সফল ব্যক্তিদের গল্প ও উপাখ্যান

১১ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮

।। শার্ট বিক্রি করে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধনী অ্যামেচিও ওর্তেগা ।।।



পড়াশোনায় খুব বেশি এগোতে পারেননি তিনি। কেবল হাতেখড়ি হয়েছিল মাত্র। এর পরই ১৩ বছর বয়সে লেখাপড়ার পাট চুকিয়ে শার্টের দোকানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ নেন আজকের শীর্ষ ধনী অ্যামেচিও ওর্তেগা।



বিশ্বসেরা ধনীদের তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করা ওর্তেগার এই উত্থানটাকে বিস্ময়করই বলা চলে। সাফল্যের দেখা পাওয়ার পর অনেকেই নিজের সেরা হওয়ার গল্প বলতে অপছন্দ করেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একেবারেই অকপট ওর্তেগা। সব সময় নিশ্চুপ থেকেছেন। কেবল কাজ করে গেছেন। সুযোগ এলে পুরনো দিনগুলোর কথা মনে করেছেন একাকী। নিশ্চুপ থেকে নিজের ব্যবসাকে ছড়িয়েছেন ৮০টিরও বেশি দেশে। ৪০ বছর ধরে ফ্যাশন ব্যবসাকে জনপ্রিয় করেছেন বিশ্বব্যাপী। ৭৬ বছরের উদ্যমী-উদ্যোগী এ মানুষটি ইন্ডিটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। তাকে আধুনিক ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির কিং বলা হয়।



স্পেনের গ্যালিচিয়ার একটি ওয়ার্কশপ থেকে শুরু করে 'জারা' ব্র্যান্ডের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে নতুন ডিজাইনের পোশাক উপহার দিয়েছেন। আর বিনিময়ে পারিশ্রমিক হিসেবে অর্থ উপার্জন করে বিল গেটসের পরের স্থানেই নিজের জায়গা করে নিয়েছেন।



ওর্তেগার জন্ম ১৯৩৬ সালে, নর্থ স্পেনে। বাবা রেলওয়ে বিভাগে শ্রমিক ছিলেন। মা বিভিন্ন বাসায় কাজ করে অর্থ উপার্জন করতেন। এমনই দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছেন ওর্তেগা। কিন্তু পড়াশোনায় ছোটবেলা থেকেই আগ্রহী ছিলেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়স থেকেই অর্থের অভাবে বিভিন্ন ধরনের শ্রমিকের কাজ করতে হয়। কিন্তু কখনো কোনো কাজকে ছোট করে দেখেননি। তিনি 'গালা' নামে এক দোকানে চাকরি নেন। সেখানে শার্ট, মৎস্যজীবীদের ক্যাপ ছাড়াও বিভিন্ন জিনিস পাওয়া যায়।



১৩ বছর বয়সে শার্টের দোকানে কাজ নেওয়া ওর্তেগা অসাধারণ মেধা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ শুরু করেন। খুব অল্প বয়সেই ব্যবসার খুঁটিনাটি নানা দিক নিজের দখলে চলে আসে তার। সেই কাজে থাকার সময়েই নিজের একটা দোকানের কথা ভাবতেন মনে মনে। খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হলো না। নিজের অসাধারণ মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে মাত্র চার বছরের মধ্যেই তিনি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম দিকে তার কাজ ছিল কেবল পাইকারি অর্ডার নেওয়া। ১৯৭৫ সালে লা চরুনা শহরে সর্বপ্রথম 'জারা' নামে একটি শোরুম খোলেন ওর্তেগা। ধীরে ধীরে আরও বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা সম্প্রসারিত করেন। ১৯৮৮ সালে পর্তুগালে আরেকটি শাখা খোলেন। পরের বছর শোরুম খোলেন আমেরিকায়।



শুরুটা একেবারে জিরো থেকে ছিল ওর্তেগার। সেই ৪০ বছর আগের কথা। অবশ্য অগোছালো শুরু তিনি করেননি। বেশ ভেবেচিন্তে এবং বুঝেই শার্ট বিক্রি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়েছিলেন। সে সময় যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, তা আজ প্রায় ৪০ বছর পর অঢেল সম্পত্তি ও ব্যবসায়িক সাফল্য হিসেবে ফিরে এসেছে। তার প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও ব্যবসা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সর্বশেষ ২০১২ সালের অক্টোবরের হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে এক হাজার ৭২১টি শোরুম আছে জারার। জারা হলো ইন্ডিটেক্স ব্র্যান্ডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। ইন্ডিটেঙ্রে মালিকও ওর্তেগা। সব মিলিয়ে ৮৬টি দেশে ইন্ডিটেক্স ব্র্যান্ডের ছয় হাজার শোরুম রয়েছে।

১। ওর্তেগা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন :

Click This Link



নুডলস বিক্রেতা থেকে কোটিপতি



মাওবাদীদের তৎপরতা আর দারিদ্র্যের কশাঘাতে পিষ্ট নেপালের অর্থনৈতিক অবস্থাতেমন উল্লেখ করার মতো নয়। তবে

সেখানকার প্রথম বিলিয়নিয়ার বিনোদ চৌধুরী (৫৭) সব ধরনের বাধাকে উপেক্ষা করে নিজ গুণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সফলতার স্বাক্ষররেখেছেন। তিনি নুডলস বিক্রেতা থেকে হয়েছেন কোটিপতি। বলেন, তরুণপ্রজন্মের মধ্য থেকে এখানেও যে কিছু করা সম্ভব সেটা আমি প্রমাণ করেছি। পারিবারিক আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা দেখাশোনা করার দায়িত্ব পালনকারী বিনোদ চৌধুরী বলেছেন, অল্প সময়ের মধ্যে নেপালে বড় ধরনের সাফল্যের সুযোগ রয়েছে। তিনি এখন তার পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চৌধুরী গ্রুপের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের আতিথেয়তা, রিয়েল এস্টেট, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সিমেন্টের ব্যবসা সিঙ্গাপুরসহ বেশ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত রয়েছে। তবে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ওয়াই ওয়াই নুডলসের কারণে। ১৯৮০-এর দশকে নেপালে এই নুডলসের যাত্রা শুরু হয়। ২০০৫ সালে এটি ভারতে রপ্তানি শুরুর পর এখন তা এশিয়ার ৩০টি দেশে বিক্রি হচ্ছে।



এ মাসের শুরুতে তিন সন্তানের জনকবিনোদ চৌধুরীকে ফোর্বস প্রথম নেপালি বিলিয়নিয়ার হিসেবে ঘোষণাকরে। ফোর্বসের এ স্বীকৃতি তার কাছে অনেকটা নোবেল বিজয়ের মতোই আনন্দ ও গৌরবের। ভারতের আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবি শংকরকে রোল মডেল হিসেবে অনুসরণকারী বিনোদ চৌধুরী বলেছেন, আজকের অর্থনীতি হচ্ছে একটি চিন্তাধারার অংশবিশেষ। অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পন্ন কোন রাষ্ট্রে চিন্তাধারার কোন মনোপলি নেই। নেপাল থেকেও এ ধরনেরঅনেক চিন্তাধারার উন্মেষ ঘটতে পারে।

২ টি +০/-০