![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেকদিন পর আজ একটু অাঁতলামী করা যাক...কুরবানীর ঈদের (ঈদ-উল-আযহা) মূল উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই শুধু গরু-খাসি জবাই করা নয়...অথবা এর মাঝে লোক দেখানো কোন ব্যাপারও থাকার কথা না...যদি ধর্মীয় দিক থেকে বিবেচনা করি তাহলে এই পশু কুরবানীর পেছনে রয়েছে অনেক ত্যাগ,সংযম, সাম্য প্রতিষ্ঠার শিক্ষা...অনেকের হয়তো পশু জবাইয়ের এই বিষয়টি নিয়ে ‘নিষ্ঠুরতার প্রশ্নে’ আপত্তি থাকতে পারে...আমি সেই তর্কে যাচ্ছি না...
আমি ছোট্ট একটি শঙ্কার কথা বলতে চাচ্ছি...কুরবানীর বিষয়টি নিয়ে আমরা ছোটবেলা থেকেই ধর্মীয় এবং সামাজিক এক ধরণের মূল্যবোধ নিয়ে বড় হয়েছি...শিকার করতে আপত্তি নেই এই মূল্যবোধ লোক দেখানো কুরবানী দেয়ার প্রতিযোগিতার ঠেলায় অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে...তবুও ক্ষয়ে ক্ষয়ে কিছুটাতো রয়েই গেছে...সেসব মূল্যবোধের অন্যতম একটি হচ্ছে কুরবানীর পশুটি কোন হাসি-ঠাট্টার বিষয় না...
তবে কোনমতে ঝুলে থাকা এই মূল্যবোধটুকুও ঝেঁটিয়ে বিদায় করবার দায়িত্ব নিয়েছে মোবাইল অপারেটর ‘রবি’(অবশ্য কুরবানীর পশু নিয়ে ফাইজালামির শুরুটা রবি করেনি। শুরুটা করেছে কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান মোজো। তাদের কুরবানীর পশু কনটেস্ট বিষয়টাইতো ধর্মীয়ভাবে স্বীকৃত না।)...তারা ফেবুর হালের ক্রেজ সেলফি-কে বিকৃত করে বানিয়েছে ‘কাউফি’ কনটেস্ট...যেখানে আপনি আপনার কুরবানীর গরুর সঙ্গে ছবি তুলে তাদের দেয়া লিঙ্কে আপ করবেন...যে যতো লাইক পাবে সেই হবে বিজয়ী...এই কাউফি কনটেস্ট নিয়ে তারা এক জমজমাট মিউজিক ভিডিও সমেত জিঙ্গেলও বানিয়েছে..যা প্রচারিত হচ্ছে রেডিওসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে...
কুরবানীটা যদি হাসি-ঠাট্টার বিষয়ই হয় তাহলে এর পেছনের ধর্মীয় মূল্যাবোধটা রইলো কোথায়...আচ্ছা বাদ দেন না হলে ধর্মীয় মূল্যবোধের কথা যদি আপনি পশুপ্রেমী হয়ে থাকেন তাহলেও চিন্তা করে দেখুন, যে পশুটিকে কয়েকঘন্টা বাদে জবাই করা হবে তাকে নিয়ে আপনি রঙঢঙ করে ছবি তুলছেন...এটাতো সেই আদিম অসভ্য মানুষদের মতো বলির উদ্দেশ্যে আনা প্রানীকে ঘিরে নাচগানেরই একটা আধুনিক রূপ মাত্র...আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে কুরবানীর ঈদটা হবে তাহলে ঘটা করে পশু জবাইয়ের ঈদ!!!
কদিন ধরেই দেখছি লতিফ সিদ্দিকীর আমেরিকায় দেয়া বক্তব্য নিয়ে ফেবুতে অনেকেই সোচ্চার...বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনও বিক্ষোভ মিছিল করছে প্রতিবাদ জানিয়ে...করাটা স্বাভাবিক কারন তার বক্তব্য ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানে..লতিফ সিদ্দিকী একজন ব্যক্তিমাত্র...তার মন্তব্যে বা কথায় কেউ প্রভাবিত হবে না...কিন্তু এই ধরণের বিজ্ঞাপনী প্রচার মানুষের মনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে...এগুলো শুধু মূল্যবোধে আঘাত হানে না মূল্যবোধটাকেই গুঁড়িয়ে দেয়, ধ্বংস করে দেয়...একটি প্রজন্ম সেই মূল্যবোধের আলো থেকে বঞ্চিত হয়...এক লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য নিয়ে যদি এতাে কিছু হয় তাহলে এদের বিরুদ্ধে আমাদের কী করা উচিত??? তাই আবারো বলি নকল জিনিস লইয়া ফাল না পাইড়া আসল জিনিসের দিকে চোখ দেন...তাতে আখেরে সবারই বহুত ফায়দা হবে...
©somewhere in net ltd.