![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত ১ ডিসেম্বর দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকার ব্র্যাক ক্লিনিকের তৃতীয় তলা থেকে সাদিয়া আফরীন ইভা (২৭) নামে এক চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ, যাকে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার পর হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করার পর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস পার্ট-১ করছিলেন ইভা। পাশাপাশি ওই ক্লিনিকে খণ্ডকালীন চিকিৎসক হিসেবেও কাজ করতেন তিনি। ইভার বাবা মনিরুল ইসলাম পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আদালতে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। ইভা হত্যাকাণ্ডের পর গ্রেপ্তার করা হয় ব্র্যাক ক্লিনিকের কেয়ারটেকার ফয়সালকে, আদালতে তিনি দোষ স্বীকারও করেছেন।
এই পোস্টটি ইভাকে উৎসর্গ করা হল
****************************************************
ধর্ষণ করে একজনে বা কয়েকজনে, আর ধর্ষণ উপভোগ করে সমগ্র জাতি। শুধু পুরুষরা নয়- জাতির মেয়েরা, মহিলারা এবং সাদা চুলের থুত্থুরে বুড়িরা। ধর্ষক বুক ফুলিয়ে, কলার উঁচু করে বীরের বেশে এলাকায় ঘুরে বেড়ায় আর ধর্ষিতার স্থান হয় নির্জন ঘরের কোনে- যদি সে বেঁচে থাকে!
শারীরিক ধর্ষণের পরে শুরু হয় মানসিক ধর্ষণ। পত্রিকার পাতায়, কলামে কলামে, থানায় পুলিশের ডাইরিতে, আদালতে অসভ্য উকিলের আপত্তিকর জেরায়। দিনের পর দিন সে ধর্ষিত হতে থাকে পাড়ার বুড়োদের চায়ের আড্ডায়, বুড়ি এবং ছুড়িদের মুখে মুখে কিংবা কে এফ সিতে- পিঁজা হাটে বান্ধবীর জন্মদিনে অথবা পাড়াতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে। ধর্ষক রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেয়। রসিয়ে রসিয়ে ধর্ষণের বর্ণনা করে, মেয়েটা কেমন স্বাদের ছিল- কেমন করে বাধা দিয়েছিল এবং সে কেমন ধরনের আসল পুরুষ(!) সবিস্তারে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সেই গল্প করে। একটা অসহায় মেয়ের শরীর তখন সমাজের সবার ভোগে লেগে যায়। মোবাইল থেকে মোবাইলে ভিডিও ঘুরতে থাকে। পত্রিকার সম্পাদক রসিয়ে রসিয়ে ধর্ষণের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দেন। সেখানে ধর্ষিতার বয়স উল্লেখ থাকে, স্কুল কলেজের পরিচয় উল্লেখ থাকে, থাকে না শুধু ধর্ষকের একটা স্পষ্ট ফটো কিংবা ভাল করে পরিচয়। এক ফাকে টুপ করে ঢুকিয়ে দেয়া হয় কোন ওয়েবসাইটে সেই ভিডিওর খোজ পাওয়া যাবে সেই খবর।
সেই গল্প শুনে, ভিডিও দেখে সারাদেশের আরো অনেক পটেনশিয়াল ধর্ষকের পুরুষত্ব জেগে ওঠে। না আর থাকা যায় না, এইবার একটা ডাঁসা মাল চাই! তাদের ঠোটের দুই কোন দিয়ে এবং অন্য অনেক জায়গা নিয়ে কুৎসিত লালা ঝরে। অশ্লীল চোখগুলো ক্রমাগত ঘুরে ফিরে যায় রাস্তা দিয়ে চলন্ত স্কুলগামী ছাত্রীর দিকে, পুকুরে গোসল-রত কিশোরীর দিকে কিংবা বাসে হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা মাঝবয়েসী মহিলার দিকে। শুধু একটা সুযোগ দরকার তার!
আর সেই মেয়েটি?
