![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মহিউদ্দিন খালেদ। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। পড়তে ভালোবাসি। নিজের একটা চিন্তা জগত আছে। সেখানে চারপাশের অনেক কিছু নিয়ে অনেক নিঃশব্দ আলোচনা হয়! সেই আলোচনা গুলোর সাথে বৃহত্তর জগতের সংযোগ ঘটাতে ইচ্ছে করে!
আমার নাম কামাল রহমান। আমি বর্তমানে বুয়েটের ছাত্র। শুনেছি আপনি একজন বুয়েটিয়ান এবং চট্টগ্রামে থাকেন। এজন্য আপনার সাথে যোগাযোগ করলাম। আমার ধারনা বুয়েটিয়ান দের কেউ না কেউ আমার সমস্যাটার সমাধান দিতে পারবে এবং আমাকে বাঁচাতে পারবে। আমার সমস্যাটা ঠিক লিখে বুঝানো সম্ভব না। আপনি যদি আমার বাসায় আসেন এবং আমার সিচুয়েশনটা নিজের চোখে দেখেন তাইলে হয়ত আমাকে সাহায্য করতে পারবেন। আর আমাকে সাহায্য করতে না পারলেও আমার ‘প্রক্রিয়াগত ভুল’টা হয়ত আপনি ধরতে পারবেন অথবা আপনার মাধ্যমে অন্যকোন বুয়েটিয়ান ধরতে পারবে।
আপনি যদি সত্যি সত্যি আসেন তাইলে আগামী বৃহস্পতিবার রাত বারটার পরে নিচের ঠিকানায় সশরিরে একা আসবেন। আমাকে ইমেইল ব্যাক করে কোন লাভ নাই। আমি মোবাইল ফোন ও ইউজ করিনা।
বাসা নং ২২১/খ, বাকের রোড,
কাপাসগোলা, চট্টগ্রাম।
আমি বাংলায় লেখা ইমেইল টার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছি! এর চেয়ে অনেক অনেক উদ্ভট ইমেইল অনেক সময় আসে।যেমন-
ব্রাদার, ফ্রান্সে বউসহ বেড়াতে গিয়ে ‘গান পয়েন্টে’ টাকাপয়সা সব ছিন্তাই হয়ে গেছে। এখন হোটেলে আটক আছি! যদি দয়া করে অমুক ঠিকানায় তিন হাজার বাইশ ডলার পনের সেন্ট মনিগ্রাম করে পাঠান তাইলে হোটেলের বিল মিটিয়ে বউ সহ ইজ্জত বাঁচিয়ে কোনমতে এয়ার পোর্ট পর্যন্ত যেতে পারি!মনিগ্রামের ডিটেইল দেয়া আছে।
সেসব একবার দেখেই স্কিপ করে চলে যাই। কিন্তু এই ইমেইলের পাঁচবর্নের ‘বুয়েটিয়ান’ শব্দটাই আমাকে আটকে দিল।আমি আর সাঁতপাচ না ভেবেই নির্দিষ্ট ঠিকানায় নির্দিষ্ট সময়ে কামাল রহমানের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
শুক্রবার অফিস ছুটি। কাজেই বৃহস্পতিবার বেশ রিলাক্সড মুডে রাত এগারটার দিকে কাল রঙের জ্যাকেট টা গায়ে চাপিয়ে আমার লালখানবাজারের বাসা থেকে রিকশা নিয়ে কাপাসগোলার উদ্যেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। যেতে যেতে কামালের চিঠি র ‘প্রক্রিয়াগত ভুল’ কথাটা বারবার মাথায় ঘুরতে লাগল। এই কথাটায় সে ইনভার্টেড মার্ক দিয়েছে। তারমানে এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কিন্ত কি প্রক্রিয়াগত ভুল? সেকি কোন জিনিষ নিয়ে গবেষনা করতে গিয়ে কোন বিপদ ডেকে এনেছে? কি সঙ্ক্রান্ত গবেষনা? আবার বলেছে তাকে হেল্প করতে চাইলে তার বাসায় গিয়ে তার সিচুয়েশন নিজের চোখে দেখতে হবে। সে কি তাইলে বন্দি? ফ্রাঙ্কেন্সটাইন কেইস না’ত!
থাক। গিয়েই দেখি। বাস্তবে না দেখে যতবেশি ভাবব ততবেশি প্যাঁচ লাগবে। আসলে হয়ত কিছুই না!
