![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সে অনেককাল আগের কথা...তখনো বাংলার ঘরে ঘরে ফ্রিজ তথা রেফ্রিজারেটরের আগমন ঘটেনি...পুরান ঢাকার শাহী ল্যাম্ব রোস্ট বা সুতি কাবাব তখনো মধ্যবিত্তের ইফতার টেবিলের অলঙ্কার হয়ে ওঠেনি...সিদ্দীকা কবীর আপা তখন একমাত্র চ্যানেল বিটিভির ঘোলা পর্দায় সন্ধ্যাবেলায় রান্নার অনুষ্ঠান করেন, মাখন রঙা শারমীন লাকীদের সেকালে আগমন ঘটেনি ( অবশ্য বিটিভির সেই ঘোলা পর্দায় কে যে মাখন রঙা আর কার রঙ যে ছাই তা বোঝা দুস্কর ছিলো)...
আমি সেই সময়ের কথা বলছি...ছোট্ট আমি সেই সময়ের এক রমজান মাসে বিকেলবেলায় বাবার হাত ধরে গিয়েছি শুক্রাবাদ বাজারে...বাজারে ঢুুকে তো আমার চোখ ছানাবড়া...বাজারের এককোনে জটলা পাকিয়ে সবাই কি যেনো কিনছে...জটলার দিকে বাবাকে অামিই টেনে নিয়ে গেলাম...আরিব্বাস ধুন্ধুমার কাণ্ড...জটলার মাঝথানে বিশাল এক বরফের চাঙড় রাখা...দুজন মানুষ শাবল দিয়ে সেই চাঙড় ভাঙছে আর চেঁচাচ্ছে, ‘ অ্যাই বরফ...পাহাড়ি বরফ’...পাহাড়ি বরফ শব্দটা শুনেই আমার মনে হলো এ নির্ঘ্যাত হিমালয় থেকে অানা বরফ...
ওই দুজন মানুষ সেই পাহাড়ি বরফ কাটার ফাঁকে ফাঁকে বরফের গায়ে কাঠের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিচ্ছেন (তখন না বুঝলেও এখন বুঝি এটা বরফের যাতে না গলে সেই কৌশল)...অামি আর অপেক্ষা করতে পারলাম না...বাবার কাছে বায়না ধরলাম আমিও একটুকরো পাহাড়ি বরফ কিনবো...তখনকার বাবারা এখানকার মতো সুইট কর্পোরেট বাবা ছিলন না...বিরাট এক ধমক দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন এগুলো নোংরা জলের বরফ, কেনা যাবে না...আমার ছোট্ট অবুঝ মন তার এই কথা মোটেও বিশ্বাস করেনি সেদিন...কী সুন্দর আমার সামনে দিয়েই আমারই বয়েসী একটা ছেলে পাঁচ টাকার বরফ কিনে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝোলাতে ঝোলাতে নিয়ে গেলো, আর আমার বাবা বলে কী না...ধূর...
আমার পাহাড়ী বরফের গল্প এই পর্যন্তই...আমরা কিছুটা বড়ো হতে না হতেই পাহাড়ী বরফের বেচা বিক্রি বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, কারন ততোদিনে ফ্রিজ ঢুকতে শুরু করেছে মধ্যবিত্তের ঘরবাড়িতে...ভুলেই গিয়েছিলাম পাহাড়ি বরফের কথা...কিন্তু হঠাৎ গতকাল ইফতারের কিছু আগে দেখলাম মৌচাক মার্কেটের পেছনে একটা ভ্যানে করে বরফ বিক্রি হচ্ছে...ওতো হাকডাক নেই...বেশ নীরবে-নিভৃতেই চলছে বরফ বাণিজ্য...আশপাশের দোকানদাররাই বোধহয় এর ক্রেতা...তবুও বরফ যে এখনো ইফতারের আইটেম হিসেবে বিক্রি হয় এটা দেখেই ভালো লাগলো...আসলে কিছু কিছু জিনিস একেবারে হারিয়ে না যাওয়াই ভালো...:-)
২| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৮
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: ..তবুও বরফ যে এখনো ইফতারের আইটেম হিসেবে বিক্রি হয় এটা দেখেই ভালো লাগলো...আসলে কিছু কিছু জিনিস একেবারে হারিয়ে না যাওয়াই ভালো...:-)
আসলেই মনের কথাটা বলেছেন। পিচ্চিকালের কোন জিনিস এত এত নতুন চমকের ফাঁক দিয়েও যখন টিকে থাকতে দেখি আমারও এমনই মনে হয়।
৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪১
রাজ হাসান বলেছেন: একে বারে আগের দিনে নিয়ে গেলেন মোটা মোটি ৯০ এর দিকে।
৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪৬
হু-কেয়ারস বলেছেন: ভাই এইডা কী মনে করাইলেন..................... আমাদের পুরান ঢাকায় ব্যাপক পরিমানে বিক্রি হতো। যদি ও বাসায় ফ্রিজ ছিল তারপর ও খুবই টানতো পাহাইড়া বরফ !!!!! এমন ও হইসে পাড়া-প্রতিবেশী যদি আনতে দিত আমার কাছে খুশিতে পাগল হইয়া যেতাম। কাঠের গুড়া দিয়ে বরফ আনা ও সেইরকম মজা ছিল। হায়রে ছুডু বেলা !!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
কেএসরথি বলেছেন: "আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম" :#> :#> :#>
৬| ০২ রা জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১০
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
বরফের এই ব্যবসাটা কখনও বন্ধ হবেনা। মাছের বাজার থেকে শুরু করে রাস্তায় জুসের দোকান সব জায়গায় এই বরফের দরকার।
৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৩০
আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: জীবনেও দেখিনি বরফ বিক্রি হতে তবে মায়ের মুখে শুনেছি তাড়া ইফতারের সময় বরফ কিনে আনতো।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৮
বেগুনী ক্রেয়ন বলেছেন: শৈশব বড় মধুর