদের আঙ্গুলের ছাপ এক রকম।এমন কি দুই যমজ ভাইয়েরও না।একারণে বিশ্বব্যাপী পুলিশ বাহিনী অপরধীদেরকে চিহ্নিত করার জন্য আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা করে।মহান আল্লাহ বলেনঃ“মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড় সমূহ একত্রিত করব না ? বরং আমি তার আঙ্গুলগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।” -সূরা কেয়ামাহ-৩-৪
####Dr. E. Marshall Johnson, প্রফেসর ইমেরিটাস অব অ্যানাটমি এন্ড ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি, থমাস জেফারসন বিশ্ববিদ্যালয়, ফিলাডেলফিয়া, পেনসালভানিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সেখানে 22 বছর যাবৎ অ্যানটমির প্রফেসর ছিলেন, ছিলেন অ্যানটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং ড্যানিয়েল বাফ ইনস্টিটিউটের পরিচালক। তাঁর দুশোরও বেশী প্রকাশনা রয়েছে। 1981 সালে সৌদি আরবের দামামে অনুষ্ঠিত সপ্তম মেডিক্যাল সম্মেলনে তিনি তাঁর রিসার্চ পেপারে বলেন: "সারাংশ: কুরআন কেবল বাহ্যিক রূপের ক্রমবৃদ্ধির বর্ণনাই দেয় না, বরং আভ্যন্তরীণ পর্যায়গুলোকেও গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করে, ভ্রূণের পর্যায় সমূহ, এর সৃষ্টি এবং গঠন, বর্তমান বিজ্ঞান কতর্ৃক স্বীকৃত এসব মূল ধাপগুলোকে চিহ্নিত করে।" তিনি আরও বলেন: "একজন বিজ্ঞানী হিসেবে আমি কেবল সেসব জিনিস নিয়েই কাজ করতে পারি, যা আমি সুনির্দিষ্টভাবে দেখতে পাই। আমি এম্ব্রায়োলজি এবং ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি সম্পর্কে বুঝতে পারি।... যদি আমি নিজেকে আজ আমার যে জ্ঞান রয়েছে, সেই জ্ঞানের অধিকারী সেই যুগের (কুরআন নাযিল হওয়ার সময়কালের) একজন (ভ্রূণের ক্রমবিকাশ) বর্ণনাকারী হিসেবে (কুরআন নাযিল হওয়ার সময়) কল্পনা করি, তবে আমি সেভাবে বর্ণনা দিতে পারব না যেভাবে (কুরআনে) বর্ণনা করা হয়েছে। মুহাম্মাদ যে এই তথ্য অন্য কোথাও থেকে পেয়েছেন, তা অস্বীকার করার কোন যুক্তি আমি দেখি না। তাই তিনি যা লিখেছেন, তাতে অতিপ্রাকৃত সত্তার হাত ছিল - এ ধারণার বিরুদ্ধাচরণ করার মত কিছু আমি দেখতে পাই না।"
#####Dr. William W. Hay, একজন বিখ্যাত সমুদ্র বিশেষজ্ঞ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওলজিকাল সায়েন্সেস এর প্রফেসর। তিনি ফোরিডায় অবস্থিত মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোসেন্সটিয়েল স্কুল অব মেরিন এবং এটমস্ফেরিক সায়েন্সেস অনুষদের ডীন ছিলেন। কুরআনে বর্ণিত সমুদ্র সংক্রান্ত কিছু বর্ণনা নিয়ে ড: হের সাথে আলোচনার প্রাক্কালে তিনি বলেন: "পবিত্র কুরআনের প্রাচীন গ্রন্থে যে এ ধরনের তথ্য সনি্নবেশিত রয়েছে, তা আমার নিকট বেশ ইন্টারেস্টিং মনে হয়, এবং আমার এটা বোঝার কোন উপায় নেই যে এ তথ্য কোথা থেকে আসতে পারে, তবে এটা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে এ ধরনের বক্তব্য এতে রয়েছে এবং (কুরআনের) কিছু কিছু অধ্যায়ের অর্থের মাঝে এগুলো খুঁজে বের করার কাজ অব্যাহত রয়েছে।" এবং যখন তাকে কুরআনের উৎস কি হতে পারে, এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন: "বেশ, আমার মনে হয় এটা নিশ্চয়ই সেই ঐশী সত্তা।"