অন্ধকারে অনেক খোঁজাখুঁজির পর নির্দিষ্ট বাসার দেখা মিলল ।চারদিকে ইটের দেয়াল দেয়া কাঠের একতলা বাড়ি। সীমানা বরাবার কাঁঠাল গাছ রোপন করা হয়েছে। কাঁঠাল গাছের যাতে মাথা ফুঁড়ে উঠতে কোন অসুবিধা না হয় সেই হিসাবে বাড়ির ছাউনি’র টিন কেটে দেয়া আছে।
সদর দরজার মাথায় একটা মলিন একশ ওয়াটের বাল্ব। দরজায় লোহার মোটা কড়া। এবং সেই কড়ায় ভারী তালা ঝুলছ!!
আমি হতাশ ভঙ্গিতে ঘুরে দাঁড়ালাম। সামান্য একটা ইমেইলের উপর ভিত্তি করে এতদুর আসা মোটেও উচিৎ হয়নি। জ্যাকেটের পকেটে বেন্সন সুইচের প্যাকেট আর লাইটার ছিল। বেন্সন সুইচ একটা ধরিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালাম।
‘খালেদ ভাই দাঁড়ান!!’
তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বরে আমার নাম ধরে ডাকা এবং সাথে চাবি দিয়ে তালা খুলার শব্দে ঘুরে দাঁড়ালাম। সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে তাকে দেখে নিজের অজান্তেই আমার গলা দিয়ে ‘হুঁউক’ করে একটা আওয়াজ বেরিয়ে গেল!
শ্যাওলার মত চুলদাড়িতে কোটরাগত চোখ দুইটা ছাড়া চেহারার বাকি অংশ ঢাকা পড়ে গেছে। লিকলিকে দেহে কাল আলখাল্লার মত একটা পোশাক অনেকটা চৌকোনা হয়ে হাঁটু পর্যন্ত নেমে এসেছে। সেই পোশাক থেকে বোঁটকা গন্ধ আসছে। কোটরাগত চোখের মনি দুটা প্রবল ভাবে নড়াচড়া করছে। পুরা অবয়বটাকে মনে হচ্ছে আবছা অন্ধকারে খুলে রাখা একটা কাল আলমারি, যার সাদাটে উপরের তাকে ছুটাছুটি করছে দুইটা কাল ইঁদুর।
আমাকে আগে কথা বলার হাত থেকে নিষ্কৃতি দিয়ে জীবন্ত আলমারিই কথা বলে উঠল-
আমি কামাল রহমান। খালেদ ভাই আপনি আমার সাথে আসেন।আমি ঘরে বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাখি যাতে কেউ বুঝতে না পারে ভেতরে কেউ আছে। কাঠের বেড়া আর টিনের চালের মধ্যেকার ফাঁক দিয়ে আমি রাত সাড়ে এগারটা থেকে বাইরে নজর রাখছিলাম। আমার মন বলছিল আপনি আসবেন। ফেসবুকে আপনার চেহারা দেখেছি। কাজেই চিনতে অসুবিধা হয়নি। বাড়ির পেছনে একটা গুপ্ত দরজা আছে। আপনাকে দেখে আমি সেটা দিয়ে বেরিয়ে এসে তালা খুলে দিয়েছি। আসেন আমার সাথে।
আমার মনে হল এই জীবন্ত আলমারি বা জিবন্ত শবদেহের পিছু পিছু যাওয়াই আমার নিয়তি। কারন একবার পেছন ফিরে দৌড় দেবার কথা চিন্তা করেই আতঙ্কে হিম হয়ে গেলাম! আমার পরিষ্কার মনে হল পেছন ফিরে দৌড় দিতে গেলেই ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটবে!