তাকে আস্তে করে ঝুলে পড়তে হয় গলার সাথে দড়ি বেধে। এ সমাজ তাকে জোর করে সেদিকে ঠেলে দেয়। বেচে থাকতে বাবা তাকে বকে, মা তাকে অবজ্ঞা করে, ভাই-বোন করে ঘৃণা। পাড়া প্রতিবেশী দিনের পর দিন তার চরিত্রের কলুষতা এবং পঙ্কিলতা নিয়ে খোটা দেয়। সবাই মিলে ধর্ষিত মেয়েটার জীবনটাকে একটা বিভীষিকা বানিয়ে দেয়। স্কুলের স্যার তাকে অশ্লীল ইংগিত করে, বান্ধবীরা সংগ পরিত্যাগ করে। সবার চোখে, মুখে, আচার- আচরণে, কথায় এবং কাজে একটাই ইংগিত থাকে- ” তুই ধর্ষিতা, তুই পতিতা, তুই চরিত্রহীনা- তুই মর। ”
ধর্ষক এরকম আরো অনেক অনেক প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য ধর্ষণ শেষে সানাই বাজিয়ে বিয়ে করে নিয়ে আসে। মেয়ের বাবা আনন্দের সাথে মেয়ে বিয়ে দিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে। শুধু ধর্ষিতা মেয়েটিকে বিয়ে দেবার জন্যে কোন ছেলে পাওয়া যায় না।
আমি নটরডেম কলেজের ছাত্র ছিলাম। কলেজের একজন বিখ্যাত স্যারের বাংলা ক্লাস করার সৌভাগ্য হয়েছিল। প্রথম ক্লাসেই উনি আমাদের বলেছিলেন-” তসলিমা নাসরিন বলে, ছেলেরা যদি মেয়েদের ধর্ষণ করতে পারে, তাহলে মেয়েদেরও উচিত ছেলেদের ধর্ষণ করা। মহিলাকে যদি আমি পেতাম তাহলে তাকে জিজ্ঞেস করতাম, আপনার তো “ওটা” নেই। ওটা না থাকলে আপনি কি দিয়ে করবেন?
বাহ! কি চমৎকার!!
তোমার “ওটা” আছে- তোমাকে আর পায় কে? ওটা যেখানে-সেখানে যেভাবে পারো জোর করে কিংবা বুঝিয়ে শুনিয়ে ঢুকিয়ে দাও। পরম উল্লাসে ধর্ষণ করো। তুমি পুরুষ- তোমার ওটা আছে, তুমি মহাশক্তিধর, বীরপুঙ্গব। মেয়েদের তো আর ওটা নেই- তারা তোমার কিচ্ছু করতে পারবে না। তারা তোমার সাথে শক্তিতেও পারবে না। শুধু পারবে নীরবে চোখের জল ফেলতে। তাতে তোমার মত “ওটা” ওয়ালা পুরুষের কি আসে যায়?
দিনের পর দিন এই বিষ কিশোর মস্তিষ্কে ঢুকেছে। আমার ওটা আছে বলে ধর্ষণ করা একটা কনজেনিটাল রাইট আমি নিয়ে এসেছি এই ভেবে পুলকিত হয়েছি। ঐ ব্যক্তির ক্লাস করার জন্যে, তা অশ্লীল, আপত্তিকর এবং তীব্র লিংগবৈষম্যমূলক জোকস শোনার জন্যে সাগ্রহে অপেক্ষা করেছি। তারপর এক সময় নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি- সেদিন থেকে আর তাকে শ্রদ্ধা করি নি। সবাই বুঝতে পারে নি। তাদের কারো কারো মাথায় এখনো সেই বিষ ডাল-পালা গজিয়ে বড় হচ্ছে।
সারাদেশে এরকম হাজার হাজার শিক্ষক আছেন। যারা শুধু মুখের কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকেন না। সেই কথাকে বাস্তবে প্রমাণেও সচেষ্ট থাকেন। আর তাদের লালসার স্বীকার হয় কিন্ডারগার্টেনের শিশু থেকে শুরু করে কলেজে পড়ুয়া কিশোরী কিংবা ভার্সিটির উচ্চশিক্ষিত যুবতী মেয়ে। আমাদের স্কুলেই এরকম এক শিক্ষক ছিলেন যার কাজ ছিল পড়া না পারলে চুল সরিয়ে মেয়েদের পিঠে থাপ্পড় মারা কিংবা পেটে গুঁতো দেয়া। তার অন্যতম আরেকটা প্রিয় কাজ ছিল লিখতে দিয়ে মেয়েদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে কামিজের উপর দিয়ে বুকের দিকে তাকিয়ে থাকা। অনেকবার কমপ্লেইন করেও তার বিরুদ্ধে কোন একশন নেয়ানো যায় নি। ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাথে তার ভাল খাতির ছিল।
একটা মেয়ের জন্যে কেউ নিরাপদ না। শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধু, বয়-ফ্রেন্ড, এলাকার ছেলে, আত্মীয়- পুরুষ, চাচা-মামা-খালু, দুলাভাই এমনকি ক্ষেত্র বিশেষ নিজের বাপ-ভাই ও না। কর্মক্ষেত্রে কলিগ, অফিসের বস- সুযোগ পেলেই মিষ্টি হাসি ঝেড়ে ধর্ষকের রূপ ধরতে মুহূর্ত দেরি করেন না। বাসের হেল্পার, ক্যান্টিনবয়, হাসপাতালের ঝাড়ুদার, বাসার দারোয়ান কিংবা অফিসের পিয়ন- ওটার ব্যবহারে কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে থাকতে রাজী নয়।