####Dr. Gerald C. Goeringer, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডি.সি.তে অবস্থিত জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব মেডিসিনের সেল বায়োলজি বিভাগে মেডিকেল এম্ব্রায়োলজির প্রফেসর। সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত অষ্টম সৌদি মেডিকেল সম্মেলনে তিনি তাঁর উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে বলেন: "তুলনামূলকভাবে অল্প কয়েকটি আয়াতে গ্যামেটের মিলন থেকে নিয়ে শুরু করে অঙ্গগঠনের সময় পর্যন্ত মানুষের ক্রমগঠনের যথেষ্ট ব্যাপক বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এর পূর্বে মানুষের ক্রমবিকাশের এরূপ কোন স্পষ্ট এবং পরিপূর্ণ তথ্য যেমন, শ্রেণীবিভাগ, পরিভাষা, বিবরণ ইত্যাদি ছিল না। অন্ততপ েবেশীর ভাগ েেত্রই বর্ণনাগুলো মানুষের ভ্রূণীয় এবং ফিটাল ক্রমবর্ধনের বিভিন্ন ধাপগুলো নির্ধারিত হওয়ার এবং প্রচলিত বৈজ্ঞানিক সাহিত্যে আবিভর্ূত হওয়ার বহু পূর্বের।"
####Dr. Yoshihide Kozai, জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটির প্রফেসর। তিনি টোকিওর মিতাকায় অবস্থিত জাতীয় অ্যাস্ট্রোনমিকাল অবজারভেটরীর পরিচালক ছিলেন। তিনি বলেন: "আমি কুরআনে সঠিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের তথ্য পেয়ে চমৎকৃত,...। আমরা আমাদের প্রচেষ্টাকে নিবদ্ধ করেছি (মহাবিশ্বের) অতি ুদ্র অংশের পেছনে। কেননা টেলিস্কোপ ব্যবহার করে আমরা গোটা মহাবিশ্বকে নিয়ে চিন্তা করার পরিবর্তে আকাশের খুব সামান্য অংশই দেখতে পাই। তাই কুরআন অধ্যয়ন করে এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার মাধ্যমে আমি মহাবিশ্ব সংক্রান্ত অনুসন্ধানে ভবিষ্যত পথের সন্ধান পাই।"
ভাই,এরকম উদাহরন দিলে বিজ্ঞানের প্রায়সব কটা বিভাগে কুরআন তার মতামত ১৪০০ বছর আগেই দিয়ে রেখেছে।আর আজকাল বিজ্ঞানীরা পবিত্র কুরআন নিয়ে রীতিমত গবেষনায় ব্যাস্ত।আর এতে ও যদি কাজ না হয় তাহলে আপনি ডঃ মরিস বুকাইলির''দ্যা বাইবেল,দ্যা কুরআন এন্ড সাইন্স'' বইটি পড়লে আপনার জানার পরিধিটা আর ও অনেক বাড়বে আশা করি।আল্লাহ আমাদের সবাইকে বুঝার ক্ষমতা দান করবেন।
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:২৭
ঠাহর বলেছেন: “তিনি সৃষ্টি করেছেন রাত ও দিন এবং চাঁদ-সূর্য। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।” (সূরা আম্বিয়া -৩৩)
সেই সময় পৃথিবী কেন্দ্রিক জগতের ধারনা প্রচলিত ছিল। এখনো যদি পৃথিবী কেন্দ্রিক জগতের ধারনা প্রচলিত থাকতো, তাহলেও কি আপনি একইভাবে এই আয়াতের অর্থ করতেন? নাকি বলতেন, পৃথিবীর চারদিকে চাঁদ সূর্য যে ঘোরে সেই কথা এই আয়াতে বলা হয়েছে?