ঘরের ভেতর অন্ধকার। কামাল মনে হল অন্ধকারেই স্বচ্ছন্দ!অন্ধকারেই টান দিয়ে কাঠের ড্রয়ার খুলতে শুনলাম। চাবির ধাতব আওয়াজ শুনলাম। একটা দরজাও কঁকিয়ে উঠে খুলে গেল। সেই দরজার ওপাশে আরেকটা রুম দেখা যাচ্ছে।এই রুমটাতে খুব হাল্কা আলো জ্বলছে। নীলাভ রঙের কাগজ দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়েছে রুমের চারদিকের কাঠের দেয়াল। রুমের ভেতর খাট, চেয়ার টেবিল কিছু নাই। মেঝেতে একটা শীতল পাটি। তার উপর একটা কোল বালিশ। কোল বালিশের মাঝখানটা তে গভীর খাঁজ হয়ে আছে। বুঝাই যাচ্ছে দিনের পর দিন কেউ এটাতে হেলান দিয়ে বসেছে। মাটিতে শোয়ানো একটা বেশ বড়সড় মনিটরের ডেস্কটপ কম্পিউটার। পাশে একটা অ্যাশট্রে তে অনেকগুলা সিগারেটের পোড়া ফিল্টার গোঁজা। ডেস্কটপ মনিটরের ডান পাশের ওয়াল ঘেঁসে একটা স্টিল ক্যাবিনেট। কামাল রহমান চাবি ঘুরিয়ে স্টিল ক্যাবিনেটের সবচেয়ে উপরের ডেস্কটা খুলতে খুলতে বলল,
খালেদ ভাই বসেন।
শীতল পাটি টার কথা বাদ দিলে ঘরের মধ্যে বসার মত কিছু নাই। শীতের মধ্যে শীতল পাটির উপর বসতে ইতস্তত করছি দেখে কামাল বলল, কোল বালিশটার উপর বসেন। বসে আরাম করে একটা সিগারেট ধরান। সিগারেট খান ত?
আমি ‘খাই’ বলাতে কামাল আমার দিকে মার্লবুরো সিগারেটের আস্ত একটা প্যাকেট ছুঁড়ে মারল। আমার পকেটে লাইটার ছিল। আমি প্যাকেট খুলে মার্লবুরো একটা ধরালাম।
কামাল নিজেও একটা সিগারেট ধরিয়ে শীতল পাটির উপর আমার মুখোমুখি বসল। আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগে নিজে থেকেই বলা শুরু করল-
আমি খুব ছোটবেলা থেকেই এনিমেশন ভালবাসতাম। কিন্তু প্রচলিত এনিমেশনগুলো আমাকে তৃপ্ত করতে পারতনা। আমাদের হাঁটার ভঙ্গির সাথে ওজনের একটা সম্পর্ক আছে। আমার মনে হত কোন এনিমেটর ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারছেনা। আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হবার কারনে প্রাইভেসিটা একটু বেশিরকম ই পাই। আর আমার যেকোন কিছু একবার পড়লেই হয়ে যেত। কাজেই খুব কম সময় দিয়েও আমার একাডেমিক রেজাল্ট ঠিকঠাক ছিল। আমি আমার সমস্ত মনোযোগ নিবদ্ধ করি এনিমেশন বিষয়ক গবেষণায়। এ বিষয়ে যত লেখা পাই পড়ে ফেলি। যত সফটওয়্যার বাজারে আছে সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি। এনিমেশন নিয়ে আমার নিজস্ব গবেষণা শুরু করি ইস্পাহানি স্কুলে ক্লাস এইটে পড়ার সময়। আমি যখন বুয়েটের লেভেল ২,টার্ম১ এর ছাত্র তখন একটা ছবি দেখলাম। ছবির নাম ব্লু ল্যাগুন। ছবির নায়িকা ব্রুক শিল্ডস কে দেখে তার প্রেমে পড়ে গেলাম। কিন্তু প্রেমে পড়ে ত লাভ নাই। ব্লু ল্যাগুন ছবি নির্মিত হয়েছে আমার জন্মের আগে। সেই হিসাবে ব্রুক শিল্ডস এখন আমার বড় খালার বয়সী। ছবিতে যে ব্রুক শিল্ডস কে দেখছি সে ত আর নাই! কিন্তু আমি পুরা হতাশ হলাম না। আমার গত আটবছরের গবেষণায় তৈরি ‘এনিমেটো রিয়েলা’ সফটওয়্যার আমাকে বলল- কামাল, যারা নিজের ভুবন নিজে তৈরি করে নিতে পারে তারা সময়ের বাঁধা থেকে মুক্ত। তুমি মনে মনে যা ভাবছ তা চাইলেই বাস্তবায়ন করতে পার!