ধর্ষিতার পক্ষে কেউ থাকে না। ধর্ষকের পক্ষে সবাই।
প্রশাসন, মিডিয়া, সমাজ কিংবা রাষ্ট্র একযোগে কাজ করে ধর্ষককে বাঁচানোর জন্যে। তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হয় না। থানার ওসির সাথে প্রতিদিন তার মোলাকাত হলেও গ্রেফতারের জন্যে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বাই এনি চান্স গ্রেফতার হলেও বড়- ছোট এবং মাঝারি পাল্লার সুপারিশের ধমকে কয়েক ঘন্টার বেশি তাকে হাজতে থাকতে হয় না। হাজত থেকে বেরিয়ে এসে ধর্ষিতার পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দেয়া চলতে থাকে যাতে মামলা তুলে নেয়া হয়। এমনকি ধর্ষণের মামলা থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফিরে এসে সেই মেয়েকে তার ছোটবোনসহ পুনরায় ধর্ষণের ঘটনাও এই দেশে ঘটেছে।
দিল্লীর ধর্ষণের ঘটনার শিকার মেয়েটা আজ মারা গেল। পাবলিক বাসে ধর্ষণের ঘটনার চেয়েও বর্বর ঘটনা এই দেশে আছে। যে দেশের পুলিশ স্বয়ং থানা হাজতে ধর্ষণ করে বন্দিনীকে হত্যা করে ফেলে তাদের উদাহরণের জন্যে দিল্লী যাবার দরকার হয় না।
ভিকারুন্নেসার পরিমল জয়ধর দিনের পর দিন ধরে বাচ্চা একটা মেয়েকে, তার ছাত্রীকে নিজের কক্ষে ধর্ষণ করেছে। সেই ঘটনা প্রকাশ হবার পরে অধ্যক্ষা হোসনে আরা ঘটনাকে মিউচুয়াল সেক্স বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বামপন্থী এবং আদর্শবাদী নেতাকে কোন বিবৃতি দিতে দেখা যায় নি। বার বার যোগাযোগ করেও একজন বুদ্ধিজীবীর কাছ থেকে কোন কলাম বের করে আনানো যায় নি। সাধারণ ব্লগাররা নিজেদের উদ্যোগে আন্দোলন করেছে। স্কুলের বাচ্চা মেয়েরা নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে নিজেরা মাঠে নেমেছে। সেই আন্দোলনকে এইসব মিডিয়া, এই সব স্বার্থ-বাজ, মতলববাজ নারীবাদী মুন্নী সাহারা জামাত-শিবিরের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছে। টিভি চ্যানেলের লাফাঙ্গা সাংবাদিক আন্দোলনের সংবাদ কভার করার বদলে প্রকাশ্যে মেয়েদের দেখে নেবার হুমকি দিয়েছে।
কেউ সেদিন কারো থেকে পিছিয়ে ছিল না। প্রথম আলোতে বেশ জোর দিয়ে ছাপা হয়েছিল ধর্ষণের সময় ধর্ষিতা ছাত্রীটির স্কার্ট এবং টপস পড়ে থাকার কথা। ভাবখানা এমন যে মেয়েটি স্কার্ট পড়ে থাকার কারনেই তাকে ধর্ষণের স্বীকার হতে হয়েছিল। মডার্ন ফ্যাশনের নামে টি- শার্ট আর হাঁটু পর্যন্ত শর্টস পরা এন্তার মেয়েদের ফটো নকশাতে এ পর্যন্ত ছাপা হয়েছে। অন্যকে বদলাতে বলার আগে বারাক ওবামার স্লোগান চুরি করে বদলে দাও আন্দোলনের স্বঘোষিত পথপ্রদর্শকদেরই মনে হচ্ছে আগে বদলাতে হবে।
কার কথা বলবো, কেউ পিছিয়ে থাকে না।
এবার বাড়ি গিয়ে শুনি আমার এক সাবেক ক্লাসমেটের নাকি গোপন ভিডিও বের হয়েছে। বের করেছে তার সাবেক স্বামী। সেই গল্প আমার কাছে করতে আসলো আমাদেরই আরেক ক্লাসমেট। এলাকার সবার মোবাইলে মোবাইলে সে ক্লিপ। মুখরোচক আলোচনা। কিন্তু ধর্ষক এবং লম্পট ছেলেটাকে দুটো চড় বসিয়ে দেবার মত কেউ এলাকায় নেই। বীর বাঙ্গালীদের শক্তিশালী হাত শুধু ছোট বাচ্চা ক্ষিদের জ্বালায় একটা রুটি চুড়ি করলে কিংবা পকেটমার ধরা পড়লেই শক্ত হয়।
নিউমার্কেটে দিনে দুপুর বেলায় ঢাকার এক বিখ্যাত কলেজের পরিচয়ধারী এক ছেলে একটা মেয়েকে চড় মারে। কারন হলো মেয়েটা ছেলেটাকে স্টুপিড বলেছে। কেন স্টুপিড বলেছে তার কারন হলো ছেলেটা ভিড়ের সুযোগে মেয়েটাকে ধাক্কা মেরেছে এবং শরীরে হাত দিয়েছে। কিন্তু উপস্থিত জনতা ছেলেটাকেই সাপোর্ট করে এবং একটা বখাটের হাতে শারীরিক ভাবে নিগৃহীত হয়ে, থাপ্পড় খেয়েও মেয়েটা স্যরি বলতে বাধ্য হয়। আমার যে ফ্রেন্ডটা ওখানে ছিল তার ভাষায় ছেলেটা অমুক কলেজের। কে তার সাথে লাগতে যাবে?
