নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিপন ইমরান

রিপন ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবলুরা এখনো কুরবানী দেয় না

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৮

বাবলুর বয়স আট বছর...ওরা শুক্রাবাদ থাকে...থাকে মানে তিন রুমের ফ্লাটের এক রুমে ওরা সাবলেট থাকে...বাবলুর বাবা শাহীন ছোট একটা সিএ্যাণ্ডএফ ফার্মে চাকরি করে...ফার্মের অবস্থা বিশেষ ভালো না...এবারো ঈদের বোনাস পায়নি শাহীন...অনেক কষ্টে বেতনটুকু পেয়েছে...বোনাস পেলে না হয় পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার একটা চেষ্টা করা যেতো...এবারে তাই ঈদটা ঢাকাতেই...বিকাশে মায়ের জন্য এক হাজার টাকা পাঠিয়েছে শাহীন...লজ্জায় মাকে বলতেও পারেনি হাত খালি তাই বাড়ি আসতে পারছে না...

বাবলুদের বাসার নীচে বিশাল বিশাল দুটো গরু বাঁধা...ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারা সবাই মিলে এই দুটো কুরবানী দিবে...বাবলুও বাড়ির অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে নীচে নেমেছে কুরবানীর গরু দেখতে...সবাই গরুগুলোকে হাত দিয়ে আদর করছে...কুরবানীর গরুকে আদর করলে অনেক সওয়াব হয়, এ কথা বাবলুও শুনেছে...

সাহস করে সে হাত বাড়ায় কালো গরুটাকে একটু আদর করবে বলে...এ্যাই তুই আমাদের গরুর গায়ে হাত দিবি না...বাবলু ফিরে তাকায়...বাড়িওলার ছেলে সাগর...বাবলুরই সমান তবে অন্য স্কুলে পড়ে...বাবলু হাত গুটিয়ে নেয়...

কদিন ক্রিকেট খেলা নিয়ে সাগরের সঙ্গে ওর ঝগড়া হয়েছিলো...সেই থেকে দুজনের আড়ি...সাগরের বন্ধু তপু বাবলুকে জিজ্ঞেস করে এ্যাই তোদের গরু কই??? ছোট হলেও বাবলুর অনেক বুদ্ধি...সে চট করে জবাব দেয় আমরা এবার দাদুর বাড়িতে কুরবানি দিচ্ছি...কথাগুলো বলেই এক দৌড়ে ঘরে চলে যায় বাবলু...বিছানায় উপুড় হয়ে কাঁদতে থাকে...বাবলু জানে ওরা কুরবানি দেয় না...দিতেও পারবে না...বাবার যে টাকা নেই তাই...

বি : দ্র : ছোটবেলায় আমি বাবলুদের দলে ছিলাম না...আমি বরাবরই সৌভাগ্যবানদের দলে...কিন্তু আমার অনেক বন্ধু ছিল বাবলু...ঈদ এলেই আমার ওদের কথা মনে পড়ে...কুরবানী না দেয়াটা শিশুদের জন্য যে কী পরিমান কষ্টের ব্যাপার এটা যারা বাবলুদের চেনেন না তারা বুঝবেন না...সারা দেশের বাবলুদের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা...বড় হও বাবারা...আর বড় হয়ে বাবলুদের কথা ভুলে যেও না...

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মর্মাহত হলাম । ওদের কথা ভাবা উচিত ।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাড়ীওয়ালার ছেলেতো গোশস্ত খাবে বলে গরু জবাই দিচ্ছি!

কোরবানীতো দিচ্ছে বাবুলরাই!

আমাদের মোল্লারা কল্লা আশায় কর্পোরেটদের গোলামী করে আল্লারে ভুলে!

কোন বেটার মুরোদ নাই সাহস করে বলে ঘুষের টাকায় গরু কাটলে তা করু কাটাই হবে কোরবানী হবে না! যে আত্মীয়র হক আদায় করে না। ঠিক মতো সালাত করে না, যাকাত দেয় না সে যত বড় গরুই কাটুন তা কবেবলই গোস্তের জোগান হয় ! কোরবানী হয় না!

ফলে আম অর্থ টানাটানিতে থাকারা হীনমন্যতায় ভোগে!

মনের পশুত্ব কোরবানী যে শ্রেষ্ঠ! অহংকার লোভ মোহ কাম ক্রোধ পরিহার করাই উত্তম কোরবানী!

আর দূর্নীতি! ঘুষ আর খুব ন্যায় সংগত আয় হলেও এতিম মিসকিন আর আত্মীয়দের হক আদায় না করে যারা সামাজিক ষ্ট্যাটাসের প্রতিযোগীতায় বাজারের বড় পশু কিনে গর্ব করে- তাদের দেখলেই কেন জানি আমি একটার জায়গায় দুইটা বড় পশু দেখি ;)



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.