তখন পি এল চলতেছিল। আমি পরীক্ষা টরিক্ষা রেখে বাড়ি চলে আসলাম। মোবাইল পার্মানেন্ট লি বন্ধ করে দিলাম। শুরু হল আমার নিবিড় গবেষণা। সারাদিন এই রুমের মধ্যে বসে বসে কাজ করি। অত্যাধিক ধূমপানের কারনে মুখের রুচি নষ্ট হয়ে গেল। কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে তিক্ত ভাষায় জবাব দিই। আমার শরীরের অবস্থা দেখে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়লেন। কিন্তু আমার বাবা ব্যাপার টা খুব সহজ ভাবে নিলেন। বললেন, কামাল সৃষ্টিশীল মানুষ। ওর আচরণ আর দশজন সাধারন মানুষের থেকে ভিন্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। মা কাঁদতে কাঁদতে বলল, তোমার ছেলে বুয়েটের পরীক্ষা না দিয়ে চলে এসেছে। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেটা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে লন্ডন আমেরিকা যাবে অথবা বুয়েটের টিচার হবে। বাবা বলল, দেখ পাশ করে লন্ডন আমেরিকা যাওয়া অথবা বুয়েটের টিচার হবার থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপুর্ন নতুন কিছু উদ্ভাবন করা! আমার ছেলে সেরকম কিছু করার চেষ্টা করছে। মা বলল, আসলে এসব তোমাদের বংশের পাগলামি। তোমরা মেধাবী বংশ হলেও তোমাদের মধ্যে একটা বয়সে পাগলামি চলে আসে। যেমন তুমি বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরি পেয়ে কিছুদিন চাকরি করার পর ছেড়ে দিয়েছিলে। তোমার যুক্তি ছিল সরকারি চাকরিতে ত কোন ‘অনিশ্চয়তা’ নাই! অনিশ্চয়তা যেখানে নাই সেখানে ‘থ্রিল’ ও ত নাই। থ্রিল পাবার জন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে তুমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জয়েন করলে এবং কিছুদিন পরে বললে, ‘বেসরকারি চাকুরে’ আর ‘প্রভু ভক্ত কুকুর’ একই জিনিষ। যতবেশি প্রভুর পা চাটবে ততবেশি উপরে উঠতে পারবে! তুমি নিজে যখন যেটা বুঝছ সেটাকেই সব সময় চূড়ান্ত মনে করেছ। কারো কথার ধার ধা’র নাই। তুমি তাও গ্র্যাজুয়েট হবার পরে পাগলামি শুরু করছিলা। তোমার ছেলে তার আগেই শুরু করেছে!বাবা বললেন, আমার দাদার মধ্যে পাগলামি ছিল! তিনি সেই আমলে যাত্রাদলের জন্য ‘পালা’ লিখতেন।তোমার শ্বশুর অর্থাৎ আমার বাবা ছিলেন পুরোদস্তর সংসারী মানুষ। তাঁর মধ্যে কোন ‘পাগলামি’ আই মিন ‘প্রতিভা’ ছিলনা! দাদার পরে আমি। তবে আমি অথবা দাদা কেউ ই সফল হই নাই। সম্ভাবনার সূত্র অনুযায়ী পাগলামি তৃতীয় পুরুষে গিয়ে সফলতার মুখ দেখে! সেই হিসেবে কামাল ব্যর্থ হবার কথা না। তার গবেষণা তাকে পৃথিবী বিখ্যাত করবে! তাকে কিছু বলার দরকার নাই।
তিন চার মাস আগে বাবার হঠাত মনে হল গ্রামের বাড়িতে গিয়ে একটা মুরগীর ফার্ম করা দরকার! তিনি মুরগীর ফার্ম করার জন্য স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে চলে গেলেন। মায়ের সাথে আমার ‘অনিয়ম’ নিয়ে প্রতিদিন তিক্ত ঝগড়া হয়। মাস খানেক আগে মায়ের সাথে চরম রাগারাগি হল। মা বিরক্ত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে নানুর বাড়িতে চলে গেলেন। আমিও বাঁচলাম!
এটুকু বলে কামাল আমার দিকে হঠাৎ প্রশ্নবোধক চোখে তাকাল। তারপর বলল,
ভাল কথা, আপনার কি ড্রিঙ্ক করার অভ্যাস আছে? আমার কাছে ভাল হুয়িস্কি আছে। চাইলে খেতে পারেন।
আমি সন্মতি জানাতে কামালের স্টিল ক্যাবিনেটের একেবারে নিচের ডেস্ক হতে টিচার্স হুয়িস্কি’র একটা চারকোনা বোতল বেরোল। কামাল শীর্ন হাতে বোতলটা মেঝের উপর নামিয়ে রেখে বোতলের ছিপি খুলতে খুলতে বলল, বোতল থেকে ডাইরেক্ট খেতে হবে খালেদ ভাই। ঘরে গ্লাস ফ্লাস কিছু নাই!