কোরানের ভেতর বিজ্ঞানের উপস্থিতি আপনি এমনভাবে ব্যাখ্যা করছেন যে, মনে হচ্ছে সেই সময় আরবের লোকজন পশু শিকার করে খেত, লজ্জা নিবারনের জন্য গাছের পাতা-বাকল পড়তো, মানুষ কিছুই জানতো না জগত সম্পর্কে! বিজ্ঞানের চমকপ্রদ ধারনাগুলো আল্লাহ ফেরেস্তার মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠিয়ে কিছুটা সভ্য করেছে!
আঙ্গুলের ছাপের ব্যবহার আপনি তুলনা করলেন
“মানুষ কি মনে করে যে, আমি তার হাড় সমূহ একত্রিত করব না ? বরং আমি তার আঙ্গুলগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম।” -সূরা কেয়ামাহ-৩-৪
-এই আয়াত দিয়ে!! আমি ক্ষমাপ্রার্থী ভাই! আপনার উদাহরন ও যুক্তিতে আমি কুপোকাত!
গনিতবিদ রামানুজানের নাম শুনেছেন? Click This Link
উইকিপিডিয়ার লিংক দিয়ে দিলাম, একটু কষ্ট করে পড়ে দেখবেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, তিনি গানিতিক সমাধানগুলো পেতেন তার পূজনীয় মহালক্ষী দেবীর কাছ থেকে। তাই বলে, এখন আপনি নিশ্চয়ই ধর্ম পরিবর্তন করবেন না!
আমার বক্তব্য ইসলাম বা কোরানকে সত্য বা মিথ্যা প্রমান করা নয়। বিজ্ঞান পরিবর্তনশীল বিষয়, আর ধর্ম বিশেষ করে ইসলাম ধর্মে বা কোরানে কোনোরকম পরিবর্তন-পরিবর্ধন নিষিদ্ধ। বিজ্ঞানের দীর্ঘ, জটিল কিন্তু চমকপ্রদ বিষয়কে যখন কোরানের অস্পষ্ট রূপক কোনো বানীতে উল্লেখ আছে বলে দাবী করা হয়, তখন সেটাকে অত্যন্ত হাস্যকর দেখায়। আপনি যেমন কোরানের সমর্থনে অনেক বিজ্ঞানীদের উদ্ধৃতি দিলেন, সেরকম অনেক বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীও আছেন যাদের কাছে কোরান মিথ্যা, অযৌক্তিক বা পৌরানিক গল্পসমগ্র। আমি সেইসব উদাহরন টানলে অনুভূতি আহত হতে পারে!
নিজের ইমানি শক্তির উপর সেইরকম Confidence থাকলে আরজ আলী মাতুব্বরের রচনাসমগ্র একটু পড়ে দেখবেন, আপনার যুক্তির তলোয়ার আরও শানিত হবে আশা করি।
ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য।
৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪
মহা সমন্বয় বলেছেন: তাই ধর্ম ও বিজ্ঞান আলাদাভাবে চর্চা করতে পারলে ভালো, না হয় যেকোনো একটি নিয়েই থাকা উচিত। ধর্ম দিয়ে বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব না। সহমত।
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন- বরং ইসলাম বিজ্ঞানকে এগিয়ে দিয়েছে শত হাজার বছর।
মারহাবা মারহাবা।
৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২১