হাজার খানেক মানুষ এক বখাটের ভয়ে থরহরি কম্পমান। এই না হলে বীর বাঙ্গালী- অস্ত্র ধরেই যারা দেশ স্বাধীন করে ফেলেছে। তারপর সেই অস্ত্র অতল দরিয়ায় নিক্ষেপ করেছে। শত অন্যায়েও এখন তার গলায় স্বর বের হয় না।
ঘেটুপুত্র কমলা ম্যুভিটিতে হুমায়ুন আহমেদ একটা চমৎকার উপমায় আমাদের মানসিকতা ফুটিয়ে তুলেছেন। জমিদারের টাকা আছে সে ঘেটুপুত্র রাখে। কিন্তু তার ঘোড়ার দেখাশোনার জন্যে যে লোক তার টাকা নেই বলে সে ঘেঁটু রাখতে পারে না। কিন্তু ঘেটুছেলের দিকে সেও লোভী নজর দেয়। মনে মনে স্বগতোক্তি করে টাকা হলে সেও ঘেঁটু রাখবে।
আমরা একটা ধর্ষক জাতি। একটা অসভ্য এবং বর্বর জাতি। এই দেশে ভার্সিটিতে ছাত্রনেতারা প্রকাশ্যে ক্লাসমেট, জুনিয়র কিংবা সিনিয়র মেয়েদের ধর্ষণ করে। কেক কেটে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করে। এক অপ্রকাশিত নেতার কাহিনী শুনেছিলাম। মেয়েরা তার কাছে ধর্ষিত হতে আসতো। কারন সে যাকে টার্গেট করতো তাকে ধর্ষিত হতেই হতো অথবা ভার্সিটির পড়াই বাদ দিয়ে দিতে হতো। তারচেয়ে চুপে চুপে একবার তার কাছে এসে ধর্ষিত হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ ছিল, অন্তত লোক-জানাজানি হতো না তাতে। মেয়েরা কার কাছে বিচার চাইবে? শিক্ষকের কাছে? তারাই তো রুমে ডেকে নিয়ে ছাত্রী ধর্ষণে লিপ্ত। মন্ত্রীদের কাছে? এই দেশের কলেজের মেয়েদের তো তাদের কাছে উপঢৌকন হিসেবেই পাঠানো হয়। শরীরের বিনিময়ে মিলে পার্টিতে পদ কিংবা হলে সিট।
পুরুষতান্ত্রিকে এই সমাজে অধিকাংশ পুরুষের ভেতরে একটা করে ধর্ষক লুকিয়ে আছে। সময় এবং সুযোগে কারোটা বেরিয়ে আসে। অনেকের সে সুযোগ মেলে না। তার ধর্ষণ হয় পরোক্ষ। সে যে কাউকে ধর্ষণ করে নি, সে জন্যে শুধু পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগের অভাবই দায়ী। তার কোন ভাল মানুষী না।
উন্নত দেশেও ধর্ষণ হয়, অপরাধ হয়। তবে সে দেশে অপরাধের অন্তত বিচার হয়। আমাদের দেশেও অপরাধ হয়- অপরাধী রাজার হালে বুক ফুলিয়ে ঘোরে। কোন বিচার হয় না। উলটো ক্ষেত্র-বিশেষে পুরস্কার জোটে। এটাই তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য।
এই লেখাটা লিখতে আমার দুইদিন সময় লাগছে। প্রচুর ভাবতে হয়েছে। কষ্ট করে টাইপ করতে হয়েছে। সময়টার বৃথা ব্যবহার, পৌরুষের নিদারুণ অপচয়। এরচেয়ে একটা ধর্ষণ করে ফেলা এই দেশে অনেক সহজ। ইচ্ছে হলো, টার্গেট করলাম, করে ফেললাম। সাথে বোনাস হিসেবে খ্যাতিটাও জুটত।
(মিজানুর রহমান পলাশ
বুয়েট, ঢাকা
[email protected])
একটা এড ছিল-” টাকা রি-চার্জ যখন এতো সহজ- কথা বলবে না কেন?”