তাই সই! কামালের হাত থেকে বোতল নিয়ে ‘র হুয়িস্কি’ই পেগ অনুমান করে গলায় ঢাললাম। আমার থেকে বোতল নিয়ে কামাল নিজেও গলায় ঢালল। তারপর ছিপি দিয়ে বোতলের মুখ বন্ধ করে আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে আমার হাতেও একটা দিল। সিগারেটে টান দিয়ে বলল, আমার এনিমেটো রিয়েলা কিভাবে কাজ করে আপনাকে একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। বলতে বলতে উঠে দাঁড়িয়ে ডেস্ক থেকে একটা ছোট্ট ডিজিটাল ক্যামেরা বের করল কামাল। ফ্ল্যাশ দিয়ে আমার ঝটপট কিছু ছবি তুলল। তারপর তার কম্পিউটার অন করে ক্যামেরার মেমোরি কার্ড টা সংযুক্ত করল।
দ্রুত কয়েকটা ক্লিক করতেই স্ক্রিনে বেশ বড় একটা আইকন ভেসে উঠল- ANIMATO REALA- A LIVING WORLD BY KAMAL RAHMAN
তারপর অই আইকনটাতেই ক্লিক করল কামাল। আইকনে ক্লিক করতেই একটা ফর্মের মত আসল। কামাল পেশাদার হাতে সেই ফর্মটা পুরন করতে লাগল। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম সেখানে ঝড়ের বেগে আমার একটু আগে তোলা ছবিগুলো সহ ওর পিসি তে স্টোর করা আরো বেশ কিছু ছবি এন্ট্রি হয়ে গেল। ছবিগুলোর মধ্যে কিছু পাহাড়ের ছবি, কিছু পোশাক আশাকের ছবি, একটা বেশ বড়সড় রাইফেল এগুলো এক পলকের জন্য চোখে পড়ল।
কামাল একের পর এক ফর্ম পুরন করেই যাচ্ছে। আমি কপিউটার এমনিতেই কম বুঝি। তাই বোঝার অহেতুক চেষ্টা না করে হুয়িস্কি’র বোতল টা টেনে নিলাম। মনে হচ্ছে আজকে চোখে অবিশ্বাস্য কিছু দেখতে হবে। হুয়িস্কি খাওয়া অবস্থায় দেখলে পরে নিজেকে অন্তত পাগল নই বলে সান্ত্বনা দিতে পারব।
আমার মনোযোগ বোতলের দিকেই চলে গিয়েছিল। হাল্কা নেশার প্রথম পর্বটাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কামাল আমার গা ধরে ধাক্কা দিল,
-খালেদ ভাই, আপনার মুভি(!) রেডি!
আমি চমকে মনিটরের দিকে তাকালাম। মনিটরে একটা স্টিল পিকচার দেখতে পাচ্ছি- আমার কাঁধে বিশাল একটা রাইফেল। পাশে দুটা জংলি কে দেখা যাচ্ছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বিশাল পাহাড় সর্বস্ব অরণ্য। আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার দিচ্ছে এরকম একটা সিংহ ও আছে।
আমি বললাম, ভাই এ ত সামান্য গ্রাফিক ডিজাইন!
কামাল হা হা করে হেসে উঠল। কিন্তু হাসিটাও কেমন নিষ্প্রাণ। কামাল কে এতক্ষণ ধরে দেখছি। কিন্তু ওর কোন আচরণকেই আমি পরিচিত জগতের আচরণের সাথেই মেলাতে পারছি না। সবকিছুতেই কেমন যেন একটা অস্বাভাবিকতা, কেমন যেন অমিল!
খালেদ ভাই, এটাত মুভির পোস্টার! মুভি ত শুরুই হয় নাই!!
