![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সালটা ১৯৬৫...কিংবদন্তীতুল্য গায়ক হেমন্ত মুখপাধ্যায় গিয়েছেন কলকাতার বাইরে স্টেজ শো করতে (আমার ভুল না হলে জায়গাটা দুর্গাপুর)...তিনি প্রথম গান শুরু করলেন...মন্ত্রমুগ্ধের মতো গান শুনছেন সামনের সারির শ্রোতারা...প্রথম গান শেষ এবার দ্বিতীয় গান...সামনের সারিতে বসা এক নারীকে কানে কানে কি যেন বলে গেলো এক যুবক...নারীটি তক্ষুনি আসন ছেড়ে চলে গেলেন...
স্টেজে থেকেও বিষয়টি চোখ এড়ায়নি হেমন্তর...শো শেষে তিনি আয়োজকদের কাছে ডেকে জানতে চাইলেন ওই নারীর কথা...আজকের দিনে হলে এ ধরনের খোঁজখবর নেয়ার অপরাধে শিল্পীর চরিত্র ধরে টান দিতো...চাই কি পরদিন ট্যাবলয়েড পত্রিকার শিরোনামও হতে পারতো, ‘দুর্গাপুরে হেমন্তর নষ্টামি’...কিন্তু আমি যে সময়ের কথা বলছি তখনো মানুষের মন অতটা বিষিয়ে যায়নি...
আয়োজকরা হেমন্তকে জানালেন, ওই নারীর স্বামী খুব অসুস্থ...কিন্তু তিনি হেমন্তর ভক্ত তাই অসুস্থ স্বামীকে রেখে শোর টিকিট ম্যানেজ করে এসেছিলেন তার গান শুনতে...কিন্তু প্রথম গানের পর খবর আসে তার স্বামীর শরীর আরো খারাপ করেছে তাই খবর পেয়ে তিনি বাড়ি ফিরে গিয়েছেন...হেমন্ত সব শুনলেন এরপর সবাইকে অবাক করে দিয়ে ওই নারীর বাড়িতে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন...
নাটক সিনেমায় এ ধরণের ঘটনায়, শিল্পীর সঙ্গে ওই গৃহবধূর প্রেম হওয়াটা স্বাভাবিক...আর বাস্তবে এ ধরণের কাহিনী নিয়ে আরো নানা কেচ্ছাকাহিনী রটে যা্ওয়া আরো স্বাভাবিক...আর আমার মতো লঘু চরিত্রের মানুষের মনে শুধু একটি প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক, নারীটি না জানি কি অসামান্য রূপসী ছিলেন...
তবে এ ধরণের কালজয়ী শিল্পীরা স্বাভাবিকের আওতায় পড়েন না...আর তাই এ ঘটনার ২৪ বছর পর ১৯৮৯ সালে হেমন্তর মৃত্যুদিনে ওই নারী এসেছিলেন রবীন্দ্র সদনে প্রিয় শিল্পীকে শেষ বিদায় জানাতে...নারীটিও তখন বৃদ্ধ...সেই বৃদ্ধ ঘোলাটে চোখে অবিরত জল ঝরাতে ঝরাতে তিনি সেদিন জানিয়েছিলেন, হেমন্ত সেদিন তার বাড়ি গিয়ে টের পেয়েছিলেন তার আর্থিক অসঙ্গিতর কথা...আর তাই মৃত্যুর পূর্বদিন পর্যন্ত হেমন্ত তার পরিবারকে প্রতিমাসে আর্থিক সহায়তা করে গিয়েছেন...
শুধু তিনি নন এরকম আরো ২০টি পরিবারকে হেমন্ত প্রতিমাসে আর্থিক মাসোহারা দিতেন...হেমন্তর ব্যাক্তিগত গাড়ি চালক সনাৎ খামে ভরে প্রতিটি পরিবারকে সেই টাকা মাসের নির্দিষ্ট দিনে পৌঁছে দিয়ে আসতেন...হেমন্তর মতো এ কাজটি আরো একজন করতেন...তিনিও আরেক কিংবদন্তী...তিনি মহানায়ক উত্তম কুমার...
হেমন্তকে নিয়ে আরেকটি গল্প বলার জন্য মুখ উসখুস করছিলো কিন্ত তা আরেকদিনের জন্য রেখে দিলাম...তবে এটুকু বুঝলাম কােটি নারী-পুরুষের হৃদয়হরণকারী মানবসন্তানে পরিণত হতে চাইলে, আসলে সবার প্রথমে মানুষ হওয়াটা জরুরি...
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১
শেষ বেলা বলেছেন: মানুষ মানুষের জন্য.........আমরা যে কোন ভুলে যাই। ভাল লাগলো, ধন্যবাদ
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২২
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সত্যিকারের মানুষ তো এমনই হয়। দুজনের জন্যই অশেষ শ্রদ্ধা।
৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৯
খোলা মনের কথা বলেছেন: হেমন্ত এবং উত্তম কুমারের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেলো। এরা শুধু কালজয়ী কিংবদন্তি ছিলেন না তারা বিরাট মনের অধিকারীও ছিলেন। ধন্যবাদ জানানোর জন্য
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৬
আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: হেমন্ত এবং উত্তম কুমারের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেলো। অনেক ভালো লাগলো লেখাটা।