একটু মডিফাই করে বলতে পারি- “ধর্ষণ যখন এত সহজ, করবে না কেন?”
তাই আসুন আমরা সবাই একতাবদ্ধ হয়ে ধর্ষণ করি। আমরা মস্তিষ্ক-যুক্ত মানুষ না হয়ে লিংগযুক্ত পুরুষ হই, আসল পুরুষ হই!
বহুত পুরাতন জিনিস। তাও বলি-
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে
তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৫০
চাঁদপুরের চাঁদ বলেছেন: ফেইসবুকের একটি ‘নোট’ আমলে নিয়ে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের বেঞ্চ চিকিৎসক ইভা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে রাষ্ট্র ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চেয়ে ওই আদেশ দেয়। অবশ্য লিখিত কোনো আবেদন ছাড়া উচ্চ আদালত আদেশ দিতে পারে কি-না, তা নিয়ে দেশের আইন অঙ্গনে বিতর্ক রয়েছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ মাহমুদুল ইসলাম তার ‘কনস্টিটিউশনাল ল’ অব বাংলাদেশ’ বইয়ের সর্বশেষ সংস্করণেও এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেছেন।
ওই বইয়ে তিনি বলেন, সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুসারে রিট এখতিয়ারে আদালত সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির লিখিত আবেদন ব্যতীত আদেশ দিতে পারে না। গত বছর ওই বইয়ের সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশিত হওয়ার পর সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম বলেন, “আমরা এটা সংবিধানে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির লিখিত আবেদনের কথা লিখেছিলাম ঠিক আছে। “তবে ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত যে কোন কিছুকে লিখিত আবেদন হিসাবে বিবেচনা করে আদেশ দিতে পারে।”
আইনজীবী জেসিকা ইরফানের সেই নোট
মোট ছয়টি প্রশ্ন রাখা হয়েছে এই নোটে। যেখানে ব্র্যাক, বুড়ো বাবা-মার প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছেন, যা হুবহু তুলে দেয়া হলো।
এক. ব্র্যাক দক্ষিণ খান ক্লিনিকের কি কোন দায়িত্ব ছিল না আমার জীবন সম্ভ্রমের নিরাপত্তা দেবার ? এই ব্যপারে আইন আমার পরিবার কে কি সাহায্য করতে পারে ?
দুই: আমার জীবনের মূল্য কতো ? কে পরিশোধ করবে এই মূল্য আমার পরিবারকে ? কারণ আমারই তো আমার বুড়ো বাবা মা বোন কে দেখাশোনা করার কথা ছিল।
তিন: আমি সিলেট মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলাম। আমার মৃত্যুর পর তারা পালন করলো সিলেট মেডিকেল কলেজের ৫০ বৎসর পূর্তি-উৎসব। আমার কি কোন দাবী নাই কলেজের ওপর ? তারা কি আমার এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে পারত না সরকারের কাছে? ক্ষতিপূরণ চাইতে পারতো না ব্র্যাক এর কাছে ?
চার: আমি তো তোমার মতো একজন নারী , একবারও কি আমার জন্য তোমরা দুই কলম লিখতে পারতে না ? আজ আমার এই করুন পরিনতি কাল তোমার হবে না কে বলতে পারে ? আমি নিজেও কি জানতাম আমার পরিণতির কথা ?
পাঁচ: এতো গুলো নারী সংগঠন, রাজনৈতিক দল আছে কতো দাবী নিয়ে তারা রাস্তায় নামে। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে সরব নীরব মিছিল করে, কই আমার বেলায় তো কেউ কিছু বলল না ?
ছয়: আমাদের সংগঠন বি এম এ যেখানে আমি ডাক্তার হওয়ার পর থেকে চাঁদা দিয়ে আসছি তাদের কি কোন দায়িত্ব নেই ?