বলতে বলতে পোস্টারের উপর ক্লিক করল কামাল। এমন একটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বেজে উঠল যে মনে হল বনে হঠাৎ করে বাঘ এসেছে। আর সবপ্রানী ভীত সচকিত হয়ে উঠেছে। মিউজিক ফলো করে একটা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটা পায়ে চলা রাস্তা দেখা গেল। সেই রাস্তা দিয়ে চলছে তিনজনের একটা দল। দলের বাকী দু’জনের থেকে সামান্য পিছিয়ে হাঁটছি আমি। আমার পরনে সবুজ রঙের হাফ শার্ট আর জিনস প্যান্ট।কোমরে পেঁচানো কার্তুজের বেল্ট। কাঁধে রাইফেল। পাশে দুজন জংলি। কোমরে নেংটি পরে পোঁটলা-পুঁটলি সহ আমার আগে আগে চলছে। দু’পাশে খাড়া পাহাড় সারি। আকাশের দিকে উঠে গেছে। একটু পর পর ভেসে আসছে বুনো হাতির ডাক। আমার(!) সঙ্গীদের একজন হাত ইশারা করে ডান দিকের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়ের খানিকটা নিচে কিছুটা সমতল জায়গাটা দেখাল। দেখি দু’পাশ থেকে ঝকঝকে মুলাদাঁত বেরিয়ে আসা বিশাল এক হাতি! আমি রাইফেল তাক করে কপাল বরাবর গুলি করলাম! কিন্তু একি হয়ে গেল?? গুলি কপালে না লেগে কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে আর শখানেক গজ দূরে থাকা বুনোহাতি বিদ্যুৎ গতিতে আমার দিকে ছুটে আসছে। আমি আতঙ্কে অসার হয়ে বিকট চিৎকার দিলাম এবং কামালের অস্বাভাবিক অট্টহাসির চোটে একসময় আমার সংবিৎ ফিরল- আমি আসলে এখানে(!) এবং বুনোহাতি যেই আমি’কে ধাওয়া করেছে ‘সেই আমি’ আসলে ‘এই আমি’ নই!
কামাল উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছে। ওর হাতে ছিপি খোলা বোতল। ওর চেহারার দিকে তাকিয়ে হঠাত করে মনে হল ওর চেহারায় যেন আগের চেয়ে একটু বেশি প্রান ফিরে এসেছে। সবকিছু যেন আরেকটু সহজ। বোতলে চুমুক দিতে দিতে কামাল বলল,
খালেদ ভাই, আমি চাইলেই আপনাকে হাতি শিকারি হিরো বানাই দিতে পারতাম। কিন্তু একটু মজা করলাম!
কিন্তু এ’ত সাঙ্ঘাতিক জিনিষ ভাই! পুরাই জীবন্ত। তোমার সফটওয়্যার থাকলে ত আর সিনেমা বানানোর জন্য কষ্ট করে বনে জঙ্গলে শুটিং করার দরকার নাই!
আমিওত তাই ভেবেছিলাম খালেদ ভাই। ব্যাপারটা যদি এখানেই সীমাবদ্ধ থাকত তাইলে ত কোন সমস্যা ছিল না!
বলতে বলতে কামালের বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসল। কামাল বোতলটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে ধপ করে মেঝেতে বসে পড়ল।
বুঝলেন খালেদ ভাই। আমি ব্লু ল্যাগুন ছবিতে ব্রুক শিল্ডস এর যে বয়স তার সে বয়সের অনেকগুলো ছবি নেট থেকে ডাউনলোড করি। সেই ছবিগুলো দিয়ে রাতের পর রাত খেটে আমি তাকে তৈরি করি।তারপর সে এবং আমাকে নিয়ে তৈরি করি সম্পুর্ন আলাদা একটা জগত। আমরা সেখানে একসাথে বাস করছি! একসাথে পরস্পরের সুখ দুঃখ গুলো ভাগাভাগি করছি!
দুঃখের কথা আসছে কেন? এখানে ত পুরা সুখের কাহিনী হবার কথা। কারন এখানে তুমি যা ঘটাতে চাইবে তাইত ঘটবে!
আমিওত তাই ভেবেছিলাম খালেদ ভাই। প্রথম প্রথম সেরকম ই ঘটত। কিন্তু পরিস্থিতি দিন দিন পাল্টাতে শুরু করল যখন থেকে এই জগত ছাপিয়ে সেই জগতটা আমার আসল জগত হয়ে উঠা শুরু করল!আম্মা নানুবাড়ি চলে যাবার আগের দিনের ঘটনা। দুপুর বেলা খেতে বসেছি। আম্মা বুটের ডাল দিয়ে খাসির মাথা রান্না করেছে। আমার খুব প্রিয়। খেতে বসে দেখি কোন স্বাদ পাইনা! আমি হাত ধুয়ে উঠে গেলাম। তারপর কম্পিউটার অন করে আমার আর অ্যালিটা’র জগতে চলে গেলাম।
অ্যালিটা?
হ্যাঁ অ্যালিটা। ব্রুক শিল্ডস এর চেহারা ব্যবহার করে তাকে বানানো হয়েছে। কিন্তু সে ব্রুক শিল্ডস নয়। সে আমার অ্যালিটা। আমি ছাড়া অন্য কোন পুরুষ তাকে কখনো স্পর্শ করেনি!
কম্পিউটার অন করে তুমি আর অ্যালিটা’র জগতে গিয়ে কি দেখলে?
