নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিপন ইমরান

রিপন ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের লাবণ্যরা

১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০০

লাবণ্যর সঙ্গে দেখা হয়েছিলো আমার হাসপাতালের বারান্দায়....আমার পাশের চেয়ারটায় ও অপেক্ষা করছিলো বাবার জন্য...দীর্ঘক্ষনের অপেক্ষা, তাই লাবণ্যর সঙ্গে টুকটাক কথা হয...ভাইয়া কটা বাজে? এভাবেই বোধহয় কথার শুরু...এরপর কথার গাড়ি চলতেই থকে...কথা বলতে ভালোবাসে মেয়েটা...কথা শুনি, টুকটাক জবাব দেই....হঠাৎ বলে ভাইয়া আপনিই প্রথম মানুষ যে আমার ভাঙা পা নিয়ে কোন প্রশ্ন করলেন না?

আমি একটু লাজুক হাসি দেই, আর মনে মনে ভাবি ‘আমার মনেও তোকে দেখেই একই প্রশ্ন উঁকি দিয়েছিলোরে বোন? শুধু সভ্যতার সূত্র ধরে জানি, কারো শারীরিক দৈন্যতা নিয়ে প্রশ্ন করতে নেই। তাই বহু কষ্টে মনের ভেতর প্রশ্নটা চেপে ধরেছিলামরে, শত হোক বানর থেকে মানুষে রূপান্তর হয়েছি যে’।



লাবণ্য বলে, জানেন ভাইয়া গত বছরও আমি কলেজে দৌড়ে ফার্স্ট হয়েছিলাম...এইবার আমি সব ভদ্রতার সব আবরণ সরিয়ে লাবণ্যর দিকে ভালো করে তাকাই...কোমরের নীচ থেকে পা দুটো কেমন যেনো শুকিয়ে গেছে...ওর পাশেই স্টিক ক্রাচটা রাখা...আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ও বলে, আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম...খুব ভালোবাসতাম তো...তাই ও বলাতে ভালোবাসার প্রমান দিতে চেয়েছিলাম....৬ তলা থেকে লাফ দিয়েছিলাম...এরপর কিছু মনে নেই...

পিঠের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিলো...পিঠে এখনো অনেকগুলো স্ক্রু...প্রথম প্রথম হাঁটতে পারতাম না...এখন অনেক চেষ্টার পর স্টিক দিয়ে খুব ধীরে ধীরে হাঁটতে পারি তবে কুঁজো হয়ে...শরীরে প্রচণ্ড ব্যাথা হয়...এখনো ক্রাচে অভ্যস্ত হতে পারিনি...অনেকগুলো কথা একসাথে বলে লাবণ্য একটু দম নেয়...মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়...



জানেন ভাইয়া, ছেলেটা কিন্তু ভালোই আছে আরেকজনের সঙ্গে...লাবণ্যর বাবা চলে এসছে...বাবা এসে লাবণ্যকে ধরে সিট থেকে উঠায়...যাবার আগে লাবণ্য মুচকি হাসে আমার দিকে তাকিয়ে...লাবণ্যর বাবা আমার দিকে একটু অবাক হয়ে তাকায়...আমি চোখ সরিয়ে নেই...



হাসপাতালের করিডোর ধরে অনেক কষ্টে পা টেনেটেনে চলে যায় বাবা-মেয়ে... আমি তাকিয়ে দেখি আর ভাবি...কী বোকা আমাদের লাবণ্যরা, সামান্য কদিনের মিথ্যে ভালোবাসায় এরা তুচ্ছ করে নিজের প্রাণ...পরিবারের এ্যাত্তোগুলো মানুষের ভালোবাসাও ফেরাতে পারে না এদের...

আর কী র্দুভাগ্য লাবণ্যদের বাবা-মায়েদের... কিশোর মনের উথাল-পাথাল ভালোবাসা কিছুতেই বোঝে না ওরা...বোঝেনা বলেই লাবন্যরা ঝরে যায়, মরে যায়...অার খুব সামান্য কিছু সৌভাগ্যবান লাবণ্যরা ঘুরে দাঁড়ায় আবার বাঁচবে বলে...



ভালো থেকো লাবণ্য...বুকের কষ্টটাকে ধরে রেখো আগুন জ্বালাবার জন্য....

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অসাধারণ গল্প ভাই।ভাল লাগল।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:১১

রিপন ইমরান বলেছেন: ভাইয়া গল্পটা কিন্ত সত্যি

৩| ১৩ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:২০

বেবিফেস বলেছেন: অনেক ভাল লাগল।ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.