![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃতির এই বিশালত্বের মাঝে খুব সামান্য একজন।
চলুন ঘুরে আসা যাক কল্পনার এক রাজ্য থেকে, যে রাজ্যের নায়ক/নায়িকা হিসেবে কল্পনা করি নিজেকে------
কল্পনা করুন নিজেকে কোন এক মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন হিসেবে যার অনেক কিছুই করার সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই। বাস করেন আপনি রাজশাহীতে। কোন একটি কাজে আপনি এসেছেন ঢাকাতে। কাজ শেষ। এখন ফিরে যাবার পালা। রাতের ট্রেনে ফিরবেন আপনি রাজশাহীতে। নির্ধারিত সময়ের একটু আগেই আপনি পৌছালেন কমলাপুর রেলষ্টেশনে। ট্রেন ছাড়তে এখনো অনেক দেরি। সময় কাটানোর জন্য ঘোরাফেরা করছেন এদিক, ওদিক, এ প্লাটফর্ম, ও প্লাটফর্ম। ষ্টেশনে অবস্থিত বইয়ের স্টল গুলোতে ঘুরছেন আপনি, চোখ বুলাচ্ছেন এ বইয়ে ও বইয়ে। পুরো ষ্টেশন জনে লোকারন্য। কাউন্টারে টিকেট প্রত্যাশিদের ভিড়। আশে পাশে বেশ কিছু খাবারের দোকান যেখানে ভীড় জমিয়েছে অপেক্ষারতরা।
প্লাটফর্মে ঢোকার মুখেই একটি কফিশপ, তার বামে একটি বুকস্টল, তার বামে খানিকটা ফাঁকা জায়গা, তারপরেই আরো একটি বুকস্টল। মাঝের ফাঁকা জায়গাটাতে সাময়িক ভাবে বসেছে নতুন একটি কফিশপ, যার পাবলিসিটি বাড়ানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে একটি অল্পবয়স্ক মেয়ে কিনা অত্যন্ত টাইট জিন্স , টাইট টি-শার্ট পরিধান করে বিভিন্ন রকম ছলাকলা করে মানুষজনকে তাঁর দিকে , তাঁর দোকানের দিকে আকৃষ্ট করতে সদা তৎপর। আপনি হাটছেন আর দেখছেন। দেখছেন মানুশের ব্যস্ততা, হাটার ভঙ্গি, কথা বলা, মুখের চাহনি, আকর্ষনীয় মেয়ে অথবা হ্যান্ডসাম ছেলে। ট্রেন আসতে এখনো অনেক বাকি। আপনি ঘড়ি দেখছেন আর দেখছেন চারপাশের মানুষ। কফিশপ দুটোতে ভালোই ভিড় জমেছে। মাঝের কফিশপ টাতে অতি স্মার্টদের ভিড় লক্ষনীয়।
হঠাৎ করে আপনার খুব কফি খেতে ইচ্ছা করল। এতক্ষন ধরে যে ইচ্ছাটাকে দমিয়ে রেখেছিলেন তাকে আর চেপে না রাখতে পেরে গুটি গুটি পায়ে হেটে চললেন কোনার কফিশপটার দিকে। বিভিন্ন রকম কফি। আপনি দাম দেখছেন আর চিন্তা করছেন পকেটের অবস্থা। হঠাৎ আপনার নজর গেল দুটি অর্ধনগ্ন বাচ্চার দিকে যারা প্রচন্ড আগ্রহ নিয়ে কিছু একটা ধরে রেখেছে। আপনার কৌতুহল হল। এগিয়ে গেলেন কিছুটা। মনের ভাবটা এমন যে, "দেখে আসি একটু, কফি একটু পড়েই খাওয়া যাবে।" তারপর আপনি যা দেখলেন , তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেননা আপনি। আপনি দেখলেন , বাচ্চা দুটি একটি চটের ব্যাগ থেকে বের করলো একটি পলিথিন যার ভেতর আধা হলুদ রঙের ভেজা ভেজা কিছুর অস্তিত্ব বোঝা যাচ্ছিল বেশ। তারা গিয়ে বসলো এক কোণায়। তারপর পলিথিনের মুখ খুললো। একটি ছেলে তার নোংড়া হাতটি ঢুকিয়ে দিল ব্যাগের ভেতর। তাঁর চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে আছে।