বাঁশের খুটা আর রোদে শুকানো পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি একটা ডায়নিং টেবিলে আমি খেতে বসেছি।অ্যালিটা পাহাড়ি একধরনের ফুল আর পাখির মাংস দিয়ে তৈরি করা একবাটি স্যুপ এনে আমার সামনে রাখল। মুখে দিতেই অমৃতের স্বাদ!
কথা বলতে বলতে একটু বিরতি দিল কামাল। তারপর বলল,
আস্তে আস্তে সেটাই আমার প্রধান জগত হয়ে উঠল। এখন আমি দু’তিন দিন পর পর একবেলা খাই!
কিন্তু অ্যালিটা র সাথে ত নিয়মিত ই খাওয়া দাওয়া কর!
আমার মুখে অ্যালিটার নাম শুনে কামালের মুখে নিঃশব্দ একটা উজ্জ্বলতা ফুটে উঠল। সেই উজ্জ্বলতা বলে দিচ্ছে অ্যালিটা নামক ভার্চুয়াল রমনি’কে এই রিয়েল যুবক কতটা ভালবেসে ফেলেছে! তাকে ছাড়া তার জীবন কত টা অর্থহীন!!
তুমি কি সেই জগত থেকে মুক্তি চাও? আমাকে পাঠানো ই মেইলে যে তোমাকে বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে তাতে কি তুমি এইটা মিন করেছো?
আমার কথায় মনে হল কামালের চেহারার সমস্ত উজ্জ্বলতা নিভে গেল। দীর্ঘ নিশ্বাসের সাথে ওর শুকনা বুক টা চুপসে যেতে লাগল। বোতল টা টেনে নিয়ে এক ঢোঁক খেল। তারপর বলল, আমি অ্যালিটা কে হারাতে চাইনা। কোনকিছুর বিনিময়েই না!
কিন্তু অ্যালিটাকে হারানোর প্রশ্ন আসছে কেন? এটা সম্পুর্ন তোমার নিজের জগত। তুমি যা চাইবে তাই হবে এখানে।
আমার কথা শুনে অনেকক্ষণ নির্বাক হয়ে থাকল কামাল। তারপর নিতান্ত অনিচ্ছায় অস্ফুট কণ্ঠে উচ্চারণ করল, অ্যালিটা’র ক্যান্সার হইছে খালেদ ভাই!!
মানে?? মানে তুমি ওকে ক্যান্সার দিলা???
আমি দিই নাই খালেদ ভাই। আমি আপনাকে লিখা ই মেইলে ‘প্রক্রিয়াগত ভুল’ একটা শব্দ ব্যাবহার করেছিলাম। এই জগতের সাথে আমি সম্পৃক্ত হবার এক পর্যায়ে আমার মনে হতে লাগল যেন এখানে ঠিক আমার সচেতন মনের যা ইচ্ছা তা আমি সবসময় ঘটাতে পারি না। এখানে অনেক সময় অনেক কিছু ঘটতে লাগল যা আমি সচেতন ভাবে কখনো চিন্তা করিনি!
দু একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হত।
আমার আর অ্যালিটার সংসারে রান্নার লাকড়ি, শিকারের মাংস এগুলো জঙ্গল থেকে বয়ে আনতে হয়। এগুলা বয়ে আনার জন্য আমি ছোট্ট দু’চাকার একটা গাড়ি বানিয়ে নিলাম। একদিন গাড়িটা আস্ত একটা শিকার করা হরিণের মাংস, চামড়া সমেত খাদের মধ্যে পড়ে গেল। মাংস ত সব গেল। গাড়ি মেরামত করতে লেগে গেল আরো দু’দিন। আমি আর অ্যালিটা দু’দিন নিরামিষ খেয়ে থাকলাম!!
ওই জগত টা আস্তে আস্তে তোমার সচেতন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল?
হ্যাঁ খালেদ ভাই। আমার দিন দিন ধারনা হতে লাগল আমাদের মন জিনিষটা আসলে অনেক বড় এবং স্বাধীন এবং এই মনের অতি ক্ষুদ্র একটা অংশ কে আমরা অনুভব করতে পারি আর তার’ও ক্ষুদ্র একটা অংশ কে আমরা হয়ত নিয়ন্ত্রণ করতে পারি!
কামাল, তোমার মনের স্বাধীন একটা অংশ অ্যালিটা কে ক্যান্সার দিয়েছে। তোমার মনের যে অংশ তোমার নিয়ন্ত্রণে আছে সেটা দিয়ে তুমি অ্যালিটা কে কেমোথেরাপি দাও! তাকে বাঁচিয়ে তোল!!
