নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিপন ইমরান

রিপন ইমরান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাঁচতারা হাসপাতালের আইসিইউ থেকে... :(

৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:০০

আজকের মাছটা কিন্তু দারুণ হইছিলো...আমি মাছ খাই নাই তয় আমি শুধু ভর্তা দিয়া তিন প্লেট ভাত মাইরা দিছি...

পাঁচতারা এক হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের ওয়েটিংরুমে বসে ঝিমুচ্ছিলাম...এদের এখানে বসার ব্যবস্থা বেশ ভালো...নরম কালো চামড়ায় মোড়ানো গদি অাঁটা চেয়ার...চাইলে পুরো বিছানার আদল দেয়া যায়...এসি থেকে ফুরফরে হিমশীতল বাতাস বের হয়...আর টিভিতে সবসময় চ্যানেল আইয়ের খবর দেখায়...

আমার এক চেয়ার পরেই হুমদাে চেহারার তিনজন পুরুষের দুপুরের খাবার সংক্রান্ত জরুরী আলোচনায় ঝিমুনি ভাবটা পুরো কেটে গেলো...ভাবুনতো একবার আইসিইউতে আপনজনকে শুইয়ে রেখে গল্প করছে শিং মাছের ঝোল ভালো না মাগুর মাছের...

ঘুম যখন কেটেই গেছে চারপাশে ভালো করে তাকালাম...কানটা আরো খাড়া করলাম...আমার সামনের সীটের দুই মধ্যবয়েসী নারী নীচু গলায় হাতে তসব্হি নিয়ে সমানে কার বউয়ের জানি দোষ খুঁজে বের করছেন...

ভাবলাম এদের আলাপে মন দিয়ে লাভ নেই...নীচ থেকে বিড়িতে দুটো টান মেরে আসি...সুইংডোর খুলে ফাঁকা প্যাসেজে পা রাখতেই মাথায় কাপড় টানা এক সুইট আপুমনি আমাকে দেখে খানিকটা হকচকিয়ে গেলো...আপু বোধহয় ফোনে জানমনিটার সঙ্গে কথা বলছিল...

অনেকের কাছে ব্যাপ‍ারগুলো নিষ্ঠুরতা মনে হতে পারে, আইসিইউতে নিকটজনকে শুইয়ে রেখে কীভাবে মানুষ এতাে নির্লিপ্ত গলায় গল্পগুজব করতে পারে!!! কিন্তু বাস্তবে এটাই সত্যি...

এমনকি একান্ত আপনজন মরে গেলেও কিন্তু কদিন পরেই সব ঠিকঠাক...আসলে কারো জন্য কিছু থেমে থাকে না...আপনি বিছানায় শুয়ে অথবা আপনি নেই বলে কারোরই কিছু যায় আসে না বা আসবেও না...

তবুও আমরা সারাটা জীবন দৌড়ে বেড়াই নিজের দিকে না তাকিয়ে শুধু দায়িত্ব আর কর্তব্যের খাতিরে...কখনো স‍ৎ কখনোবা অসৎ...তবুও ওরা ভালো থাকবে বলে নিজের সব ইচ্ছ অনিচ্ছা, ন্যায়নীতি, ভালো লাগা মন্দ লাগার জলাঞ্জলি...

তাই বলছিলাম কি দায়িত্ব কর্তব্যতো আমাদের পক্ষে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়...তবে তা পালন করতে গিয়ে যেন আমরা ঠিক ভুলে না যাই নিজের সত্ত্বাটার কথা...ব্যস এটুকু মনে রাখলেই চলবে...জীবন বড় ছোট...একে নিজের মতো করে উপভোগ করতে শিখুন...

বি:দ্র: নিন্দুকেরা বলতে পারেন তুমি হুমদোও তো নিজের রোগীকে আইসি‌ইউতে শুইয়ে বেশ মজা নিলা...তাদের জন্য বলি আমার পেশেন্টের তেমন কিছু হয় নাই...শুধু দীর্ঘ সময় ধরে একটা ইনজেকশন নিতে হবে শরীরে...কিন্তু হাসপাতালে কোন বেড খালি নেই তাই পরিচিত ডাক্তার আইসিইউতেই... B-)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ৯:৪৩

বিজন রয় বলেছেন: কি আর করা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.