মহা সমন্বয় বলেছেন: @কবি এবং হিমু - জ্বী ভাই আপনি ঠিক বলেছেন. বিজ্ঞান বুঝার জন্য আমাদের বেশি বেশি ধর্মান্ধ বিগিয়ানিদের বই পড়তে হবে। , জাকির নায়েক, ডা: ডঃ মরিস বুকাইলি, এলিস্টার ক্যাম্পেল, শ্রী গুরুপদ দাস এই সব ধর্মান্ধদের বই বেশি বেশি পড়তে হবে তাহলেই বিজ্ঞান বুঝা যাবে।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে বিজ্ঞান এবং যুক্তি হচ্ছে ধর্মের সবচেয়ে বড় শত্রু যদিও সবগুলো ধর্ম গ্রন্থই বিজ্ঞানের কোলে আশ্রয় নিয়ে বাঁচার শেষ চেষ্টা করতেছে। যেমন আপনি কি সুন্দর কোরানের মধ্যে বিগায়ান বের করছেন। একজন হিন্দু, খ্রিস্টান ও তাদের ধর্ম গ্রন্থ থেকে আপনার মতই বিগিয়ান বের করে বড় বড় বই লেখে। বিগিয়ান ময় বাইবেল, বিগিয়ান ময় গীতা, গনিতময় বেদ ইত্যাদি এরকম অন্ত্যত হাজার খানে বই আর লাখ খানে ওয়েব সাইট দিতে পারব। সেখানেও আপনার মত ওইরকম তাদের ধর্ম গ্রন্থ দ্বারা বিজ্ঞান চর্চা করা হয়।
বিশ্বাস নির্ভর কোন গবেষণাতেই প্রকৃত ফল পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায় তা হচ্ছে বিগিয়ান বিজ্ঞান নয় কিন্তু বিগিয়ান খেয়াল কইরা।
০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
ঠাহর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামতের জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তাই ধর্ম ও বিজ্ঞান আলাদাভাবে চর্চা করতে পারলে ভালো, না হয় যেকোনো একটি নিয়েই থাকা উচিত। ধর্ম দিয়ে বিজ্ঞান বা বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব না। - এই কথা দিয়ে আপনি পোষ্ট শেষ করলেও আপনি নিজেই কিন্তু তার চর্চা করলেন!!!
আপনি শিরোনামে দিলেন ধর্মের প্রচলিত টার্ম নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনের মাধ্যমে। তারপর মহাবিশ্বের সম্প্রসারনশীলতার তত্ত্বকে নিয়ে আলোচনা করে ক্লৌজিং দিলেন- ঐরকম।
আপনি নিজেই কি বিজ্ঞান মনস্ক?
তাহলে কোন সূত্রে স্থির থাকতেন না। কারন সবই নিত্য পরিবর্তনশীল!
আপনার সম্প্রসারনমীলতার মতবাদ ছাড়াও সংকোচন বাদের মতবাদও কিন্তু আছে ! বিগ ব্যাং বিগ ক্রাঞ্চ দুই ততত্ত্বই আলোচিত।
আবার ফিরে যাই কোরআনে- সেখানে কিন্তু এটাও আছে- আমি মহাবিম।বকে সংকুচিত করে আনছি। যেভাবে তোমরা লিখিত কাগজকে গুটাও।
আপনি বলবেন এটাতো বিজ্ঞান বিরোধী বা স্বীকৃত নয়। হ্যা। আপাতত নয়্ এর কারণও বহুবিধ। আপনি যে বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের আলো নিয়ে আজকে গবেষনা করছেন তা কিন্তু ঐ পথ পারি দিয়ে আসা পুরানো আলো। বিলিয়ন আলোকবর্ষ পার হওয়া।
এখন আসুন যখন রাসুল সা: ১৪০০ বছর আগে আল্লাহর ঐ আয়াত আবৃত্তি করলেন- ঐ ঘটান শুরু হয়ে গেছে! তার আলো আপনি হয়তো পাবেন অত বিলিয়ন আলোক বর্ষ পথ াপরি দিয়ে আসার পরেই! আবার যখন জানতে পারবেন তখন হয়তো প্রতিরোধ বা বাঁাচরও কোন সময় পাবেন না।
যে বর্ণনাও বিশদ বর্ণিত হয়েছে।
যখন মহাপ্রলয় শুরু হবে- তারা এতটুকু সময় পাবেনা। হাতে মাখা খাবার মূখ পর্যন্ত তুলতে পারবে না। বাজারে কাপড় খুলে দেখছে যে সে তার বন্ধ করার সময় পাবেনা। এই জাতীয় উপমা দিয়ে সেই দ্রুততম সময়ে ঘটা ঘটনা বোঝানো হয়েছে।
ধর্ম আর বিজ্ঞানকে আলাদা করেছিল মর্ধযুগের চার্চ। ইসলাম নয়। বরং ইসলাম বিজ্ঞানকে এগিয়ে দিয়ে শত হাজার বছর।
ভাল থাকুন।