আমি চেষ্টা করেছিলাম খালেদ ভাই। পারিনি। ওটা করতে গেলেই কি সব এরর চলে আসে! গোটা প্রোগ্রাম হ্যাং করে!! এজন্য ভাবছিলাম বুয়েটের সিএসই ডিপার্ট্মমেন্টের কেউ হয়ত আমাকে হেল্প করতে পারবে!আমাদের ব্যাচমেট দের বললে হয়ত তারা বিষয়টার গুরুত্ব বুঝত না।তাই আপনার সাথে যোগাযোগ করেছি। খালেদ ভাই, খালেদ ভাই আপনি এটা বুয়েটিয়ান দের জানান! সিএসই ডিপার্ট্মেন্টের কাওকে আনানোর ব্যবস্থা করেন! উনি হয়ত এরর সল্ভ করে আমার অ্যালিটা কে বাঁচাতে পারবে।অ্যালিটা’র কষ্ট আমি আর সহ্য করতে পারছিনা। আমার অ্যালিটা কে বাঁচান খালেদ ভাই,অ্যালিটা কে ছাড়া আমি বাঁচবনা!! বলতে বলতে আমার দু’হাত চেপে ধরে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল কামাল।কান্নার গমকে ওর শীর্ন দেহ টা থর থর করে কাঁপতে লাগল!!
অসহায় কামালের শীর্ন দেহ বুকে জড়িয়ে ধরে আমি নিজেও কামালের মতই অসহায় বোধ করলাম। কোন কামাল কে আমি কোন কামালের হাত থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করব??
পাখি ডাকছে।আকাশে ভোরের প্রথম আলো ফুটেছে।দিনের পর দিন না খেয়ে থেকে মৃতপ্রায় হয়ে যাওয়া অসহায় একটা ছেলেকে একা রেখে আমি ফিরে আসছি। ফিরতে ফিরতে আমার মনে হতে লাগল, আমরা যতই নিজেদের জন্য ভার্চুয়াল জগত তৈরি করি না কেন প্রকৃতির ‘বৃহত্তর কোন প্রোগ্রাম’ হয়ত আমাদের ‘তার ইচ্ছেমত জগতে’ই আটকে রাখতে চায়। সেই প্রোগ্রাম ই হয়ত ‘ভার্চুয়াল অ্যালিটা’ দের মেরে ফেলে ‘রিয়েল কামাল রহমান’দের রিয়েল জগতে টিকিয়ে রাখতে চায়!
২| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: সুন্দর গল্প।
৩| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: প্রিয় সোহানী এবং ঢাকাবাসী, পর্যবেক্ষন পর্যায় থেকে উতরানোর পর আমার গল্পে প্রথম আপনাদের উৎসাহমূলক মন্তব্য দেখলাম। অনেক ভাল লাগছে। আপনাদের দুজন কে অনেক ধন্যবাদ।
৪| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২৩
মুদ্দাকির বলেছেন: এইটা যে গল্প তা বুঝতেই আমার অনেক্ষন লাগল!! অসাধারন অসাধারন অসাধারন
৫| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:১৬
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকেও মুদদাকির!
৬| ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬
তূর্য হাসান বলেছেন: একদম অন্যরকম। অসাধারণ।
৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:১১
একাকী বাংলাদেশি বলেছেন: এত সুন্দর একটা গল্প এখানে দেওয়াটা কিছুটা বোকামী। কারনো ব্লগে পাবলিক গল্প পড়তে সাধারনত আসে না। আসে কোন চমক লাগানো কোন ব্যাপার পড়তে।
৮| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪৬
হঠাৎ ধুমকেতু বলেছেন: প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ একাকী বাংলাদেশি। কিন্তু আমার মনে হয় গল্পের পাঠক যারা তাদের জন্য ব্লগে, ফেসবুকে একটা জায়গা তৈরি হওয়া খারাপ কিছু না। আসলে ফেসবুক বলি, হার্ড বুক বলি বা ব্লগ বলি, সবি ত মাধ্যম পাঠকের সাথে লেখকের যোগাযোগের।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
সোহানী বলেছেন: ভাই গল্পের মধ্যে এমন ভাবে ঢুবে গেছিলাম যে আমার কাছে পুরো বিষয়টাই সত্য মনে হচ্ছে। ........... অসাধারন +++++++++++++++++