![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার কাছে দুনিয়ার সেরা বৈচিত্র্যময় অভিজ্ঞতা হচ্ছে, গভীর রাতে লোকাল বাসে বাড়ি ফেরা...এ সময়ের যাত্রীরা অন্য সময়ের যাত্রীদের চেয়ে আলাদা...একেক জন একেক কিসিমের...ঠিকমতো বুঝতে পারলে এটুকু সময়ের মধ্যেই রহস্যময় মানব চরিত্রের অনেকটাই আপনি জেনে যাবেন...
আমার সুদীর্ঘ স্ট্যাটাসগুলোর অধিকাংশই এদের কাছ থেকে ধার করা...আর প্রতিদিন যদি রাতের একটা নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি ফেরেন তাহলে তো কথাই নেই...কোন স্টপজে কোন যাত্রী নামবেন আর উঠবেন তা আপনার মুখস্থ হয়ে যাবে...এমনকি তার স্বভাবচরিত্রও...
যেমন রাত সাড়ে বারটার গাড়িতে ফিরলে আমি চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারি মহাখালী থেকে রঙজ্বলা নীল শার্ট পরা এক ভদ্রলোক উঠবেন...হাতে থাকবে সবজির ব্যাগ...এতো রাতে তিনি সবজি কোথায় পান আল্লাহই ভালো জানেন (সম্ভবত কোন সবজিওয়ালার সঙ্গে তার পাকা বন্দোবস্ত আছে। সারাদিনের বিক্রি শেষে বেঁচে যাওয়া সবজি তিনি সস্তায় কিনে নেবেন। আর বাসায় গিয়ে স্ত্রীকে গপ্পো দিবেন, বুঝলা পরিচিত মানুষ। একদম টাটকা জিনিসটা আলাদা করে রেখে দেয়। নিজের অক্ষমতাকে চাপা দিতে আমাদের মধ্যবিত্তদের এরকম কতোশতো মিথ্যে বলতে হয় তা স্রষ্টাই ভাল জানেন) ...তার সবচে পছন্দের সবজি চিচিঙ্গা...অধিকাংশ সময় পাতলা পলিথিন ভেদ করে এই সবজিটাই চোখে পড়ে কিনা...
রাত পৌনে একটার গাড়িতে ফিরলে মগবাজার থেকে সাদা প্যান্ট পরা বেশ পরিপাটি চেহারার ভদ্রলোক উঠেন...কন্ডাক্টর ভাড়া চাইলেই তিনি বেশ ভারিক্কি গলায় বলেন, ’পরে’...এরপর পুরো রাস্তা ভাব ধরে বসে থাকেন...এয়ারপোর্ট কাছাকাছি এলেই কন্ডাক্টরের হাতে পাঁচ টাকা গুঁজে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে নেমে যান...যদিও ভাড়া ১৫ টাকা...১০ টাকাতো বাঁচলো :-)
তবে পরিচিতদের সঙ্গে অপরিচিত যাত্রীরাও উঠেন...একবার এক দশাসই চেহারার লোক উঠলো...বাসের একেবারে পেছনের সীটে বসেছি আমি...আমার পাশে খুবই নিরীহ চেহারার এক সদ্য যুবক...তার পাশেই ব্যাটা বসলো...মুখ দিয়ে ভকভক করে মদের গন্ধ বেরুচ্ছে লোকটার...
আমি একবার দেখেই চোখ ফিরিয়ে নিলাম...কিন্তু আমার পাশের ছেলেটি ভয়ার্ত চোখে লোকটির দিকে তাকিয়ে রইলো...আর ওই ব্যাটাও বুঝতে পেরে ছেলেটার সঙ্গে বেশ কর্তৃত্বের সুরে আলাপ চালু করলো...কিছু কিছু কথা এতােটাই অপমানকর আমার মতো গণ্ডারেরও গায়ে লাগলো...যেমন বাড়ি কই? গাইবান্ধা...গাইবান্ধা!!! শালার বলদের দ্যাশ। ওখানকার সব শালারা গাই চো...
এরকম আরো কিছুক্ষন চললো...একসময় আমি ভীষন বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এ্যাই অাপনি কোথায় নামবেন? আমার দিকে একটু তাকিয়ে বললো, খিলক্ষেত...আমি একটু ভেবে দেখলাম, এখন সবে সাতরাস্তা। খিলক্ষেত অনেকদূর...
অামি লোকটার দিকে সোজাসুজি তাকিয়ে বললাম, আপনি মহাখালীতে নেমে যাবেন...লোকটা মদ খেলেও পুরো মাতাল না...ভং ধরছিল...কারণ আমর এ কথা শোনার পর সে কয়েক সেকেন্ড আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল...এরপর অবাক করে দিয়ে সত্যি মহাখালী নেমে গেলো...
আমি ভীষণ খুশি, লোকটা আমার চোখের ভাষা বুঝতে পেরেছে...সত্যি বলতে জীবনে প্রথম কেউ আমার চোখের ভাষা বুঝেছে...
দেখলে তো, মাতাল লোকটাও আমার চোখের ভাষা বুঝল ঠিকই, আফসোেস শুধু তুমিই আমার চোখের ভাষা বুঝলে না...
২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩৫
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হা হা হা
আহা কি দুষকো ভাইজান!
নিশ্চয়ই কেউ বুঝবে.. মাতাল হয়ে নয়, তবে বোঝার পর মাতাল হবে!
+++
৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩৯
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: নিজের অক্ষমতাকে চাপা দিতে আমাদের মধ্যবিত্তদের এরকম কতোশতো মিথ্যে বলতে হয় তা স্রষ্টাই ভাল জানেন
ভাল্লাগসে কথাটা। প্লাস দিলাম।
৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৫৯
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: যাক, মাতাল লোকটা তো অন্তত আপনার চোখের ভাষা বুঝল! এই বা কম কিসে?
৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:০৮
বিজন রয় বলেছেন: আফসোেস শুধু তুমিই আমার চোখের ভাষা বুঝলে না.
হা হা হা হা
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:২২
হাফিজ বিন শামসী বলেছেন: মাতাল লোকটা বাদে এখনো বুঝি কেউ বুঝে নাই?