নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অপ্রিয় সত্য

চৌধুরী হাফিজ আহমেদ

এক সময় লিখতাম। যা ভাবতাম, যা দেখতাম তাই বলতাম এবং জানাতে চেষ্টা করতাম। লেখক বলে নিজেকে কখনো ভাবিনি এবং এখনো ভাবি না। তবে সবসময় চাই সত্যকে জানতে এবং জানাতে। কারণ, সত্যের বিকল্প নেই, জানতে চান বা না চান সত্য তার নিজস্ব গতিতে প্রকাশ হয়েই যায়। পৃথিবীতে কোন সত্যেই গোপন নেই এবং সত্যকে শত চেষ্টা করে কিংবা ভয় দেখিয়ে দাবিয়ে রাখা যায় না। বিগত দিনে যা লিখেছিলাম তার-ই কিছু কিছু লেখা এখানে তুলে ধরব।

চৌধুরী হাফিজ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চৌধুরী সমাচার / চৌধুরী হাফিজ আহমাদ

২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

চৌধুরী সমাচার -
চৌধুরী নাম শুনলেই মনে হয় যেন বিরাট কিছু - অনেকে মনে করে না জানি ওরা কত বড় লোক , আবার অনেকে মনে করে শিক্ষিত পরিবার বা অনেক জায়গা জমির মালিক , অনেকের মতো আমার নামের সাথে যুক্ত আছে এই চৌধুরী শব্দ টা , তা নিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনা লেখা লেখি তর্কা তুর্কি ঝগড়া বিবাদ মামলা হামলা হয়েছে বাংলাদেশ - ইন্ডিয়া - পাকিস্তান সহ অনেক জায়গায় । আমার জন্মের পরে বুঝার পড়ার সময় থেকেই দেখতাম এলাকায় সবাই আমাদের গ্রামের বাড়ি - এবং নানা বাড়ির এলাকায় ও এক নামে চেনে চৌধুরী বাড়ি নামে । আমাকে সহপাটি অনেকে মজা করে অনেক কথা বলতো এই চৌধুরী থাকার কারনে । বাবাকে জিজ্ঞেস করব একটু সংকোচ বোধ করলাম , মা কে জিজ্ঞেস করলে হেসে বললেন তা জানবি তোর নানা দাদার থেকে , তবে বললেন ভাল মানুষ বলেই এইটা বলা হয় । একবার গ্রামের বাড়ি তে গেলাম ছুটিতে - আমরা বাড়ি গেলে হৈ চৈ রব গ্রামে , খবর চলে যায় ফুফু চাচা দের বাড়ি তে , সবাই জড় হতে থাকেন একে একে । দৌর ঝাঁপ খেলা নদীতে সাঁতার লোভা চড়ায় লাইন লাইন করে হাঁটা ইত্যাদি যত সব সমবয়সীদের করার থাকে তাই করতাম , কিন্তু দেখতাম আমাদের যা কিছুই করিনা কেন কেউ কিছু বলতো না - রাস্তার পাশে দাড়িয়ে বরং দেখত তাহারা , পাহাড়ের খাসিয়ারা মাথা নুইয়ে সম্মান জানাত - আমাদের মানা ছিল মুরব্বিদের পক্ষ থেকে বাজারে যাওয়া চলবেনা - মাঝারে যাওয়া চলবে্না - রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা চলবেনা কাউকে গালি দেয়া চলবেনা , কার বাড়ি তে খাওয়া চলবেনা , এবং সন্ধ্যা পরে বাড়িতে ফেরা চলবে্না এই রকম আরও অনেক নিয়ম , আমাদের অনেক সময় আহত করতো - ছোট ছিলাম তাই শুধু মানতেই হতো নিয়ম গোলা - একটু বয়স হলে একদিন সুজুগে জিগ্যেস করলাম মাষ্টার দাদাকে - দাদা বলেন তো এই যে চৌধুরী আমাদের নামের সাথে থাকে এর কারন টি কি ? আমার শ্রদ্ধেয় দাদা ছিলেন জনাব আব্দুস সালাম চৌধুরী সাহেব সড়কের বাজার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক , আজীবন পরিশ্রমী এই মহান ব্যক্তি আজ আমাদের মাঝে নেই , আমি তাহার আত্মার রুহে মাগফিরাত কামনা করছি , এখন উনার শত শত ছাত্র তাকে সম্মানের সহিত স্মরণ করে , তিনি ডাক দিলেন বাড়িতে ফরমায়েশ শুনত যে তাহাকে বললেন আজকে পিঠা বানাও তো আমার নাতি নাতিনদের বলবো চৌধুরী সমাচার ,মাগরিবের পরে আমরা বসলাম বারান্দায় তিনি টিক শিক্ষকের মতো আমাদের বলা শুরু করলেন - দাড়িয়ে ছিলেন আমার এক চাচা উনার ভাতিজা হাফিজ মাওলানা বদরুল ইসলাম সাহেব , দিলেন ধমক বসে শুনতে পারনা তুমি ? উনার পোরা বক্তব্য যদি উঠিয়ে দেই তা হলে লেখার কলেবর লম্বা হবে তাই সারমর্ম সঙ্কেপে বলছি , হয়তো পাঠকের কেহ তা উপদেশ হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন - তিনি বললেন তোমরা আমাদের সন্তান , আমরা তোমাদের ভাল শিক্ষা দেব - মন্দ থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করব - আজকে আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আহমাদ আমাদের নামে কেন চৌধুরী লেখা হয় !! এই কথা হয়তো আর অনেকের মনে জাগবে তাই আজকের পিঠা সমাবেশ wink emoticon হাসতে হাসতে বললেন ( তিনি অনেক মজা করে কথা বলতেন) যাহারা চৌধুরী লেখায় এইটা একটা উপাধি , তা দেওয়া হতো ব্রিটিশ আমলে যাহারা ছিল কিছু জমির মালিক , তাহারা কাজ দিত সাধারন মানুষ দের তাহাদের জমিতে ফসলাদি ফলাতে , এর স্বার্থে তাহাদের পারিশ্রমিক দিত এমন কি জায়গা জমি তে ঘর বাড়ি বানিয়ে থাকত বিনিময়ে ওরা খেটে খেত , তখন ওই পরিচালনায় যাহারা অগ্রণী ভুমিকায় ছিল এবং বড় অঙ্কের খাজনা দিত তাহাদের রানীর কাছ থেকে একেকটি এলাকার (চৌহদ্দি ) দায়িত্ত দিত ওদের কে জমিদার অথবা জমিন দার ও বলা হত , কিন্তু ওদের দাপট ছিল এই যে সকলের জন্য তা সুখকর হতনা , ওরা এর অপব্যবহার করেছে দাপটের কারনে , অনেকে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে , যাহারা জায়গাতে থাকত তাহাদের রাইয়াত বলে নানান ভাবে ব্যবহার করতো ওদের দিয়ে কুকর্ম করাতো , তাহাদের ক্ষমতা কে ধরে রাখতে অনেক নীচ কাজ করেছে যা লজ্জাস্কর , তাহাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মারা যেত - চৌধুরী দের এই সব কাহিনী আজো অনেকের মনে দাগ কাঠে , অনেকে বদ দোয়া করেছে , তাই তাহাদের অনেকে ভয় পেত , অনেক চৌধুরী দের ব্যাপারে আজো অনেক কথা বাজারে শুনতে পাওয়া যায় । এই গেল একটি দিক , অপর পক্ষে তাহাদের গুন ছিল অনেকের - যেমন তাহারা খিদমাত করেছে , জায়গা জমিতে থাকতে দিয়েছে অসহায়দের - ফসল থেকে পারিশ্রমিক দিয়েছে ন্যায্য । ভাল ব্যবহার করেছে এবং অকাতরে দান করেছে সর্ব পরি আল্লাহ কে স্মরণ করেছে , ব্যাপারটি হল ক্ষমতাকে কে কি করে ব্যবহার করলো । প্রশ্ন ছিল আমাদের নামের সাথে কেন চৌধুরী থাকে - এর কারন হল এই ধারাবাহিকতা চলে আসছে আমার দাদা র দাদা থেকে এর আগে যিনি ছিলেন তিনি ছিলেন