হাতটা সে বের করলো এবং মুখে পুরলো। আপনি এতক্ষনে বুঝলেন সেটা কি!!!!!!!!!!! ব্যাগের ভেতরের বস্তুগুলো আসলে মানুষের ফেলে দেওয়া ঝোল মিশ্রিত খাবারের অংশ। বাচ্চাদুটি সেগুলোকেই সংগ্রহ করেছে তাদের উদর পূর্তি করার জন্য। খুব আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে ছেলে দুটি। একজন ব্যাগের ভেতর থেকে হাত বের করলে আরেকজন হাত দেয়। এভাবেই পরম তৃপ্তির সাথে চলছে তাদের রাতের খাওয়া। হঠাৎ কোথাথেকে ছুটে এল আরেকটি ছোট্ট বাচ্চা। সে গভীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে অন্য দুজনের দিকে, তাদের খাবারের ব্যাগের দিকে। ছেলেদুটি তাকে একবার নিতে দিল। সেও পরম আগ্রহে মুখে তুলে নিল এক গ্রাস। খাবার শেষের দিকে। আর মাত্র দু-তিন বার নিলেই শেষ। তৃতীয় ছেলেটি ব্যাথাতুর নয়নে তাকিয়ে আছে সেদিকে। তাই দেখে ছেলে দুটি ব্যাগটি ফেলে রেখে নোংড়া প্যান্টে হাত মুছতে লাগলো। তাদের চোখে উদর পূর্তির তৃপ্তি খেলা করছে। আর তৃতীয় ছেলেটি ঝাপিয়ে পড়েছে সেই ব্যাগের উপর। অবশিষ্ট যা কিছু ছিল তা সে চেটেপুটে শেষ করে হাত মুছতে মুছতে চলে গেল।
আপনার এতক্ষনে সংবিৎ ফিরলো। মনের ভেতর চলছে এক ধরনের উথাল-পাথাল ভাব। আনমনে হেটে চলছেন আপনি কফিশপের দিকে। ...................................................................................................................................................................................
আচ্ছা , আপনি কি সেদিন কফি খেয়েছিলেন? জিজ্ঞাসা আপনার প্রতি। নিজের প্রতি সৎ থেকে নিজের উত্তরটা না হয় নিজেই খুঁজে নিন।
ভালো থাকুন সবাই। সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক। শুভময় হয়ে উঠুক প্রতিটি মুহূর্ত।
২১ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭
বটের ফল বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ মামুন রশিদ ভাই। একই সাথে দুঃখিত অনিচ্ছাকৃত ভাবে দেরিতে উত্তর দেওয়ার জন্য।
সম্ভবত, কিন্তু আসলেই কি তাই? আমার কি মনে হয় জানেন, বারবার দেখতে দেখতে আমাদের (মানুষদের) অনুভুতি গুলো অনেক ভোঁতা হয়ে গেছে!!!!!!!!!!
কি জানি।
অনেক অনেক ভালো থাকবেন মামুন ভাই। ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা থাকলো।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
নাঈম মাহমূদ বলেছেন: কী বলব ভাই, আমি নগন্য মানুষ! কল্পনার রাজ্যে থাকতে হলে, তার ব্যাপ্তি হতে হয় বিশাল। এমনভাবে উপস্থাপন করে মাঝে খেয় হারিয়ে ফেললেন। চেষ্টার জন্য শুভকামনা।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৫
বটের ফল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে নাঈম মাহমুদ ভাই। আমিও আসলে একজন নগন্য মানুষ। আমার কল্পনার রাজ্যটা খুবই সীমিত। তার ভেতরেই যা একটু চেষ্টা আরকি ।
অনেক বেশি ভালো থাকবেন । নতুন নতুন লেখার প্রত্যাশায় থাকলাম।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:১৭
মামুন রশিদ বলেছেন: আবুল তাবুল কল্পনা ছুঁয়ে গেল । না, মানুষ হলে এই দৃশ্য দেখার পর কফি পান সম্ভব না ।