নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঠাহর

ঠাহর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার টাইম ট্র্যাভেল

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৪৯

টাইম মেশিন কবে আবিষ্কার হবে কে জানে? বা আদৌও হবে কিনা! যদি আবিষ্কার হয়ও, অতীতে বা ভবিষ্যতে গিয়ে কোনো কিছু বদলানো যাবে কিনা, সেটা নিয়েও অনেক রকম তত্ত্ব আছে!
তবে ছোটবেলা থেকেই আমি একরকম টাইম ট্র্যাভেল করার চেষ্টা করি! এটা নতুন কিছু না। সবাই কম বেশি করে। তবে ছোটবেলায় আমি আমার টাইম মেশিনে করে শুধু ভবিষ্যৎ থেকেই ঘুরে আসতাম। যতো বড় হয়েছি, আমার ভবিষ্যৎ ভ্রমন কমেছে আর অতীত ভ্রমন বেড়েছে। এখন আর ভবিষ্যতে যাওয়ার চেষ্টা করি না। অতীতেই বেশি যাই।
এখন বলি, কিভাবে করি। এটা একধরনের মেডিটেশন! মনটাকে একদম শান্ত করতে হবে। অতীতে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সুবিধা হয়, কোনো অতি পরিচিত ঘ্রান যদি পাওয়া যায়। যেমন ছোটবেলায় মা যেসব ক্রিম, তেল, পাওডার বা কসমেটিক্স ব্যবহার করতো, সেগুলো যদি পাওয়া যায় খুব ভালো হয়। এসবের ঘ্রান নিয়ে সেই সময়কার কথা খুব গভীরভাবে ভাবলে ধুলো পড়া অনেক স্মৃতি জেগে উঠে। অনেক সময় অনেক গান বা সূরও একই অনুভূতি জাগাতে পারে। আবার কোনো ঠান্ডা বা বৃষ্টির কোনো পরিবেশও নস্টালজিক করে দিতে পারে। অতীতের কোনো একটা মুহূর্তকে লক্ষ্য করে, সেই মুহূর্তের সাথে জড়িত ঘ্রান, সূর বা আবহাওয়া যদি একসাথে করা যায়, তাহলে এক চমৎকার টাইম ট্র্যাভেল সম্ভব!
আমি এখন আর ভবিষ্যৎ ভাবি না। ব্যাপারটা এমন না যে আমি সবকিছু পেয়ে গেছি বা একদম ব্যর্থ হয়ে গেছি। আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতোই আমার জীবন সফলতা-ব্যর্থতায় ভরা। আমি ঘুরে বেড়াই আমার অতীতে। আমার স্কুলের ক্লাসরুমে, শীতকালে ভোরের কুয়াশায় স্যারের বাসায় ইংরেজি প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে, স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে ডাব চুরি করার মুহূর্তে, সাইকেল নিয়ে দূরন্ত গতিতে ছুটে চলায়, ক্রিকেট খেলায় হেরে যাওয়ার হতাশায়, কেউ আমার প্রেমে পড়েছে সেই অহংকারে, কারো প্রেমে পড়ার শিহরণে, বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবার খুশিতে! আমি অতীত ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখি, আমার বন্ধু-বান্ধবীদের দেখি, আমার স্যার ম্যাডামদের দেখি, আংকেল–আন্টিদের, আমার সাইকেল, ফুটবল, ক্রিকেট ব্যাট বল, স্ট্যাম্প, লাটিম সবকিছু দেখি, বার বার দেখি। দেখি আর শিহরিত হই, মোহিত হই।
আমার বয়স যতো বেড়েছে, অভিজ্ঞতা ততো বেড়েছে। ছোটবেলায় যখন ভবিষ্যতের কথা কল্পনা করতাম, অনেক অসম্ভব কল্পনাই করতাম। এখন আর অসম্ভব কল্পনা করতে পারি না। কারন ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখতে গেলে অনেক বাস্তব সমস্যাই সামনে এসে দাঁড়ায়। জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে সমস্যাগুলো দেখায়, ভীত আড়ষ্ট করে দেয়।
আমি আমার সন্তানের চোখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি! মাত্র দু’বছর হলো স্কুল শুরু করেছে। সবকিছু নিয়ে কি অসম্ভব উত্তেজনা, কি সজীবতা। আমি ভয়ে চোখ সরিয়ে নেই। মনে হয় আমি ওর সজীবতা শুষে নিচ্ছি। আমি মনে হয় একটু দ্রুতই বৃদ্ধ হচ্ছি। কোথায় যেন পড়েছিলাম কিছু কিছু বৃদ্ধ শিশু কিশোর যুবকদের সজীবতা প্রানশক্তি শুষে নিতে পারে আরও কিছুকাল বেঁচে থাকার জন্য! আমিও মনে হয় সেরকম এক বৃদ্ধে পরিণত হচ্ছি!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.