![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত বারোটার মতো বাজে...লোকাল বাসে বাড়ি ফিরছি...ভাঙা কাচ দিয়ে হু হু করে ঠাণ্ডা হাওয়া ঢুুকছে... সেই হাওয়া থেকে বাঁচতে একটু বাঁকা হয়ে বসে আছি...বাস মোটামুটি ফাঁকাই বলা চলে...
কণ্ডাক্টর এসে ভাড়া চাইতেই পেছনের সীটের যাত্রী তার হাতে দশ টাকা গুজে দিয়ে বললাে ‘টঙ্গী’...কণ্ডাক্টর মুখ কুঁচকে বললো, আরো পাঁচ টাকা দাও...এবার যাত্রী মুখ খুলল, ’মামু রিকশা চালাই...আল্লাহর ত্রিশটা দিনইতো আইতে হয়’...কণ্ডাক্টর কিছু না বলেই কি যেনো গজগজ করতে করতে সামনের দিকে চলে গেলো....
শুনতে পেলাম এবার তার পাশের যাত্রী ওই রিকশাচালককে জিজ্ঞাস করছে ‘ভাই আপনি রিকশা চালান? দৈনিক কতো টাকা কামান?’...
-রিকাশা চালাই। মনে করেন আইজকা হাফ বেলা চালাইছি...রিকশার জমা দিছি ৬০ টাকা...নাস্তা করছি ৮০ টাকা আর এখন বাসওয়ালারে দিলাম ১০ টাকা...পকেটে এখন গোনা ৬৯০ টাকা আছে...যদি ৪ টার থেইক্যা না চালাইয়া ২ টার থেইক্যা চালাইতাম তাইলে ৯০০ টাকা বেতন টিকান যাইতো...আমি পেছনের যাত্রীর মুখ না দেখেও ঠিক আন্দাজ করতে পারি টাকার অঙ্ক শুনে তিনি বেশ অবাক হয়েছেন...
এবার লোকটা নিজেই বলে, হুমম আমি আরো একদিন এক জনরে জিগাইছিলাম সেও একই রকম টাকা কইছে...আসলে কি জানেন ভাই, সবচেয়ে কষ্ট আছে নিম্নমধ্যবিত্তরা...আমরা সম্মানের ভয়ে না পারি রিকশা চালাইতে না পারি চলতে...রিকশা চালাইলে মানুষে বলবে, অমুকের ছেলে রিকশা চালাচ্ছে....
আসলেই এই শহরে অসংখ্য নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার আছে যাদের প্রতিটি পয়সা খরচ করতে হয় টিপে টিপে...সম্মানের ভয়ে এরা না খেয়ে থাকলেও কাউকে মুখে ফুটে কিছু বলতে পারে না...হাত পেতে চাইতে পারে না...
এরা প্রতিদিন সোডা দিয়ে ধোওয়া পরিষ্কার কাপড় পরে চাকরিতে যায়...আর লাঞ্চ টাইমে অফিসের নীচের দোকান থেকে একটা বনরুটি আর কলা কিনে এক গ্লাস পানি দিয়ে গিলে খায়...খুব পরিচিত কেউ এ সময়টায় তাকে দেখে ফেললে বেশ হাসি হাসি মুখ করে বলে, দুপুর বেলা ভাতটা একেবারে সহ্য হয় না...তাই রুটিই...এরা পাড়ার বাকির দোকানটাকে এড়িয়ে সুকৌশলে বাসায় ঢোকার সবগুলো পথ চেনে...তবুও বেশিদিন শেষ রক্ষা হয় না...
বাচ্চার অসুখ হলে এরাই সরকারি হাসপাতালের আউটডোরে রোগীদের দীর্ঘলাইনে বসে থাকে আর বউকে আশ্বস্ত করে এই বলে, ‘শোনো সময় বেশি লাগলেও এখানে চিকিৎসাটা হয় ভালো’...এদের এমন হাজারটা ভালো থাকার অভিনয়ের নমুনা আমি বলে দিতে পারি এক নিমিষেই...
লোকটার কথাটা শুনে একবার ভাবলাম মাথা ঘুরিয়ে লোকটার মুখটা দেখি পরক্ষনেই ভাবলাম থাক লোকটা যদি লজ্জা পায়...এর চেয়ে এসব মানুষের কথা ভেবে কিছুক্ষন মন খারাপ করে বসে থাকা যাক...
২| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১২
ঢাকাবাসী বলেছেন: তিক্ত সত্য কথা।
৩| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৯
আজকের বাকের ভাই বলেছেন: কি বলব ভেবে পেলাম না।
ভালো লেগেছে
৪| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৯
ভোরের শিশির । বলেছেন: ভাই । এটাই বাস্তব ও সত্য
৫| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৩২
ভোরের শিশির । বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম
৬| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:২৯
খেলাঘর বলেছেন:
এ হলো মুহিত ও ড: আতিয়ারের অর্থনীতি
৭| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:১২
রাজিব বলেছেন: আপনার পোস্টের সঙ্গে আমি ৯৯% একমত। আসলে ১% ঠিক দ্বিমত পোষণ করছি না। শুধু নিজের সামান্য কিছু পর্যবেক্ষণ বা অবজারভেশন যোগ করছি। আমার নিজের ব্যকগ্রাউন্ড নিম্ন মধ্যবিত্ত- তাই অনেক কিছুরই অভিজ্ঞতা আছে। ৪-৫ বছর বয়সেই বুঝতে পারি কান্নাকাটি করলেও খেলনা আসবে না। অবশ্য ভাগ্য ভাল আজ থেকে ৩৫ বছর আগে ঢাকায় অনেক মাঠ ছিল খেলার জন্য। একই সঙ্গে এও বুঝতে পারি যে ৩ বেলা ঠিক মত খাবার পাবার মত সৌভাগ্য যাদের আছে তারাই কেবল ভাগ্যবান। নিজের বাসায় টিভি না থাকলে পাশের বাসায় টিভি দেখা মানে অনেক প্রিয় অনুষ্ঠান মিস হবে।
১০ বছর বয়সে বোঝা গেল অংক আর ইংরেজি বুঝি বা না বুঝি প্রাইভেট টিউটর এর কাছে পড়া যাবেনা। সব বই আর নোট বই পাচ্ছি এইতো অনেক বেশি। কলেজে উঠে শেখা হল ৩ টাকায় ৩ টি সিঙ্গারাই হবে সকালের নাস্তা আর দুপুরের মধ্যাহ্ন ভোজ। দুটো শার্টে বছর পার করতে হবে না হলে নিজে কামাই করে নিলেই হয়। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আরও ভাল কিছু শেখা হল। হয় নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই কামাই করে মেটাতে হবে না হলে পাড়ার শিক্ষিত বেকারদের দলের সদস্যপদ অপেক্ষা করছে।
এটাই বাস্তবতা। নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত জীবনের জ্বালা অনেক তা আপনি ছেলেই হন বা মেয়ে। কিন্তু আমার মনে হয় যে আমাদের দুটো সমস্যা। আমাদের মধ্যে স্বপ্ন কম এবং হতাশা বেশি। আর নিজেদের মধ্যে মিলে মিশে কাজ করার মানসিকতা নেই। তাই আমাদের দেশে এক মালিকানা কারবার ঘরে ঘরে কিন্তু অংশীদারি ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির সল্পতা। অথচ ১০ জন নিম্ন মধ্যবিত্ত মিলে অনেক ঝুকিই নিতে পার একসঙ্গে এবং কারও উপরই দেউলিয়া হবার বোঝা আসেনা।
কায়িক শ্রমকে আমরা ঘৃণা করি অথচ ভুলে যাই নিম্ন মধ্যবিত্ত মানেই হল ভিক্ষার চাল কাড়া আর কাড়া এই জীবনের বাস্তবতা। আর একজন রিকশা চালক বা একজন গার্মেন্টস কর্মী প্রতিদিন ১০-১২ ঘণ্টা কায়িক শ্রম দিয়ে গায়ের রক্ত পানি করে আয় করছেন। ঐ রকম যদি আমরা কাজ করি তাহলে অন্তত ৭০% নিম্ন মধ্যবিত্ত লোক এর অবস্থা নিন্ম আর থাকবে না।
৮| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:১৩
রাজিব বলেছেন: আমাদের ব্লগঃ blog.e-cab.net
৯| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:১৩
রাজিব বলেছেন: আমাদের ব্লগঃ http://blog.e-cab.net/
১০| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩০
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৯
উদাস কিশোর বলেছেন: কথা সত্য. . . . . .
শুভেচ্ছা