আরব থেকে হিজরত করে আসা । উনারা ভাল ছিলেন বলেই আমাদের আজকের এই সম্মান প্রতিপত্তি , শিক্ষার আলো আলোকিত আমরা - আমি আশা করব তোমরা ও আমাদের কে আলোকিত রাখতে চেষ্টা করবে , শুন ভাইয়েরা ব্যবহারে বংশের পরিচয় , বংশ থাকে রক্তে , ক্ষমতায় থাকেনা , এলাকায় যেমন আমরা ভাল তেমনি তোমাদের বাবা চাচারা যে যেখানে গেছেন ভালই করে যাচ্ছেন , ওহ নামের সাথে কেন ! তা হল জমির দলিলে যিনি লিখিয়েছিলেন তাহার চিন্তা কি ছিল বলা মুশকিল - তবে আমার ধারনা হল যা তা বলছি উত্তরসুরির জমি যায়গার পরিচয়ের জন্য ই নামের সাথে যুক্ত থাকা - বাড়ির পরিচয় ও এলাকায় একটি ব্যাপার , আমি এর পরেও আর অনেকবার এই দাদার সাথে এই ব্যাপারে আলোচনা করেছি মজা করেছি পরিচয়য়ের ব্যাপারেই যে নামের সাথে যুক্ত তাহাতেই একমত হয়েছি , এই জমির প্রতিপত্তির পরিচয় বহন করছি আজো প্রবাসে - এর কারন এই রকম লেখা ছিল জন্ম সনদের তাহা থেকে পাসপোর্টে , আমাদের দেশের সবার থাকে চৌধুরী নামের সাথে শেষে - ইংল্যান্ডে স্যার নেইম ফর নেইমের চক্করে আমাদের চলে আসছে সামনে - এখন আমাদের জায়গা জমি হাতছাড়া , বিদেশে ই পরিবারের সিংহ ভাগ - অনেক দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আমরা নেই আগের প্রতিপত্তি - গ্রাম এলাকার মতো কিন্তু যে যেখানেই আছি আমরা ধরে রাখার আপ্রান চেষ্টা করছি কর্মের এবং দেবার ও খিদমাতের প্রতিপত্তি - উপাধি পেয়েছিল হয়তো অনেক আগে রক্তের কেহ , বহন করে যাচ্ছি আজো সেই ধারা বাহিকতা । তবে এখন আমি যা দেখি অনেকে চৌধুরী ব্যবহার করে বংশের উচ্চতার জন্য - যাহাদের রক্তে কর্মে ব্যবহারে পাওয়া যায়না কোন মিল - এমন লোক কে দেখছি চৌধুরী ব্যবহার করতে যার পরিবারের অনেকেই জানেনা কলম ধরা - শুধু মাত্র কিছু টাকা কিংবা কয়েক কেদার জমি কিনেই হয়ে যান চৌধুরী - আদবে কিংবা ব্যবহারে সে আজো সে পরিচয় ভুলতে পারেনা সেই নিম্ন মন মানসিকতার , বা হিনমন্যতার , স্বার্থের জন্য করে বসে এমন সব কাণ্ড চৌধুরী হওয়া তো দুরের কথা মানুষ ই হতে পারেনা সমাজে । আরও অনেক কথা বলার আছে এই সব অধ্য চৌধুরী দের নিয়ে ইনশাহ আল্লাহ কয়েক পর্বে করব বয়ান শুনবেন সবাই চৌধুরী সমাচার wink emoticon
অপ্রিয় সত্য
চৌধুরী সমাচার
চৌধুরী হাফিজ আহমাদ
[email protected]
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:২৬

প্রামানিক বলেছেন: আমি কলেছে পড়ার সময় আমাদের ইতিহাসের স্যারের কাছে চৌধুরীদের উপাধি নিয়ে যে বর্ননা শুনেছি তা অন্য রকম।
চৌধুরীরা ছিল তৎকালীন আমলের খাজনা আদায়কারী। খাজনাকে সেই সময় "চৌধ" বলা হতো। চৌধ আদায়কারী থেকেই নাকি চৌধুরী শব্দের উৎপত্তি।

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:৪৪

মিউজিক রাসেল বলেছেন: সড়কের বাজার হাই স্কুল" এটা কোথায় অবস্থিত ??

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.